Ajker Patrika

দেরিতে সীমান্ত বন্ধে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট প্রবেশের শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২১, ১৬: ৪৩
দেরিতে সীমান্ত বন্ধে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট প্রবেশের শঙ্কা

ঢাকা: প্রতিবেশী ভারতের করোনার পরিস্থিতি যতই ভয়াবহরূপ নিচ্ছে, ততই শঙ্কা বাড়ছে বাংলাদেশে। যদিও দেশটির ভ্যারিয়েন্টের প্রবেশ ঠেকাতে শতভাগ মাস্ক ব্যবহার ও দুই সপ্তাহের জন্য সীমান্ত যোগাযোগ বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছে সীমান্ত বন্ধ দেরিতে করায় ভ্যারিয়েন্ট আসার শঙ্কা আছে। যেকোন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তত থাকতে হবে।

গতকাল মঙ্গলবার ভারতে তিন লাখ ৬৩ হাজার মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। প্রাণহানি দুই লাখ ছাড়িয়েছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি হবে বলে আশঙ্কা দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলোর। অবস্থা আরও সংকটাপন্ন করে তুলেছে মেডিকেল অক্সিজেন, চিকিৎসাযন্ত্র, নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) ও ওষুধের অভাব।

দেশটির এমন নাজুক অবস্থায় সীমান্ত বন্ধ হলেও ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশে প্রবেশের শঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, কোনভাবে যদি সেটি দেশে প্রবেশ করে, নিমিষেই বাংলাদেশের পরিস্থিতি তাদের চেয়েও ভয়াবহ রূপ নিবে।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, কোনভাবেই যাতে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য আরও কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সময় এসেছে। এজন্য সবার আগে প্রাধান্য দিতে হবে স্বাস্থ্যবিধি পালনে। কেউ যাতে মাস্ক ছাড়া ঘরের বাহিরে বের না হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। নতুবা ভারতের মতো একই পরিস্থিতির জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপত্র ডা. রোবেদ আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভারতের ভ্যারিয়েন্টের প্রবেশ ঠেকাতে সীমান্ত চলাচল বন্ধসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সেগুলো যদি ঠিকভাবে কার্যকর করা হয়, তাহলে সাময়িকভাবে হয়তো ঠেকানো যাবে, তবে স্থায়ীভাবে নয়। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

ডা. রোবেদ আমিন বলেন, বাংলাদেশে যখন সংক্রমণ পরিস্থিতি ঊর্ধ্বমুখী ছিল তখন পর্যটনকেন্দ্র, সভা সমাবেশে বাধা ছিল না। কিন্তু তিন সপ্তাহের কঠোর বিধি নিষেধের ফলে এই মুহূর্তে কিছুটা কমেছে। অন্যদিকে ভারতে সম্প্রতি নির্বাচন হলো, মেলা হলো। এতে করে করোনা বিস্তারের সুযোগ পেয়েছে। অনেক বেশি ট্রান্সমিশনের কারণে মৃত্যুও বেশি ঘটছে। আমরা যদি এখনই সাবধান না হই তাহলে একই পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে। বিশেষ করে একবার যদি তাদের ডাবল ও ট্রিপল ভ্যারিয়েন্ট চলে আসে, তাহলে পরিস্থিতি সামাল দেয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে।

গত মার্চ মাস থেকে দেশে সংক্রমণ টানা ঊর্ধ্বমুখী ছিল। একদিনে মৃত্যু ১১২ জনে উঠেছিল। হাসপাতালগুলোতে আইসিইউয়ের পাশাপাশি চরম সংকট দেখা দেয় সাধারণ শয্যার। বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে একটি আইসিইউ না পেয়ে পথেই মারা যান অনেক রোগী। এমনকি সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল অক্সিজেনেরও। তবে বর্তমানে আক্রান্তের হার কমায় রোগীদের চাপ কমেছে। তবে ভারত থেকে অক্সিজেন আসা বন্ধ হওয়ায় আবারও অক্সিজেন সংকটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পৌঁছালে পরিস্থিতি ভয়ংকর রূপ নিবে। তবে ইতিমধ্যে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট দেশে প্রবেশ করেছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গঠিত পাবলিক হেলথ অ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য আবু জামিল ফয়সল।

সীমান্ত বন্ধের বিষয়ে আবু জামিল ফয়সল বলেন, পশ্চিমবঙ্গে অনেক আগেই অতি প্রাণঘাতী ভ্যারিয়েন্টটি শনাক্ত হয়েছে। এমনতো না যে, সেখানে নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়া মাত্র আমরা সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছি। বরং অনেক পরে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সংক্রমণের মধ্যেই বহুদিন ধরে স্থলপথে পণ্যবাহী ট্রাক এসেছে। কিন্তু তাদের আইসোলেট করা হয়নি। বর্তমানে যারাই আসছেন তাদের অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে দ্রুত করোনা পরীক্ষা করাতে হবে।

তবে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) বলছে, দেশে এখনও ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়নি। তবে যেকোন সময় প্রবেশ করতে পারে।

জানতে চাইলে আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আমরা এরইমধ্যে ভারত থেকে আসা বেশ কয়েকজনের নমুনা সংগ্রহ করেছি। পরীক্ষায় ডাবল কিংবা ট্রিপল ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। কিন্তু আসবে না যে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মানতে পারলে এটি ঠেকানো যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কুয়েটে ক্লাস বর্জন নিয়ে শিক্ষক সমিতিতে মতবিরোধ, এক শিক্ষকের পদত্যাগ

এনবিআর বিলুপ্তির জেরে প্রায় অচল দেশের রাজস্ব কর্মকাণ্ড

দুটি নোবেলের গৌরব বোধ করতে পারে চবি: প্রধান উপদেষ্টা

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রশ্নে যে প্রতিক্রিয়া জানাল যুক্তরাষ্ট্র

২ ম্যাচ খেলেই মোস্তাফিজ কীভাবে ৬ কোটি রুপি পাবেন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত