Ajker Patrika

বছরে ছয় কোটি টাকার জন্য ধ্বংস করা হয়েছে জাফলং

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বছরে ছয় কোটি টাকার জন্য ধ্বংস করা হয়েছে জাফলং

দেশের নদীগুলোর বিভিন্ন বালু ও পাথর মহাল থেকে খুব সামান্যই রাজস্ব আসে। অথচ সামান্য টাকার জন্য ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে এসব নদী। এতে চরম হুমকির মুখে পড়ছে জীববৈচিত্র্য। গুটিকয়েক ব্যবসায়ীদের জন্য এসব ধ্বংসযজ্ঞ মেনে নিচ্ছে সরকার ৷ গত ২০১৪ থেকে ১৯ পর্যন্ত ছয় বছরে সিলেটের পাথর মহালগুলো থেকে সরকার রাজস্ব অর্জন করেছে মাত্র ৩৮ কোটি ৫০ লাখ। বছরে মাত্র সাড়ে ছয় কোটি টাকার জন্য জাফলং-বিছানাকান্দির নদীগুলোকে ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

আজ সোমবার সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিশ্ব নদী দিবস-২০২২ উপলক্ষে ‘বালু-পাথর উত্তোলন ও দখল-দূষণে নদ-নদীর বিদ্যমান জীর্ণদশা এবং পরিবেশ সংকট’ বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠককে তিনি এসব কথা বলেন।

অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই গোল টেবিল বৈঠকে নদী রক্ষা ও এই সংক্রান্ত আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে অংশ নেন বিভিন্ন সংগঠনের পরিবেশ আন্দোলনকারী ও আঞ্চলিক প্রতিনিধিরা।

সরকারের থেকে এসব বালু ও পাথর মহালগুলো যারা ইজারা পান তারা কয়েকগুন অর্থ আয় করে থাকে এমনটা জানিয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা বলেন, ‘নদীকে কখনো বালু মহাল কখনো পাথর মহাল ঘোষণা করা হয়, কখনো আবার শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর হাতে নির্দ্বিধায় তুলে দিচ্ছে সরকার। নদী যে একটা লাইফ লাইন তা আমরা অনুধাবন করতে পারি না।’

এক হিসেবে দেশের বালু মহালগুলো থেকে সরকার রাজস্ব পায় ২৩৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা এমনটা দেখানো হয়েছে ৷ কিন্তু বিপরীতে বিগত ২০ বছরে নদী ও নদী সংলগ্ন অঞ্চল থেকে ১৩০-১৪০ ফুট গর্ত করে বালু-পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে কৃষিজমি, বাড়িঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কৃষিজমি ভেঙে প্রতিবছর ৫ হাজার টন শস্য কম উৎপাদিত হয়েছে। এই ক্ষেত্রে রাজস্বের বিপরীতে যে কৃষি অর্থনীতি থেকে দেশ বঞ্চিত হয়েছে সেটা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে আলোচনায়।

বেলার প্রধান নির্বাহী বলেন, সেচের যতটুকু পানি লাগে তার ২৫ ভাগ আসে নদী থেকে। যার মধ্যে ব্রহ্মপুত্র ৫১ ভাগ, পদ্মা ২৮ ও মেঘনা ১৪ ভাগের জোগান দেয়। নদীর ওপর ১৬.২ মিলিয়ন কৃষকের জীবন জীবিকা নির্ভর করে। জিডিপিতে কৃষির অবদান ১১.৬৩ শতাংশ, মৎসখাতের অবদান ৩.৬১ শতাংশ, নৌ-যোগাযোগের অবদান ০.৬৪ শতাংশ। খাবার পানির ১৮ শতাংশ নদী থেকে সংগ্রাহ করা হয়। এমন একটি দেশে নদীকে অস্বীকার করে কীভাবে উন্নয়ন সম্ভব। 

তিনি আরও বলেন, বালু মহাল আইনের ৫ নং বিধি অনুযায়ী কেউ একক সিদ্ধান্তে বালু মহাল ঘোষণা করতে পারেন না। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একটি জেলা কমিটি পরিবেশ ও সার্বিক ঝুঁকি বিষয়গুলো তদারকি করবে। তবে কমিটি নিজেদের দায়িত্ব পালন করেন না, উল্টো অভিযোগ দিলে দায়সারা রিপোর্ট দাখিল করেন। বালু ও পাথর কেন্দ্রিক অর্থনীতির জন্য শুধু মাত্র সিলেটে মারা গেছে ১০২ জন, আহত হয়েছে ৩৫ জন। প্রশাসন বলছে ৮১ জন মারা গেছে, আহত হয়েছে ২৫ জন।'

আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ, নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেনসহ আরও অনেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

মির্জা ফখরুলের কাছে অভিযোগ, ১৬ দিনের মাথায় ঠাকুরগাঁও থানার ওসি বদলি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত