মার্চ ফর গাজা
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ফিলিস্তিনিদের পক্ষে, ফিলিস্তিনিদের পাশে বাংলাদেশ। এটা বাংলাদেশের ঘোষিত রাষ্ট্রীয় নীতি। দেশের মানুষও মনে ধারণ করে এই নীতি। তাই ফিলিস্তিন যখনই আক্রান্ত হয়েছে, সরব হয়েছে এ দেশের মানুষ। তবে গতকাল শনিবার তার দেখা পাওয়া গেল ঢাকার রাজপথে। ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে অলিগলি থেকে প্রধান সড়কগুলোতে স্রোত নামে মানুষের। সবার গন্তব্য ছিল ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের চলমান বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে সেখানে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণকালের বৃহত্তম গণসমাবেশ।
‘মার্চ ফর গাজা’ শিরোনামে ঢাকায় গতকাল প্রতিবাদের আয়োজন করে প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট। কয়েকটি বড় রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন সংগঠন এতে একাত্মতা জানায়। দিনভর মিছিল-স্লোগান শেষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান যেন হয়ে ওঠে জনসমুদ্র। সেই সমুদ্র থেকে দাবি ওঠে স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার।
সমাবেশ থেকে ঘোষণাপত্রে ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার পথ উন্মুক্ত করার দাবি তোলা হয়। আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের পাঠ করা ঘোষণাপত্রে বলা হয়, পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী ভূমি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বাধ্যবাধকতা তৈরি, গণহত্যা বন্ধে কার্যকর ও সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়া জায়নবাদী ইসরায়েলের গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে।
সমাবেশ থেকে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্ত পুনর্বহাল, ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে করা সব চুক্তি বাতিল, রাষ্ট্রীয়ভাবে গাজায় ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা পাঠানো এবং জায়নবাদী কোম্পানির পণ্য বর্জনের নির্দেশনা দিতে আহ্বান জানানো হয়। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। সরকারি হিসাবে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত উপত্যকায় অন্তত ৫০ হাজার ৯৩৩ জনকে হত্যা করেছে দখলদার বাহিনী। অনেকে বিভিন্ন স্থাপনার ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ায় নিহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। আহতের সংখ্যাও ১ লাখ ১৬ হাজার ছাড়িয়েছে। হতাহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। একদিকে হামলা, অন্যদিকে আটকে দেওয়া হচ্ছে ত্রাণবাহী ট্রাক। একের পর এক হাসপাতাল গুঁড়িয়ে দেওয়ায় জরুরি চিকিৎসাও যেন পরিণত হয়েছে বিলাসিতায়।
‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গতকাল রাজধানী ঢাকার প্রায় প্রতিটি প্রবেশপথ ও প্রধান সড়ক বিক্ষোভমুখর ছিল। গণসমাবেশে ঢল নামে লাখো মানুষের। মিছিলগুলোতে পাশাপাশি ছিল বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা, এ যেন দুই দেহের এক আত্মার মেলবন্ধন। কর্মসূচিতে অংশ নেন সব শ্রেণি-পেশা ও বয়সের মানুষ।
বেলা ৩টায় কর্মসূচির সময় নির্ধারণ করা থাকলেও ভোর থেকে জড়ো হতে থাকে মানুষ। ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’; ‘তুমি কে আমি কে, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’; ‘গাজা উই আর উইথ ইউ’; ‘স্টপ জেনোসাইড ইন গাজা’ স্লোগানে মুখর জনসমাগমে ঠাঁই ছিল না তিল পরিমাণ। দুপুরের আগেই পুরো উদ্যান পরিণত হয় জনসমুদ্রে। ছড়িয়ে পড়ে আশপাশ এলাকায়। সোহরাওয়ার্দীতে জায়গা না পেয়ে রমনা পার্কসহ আশপাশ এলাকায় অবস্থান নেন অনেকে। এতে অংশ নেয় নারী-শিশুও। অংশ নেন দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা।
সব বয়সী মানুষের এই গণজমায়েতে সবার দৃষ্টি কাড়ে একদল শিশু। তারা কেউ মাথায় ব্যান্ডেজ, কেউ হাত-পা বেঁধে, কেউবা হাতে করে নিয়ে এসেছিল ছোট কফিনে মোড়ানো ‘শিশুর লাশ’। এভাবেই ‘আহত ফিলিস্তিনি’ সাজে মিছিলে অংশ নেয় সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠী নামক একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিশুশিল্পীরা। শিশুরা সাদামাটা অভিনয়ের মাধ্যমে তুলে ধরে গাজার শিশুদের যন্ত্রণাদায়ক বাস্তবতা। এক শিশু ‘বাবা’ সেজে কাঁধে করে নিয়ে আসে নিজের সন্তানের প্রতীকী মরদেহ। এসব দৃশ্য দেখে অনেক পথচারী আবেগে কেঁপে ওঠেন, কেউ কেউ ফেলেছেন চোখের পানি। আবার এমন দৃশ্যে কেউবা গগনবিদারী চিৎকারে দিয়েছেন ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবর’ স্লোগান।
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যা, ট্রাম্প প্রশাসনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা এবং আরব বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধানদের হামলায় নিশ্চুপ থাকার ঘটনা নিয়ে প্রদর্শনী করেছেন কয়েকজন ছাত্র। প্রদর্শনীতে দেখা যায়, নেতানিয়াহুর মুখোশ পরা একজন রক্তের বাটি হাতে নিয়ে হাঁটছেন, যাঁর পুরো শরীরে ফিলিস্তিনি মানুষের রক্ত। তাঁর পাশে ট্রাম্পের মুখোশ পরা একজন নেতানিয়াহুকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর শরীরজুড়ে রক্তের দাগ। অন্যদিকে আরব নেতারা তাঁদের দুজনের আশপাশে ঘোরাফেরা করছেন এবং তাঁদের হাতে চুমু খাচ্ছেন, আনুগত্য প্রকাশ করছেন।
ইসরায়েলের গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে নিশ্চিত করতে হবে জানিয়ে ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামায় মাহমুদুর রহমান বলেন, ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার পথ উন্মুক্ত করতে হবে। কারণ, এ মুহূর্তে বিশ্বব্যবস্থা যে ন্যায়ের মুখোশ পরে রয়েছে, গাজার ধ্বংসস্তূপে সেই মুখোশ খসে পড়েছে।
মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা সকলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বয়কট করব প্রত্যেক সেই পণ্য, কোম্পানি ও শক্তিকে; যারা ইসরায়েলের দখলদারত্বকে টিকিয়ে রাখে। আমরা আমাদের সমাজ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রস্তুত করব, যারা ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সকল প্রতীক ও নিদর্শনকে সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার করবে।’
সমাবেশে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘বাংলাদেশের সকল দল, মত, চিন্তা-দর্শনের মানুষ মজলুম ফিলিস্তিন ও মজলুম গাজার পাশে রয়েছে, সহাবস্থান করছে। এক কাতারে দাঁড়িয়ে আজ বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিতে চাই, আমাদের মধ্যে বিভিন্ন চিন্তা, মতপার্থক্য, ভিন্নতা থাকতে পারে; কিন্তু মজলুম ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা, ভূমির অধিকারের দাবিতে আমরা বাংলাদেশের মানুষ ধর্ম, বর্ণনির্বিশেষে আমরা প্রত্যেকে তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি।’
ধর্মীয় আলোচক মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, ‘আজকের এই মহাসমুদ্র, জনসমুদ্র ফিলিস্তিনের প্রতি, আল আকসার প্রতি বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। ভৌগোলিকভাবে আমরা ফিলিস্তিন থেকে অনেক দূরে হতে পারি, কিন্তু আজকের এই জনসমুদ্র প্রমাণ করে, আমাদের হৃদয়ে বাস করে একেকটা ফিলিস্তিন, আমাদের হৃদয়ে বাস করে একেকটা গাজা, আমাদের হৃদয়ে বাস করে একেকটা আল কুদস।’
পরে ফিলিস্তিনের জনগণের জন্য মোনাজাত পরিচালনা করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আব্দুল মালেক। বিকেল ৪টা নাগাদ সমাবেশের সমাপ্তি ঘোষণা করেন তিনি।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মামুনুল হক, ইসলামিক বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী, শায়খ আহমাদুল্লাহ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির ফয়জুল করীম, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর প্রমুখ।
ফিলিস্তিনিদের পক্ষে, ফিলিস্তিনিদের পাশে বাংলাদেশ। এটা বাংলাদেশের ঘোষিত রাষ্ট্রীয় নীতি। দেশের মানুষও মনে ধারণ করে এই নীতি। তাই ফিলিস্তিন যখনই আক্রান্ত হয়েছে, সরব হয়েছে এ দেশের মানুষ। তবে গতকাল শনিবার তার দেখা পাওয়া গেল ঢাকার রাজপথে। ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে অলিগলি থেকে প্রধান সড়কগুলোতে স্রোত নামে মানুষের। সবার গন্তব্য ছিল ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের চলমান বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে সেখানে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণকালের বৃহত্তম গণসমাবেশ।
‘মার্চ ফর গাজা’ শিরোনামে ঢাকায় গতকাল প্রতিবাদের আয়োজন করে প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট। কয়েকটি বড় রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন সংগঠন এতে একাত্মতা জানায়। দিনভর মিছিল-স্লোগান শেষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান যেন হয়ে ওঠে জনসমুদ্র। সেই সমুদ্র থেকে দাবি ওঠে স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার।
সমাবেশ থেকে ঘোষণাপত্রে ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার পথ উন্মুক্ত করার দাবি তোলা হয়। আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের পাঠ করা ঘোষণাপত্রে বলা হয়, পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী ভূমি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বাধ্যবাধকতা তৈরি, গণহত্যা বন্ধে কার্যকর ও সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়া জায়নবাদী ইসরায়েলের গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে।
সমাবেশ থেকে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্ত পুনর্বহাল, ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে করা সব চুক্তি বাতিল, রাষ্ট্রীয়ভাবে গাজায় ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা পাঠানো এবং জায়নবাদী কোম্পানির পণ্য বর্জনের নির্দেশনা দিতে আহ্বান জানানো হয়। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। সরকারি হিসাবে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত উপত্যকায় অন্তত ৫০ হাজার ৯৩৩ জনকে হত্যা করেছে দখলদার বাহিনী। অনেকে বিভিন্ন স্থাপনার ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ায় নিহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। আহতের সংখ্যাও ১ লাখ ১৬ হাজার ছাড়িয়েছে। হতাহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। একদিকে হামলা, অন্যদিকে আটকে দেওয়া হচ্ছে ত্রাণবাহী ট্রাক। একের পর এক হাসপাতাল গুঁড়িয়ে দেওয়ায় জরুরি চিকিৎসাও যেন পরিণত হয়েছে বিলাসিতায়।
‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গতকাল রাজধানী ঢাকার প্রায় প্রতিটি প্রবেশপথ ও প্রধান সড়ক বিক্ষোভমুখর ছিল। গণসমাবেশে ঢল নামে লাখো মানুষের। মিছিলগুলোতে পাশাপাশি ছিল বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা, এ যেন দুই দেহের এক আত্মার মেলবন্ধন। কর্মসূচিতে অংশ নেন সব শ্রেণি-পেশা ও বয়সের মানুষ।
বেলা ৩টায় কর্মসূচির সময় নির্ধারণ করা থাকলেও ভোর থেকে জড়ো হতে থাকে মানুষ। ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’; ‘তুমি কে আমি কে, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’; ‘গাজা উই আর উইথ ইউ’; ‘স্টপ জেনোসাইড ইন গাজা’ স্লোগানে মুখর জনসমাগমে ঠাঁই ছিল না তিল পরিমাণ। দুপুরের আগেই পুরো উদ্যান পরিণত হয় জনসমুদ্রে। ছড়িয়ে পড়ে আশপাশ এলাকায়। সোহরাওয়ার্দীতে জায়গা না পেয়ে রমনা পার্কসহ আশপাশ এলাকায় অবস্থান নেন অনেকে। এতে অংশ নেয় নারী-শিশুও। অংশ নেন দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা।
সব বয়সী মানুষের এই গণজমায়েতে সবার দৃষ্টি কাড়ে একদল শিশু। তারা কেউ মাথায় ব্যান্ডেজ, কেউ হাত-পা বেঁধে, কেউবা হাতে করে নিয়ে এসেছিল ছোট কফিনে মোড়ানো ‘শিশুর লাশ’। এভাবেই ‘আহত ফিলিস্তিনি’ সাজে মিছিলে অংশ নেয় সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠী নামক একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিশুশিল্পীরা। শিশুরা সাদামাটা অভিনয়ের মাধ্যমে তুলে ধরে গাজার শিশুদের যন্ত্রণাদায়ক বাস্তবতা। এক শিশু ‘বাবা’ সেজে কাঁধে করে নিয়ে আসে নিজের সন্তানের প্রতীকী মরদেহ। এসব দৃশ্য দেখে অনেক পথচারী আবেগে কেঁপে ওঠেন, কেউ কেউ ফেলেছেন চোখের পানি। আবার এমন দৃশ্যে কেউবা গগনবিদারী চিৎকারে দিয়েছেন ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবর’ স্লোগান।
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যা, ট্রাম্প প্রশাসনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা এবং আরব বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধানদের হামলায় নিশ্চুপ থাকার ঘটনা নিয়ে প্রদর্শনী করেছেন কয়েকজন ছাত্র। প্রদর্শনীতে দেখা যায়, নেতানিয়াহুর মুখোশ পরা একজন রক্তের বাটি হাতে নিয়ে হাঁটছেন, যাঁর পুরো শরীরে ফিলিস্তিনি মানুষের রক্ত। তাঁর পাশে ট্রাম্পের মুখোশ পরা একজন নেতানিয়াহুকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর শরীরজুড়ে রক্তের দাগ। অন্যদিকে আরব নেতারা তাঁদের দুজনের আশপাশে ঘোরাফেরা করছেন এবং তাঁদের হাতে চুমু খাচ্ছেন, আনুগত্য প্রকাশ করছেন।
ইসরায়েলের গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে নিশ্চিত করতে হবে জানিয়ে ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামায় মাহমুদুর রহমান বলেন, ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার পথ উন্মুক্ত করতে হবে। কারণ, এ মুহূর্তে বিশ্বব্যবস্থা যে ন্যায়ের মুখোশ পরে রয়েছে, গাজার ধ্বংসস্তূপে সেই মুখোশ খসে পড়েছে।
মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা সকলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বয়কট করব প্রত্যেক সেই পণ্য, কোম্পানি ও শক্তিকে; যারা ইসরায়েলের দখলদারত্বকে টিকিয়ে রাখে। আমরা আমাদের সমাজ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রস্তুত করব, যারা ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর সকল প্রতীক ও নিদর্শনকে সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার করবে।’
সমাবেশে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘বাংলাদেশের সকল দল, মত, চিন্তা-দর্শনের মানুষ মজলুম ফিলিস্তিন ও মজলুম গাজার পাশে রয়েছে, সহাবস্থান করছে। এক কাতারে দাঁড়িয়ে আজ বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিতে চাই, আমাদের মধ্যে বিভিন্ন চিন্তা, মতপার্থক্য, ভিন্নতা থাকতে পারে; কিন্তু মজলুম ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা, ভূমির অধিকারের দাবিতে আমরা বাংলাদেশের মানুষ ধর্ম, বর্ণনির্বিশেষে আমরা প্রত্যেকে তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি।’
ধর্মীয় আলোচক মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, ‘আজকের এই মহাসমুদ্র, জনসমুদ্র ফিলিস্তিনের প্রতি, আল আকসার প্রতি বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। ভৌগোলিকভাবে আমরা ফিলিস্তিন থেকে অনেক দূরে হতে পারি, কিন্তু আজকের এই জনসমুদ্র প্রমাণ করে, আমাদের হৃদয়ে বাস করে একেকটা ফিলিস্তিন, আমাদের হৃদয়ে বাস করে একেকটা গাজা, আমাদের হৃদয়ে বাস করে একেকটা আল কুদস।’
পরে ফিলিস্তিনের জনগণের জন্য মোনাজাত পরিচালনা করেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আব্দুল মালেক। বিকেল ৪টা নাগাদ সমাবেশের সমাপ্তি ঘোষণা করেন তিনি।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মামুনুল হক, ইসলামিক বক্তা মিজানুর রহমান আজহারী, শায়খ আহমাদুল্লাহ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির ফয়জুল করীম, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর প্রমুখ।
দিনাজপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, খানসামা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাদের সংবর্ধনা দিতে বাধ্যতামূলকভাবে শিক্ষকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
৫ ঘণ্টা আগেচুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চলছে চরম জনবলসংকট। চিকিৎসকের অর্ধেকের বেশি পদই খালি। অন্যদিকে ১০০ শয্যার এই হাসপাতালে প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকছে তিন শতাধিক। ফলে সেবাদান কার্যক্রম চলছে খুঁড়িয়ে।
৫ ঘণ্টা আগেজলাশয় ও ফসলি জমি ভরাট করে আবাসন প্রকল্প করছে একটি চক্র। এতে বিপাকে পড়েছেন পাশের জমির মালিকেরা। ইতিমধ্যে চক্রটি বেশ কিছু জমি ভরাটও করেছে। ঝুলিয়ে দিয়েছে প্লট আকারে জমি বিক্রির সাইনবোর্ডও। এ দৃশ্য গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার আমতলা এলাকার।
৬ ঘণ্টা আগেযশোরের শার্শা উপজেলার নাভারণে অবস্থিত ফাতেমাতুজ্জোহরা কওমি মাদ্রাসায় মেয়েদের শোয়ার ঘরে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শনিবার (১২ এপ্রিল) স্থানীয় প্রশাসন ও কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
৮ ঘণ্টা আগে