Ajker Patrika

চকরিয়ায় বন্যায় কৃষিতে ৭৩ কোটি টাকার ক্ষতি

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২৩, ১৯: ০৩
Thumbnail image

অতিবৃষ্টি ও উজানে ঢলে সৃষ্ট বন্যায় কক্সবাজারের চকরিয়ায় কৃষিতে ক্ষতি হয়েছে ৭৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আজ সোমবার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এই তথ্য জানায়। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের তথ্য পর্যালোচনা করে এ ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা হয়। 

তথ্য মতে, চলতি আমন মৌসুমে বন্যার প্রভাবে উপজেলার চার হাজার ৭১ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে দুই হাজার ২৪৫ হেক্টর আমন খেত, ৫১২ হেক্টর আমনের বীজতলা, আউশ ৭১২ হেক্টর ও ৬০২ হেক্টর জমির শাক–সবজির পানিতে নষ্ট হয়েছে। সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ অন্তত ৭৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চকরিয়া উপজেলায় আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। এর আগে আউশ মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল এক হাজার ১৬০ হেক্টর। বন্যার আগে সাত হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আমনের চারা রোপণ করা হয়েছিল। বন্যায় উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ৬৪ হাজার কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তার কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। 

চকরিয়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ফসল। ছবি: আজকের পত্রিকামাঠপর্যায়ের চাষিরা জানান, বন্যার কারণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কৃষি বিভাগের করা হিসেবে দ্বিগুণ। আমন, আউশ, আমনের বীজতলা ও শাকসবজির খেত বেশি ক্ষতি হয়েছে। সদ্য রোপণ করা আমনের চারাগাছ, আমনের বীজতলা ও আউশের ধানের ছড়া পানিতে পচে গেছে। এ ছাড়া খেতে নানা প্রজাতির সবজি জমিতে বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে নষ্ট হয়েছে। 

কাকারা ইউনিয়নের প্রপার কাকারা কৃষক আলী হোছাইন বলেন, ‘এক একর জমিতে আমনের চারা রোপণ করেছিলাম। রোপণ করার ১৫ দিনের মাথায় বন্যার পানিতে তলিয়ে সব চারা পচে গেছে। এখন নতুন করে আমনের চারা রোপণ ছাড়া কোনো উপায় নেই। কিন্তু চারা কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না।’ 

পৌরসভার আমানপাড়ার ফরিদুল আলম বলেন, ‘দুই একর জমিতে শসা, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, করলা ও বরবটিসহ কয়েক জাতের সবজি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া তিন জাতের শাকও ছিল। এতে আমার তিন লাখ ৮০ হাজার টাকার অধিক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় পথে বসেছি।’ 

চকরিয়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ফসল। ছবি: আজকের পত্রিকাঢেমুশিয়ার আম্মারডেরার কৃষক জাফর আলম বলেন, ‘অতিবৃষ্টির সময় চোয়ারফাঁড়ি ও ছয় কুড়িটিক্কাপাড়া এলাকার স্লুইসগেটে খুলে দেওয়ার জন্য আমরা দাবি তুলে ছিলাম। কিন্তু রাতে অস্ত্র নিয়ে পাহারা দিয়ে রেখেছিল একটি প্রভাবশালী মহল। মূলত পানি বের হতে না পারায় আমরা বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি।’ 

এ বিষয়ে চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এম নাসিম হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এবার বন্যায় কৃষকের বেশি ক্ষতি হয়েছে। আমরা মাঠপর্যায় থেকে হিসাব করে পেয়েছি প্রায় ৭৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকার মতো ফসলের ক্ষতি হয়েছে। আর্থিক ক্ষতির বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ইতিমধ্যে অবগত করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত