Ajker Patrika

ঘিওরে হাট জমেছে নৌকার

ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি  
আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২৫, ০৯: ১২
ঐতিহ্যবাহী নৌকার হাটে নানা আকার ও ডিজাইনের নৌকার পসরা সাজিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা। নির্দিষ্ট জায়গা ছাড়িয়ে হাটসংলগ্ন ডিএন পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠেও চলে বেচাকেনা। ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঐতিহ্যবাহী নৌকার হাটে নানা আকার ও ডিজাইনের নৌকার পসরা সাজিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা। নির্দিষ্ট জায়গা ছাড়িয়ে হাটসংলগ্ন ডিএন পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠেও চলে বেচাকেনা। ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ। বিভিন্ন আকার ও ডিজাইনের নৌকা সাজানো সেখানে। এটি আসলে নৌকার হাট। নির্দিষ্ট জায়গা ছাড়িয়ে হাটসংলগ্ন ডি এন পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠেও বেচাকেনা হচ্ছে।

এক সপ্তাহ ধরে পানি বাড়ছে মানিকগঞ্জ ও এর আশপাশ দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা, যমুনা, কালীগঙ্গা, ইছামতী, ধলেশ্বরীসহ ছোট-বড় বেশ কয়েকটি নদীতে। এতে বাড়ছে নৌকার চাহিদা। সাধ্যের মধ্যে নৌকা কেনা শুরু করেছেন অনেকে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখর হাট।

স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, এই হাটের বয়স প্রায় ২০০ বছর। যদিও এর প্রকৃত বয়স জানার সুযোগ নেই। হাটে আসা এক ব্যক্তি বলেন, এই নৌকার হাটে কেউ বাবার সঙ্গে এসেছেন, কেউবা দাদার সঙ্গে। ডিএন পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক পীযূষ দত্ত বলেন, ধলেশ্বরী ও ইছামতী নদীতীরের এই হাটের জন্ম ব্রিটিশ শাসনামলে আঠারো শতকের গোড়ার দিকে। বর্ষাকালে নৌকার হাট বেশ জনপ্রিয় ও জমজমাট হয়। এই হাটের সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে।

গত বুধবার হাটে গিয়ে দেখা গেল, বিভিন্ন নকশা ও আকারের নৌকা আনা হয়েছে সেখানে। ঘিওর হাটবাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পলাশ খান বলেন, প্রতি বুধবার বসা এই হাটে এক থেকে দেড় শ নৌকা বিক্রি হয়েছে। আকারভেদে প্রতিটি নৌকার দাম ৩ থেকে ১০ হাজার টাকা। প্রতি হাটে কমপক্ষে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকার নৌকা বেচাকেনা হয়।

প্রতিবছর বর্ষায় জেলার ঘিওর, দৌলতপুর, শিবালয় ও হরিরামপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। এই অবস্থায় মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা নৌকা। তাই বর্ষার শুরুতে ঘিওরের নৌকার হাটে বেচাকেনা বাড়তে থাকে। পানি বাড়লে পাল্লা দিয়ে বাড়ে নৌকা বেচাকেনা।

খলসী গ্রামের নৌকা নির্মাতা ও বিক্রেতা নিমাই চন্দ্র সূত্রধর বলেন, ‘আমাদের তৈরি এই নৌকা জেলার চাহিদা মিটিয়ে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন জেলায়। নৌকা তৈরিতে মেহগনি, কড়ই, আম, চাম্বল ও রেইনট্রি কাঠের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি করে থাকি। জিনিসপত্রের দাম বেশি। কিন্তু বেশি দামে বিক্রি করতে পারছি না।’

আশাপুর গ্রামের সমেজ উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের গ্রামটি খুবই নিচু। সামান্য বর্ষায় রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। বর্ষায় নৌকার ওপর নির্ভর করতে হয়। পানি বাড়লে নৌকা ছাড়া কোনো উপায় নেই। সাড়ে ৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি বড় ডিঙি নৌকা কিনলাম।’

নৌকা বিক্রেতা জাবরা গ্রামের কানাই চন্দ্র সূত্রধর বলেন, ১০ হাত লম্বা ও আড়াই হাত প্রস্থের একটি নৌকার দাম ৫ হাজার টাকা। আকারভেদে নৌকার দামের তারতম্য হয়। এ রকম ১১ হাত লম্বা ও ৩ হাত প্রস্থের নৌকা ৬ হাজার, ১৩ হাত লম্বা ও ৩ হাত প্রস্থের একটি নৌকার দাম ৭ হাজার আর ১৫ হাত লম্বা ও ৩ হাত প্রস্থের নৌকা ৮ থেকে ৯ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লজ্জায় ধর্ষণের শিকার মায়ের আত্মহত্যা: ৮ বছরের মেয়েটি যাবে কোথায়

বলিদান ও শয়তান পূজার বুদ্ধি দিল চ্যাটজিপিটি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মহড়া শুরু, চলবে ৩০ জুলাই পর্যন্ত

বাংলাদেশ ব্যাংকে পোশাক নির্দেশনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি ৫৪ বিশিষ্ট নাগরিকের

সঞ্জয়ের ১৪ হাজার কোটি টাকার সম্পদ নিয়ে পারিবারিক উত্তেজনা তুঙ্গে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত