Ajker Patrika

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবিতে অনশনে শিক্ষকেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবিতে অনশনে শিক্ষকেরা

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবিসহ ৮ দফা দাবিতে মানববন্ধন ও অনশন কর্মসূচি পালন করেছে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষক ঐক্যজোট। আজ মঙ্গলবার প্রেসক্লাবের সকাল ৯ থেকে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা অন্তত ৫ শতাধিক শিক্ষক প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। 

কুড়িগ্রামের গোপারানী স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক নুরুন নবী আলী। কামিল পাস করে ১৯৯৩ সালে শুরু করেছিলেন শিক্ষকতা। চাকরি জীবনের শুরুতে মাদ্রাসা থেকে পেতেন মাত্র ৭০০ টাকা। যা এখন হয়েছে ২৫০০ টাকায়। 

নবী আলী বলেন, ‘কামিল পাস করে অনেক স্বপ্ন নিয়ে শিক্ষকতা পেশায় এসেছিলাম। ১৯৯৩ সাল থেকে প্রতিষ্ঠান সরকারি হবে, হয়, হচ্ছে শুনছি। বাধ্য হয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি কৃষি কাজ করতে হয়। যা বেতন পাই সেটা মানুষকে বলার মতো না। তাই আজ বাধ্য হয়ে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনশনে যোগ দিয়েছি।’ 

এ অনশনে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কয়েক শতাধিক শিক্ষক অংশ নিয়েছে। 

দাবি আদায় বিভিন্ন ব্যানার গলায় টাঙ্গিয়ে মানববন্ধন ও অনশন কর্মসূচি পালন করেছে মাদ্রাসার শিক্ষকেরাস্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষক ঐক্য জোটের সদস্যসচিব মো. তাজুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ৩৭ বছর স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকেরা অবহেলিত। তাঁরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো জাতীয় কর্ম দাবি করেছিলেন। কিন্তু জাতীয় কর্ম দূরের কথা, এমপিওভুক্ত পর্যন্ত হয় নাই। 

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকেরা বলেন, ২০১৮ সালে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার নীতিমালা চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে শিক্ষকদের আশা ও প্রত্যাশার প্রতিফলন হয়নি। তাঁরা বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। 

অনশন কর্মসূচিতে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষক ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান কাজী মো. মোখলেছুর রহমান ৮ দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণ, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার নীতিমালা ২০১৮ বাস্তবায়ন, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার ডেটাবেইস চূড়ান্তকরণ, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার পাঠদানের অনুমতির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার, নিবন্ধনপ্রাপ্ত কোড বিহীন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলো মাদ্রাসা বোর্ডের কোডের অন্তর্ভুক্তিকরণ, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির ব্যবস্থা, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার একজন অফিস সহায়কের পদ সৃষ্টি ও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষার অটো পাসের প্রজ্ঞাপন জারি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত সুবাস থাকে যে সড়কে

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, ঝিনাইদহ 
ছাতিমগাছের সাদা ফুলে ভরে গেছে ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক মহাসড়কের দুই পাশ। সন্ধ্যার পর এসব ফুলের ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। ভোর পর্যন্ত এই সুবাস মুগ্ধ করে সবাইকে। ছবি: আজকের পত্রিকা
ছাতিমগাছের সাদা ফুলে ভরে গেছে ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক মহাসড়কের দুই পাশ। সন্ধ্যার পর এসব ফুলের ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। ভোর পর্যন্ত এই সুবাস মুগ্ধ করে সবাইকে। ছবি: আজকের পত্রিকা

সন্ধ্যায় ঝিনাইদহের একটি সড়ক পার হলেই পাশ থেকে ভেসে আসা মিষ্টি সুবাস যে কাউকে মুগ্ধ করবে। ফুলের ঘ্রাণ মুহূর্তে শরীর-মন চাঙা করে তুলবে।

ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক মহাসড়ক ঘেঁষে নানা জাতের গাছের সঙ্গে রয়েছে অনেক ছাতিমগাছ। এই গাছগুলো এখন সাদা ফুলে ভরপুর। দিনের বেলায় হয়তো অন্য গাছের ভিড়ে অনেকের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়। তবে সূর্য ডুবলে বদলে যায় দৃশ্যপট। সন্ধ্যা হলে শিশিরের সঙ্গে ফুলের মিষ্টি গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। ভোর পর্যন্ত এই সুবাস মোহিত করে সবাইকে।

ঝিনাইদহ শহর ছাড়িয়ে দশমাইল বাজার পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার সড়কে মাঝে মাঝেই ছাতিমগাছ। তবে সরকারি ভেটেরিনারি কলেজ, আব্দুর রউফ ডিগ্রি কলেজ ও রেশম উন্নয়ন বোর্ডের মাঠ এলাকায় এই গাছের সংখ্যা বেশি। সন্ধ্যার পর হালকা শীতের আবেশে এসব এলাকা পার হওয়ার সময় অন্য রকম অনুভূতি ছুঁয়ে যায় পথচারীদের।

সাগান্না গ্রামের কৃষক আফান মণ্ডল বলেন, ‘রাস্তার ধারে আমার ফসলি জমি রয়েছে। প্রতিদিন ভোরে খেত দেখতে আসি। ছাতিম ফুলের গন্ধে চারদিক ম-ম করে। খুব ভালো লাগে।’

একই গ্রামের বাসিন্দা আরিফ বলেন, ‘আমের চারা বাজার থেকে বৈডাঙ্গা পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে প্রচুর ছাতিমগাছ। সব গাছে অনেক ফুল ফুটেছে। সন্ধ্যার পর থেকে এই এলাকার বাতাস ফুলের সুবাসে ভরে থাকে। বন্ধুরা মিলে রাতে আমরা এখানে হাঁটতে আসি।’

আব্দুর রউফ ডিগ্রি কলেজের সামনে রাস্তার ধারে টিনের বেড়া দিয়ে তৈরি আমেনাদের ঘর। ঘরের পাশেই ৭-৮টি ছাতিমগাছ। আমেনা খাতুন বলেন, ‘সন্ধ্যার পর থেকে আমাদের ঘর, উঠান—সব ফুলের গন্ধে ভরে যায়।’

ঝিনাইদহ সামাজিক বনায়ন নার্সারি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক মহাসড়কের জোহান ড্রিম ভ্যালির সামনে থেকে বোড়াই গ্রাম পর্যন্ত রাস্তার ধারে কয়েক হাজার বনজ গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ছাতিমগাছও আছে। বাতাস বিশুদ্ধকরণে এই গাছের ভূমিকা তাৎপর্যপূর্ণ। এ ছাড়া এর ঔষধি গুণও রয়েছে।

শরতের শেষে ফোটে ছাতিম ফুল। সন্ধ্যার পর শিশির পড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ফুল থেকে তীব্র ঘ্রাণ বের হয়। রাত যত গভীর হয়, ঘ্রাণের তীব্রতা তত বাড়ে। উঁচু গাছ হওয়ায় এই ঘ্রাণ অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।

সাধারণত গ্রামীণ রাস্তাঘাট, নদীর তীর, বসতবাড়ির অনাবাদি জায়গায় ছাতিমগাছ জন্মে। অঞ্চলভেদে এটিকে ছাতিয়ান, ছাইত্যান, ছাতইন, ছেতেনসহ নানা নামে ডাকা হয়। ছাতিমগাছ ১৫ থেকে ২০ মিটার উঁচু হয়। এটি চিরসবুজ দুধকষভরা সুশ্রী গাছ।

ছাতিমগাছ ‘অ্যাপোসাইনেসি’ বর্গের অন্তর্ভুক্ত একটি উদ্ভিদ। বৈজ্ঞানিক নাম অ্যালস্টনিয়া স্কলারিস। স্কলারিস শব্দটির সঙ্গে বিদ্যা অর্থাৎ লেখাপড়ার যোগ আছে। এ ধরনের নামকরণের কারণ, ছাতিমের নরম কাঠ থেকে ব্ল্যাকবোর্ড ও পেনসিল তৈরি হয়।

এই গাছের আদি নিবাস ভারতীয় উপমহাদেশ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায়। এর ছাল ও আঠা জ্বর, হৃদ্‌রোগ, হাঁপানি, ক্ষত, আমাশয় ও কুষ্ঠ রোগের জন্য উপকারী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতিয়ার নলচিরা-চেয়ারম্যানঘাট রুটে নতুন সি-ট্রাক চালু

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
গতকাল বিকেলে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে সি-ট্রাকটি উদ্বোধন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল বিকেলে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে সি-ট্রাকটি উদ্বোধন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ায় নদী পারাপারের সুবিধার্থে নলচিরা-চেয়ারম্যানঘাট রুটে নতুন করে যুক্ত হয়েছে সি-ট্রাক ‘এস টি সাঙ্গু’। শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে এই সি-ট্রাক যাত্রী পরিবহন কার্যক্রম শুরু করে। এর আগে গতকাল বিকেলে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে সি-ট্রাকটি উদ্বোধন করা হয়।

নতুন সি-ট্রাকটি চালুর ফলে হাতিয়া মূল ভূখণ্ড ও চেয়ারম্যানঘাট রুটের যাত্রীদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি কিছুটা লাঘব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

সি-ট্রাক কর্তৃপক্ষ জানায়, নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী প্রথম ট্রিপে নলচিরা ঘাট থেকে সকাল ৯টায় ছাড়বে এবং চেয়ারম্যানঘাট থেকে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে যাত্রা শুরু করবে। দ্বিতীয় ট্রিপে নলচিরা ঘাট থেকে দুপুর সাড়ে ১২টায় ছাড়বে এবং চেয়ারম্যানঘাট থেকে বেলা সাড়ে ৩টায় ছেড়ে যাবে। তবে দ্বিতীয় ট্রিপ যাত্রীর ওপর নির্ভর করবে।

সি-ট্রাক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ইসমাইল হোসেন, পৌরসভা যুবদলের আহ্বায়ক মুমিন উল্লাহ রাসেল, পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব খন্দকার সোহেল, বিএনপি নেতা অলি উল্লাহসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও যাত্রীরা।

গতকাল বিকেলে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে সি-ট্রাকটি উদ্বোধন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল বিকেলে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে সি-ট্রাকটি উদ্বোধন করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

উপস্থিত বক্তারা বলেন, নতুন এই সি-ট্রাক চালুর মাধ্যমে হাতিয়ার নলচিরা-চেয়ারম্যানঘাট রুটে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে নতুন গতি আসবে। একই সঙ্গে দ্বীপবাসীর সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের যোগাযোগ আরও সহজ ও নিরাপদ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সুন্দরগঞ্জে আট দিনব্যাপী হাডুডু খেলা: চ্যাম্পিয়ন ‘সিংহ’ দল

মো. জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা)
ড. এম আই পাটোয়ারী বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ফাইনাল খেলায় মুখোমুখি হয় ‘টাইগার’ বনাম ‘সিংহ’ দল। ছবি: আজকের পত্রিকা
ড. এম আই পাটোয়ারী বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ফাইনাল খেলায় মুখোমুখি হয় ‘টাইগার’ বনাম ‘সিংহ’ দল। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে ড. এম আই পাটোয়ারী বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আট দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হলো গ্রামবাংলার প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী হাডুডু খেলা। ১৬টি দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এই খেলার ফাইনাল ম্যাচ গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয়। ঐতিহ্যবাহী এই খেলার আয়োজন করেছিল ফলগাছা বাজার যুব সমাজ ক্লাব।

ফাইনাল খেলায় মুখোমুখি হয় ‘টাইগার’ বনাম ‘সিংহ’ দল। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে সিংহ দল ২৪ পয়েন্ট এবং টাইগার দল ১৭ পয়েন্ট অর্জন করে। খেলা শেষে বিজয়ী সিংহ দলকে গরু এবং রানার্সআপ টাইগার দলকে খাসি পুরস্কার হিসেবে তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। এর আগে ২৪ অক্টোবর এই খেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

দীর্ঘদিন পর এই ধরনের ঐতিহ্যবাহী খেলার আয়োজনে খুশি হয়েছেন দর্শনার্থীরা। তাঁরা বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে খেলা উপভোগ করেছেন। আশপাশের গ্রাম ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজার হাজার দর্শক খেলা দেখতে আসেন। আগত দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় দেখে আয়োজকেরা বেশ আনন্দিত হন।

দর্শনার্থী মো. শিপন মিয়া (২৫) বলেন, ‘এটা খুব মজার খেলা। বর্তমান প্রজন্মের ৮০ শতাংশ ছেলে-মেয়ে হয়তো জানে না হাডুডু কীভাবে খেলে, কতজন খেলোয়াড় লাগে। তারা শুধু বইয়ে পড়েছে যে এটি আমাদের জাতীয় খেলা।’

বিজয়ী সিংহ দলের অধিনায়ক মো. আলমগীর হোসাইন বলেন, ‘এই বিজয়ের আনন্দ আমার একার নয়, মাঠে উপস্থিত সবার। মাঠের দর্শকদের আনন্দ দিতে পেরেছি, এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় খুশি।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাইরে থেকে যতটা সহজ মনে হয়, আসলে এই খেলা ততটা সহজ নয়। খেলতে গেলে অনেক সাহস, শক্তি ও কৌশলী হতে হয়। যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে লাগে উপস্থিত বুদ্ধি। খেলাধুলায় থাকলে মন ও শরীর ভালো থাকে, মাদক বা কুচিন্তা কখনো মাথায় আসে না।’

শিক্ষক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. নজমুল হুদা আয়োজকদের মধ্যে একজন। তিনি বলেন, ‘ইয়াং জেনারেশনকে নিয়ে আমরা খুবই চিন্তিত। তাদের অধঃপতনের যে রাস্তা তৈরি হয়েছে, আমার বিশ্বাস, খেলাধুলার মধ্যে ধরে রাখতে পারলে ওই জায়গা থেকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।’ তিনি আরও বলেন, ‘মাদকের করাল গ্রাস এবং মোবাইল আসক্তি আমাদের জীবনীশক্তিকে যেভাবে ধ্বংস করছে, একমাত্র খেলাধুলাই পারে সেখান থেকে তাদের ফিরিয়ে আনতে। আগামীতে আরও বৃহৎ পরিসরে এই খেলার আয়োজন করার চিন্তাভাবনা আছে।’

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘আমি এখানে প্রধান অতিথি বা এমপি হিসেবে আসিনি, এসেছি প্রতিবেশী হিসেবে। এই হাডুডু খেলাটি গ্রামবাংলার পুরাতন ও ঐতিহ্যবাহী খেলা। এখন এটি বিলুপ্তির পথে। নতুন প্রজন্ম যেন এই খেলার মাধ্যমে আমাদের ঐতিহ্যকে জানতে পারে, সে কারণে আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৮ টাকা কেজি আলু, গাড়ি থামতেই মানুষের ভিড়

রাকিবুল ইসলাম, গাংনী (মেহেরপুর) 
গাংনী উপজেলার দেবীপুর বাজার থেকে গতকাল বিকেলে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাংনী উপজেলার দেবীপুর বাজার থেকে গতকাল বিকেলে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দূর থেকে মাইকে ভেসে আসছিল ঘোষণা, ‘৫০ কেজি আলুর বস্তা মাত্র ৫০০ টাকা!’ মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার দেবীপুর বাজারে আলুর গাড়িটি থামতেই ভিড় জমায় লোকজন। দর-কষাকষির পর শেষমেশ বস্তাপ্রতি দাম নেমে আসে ৪০০ টাকায়। অর্থাৎ প্রতি কেজি মাত্র ৮ টাকা।

বর্তমানে খুচরা বাজারে ভালো মানের আলুর দাম যখন প্রতি কেজি ১৮ থেকে ২০ টাকা বা ১০০ টাকায় ৫-৬ কেজি, তখন এই দামে আলু পেয়ে ক্রেতারা দারুণ খুশি। কেউ এক বস্তা, কেউ দুই বস্তা, আবার কেউ তিন বস্তা আলু কিনেছেন।

আলু কিনতে আসা মোতালেব হোসেন বলেন, ‘আলুগুলো তেমন ভালো নয়। তবে এত কম দামে পাওয়া যাচ্ছে, তাই এক বস্তা নিলাম। গরু-ছাগলের খাবার হবে।’

আরেক ক্রেতা মো. ছাবের আলী বলেন, ‘যেটুকু খাওয়া যায় খাব। আর প্রতিদিন গরুকে ২ কেজি করে ঘাসের সঙ্গে কেটে দেব। তা ছাড়া এই আলুর গাছ বের হলে লাগালেও হতে পারে।’

ক্রেতা আবু হানিফ জানান, মাইকে ৫০০ টাকা দাম শুনে বাজারে ভিড় জমে। লোকজনের দর-কষাকষিতে শেষ পর্যন্ত প্রতি বস্তা ৪০০ টাকায় বিক্রি শুরু করেন বিক্রেতা।

আলু ব্যবসায়ী মো. উমর ফারুক জানান, প্রতিদিন বিভিন্ন জেলায় তাঁদের চারটি গাড়ি আলু বিক্রির জন্য বের হয়। তিনি বলেন, ‘৫০ কেজির বস্তা ৪০০ টাকায় বিক্রি করেও আমাদের লাভ থাকছে। যে বাজারেই থামছি, ১০ থেকে ১৫ মণ আলু বিক্রি হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই আলুর অন্তত ৩০ কেজি মানুষ খেতে পারবে এবং বাকি ২০ কেজি গরু-ছাগলের খাবার হবে। এত সস্তায় আলু সাধারণত পাওয়া যায় না। প্রায় আড়াই মাস ধরে ব্যবসা করছি। আরও দুই মাস চলবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত