Ajker Patrika

সুপ্রিম কোর্ট বারের ভোট গণনা চলছে, সভাপতি পদে বিএনপির খোকন এগিয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১০ মার্চ ২০২৪, ০৮: ৫৬
সুপ্রিম কোর্ট বারের ভোট গণনা চলছে, সভাপতি পদে বিএনপির খোকন এগিয়ে

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪–২০২৫ সেশনের নির্বাচনে সভাপতি পদে বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন এগিয়ে আছেন। আর  সম্পাদক পদে এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী শাহ মঞ্জুরুল হক। 

দুই দিন ভোট গ্রহণ শেষে ৪৬ ঘণ্টা পর আজ শনিবার বিকেল ৩টার পর শুরু হয় গণনা। এ সময় আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা উপস্থিত থাকলেও বিএনপি সমর্থিতরা ছিলেন না। ছিলেন না নির্বাচন পরিচালনা সাব কমিটির সকল সদস্যও। তবে পৌনে ৬টার দিকে নীল প্যানেলের ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ কয়েকজন আইনজীবী উপস্থিত হন। আর ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় মোতায়েন ছিল বিপুল সংখ্যক পুলিশ। 

রাত সাড়ে ১০টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সভাপতি ছাড়াও তিনটি সদস্য পদে বিএনপি–জামায়াত সমর্থক জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য (নীল) প্যানেল এবং সম্পাদক ছাড়াও চারটি সদস্যসহ বাকি সব পদেই এগিয়ে রয়েছেন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত (সাদা) প্যানেলের সদস্যরা। 

দুই প্যানেলের বাইরে সভাপতি পদে আরও প্রার্থী হয়েছিলেন এম কে রহমান ও ইউনুছ আলী আকন্দ। সম্পাদক পদে দুই প্যানেলের বাইরে ছিলেন নাহিদ সুলতানা যুথি ও ফরহাদ উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া। এ ছাড়া কোষাধ্যক্ষ পদে ছিলেন সাইফুল ইসলাম। 

আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেলের সহসম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, ‘সভাপতি ছাড়াও তিনটি সদস্য পদে বিএনপি–জামায়াত সমর্থক জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য (নীল) প্যানেল এবং সম্পাদক ছাড়াও চারটি সদস্যসহ বাকি সব পদে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত (সাদা) প্যানেলের সদস্যরা এগিয়ে রয়েছেন।’ 

এর আগে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার ভোট গ্রহণ শেষ হয়। নিয়ম অনুযায়ী রাতে ভোট গণনা শেষে ফল ঘোষণা করবে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। তবে সারা রাত আইনজীবীদের মধ্যে দফায় দফায় হট্টগোল ও মারামারির ঘটনা ঘটে। তাতে একজন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী আহত হন। 

পরে ভোট গণনা না করেই সম্পাদক পদে একজনকে বিজয়ী ঘোষণা করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান আবুল খায়ের। আর ব্যালট দিয়ে যায় পুলিশ হেফাজতে। আইনজীবী সমিতির ১৪টি পদের বিপরীতে এবার প্রার্থী ছিলেন ৩৩ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ৮৮৩ জন। তবে দুই দিনে ভোট দেন ৫ হাজার ৩১৯ জন আইনজীবী। 

পূর্বের ঘোষণা প্রত্যাহার 
ভোট গণনা ছাড়াই সম্পাদক পদে একজনকে বিজয়ী ঘোষণার বিষয়টি সম্পূর্ণ আইনানুগভাবে ভিত্তিহীন বলে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেন নির্বাচন পরিচালনা সাব কমিটির আহ্বায়ক। আজ শনিবার দুপুরে আবুল খায়ের সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিটি গণমাধ্যমে পাঠান ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। এতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচন ২০২৪-২৫ এর ‘সম্পাদক’ পদে ফলাফল বিষয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় আমার নামে প্রচারিত ঘোষণাটি আইনানুগভাবে ভিত্তিহীন। 

এতে আরও বলা হয়, একটি অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ভোট গণনার পূর্বেই দুঃখজনকভাবে বহিরাগত মাস্তান শ্রেণী কর্তৃক আমার ওপর চাপ সৃষ্টি করে তা লিখিত দিতে বাধ্য করা হয়। যদিও এটি অর্থহীন ঘোষণা, তবুও কূটতর্ক নিরসনের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট সকলকে তা উপেক্ষা করার জন্য অনুরোধ করা হলো। আর ভোট গণনা করেই ফলাফল ঘোষণা করা হবে বলে তাতে উল্লেখ করা হয়। 

কাজল গ্রেপ্তার, ৫ জন রিমান্ডে 
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভোট গণনার সময় মারামারির ঘটনায় করা মামলায় বিএনপি সমর্থিত প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ শনিবার সন্ধ্যা ৭টার পর পল্টনের চেম্বার থেকে তাকে সিআইডি গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায় বলে জানান তার জুনিয়র আইনজীবী আব্দদুল্লাহিল মারুফ ফাহিম। তিনি বলেন, সাড়ে ৮ টার পর তাকে শাহবাগ থানা থেকে ডিবিতে নেওয়া হয়।   

এর আগে ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনায় গতকাল শুক্রবার রাতে শাহবাগ থানায় মামলা করেন আহত সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুর রহমান সিদ্দিকী (সাইফ)। এতে সম্পাদক প্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথী ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ২০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৩০-৪০ জনকে আসামি করা হয়। পরে আইনজীবী উসমান চৌধুরী, কাজী বশীর আহম্মেদ, হাসানুজ্জামান, তরিকুল ইসলাম ও এনামুল হককে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করলে তাদের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। 

এদিকে গ্রেপ্তারের আগে বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপে স্বাধীন নির্বাচন সাব-কমিটি গঠন করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি করেন রুহুল কুদ্দুস কাজল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত