Ajker Patrika

সড়কের জায়গায় মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট, ভেঙে দিল প্রশাসন

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
সড়কের জায়গায় মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট, ভেঙে দিল প্রশাসন

সড়ক বিভাগের জায়গা দখল করে তৈরি করা হয় মার্কেট। নামকরণ করা হয় মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট। সামনে বড় সাইনবোর্ড লাগিয়ে পেছনে ছোট ছোট টিনের খুপরি ঘর তৈরি করে ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দেওয়া হয়। কয়েকটি কক্ষে স্থান দেওয়া হয় পাহারাদারদের। যারা পরিবার পরিজন নিয়ে অস্থায়ীভাবে বসবাস করতেন এসব দোকান ঘরে।

নোয়াখালী হাতিয়ার জাহাজমারা-নলচিরা প্রধান সড়কের পাশে বুড়িরচর ইউনিয়নের বড়পোল এলাকার বিশাল সেই মার্কেটটি আজ সোমবার সকালে ভেঙে দেওয়া হয়। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সকাল থেকে প্রায় ৫০ জন শ্রমিক ৩ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে মার্কেটটি সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পেলেন। দোকানের পরিত্যক্ত টিন ও কাঠের মালামাল গুলো গাড়িতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ওচখালী কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। 

৩ ঘণ্টার এই উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে প্রধান সড়কে তীব্র যানজট লেগে যায়। প্রায় সহস্রাধিক উৎসুক জনতা তা দেখতে ভিড় করেন। অনেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও শ্রমিকদের সঙ্গে উচ্ছেদ অভিযানের কাজে সহযোগিতা করেন। উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে তিনটি বড় গাড়ি দিয়ে দোকান ঘরের মালামাল অন্যত্র নিয়ে রাখা হয়।

এর আগে সকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট দোকান ঘর থেকে সবাইকে সরে যেতে বলেন। দোকানের মালামাল সরিয়ে নেওয়ার জন্য ১০ মিনিট সময়ও দেওয়া হয়। সবাই মালামাল নিয়ে চলে গেলে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়।  

এ সময় উপস্থিত ছিলেন হাতিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বায়েজীদ বিন আখন্দ, সড়ক বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শওকত আজিজ, হাতিয়া থানার উপপরিদর্শক শুক্কুর আলীসহ বিভিন্ন দপ্তরের ২০-২৫ জন সদস্য। 

মার্কেটেরে নাম মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট দেওয়ায় কেউ ভয়ে কথা বলেননি বলে জানান স্থানীয়রাস্থানীয়রা জানায়, কয়েক মাস আগে স্থানীয় বুড়িরচর ইউনিয়নের জোড়খালী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহজাহান ভুঞা এই মার্কেটটি গড়ে তোলেন। সম্পূর্ণ সড়ক ও জনপথের রাস্তার পাশে তৈরি করা হয় এই মার্কেট। কয়েক দিন পর পর একটু একটু করে প্রায় ৩০টি রুমের বিশাল মার্কেট তৈরি করে পেলেন।  মার্কেটেরে নাম মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট দেওয়ায় কেউ ভয়ে কথা বলেননি। প্রশাসনেরও অনেকে এড়িয়ে গেছেন কৌশলে। 

এদিকে শাহাজাহান ভুঞা ঢাকায় অবস্থান করায় কথা হয় তাঁর প্রতিনিধি মিরাজ উদ্দিনের সঙ্গে। মিরাজ এই মার্কেটের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। মিরাজ জানান, তাদের মালিকানা জায়গার ওপর দিয়ে সড়ক বিভাগের এই রাস্তাটি যায়। রাস্তার দুপাশের জায়গা তাঁদের। এর আগে সড়ক বিভাগ উচ্ছেদের ব্যাপারে চিঠি দিলে তাঁরা সিভিল আদালতে মামলা করেন। মামলা চলাকালে কীভাবে উচ্ছেদ অভিযান করা হলো তা তাঁর বোধগম্য নয় বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে নোয়াখালী সড়ক বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শওকত আজিজ বলেন, সড়ক বিভাগের এই জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার জন্য জেলা প্রশাসকের সহযোগিতা চাওয়া হয়। সে মোতাবেক হাতিয়া সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দায়িত্ব দেওয়া হয়। আজ অভিযান চালিয়ে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত