Ajker Patrika

ফরিদপুরে বাস ধর্মঘট: অটো-বাসশ্রমিকদের দ্বন্দ্ব, ভোগান্তি যাত্রীর

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১১: ৩৭
Thumbnail image

ফরিদপুরে বাসশ্রমিকদের সঙ্গে টেম্পো ও সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকদের দ্বন্দ্বে যাত্রীরা ভোগান্তিতে পেড়েছেন। দুই পক্ষের বিরোধের জেরে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলগামী দূরপাল্লার বাস বন্ধ করে দেন শ্রমিকেরা। এর আগের দিন সোমবার সন্ধ্যা থেকে বন্ধ রাখা হয় আন্তজেলা রুটের বাস। একই সঙ্গে বাসশ্রমিকেরা টেম্পো (মাহিন্দ্রা) ও অটোরিকশা চলাচলও বন্ধ করে দেন। এতে বিপদে পড়েন আঞ্চলিক রুটসহ দূরপাল্লার যাত্রীরা। 

গতকাল বিকেলে শহরের পৌর বাস টার্মিনাল, পুরোনো বাস টার্মিনাল ও রাজবাড়ী রাস্তার মোড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। শ্রমিকেরা লাঠি হাতে সড়কে অবস্থান করছেন। মাহিন্দ্রা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা শহরে ঢুকতে বাধা দিচ্ছেন তাঁরা। এতে যাত্রীদের হয়রানিসহ ভোগান্তিতে পড়তে দেখা গেছে। গতকাল রাত ১০টার দিকে বাস ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়। জানা গেছে, গত সোমবার বিকেলে শহরে নাজমুল হোসেন (২৫) নামের এক অটোরিকশাচালককে মারধর করেন বাসশ্রমিকেরা। এ ঘটনার পর নগরকান্দায় অটোরিকশাচালক সমিতির সদস্যরা ন্যায়বিচারসহ বিভিন্ন দাবি তুলে বিক্ষোভ করেন এবং সদরপুর, নগরকান্দা ও ভাঙ্গা রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন। এর প্রতিবাদে সোমবার সন্ধ্যা থেকে আঞ্চলিক সব রুটের বাস চলাচল এবং গতকাল সকাল থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় বাসশ্রমিক ও মালিকপক্ষ। 

নগরকান্দা সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক সমিতির সদস্য মতিউর বলেন, ‘ফরিদপুর বাসমালিক সমিতির অত্যাচারে জিম্মিদশায় সিএনজিচালকেরা। ফরিদপুরে গেলে তাঁরা আমাদের চালকদের মারধর করেন। এ ছাড়া বাসমালিক সমিতির কারণে আমাদের অটোরিকশা-মাহিন্দ্রাসহ ছোট গাড়িগুলোর রুট পারমিট পাচ্ছি না। রুট পারমিটসহ বাসমালিক সমিতির জিম্মিদশা ও অত্যাচারের হাত থেকে মুক্তির জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই।’ 

ফরিদপুর মোটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক তারা বলেন, ‘মহাসড়কে তিন চাকার গাড়ি চলাচল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত রয়েছে। কিন্তু তাঁরা এর তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন স্থান থেকে মহাসড়ক হয়ে যাত্রী নিয়ে শহরে ঢুকছেন। এর জেরে আমাদের শ্রমিকেরা প্রতিবাদ করলে অটোরিকশাচালকেরা মারধর করেন। সকালে তাঁরা গোল্ডেন লাইন পরিবহনের একটি বাসও ভাঙচুর করেছেন। এসব ঘটনা আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের শ্রমিকদের ওপর হামলাকারীদের ও বাস ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার না করা হবে এবং আমাদের দাবি না মেনে নেবে, ততক্ষণ সব ধরনের বাস ও অটোরিকশা-মাহিন্দ্রা চলাচল করতে দেওয়া হবে না।’ 

জেলা বাসমালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রহমান বলেন, ‘অটোরিকশা ও মাহিন্দ্রাগুলো অবৈধ, সেগুলো রাস্তায় চলবে না, আমরা চলতে দেব না। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।’ 

বাস ভাঙচুর ও শ্রমিকদের মারধরের ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ দেননি বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান। 

এদিকে বাসশ্রমিক ও অটোরিকশাচালকদের দ্বন্দ্বে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। বাস টার্মিনালে এসে গন্তব্যে পৌঁছাতে না পেরে কেউ কেউ বিকল্প ব্যবস্থায় ঢাকায় যাচ্ছেন। আবার অনেকে ফিরে যাচ্ছেন। অনেক যাত্রীই ঢাকায় যাওয়ার জন্য কাউন্টারে এসে ফিরে যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত