Ajker Patrika

কালবৈশাখীর আশঙ্কায় ধান নিয়ে শঙ্কায় কৃষকেরা

আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২২, ১২: ২৬
কালবৈশাখীর আশঙ্কায় ধান নিয়ে শঙ্কায় কৃষকেরা

গাজীপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন ফসলি জমিতে হয়েছে বোরো ধানে বাম্পার ফলন। দিগন্তজোড়া বিশাল ফসলের মাঠের যত দূর চোখ যায়, দেখা যায় শুধু ধান আর ধান। মাঠের কোনো কোনো খেতের ধান ইতিমধ্যে পাকতে শুরু করেছে আবার কোনো কোনো খেতের ধান রয়েছে আধা পাকা অবস্থায়। তবে কালবৈশাখী হানার আশঙ্কার অনেক কৃষক আধা পাকা ধান কেটে মাড়াই শুরু করেছেন। 

কৃষি বিভাগের সূত্রে জানা যায়, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এ বছর জেলায় রেকর্ড পরিমাণ ধান উৎপাদন হবে। কারণ গাজীপুর জেলা সদরের পিরুজালী ভাওয়ালগড় আর বাড়িয়া ইউনিয়নসহ মহানগরের কড্ডা, কাশিমপুর কোনাবাড়ী ও শ্রীপুর উপজেলা মারতা, গোসিঙ্গা, বরমী গাজীপুরে এ বছর প্রচুর পরিমাণ বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে শেষ পর্যন্ত হাসি থাকবে কৃষকের মুখে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঝোড়ো হাওয়ায় মাঠের ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে। অনেক কৃষক তাঁর খেতের ধান পরিপক্ব হওয়ার আগের কেটে নিচ্ছেন। কিছু কিছু এলাকায় আগাম বর্ষার পানিতে তলিয়ে যেতে শুরু করেছে ধানখেত। এতে করে তাড়াহুড়ো করে আধা পাকা ধান কেটে মাড়াই করে ঘরে তুলছেন কৃষকেরা। ফলে ক্ষতির মুখে পড়ছেন প্রান্তিক কৃষকেরা। 

এ বিষয়ে বেলাই বিলের কৃষক ইন্তাজ আলী বলেন, ‘অসময়ে কালবৈশাখীর ঝোড়ো হাওয়া কৃষকের অন্তর নাড়িয়ে দেয়। এ বছর চার বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছি। মাঠের ধান পাকতেও শুরু করেছে। কিন্তু আকাশের যে অবস্থা, তাতে ধান মাড়াই করে ঘরে তোলা নিয়ে শঙ্কিত। একদিকে আগাম বর্ষার পানি, অন্যদিকে কালবৈশাখী হানার আশঙ্কায় রয়েছি।’ 

পিরুজালী ইউনিয়নের কৃষক আব্দুস ছাত্তার জানান, ব্রি-২৯ ধান পাকতে আরও ১৫ দিন সময় লাগবে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ধান কাটার ভরা মৌসুম শুরু হবে। কিন্তু কালবৈশাখী ও বৃষ্টিতে আমাদের মাঠের সব ধানগাছ জমিতে নুয়ে পড়েছে। কিছু কিছু জমির ধান আধা পাকা অবস্থায় কাটতে শুরু করেছি। চলছে মাড়াইয়ের কাজও। এতে অনেক ধান পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

শ্রীপুর উপজেলার মারতা গ্রামের কৃষক মো. শহিদ মিয়া জানান, আশপাশের কৃষকেরা এই অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণ বোরো ধানের আবাদ করেছেন। ইতিমধ্যে কিছু ধান আধা পাকা ও কিছু ধান কাঁচা অবস্থায় রয়েছে। অসময়ে ঝোড়ো হাওয়ায় জমির অনেক ধান মাটিতে নুয়ে পড়েছে। এতে চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি এবং ফলন অর্ধেকে নেমে যাবে। 

এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, যেসব জমির ধান প্রায় পেকে গেছে, সেসব জমির ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। কিছু কিছু এলাকার কৃষক আতঙ্কিত হয়ে আধা পাকা ধান কাটা শুরু করেছেন। আগাম বর্ষার পানির কারণে যেসব কৃষকের ফসল নষ্ট হচ্ছে, সেসব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত হচ্ছে তালিকা। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত