Ajker Patrika

থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র বেচাকেনায় কনস্টেবলের জড়িত থাকার কথা জানাল পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক ,চট্টগ্রাম
মো. রিয়াদ। ছবি: সংগৃহীত
মো. রিয়াদ। ছবি: সংগৃহীত

থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র বেচাকেনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার পুলিশ কনস্টেবল মো. রিয়াদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রিয়াদ ছাড়া আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল শুক্রবার তাঁদের আদালতে তোলার পর বিষয়টি জানাজানি হয়।

গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন আবদুল গণি, আবু বক্কর, ফরহাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান ও মো. ইসহাক। তাঁরা কনস্টেবল রিয়াদের সহযোগী বলে জানিয়েছে পুলিশ। থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র বেচাকেনায় চক্রটি জড়িত বলে পুলিশ জানিয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা থানার কাঠগড় ও বাকলিয়া এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও সাতটি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। কনস্টেবল রিয়াদ চাঁদপুর জেলা পুলিশে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়। গ্রেপ্তারের পর তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

গতকাল শুক্রবার (২১ মার্চ) বিকেলে আদালতে হাজির করা হয় গ্রেপ্তার ছয় আসামিকে। তাঁদের মধ্যে পুলিশ কনস্টেবল রিয়াদ, আবু বক্কর ও মোস্তাফিজুর রহমান চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর সিদ্দিকের আদালতে অস্ত্র কেনাবেচায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। আসামি আবদুল গণি ও ফরহাদ হোসেনের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন একই আদালত। আরেক আসামি ইসহাক জবানবন্দি দেননি। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন বলেন, পতেঙ্গা থানার পুলিশ অস্ত্র, গুলিসহ গ্রেপ্তার ছয় আসামিকে আদালতে হাজির করে। তাঁদের মধ্যে তিনজন জবানবন্দি দেন। বাকি দুজনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।

পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক তথ্যমতে, উদ্ধার হওয়া অস্ত্র পুলিশের। জেলার লোহাগাড়া থানা থেকে এগুলো গত আগস্টে লুট হয়েছিল। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।

নগরীর পতেঙ্গায় অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের ঘটনায় নগরীর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আফতাব হোসেন বাদী হয়ে পতেঙ্গা থানায় মামলা করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে চাঁদপুরে কর্মরত কনস্টেবল রিয়াদকে জিজ্ঞাসাবাদকালে দীর্ঘদিন অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র কেনাবেচায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর সঙ্গে জড়িত চক্রের বাকি পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নগরীর পতেঙ্গার কাঠগড় এলাকায় আসামি আবদুল গণির কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।

তাঁদের দেওয়া তথ্যমতে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর নগরীর আটটি থানা ও আটটি ফাঁড়ি লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। ওই সময় ৮১৩টি অস্ত্র এবং ৪৪ হাজার ৩২৪টি গুলি লুট হয়।

গত ৩ মার্চ চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় গণপিটুনিতে জামায়াত কর্মী আবু ছালেক ও মোহাম্মদ নেজামের মৃত্যুর পর ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ যে পিস্তলটি উদ্ধার করেছে, সেটি নগরীর কোতোয়ালি থানা থেকে লুট হওয়া। হত্যার আগে ওই পিস্তল দিয়ে গুলি ছুড়েছিলেন নিহত ব্যক্তিদের একজন নেজাম উদ্দিন। চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুল ইসলাম ৬ মার্চ দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত