Ajker Patrika

নিষেধাজ্ঞা শেষ, সাগরে ছুটছেন হাতিয়ার জেলেরা

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২৩, ১৩: ২৩
Thumbnail image

৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্রে মাছ ধরতে ছুটছেন নোয়াখালীর হাতিয়ার জেলেরা। আজ সোমবার থেকে মাছ ধরতে হাতিয়ার প্রায় ৪২টি ছোট-বড় ঘাট থেকে মাছ শিকারে নামছেন লক্ষাধিক জেলে। আজ সকালে বিভিন্ন ঘাটে গিয়ে দেখা যায় অনেকটা জেলেশূন্য ঘাটগুলো। দু-একটি ফিশিং ট্রলার ঘাটে আছে। তারাও সব শেষ প্রস্তুতি সম্পন্ন করে নিচ্ছে সাগরে যাওয়ার জন্য।

সামুদ্রিক জলসীমায় মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সাগরে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল ৬৫ দিন। এ নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে গত রোববার মধ্যরাত থেকে। এতে আনন্দের জোয়ার বইছে জেলে পল্লিগুলোতে। 

হাতিয়ার সূর্যমুখী ঘাটের এফবি মায়ের দোয়া ফিশিং ট্রলারের মাঝি নুরুল ইসলাম জানান, ১৮ মাঝিমাল্লার মধ্যে দুজন অসুস্থ থাকায় রাতে সাগরে যেতে পারেননি। আজ বিকেলে সাগরে যাবেন। এ জন্য সব প্রস্তুতি শেষ করেছেন। 

তিনি আরও জানান, একই ঘাটের প্রায় শতাধিক ট্রলার রাতেই সাগরে চলে গেছে। এখনো মৌসুমের অর্ধেক সময় আছে। তাতে ভালো মাছ পাবেন বলে আশা করছেন তিনি। 

হাতিয়া সূর্যমুখী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক জানান, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর থেকে জেলেদের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে। এই ঘাটে সাগরে গিয়ে মাছ শিকার করার মতো দুই শতাধিক ফিশিং ট্রলার রয়েছে। জেলেদের হাঁকডাকে অনেক দিন পর প্রাণ ফিরে এসেছে ঘাটে। 

হাতিয়ার সবচেয়ে বেশি ফিশিং ট্রলারের উপস্থিতি থাকে জাহাজমারা কাটাখালী ঘাটে। কাটাখালী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি আব্দুল আলী জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখা কেটে যাওয়ার পরপরই নিষেধাজ্ঞার সময় চলে আসে। মাছ শিকারে এ বছর তেমন একটা সুবিধা করতে পারেনি তারা। 

আব্দুল আলী মাঝি আরও জানান, তাঁর ট্রলারে একজন বাবুর্চিসহ  ১৮ জন মাঝিমাল্লা কাজ করেন। ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার কারণে সবাই বেকার হয়ে পড়েন। আজ সন্ধ্যার পর সাগরে যাবেন। তিনি আশা করছেন বাকি সময়ে বিগত দিনের ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখবেন। 

হাতিয়া ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি রাশেদ উদ্দিন জানান, হাতিয়ায় গভীর সমুদ্রে যাওয়া ২০টি ঘাটে ছোট-বড় প্রায় ২ হাজার ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় ৩০ হাজার জেলে তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে এসব জেলে অনাহারে–অর্ধাহারে ছিলেন। সরকারিভাবে যে চাল দেওয়া হয়, তা অপ্রতুল ছিল। হাতিয়ায় ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় ৪ হাজার ৮০০ পরিবারকে ৬৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। এর মধ্যে নিবন্ধন না থাকায় গভীর সমুদ্রে যাওয়া অনেক জেলে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। 

সরকার প্রতিবছর এই সময় এলে সমুদ্রে মাছের প্রজনন নিরাপদ করার জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকে। ২০ মে ২৩ জুলাই পর্যন্ত থাকে এই নিষেধাজ্ঞা। এই সময় সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার বন্ধ থাকে। 

হাতিয়া উপজেলা মৎস্য অফিস জানায়, হাতিয়ায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। এর মধ্যে কার্ডধারী জেলের সংখ্যা ১২ হাজার। 

হাতিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মানস মণ্ডল বলেন, এ বছর জেলেরা সরকারি আদেশ কঠিনভাবে পালন করেছেন। নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড ও মৎস্য অফিসের একাধিক টিম খুবই তৎপর ছিল। সোমবার থেকে জেলেরা সমুদ্রে গিয়ে মাছ শিকার করছেন। জেলেদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত