Ajker Patrika

ফরিদপুরে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীর ইটভাটায় লুট, বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুরে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীর ইটভাটায় লুট, বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন

ফরিদপুরে আওয়ামী পন্থী আইনজীবী স্বপন কুমার পালের মাছের খামার ও তাঁর স্ত্রীর নামে থাকা ইটভাটায় লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এর বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তাঁর স্ত্রী শিল্পী রানী গুন। 

আজ শুক্রবার বিকেল ৩টায় জেলা শহরের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করেন শিল্পী রানী গুন। এ সময় তার স্বামী স্বপন কুমার পাল ও দুই ছেলে সন্তান উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা জেলা সদরের পারচর গ্রামের বাসিন্দা। 

শিল্পী রানী গুন জেলা সদরের পারচর এলাকায় অবস্থিত ‘এ এস ব্রিকস’ নামে ওই ইটভাটাটির স্বত্বাধিকারী। এ ছাড়া তাঁর স্বামী জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার পালের নামে রয়েছে মাছের খামারটি। 

তাঁদের অভিযোগ, পূর্ব বিরোধের জেরে সরকার পতনের পর গত ৭ আগস্ট পাশের কোমরপুর গ্রামের বাসিন্দা জাকারিয়া মোল্যা পলাশের নেতৃত্বে ওই ইটভাটা ও মাছের খামার লুটপাট করা হয়। বর্তমানে হুমকি-ধমকি দেওয়ায় এবং নিরাপত্তাহীনতায় ওই প্রতিষ্ঠান ও এলাকায় প্রবেশ করতে পারছেন না তাঁরা। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শিল্পী রানী গুন বলেন, মুকুল শেখ (মকো) নামে একজন কর্মচারী ওই প্রতিষ্ঠানের ইট বেচাকেনা ও শ্রমিকদের বেতানদি পরিশোধের দায়িত্বে ছিলেন। ওই সময়ে জাকারিয়া মোল্যা পলাশের প্রভাব খাঁটিয়ে মুকুল তাদের প্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। মুকুলকে কিছু বলতে গেলে পলাশ তার গুন্ডা বাহিনী দিয়ে আমাদের হুমকি দিয়ে প্রতিষ্ঠান দখল করে নেওয়ার পাঁয়তারা করে। 

তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে দেশের সরকারের পট পরিবর্তন হওয়ায় গত ৭ আগস্ট বিকেলে জাকারিয়া মোল্যা পলাশের নেতৃত্বে তার ভাই আল হেলাল মোল্যা টগর ও গোলাম কিবরিয়া রাসেলসহ ১০-১২ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানে হামলা করে। এ সময় ম্যানেজার নিরঞ্জন কুমার দাসকে মারধর করে এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয়। ওই দিন সন্ধ্যার পর থেকে পরদিন দুপুর পর্যন্ত ইটভাটায় থাকা প্রায় ৭ লাখ টাকা মূল্যের ৬০ হাজার খামাল ইট ট্রাক, পিকআপভ্যানে করে নিয়ে যায়। এ ছাড়া পাশেই মাছের খামারে জাল ফেলে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মাছ লুট করে। 

এ ছাড়া ওই প্রতিষ্ঠানের আলমিরায় থাকা হিসাবের কাগজপত্র, চেক, স্ট্যাম্প, জমির দলিলপত্রসহ নগদ ৮০ হাজার টাকা লুটপাট করে নিয়ে যায়। পুলিশের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় আইনগত সহযোগিতা নিতে পারেননি বলেও জানান তিনি। বর্তমানে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে লুটপাটে জড়িতদের বিচারের দাবি জানান। 

লুটপাটের অভিযোগ অস্বীকার করেন জাকারিয়া হোসেন পলাশ। তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, এই স্বপন পাল আওয়ামী লীগের ক্ষমতা দেখিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতেন। তার অত্যাচারে ওই এলাকার হিন্দু-মুসলিমসহ সকলে অতিষ্ঠ। 

তিনি বলেন, ‘স্বপন পালের কাছে আমি ইট পেতাম। আগেই টাকা দিয়েছিলাম কিন্তু ইট না দেওয়ায় একাধিকবার সালিস হলেও তা তোয়াক্কা করেননি। আমি সেদিন আমার পাওনা ইট আনতে গিয়েছিলাম। এরপরই আমার নামে রিউমার (গুজব) ছড়ানো হয়েছে আমি নাকি লোকজন নিয়ে ইট চুরি করেছি এবং তার পুকুর থেকে মাছ নিয়েছি। এমন কোনো প্রশ্নই উঠতে পারে না যে আমি এগুলো করতে যাব।’ 

এদিকে সরেজমিনে ওই ইটভাটা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, বন্ধ ইটভাটার একাধিক খামাল (ইটের স্তূপ) থেকে ইটগুলো সরানোর চিহ্ন রয়েছে। এ সময় সজল মোল্যা নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘খামাল থেকে লোকজন নিয়ে ট্রাক ভরে ভরে ইট নেওয়া হয়েছে। তখন আমি নিজেই বাধা দিই। পরে এলাকার আরও কয়েকজনের মাধ্যমে ইট নেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে মাছ ধরে নিয়ে গেছে কি-না আমি জানি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত