Ajker Patrika

শরীরে দগদগে ঘা নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বানর, নিজেই এসে চিকিৎসা নিল টানা তিন দিন

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২১: ২২
Thumbnail image

চট্টগ্রামে খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে নেমে আসা একটি বানরের শরীরে বিদ্যুতায়িত হয়ে গভীর ক্ষত তৈরি হয়। রক্তাক্ত সেই ক্ষত নিয়ে গত শনিবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগের সামনে অসহায়ের মতো ঘুরতে থাকে বানরটি। পরে শনি ও রোববার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বানরটিকে প্রাথমিক সেবা দেন।

আজ সোমবার বানরটি আবারও হাসপাতালের সামনে ঘোরাঘুরি করতে থাকে। পরে চিকিৎসার সরঞ্জাম দেখিয়ে কাছে ডাকলে বানরটি কাছে এসে চিকিৎসা নেয়। পরে তৃতীয়বারের মতো চিকিৎসাসেবা দিয়ে বানরটিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে বানরটি চট্টগ্রামের ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালে রয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, আজ সকাল ৯টায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগের বাইরে রেলিংয়ের ওপর অপেক্ষমাণ ভঙ্গিতে বসে রয়েছে বানরটি। স্বাস্থ্যকর্মীরা ড্রেসিংয়ের ওষুধপত্র নিয়ে এলে বানরটি ধীরে ধীরে তাঁদের সামনে ছুটে যায়। এই সময় স্বাস্থ্যকর্মীরা আগের ব্যান্ডেজ খুলে পুনরায় ক্ষতস্থানে ড্রেসিং করে দেন। ড্রেসিংয়ের সময় হাসপাতালের সিঁড়ির রড ধরে একেবারে শান্তভাবে বসেছিল বানরটি। ড্রেসিং শেষে ব্যান্ডেজ লাগানোর পর বানরটি সেখান থেকে সরে হাসপাতালের বাগানে গিয়ে বসে পড়ে।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নুর উদ্দিন রাশেদ আজকের পত্রিকাকে জানান, আহত বানরটিকে তিনি তৃতীয় দিনের মতো চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। গত শনি ও রোববার তিনি বানরটিকে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন।

শান্তভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা নেয় বানরটিতিনি বলেন, ‘শনিবার বিকেলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগের সামনে আসে বানরটি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা বানরটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে দ্বিতীয় দিন সে আবারও আসে, আজও এসেছিল। পরে তৃতীয় দিনের মতো বানরটির ক্ষতস্থানে নতুন করে চিকিৎসা দিয়ে ব্যান্ডেজ করে দেওয়া হয়েছে। পরে বানরটিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা প্রিয়াঙ্কা চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।’

নুর উদ্দিন রাশেদ আরও বলেন, ‘ঘটনার প্রথম দিনই বিষয়টি প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় ও বন বিভাগকে অবহিত করা হয়েছিল। কিন্তু এরপরও কেউ বানরটির চিকিৎসায় এগিয়ে আসেননি।’

উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা প্রিয়াঙ্কা চৌধুরী বন বিভাগের দায়িত্বের কথা উল্লেখ করে আজকের পত্রিকাকে জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কলে প্রাণীটির আহতের খবর শুনে তিনি আজ হাসপাতালে গিয়েছেন। গত শনিবারই তাঁরা বিষয়টি অবগত থাকলেও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। আহত বানরটিকে ধরে দেওয়ার দায়িত্ব বন বিভাগের হলেও তাঁরা এ ব্যাপারে এগিয়ে আসেনি।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তাহামিনা আরজু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ (সোমবার) দুপুরে উপজেলা কমপ্লেক্স থেকে বানরটিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে বানরটির ক্ষতস্থানের ব্যান্ডেজ খুলে দেখা হয়। অধিক ক্ষতের কারণে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বানরটিকে সুস্থ করা সম্ভব নয়। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য সন্ধ্যায় আহত বানরটিকে চট্টগ্রামের ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতাল পাঠানো হয়েছে।’

এ বিষয়ে উপকূলীয় বন বিভাগের সীতাকুণ্ড রেঞ্জ কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের দায়িত্বের উল্লেখ করে আজকের পত্রিকাকে জানান, আহত বানরটিকে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা চিকিৎসাসেবা দেওয়ার নিয়ম হলেও এ ক্ষেত্রে তাঁর উল্টোটাই ঘটেছে। তাঁদের পরিবর্তে আহত বানরটিকে চিকিৎসাসেবা দিয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

তবে আহত বানরটি উদ্ধারে বন বিভাগ কেন এগিয়ে এল না, এমন প্রশ্ন করতেই কোনো উত্তর না দিয়ে মোবাইল ফোনের সংযোগটি কেটে দেন তিনি। তাৎক্ষণিক একাধিকবার কল করা হলে আর রিসিভ করেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত