Ajker Patrika

গাছের অকৃত্রিম বন্ধু বাবুল

প্রতিনিধি, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম)
গাছের অকৃত্রিম বন্ধু বাবুল

পুরো নাম নুরুল হক বাবুল। তবে তাঁকে সবাই চেনেন ডাক নাম বাবুল নামে। বয়স চল্লিশের কোঠায়। পেশায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। গাছের সঙ্গে রয়েছে তাঁর এক হৃদ্যতার সম্পর্ক। তাই খ্যাতি বা স্বীকৃতির কথা না ভেবে ১৭ বছর ধরে সংসারের মাসিক খরচ বাঁচিয়ে মানুষের মাঝে বিনা মূল্যে গাছের চারা বিতরণ করছেন তিনি।

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার চিকনদণ্ডী ইউনিয়নের ফতেয়াবাদ গ্রামের আবদুল কাদের দপ্তরির বাড়ির মৃত মো. ইসহাকের মেজ ছেলে বাবুল তাঁর স্ত্রী মনোয়ারা বেগম মনুর অনুপ্রেরণায় বর্ষা মৌসুম এলেই হাতে নারিকেলগাছের চারা নিয়ে বিতরণে বের হয়ে পড়েন। প্রতিবছর উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠনকে হাজারো চারা বিতরণ করেন তিনি।

বাবুল জানান, তিনি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে উদ্বুদ্ধ হয়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, মাজার, মসজিদ ও বাড়িতে গিয়ে বিনা মূল্যে নারিকেলগাছের চারা বিতরণ করেন। এগুলো তিনি নিজের টাকায় কেনেন। ইচ্ছা থাকলে অল্প উপার্জন করেও যে কেউ পরিবেশের কল্যাণে কাজ করতে পারেন, এর এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তিনি।

২৬ জুলাই সকালে ফতেয়াবাদ এলাকায় এ বছরের কার্যক্রম নিয়ে কথা হয় বাবুলের সঙ্গে। বাবুল বলেন, বর্তমানে মহামারির কারণে তাঁর ব্যবসা বন্ধ। এই সংকটময় মুহূর্তের পরেও থেমে না থেকে তিনি গত এক বছরে জমানো কিছু টাকা দিয়ে গাছের চারা বিতরণ চালু রেখেছেন। এ বছরও তিনি বিনা মূল্যে হালদা নদীর পাড়ে, চৌধুরী হাটের পশ্চিমে শাহজালাল মাদ্রাসায়, ফতেপুর ইউনিয়ন মদনহাট এলাকায়, ফতেয়াবাদ রেলস্টেশনের পশ্চিমে, আনোয়ারা উপজেলার মোহছেন আউলিয়ার মাজার ও শাহপুরীর মাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে লেবু, পেয়ারা, নারিকেল ও কাঁঠালগাছের চারা বিতরণ করেছেন।

বৃক্ষের পরম বন্ধু বাবুল এ ব্যাপারে আজকের পত্রিকাকে বলেন, তিনি গাছকে তাঁর দুই সন্তানের মতো ভালোবাসেন। মৃত্যুর আগপর্যন্ত মানুষের মাঝে গাছের চারা বিতরণ করে যেতে চান। তাঁর মৃত্যু-পরবর্তী এই কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা যেন ধরে রাখতে পারে, সেটি তাঁর নিজের সন্তানদের উপদেশ দিয়ে যাচ্ছেন।

ফতেয়াবাদ সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক ছৈয়দ মফজল আলম বলেন, বাবুলের বৃক্ষপ্রেম দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজ উদ্যোগে এলাকায় অনেকে বিনা মূল্যে গাছের চারা বিতরণ শুরু করছেন। সড়কের পাশে অনেকেই এসব চারা লাগিয়ে নিজ উদ্যোগে যত্নও নিচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত