Ajker Patrika

শ্রমের যথাযথ মজুরি চান শ্রমিকেরা 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০১ মে ২০২৩, ১৫: ৪৯
শ্রমের যথাযথ মজুরি চান শ্রমিকেরা 

আজ মহান মে দিবস। শ্রমিকের জন্য বরাদ্দ বিশেষ এই দিনেও অধিকারের সংগ্রামে ব্যস্ত তাঁরা। আট ঘণ্টা কাজের দাবি পূরণ হয়নি এখনো। অতিরিক্ত কাজের মজুরি পাচ্ছেন না। প্রাপ্য ছুটি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকেরা পাচ্ছেন না ন্যায্য ক্ষতিপূরণ। এমন অবস্থায় অবিলম্বে শ্রমিকের জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণসহ নানা দাবিতে সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও শ্রমিক সংগঠন।

আজ সোমবার রাজধানীর পল্টন ও প্রেসক্লাব এলাকায় মে দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন দল ও সংগঠনের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব সমাবেশে শ্রমিকসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন রাজনৈতিক দল ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।

দুপুরে পল্টন মোড়ে শ্রমিক সমাবেশের আয়োজন করে গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র। সমাবেশে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘পৃথিবীর সব শ্রমিকের একটাই আওয়াজ, আমাদের ওপর অত্যাচার চলবে না। এই দিন শ্রমিকের সংগ্রামের শপথ নেওয়ার দিবস। আজকে ১০ টাকা বেতন বাড়ে কিন্তু জিনিসের দাম বাড়ে ৫০ টাকা। এতে শ্রমিকের কোনো লাভ হয় না। শ্রমিকদের মজুরির দাসত্ব থেকে মুক্ত করতে হবে।’

শ্রমিকনেতা ও সিপিবির সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান খান বলেন, ‘শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করতে আমাদের নতুন করে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধভাবে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নিয়ে ধর্মঘট, হরতাল, সমাবেশ করতে পারি, তাহলে অবশ্যই আমাদের দাবি বাস্তবায়িত হবে।’

গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মন্টু ঘোষ বলেন, ‘শ্রমিকেরা ১০ ঘণ্টা কাজ করেন। কোথাও কোথাও ১২ ঘণ্টাও কাজ করেন। তাও তাঁরা মজুরি ঠিকমতো পান না। তাঁদের ন্যূনতম ২৫ হাজার টাকা মজুরি দিতে হবে।’

পল্টনে গৃহশ্রমিকদের শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্তি, আইএলও কনভেনশন ১৮৯ ও ১৯০ অনুসমর্থন এবং গৃহশ্রমিকদের সার্বিক সুরক্ষা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক। এ ছাড়া বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে শ্রমিক সমাবেশ করেছে ইসলামি শ্রমিক আন্দোলন। সমাবেশ শেষ শোভাযাত্রা বের করে তারা।

রাজধানীর পল্টন ও প্রেসক্লাব এলাকায় মে দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন দল ও সংগঠনের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছেএদিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণসহ আট দফা দাবি জানিয়েছে প্রাইভেট কার চালক কল্যাণ ফাউন্ডেশন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে নিদারুণ দুঃখ-কষ্টের মধ্যে তাঁরা দিন কাটাচ্ছেন বলে সমাবেশে জানান বক্তারা। একই স্থানে ন্যূনতম ২৬ হাজার টাকা মজুরিসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন।

শ্রমিক-কর্মচারীদের ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার, ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা ও ধর্মঘটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার অপচেষ্টা বন্ধের দাবি জানিয়েছে ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টার ও গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন। সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সুলতানা বেগম বলেন, ‘পাঁচ বছর পর পর মজুরি বোর্ড গঠন করে ন্যূনতম মজুরি পুনর্নির্ধারণের আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকলেও মজুরিকাঠামো গঠনের কোনো দৃশ্যমান তৎপরতা নেই।’

অন্যদিকে দুপুরে প্রেসক্লাবের সামনে তিন দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্মচারী কল্যাণ সমিতি। সমিতির ঢাকা বিভাগের সভাপতি মো. মজিবুর রহমান বলেন, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রহরীরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। দিনে স্কুলের দাপ্তরিক কাজ, রাতে পাহারা দিতে হচ্ছে তাদের। বিগত ১০ বছর ধরে আমরা এই ডিউটি করছি।’

এ ছাড়া বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, কর্মজীবী নারী, বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগ, শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশের জাতীয় শ্রমিক জোট, বাংলাদেশ লেবার কংগ্রেস, বাংলাদেশ ফ্রি ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস, প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শ্রমিক সংগঠন শ্রমিকসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দাবি নিয়ে সমাবেশ, মিছিল ও শোভাযাত্রা করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত