Ajker Patrika

রামুতে প্রতিবন্ধী ভাতা বিতরণে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ

রামু (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ মে ২০২৩, ১১: ৪৭
Thumbnail image

কক্সবাজারের রামুতে প্রতিবন্ধী ভাতা বিতরণে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা সমাজসেবা অফিসের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্তরা হলেন সমাজসেবা অফিসের ফিল্ড সুপারভাইজার নজির আহম্মদ ও সমাজকর্মী হোসনে মোবারক মিনার। 
ভাতাপ্রাপ্ত প্রতিবন্ধীদের অভিযোগ, ভাতা বিতরণের জন্য সরকারিভাবে নতুন সিম কিনে ও নগদ অ্যাকাউন্ট তৈরি করে দিতে ঘুষ নিয়েছেন তাঁরা। তবে অভিযুক্তদের দাবি, তাঁরা জোর করে টাকা নেননি। স্বপ্রণোদিত হয়ে কয়েকজন তাঁদের টাকা দিয়েছেন। 

সমাজসেবা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছর থেকে প্রতিবন্ধীদের মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডার নগদ, বিকাশের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে জিটুপি (গভর্মেন্ট টু পারসন) পদ্ধতিতে প্রতি মাসে ৮৫০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে নানান অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরাসরি প্রতিবন্ধীদের কাছে পৌঁছাতে সরকারিভাবে নতুন সিম কিনে ও নগদ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এই ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। 

উপজেলার সুবিধাভোগী প্রতিবন্ধীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১৩ এপ্রিল প্রথম ধাপে উপজেলার প্রায় ১০০ প্রতিবন্ধীকে রবি সিম ও নগদ অ্যাকাউন্ট করে দেওয়া হয়। এ সময় জনপ্রতি ১ হাজার টাকা করে ঘুষ নিয়েছেন সমাজসেবা অফিসের ফিল্ড সুপারভাইজার নজির আহম্মদ ও সমাজকর্মী হোসনে মোবারক মিনার। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজারকুল ইউনিয়নের প্রতিবন্ধী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সবাই ১ হাজার টাকা করে দিয়েছে বলায় আমিও ১ হাজার টাকা দিয়েছি।’ 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নারী প্রতিবন্ধী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নগদের সিম দিতে সমাজসেবা অফিসের দুজন কর্মচারী সব প্রতিবন্ধীর কাছ থেকেই ১ হাজার টাকা করে নেন। কিন্তু ভাতার টাকা এখনো পাইনি।’ 

টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ফিল্ড সুপারভাইজার নজির আহমেদ বলেন, ‘সেদিন আমি অফিসে ছিলাম না। তবে আনুমানিক ১০০ জনকে নতুন বরাদ্দের প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য সিম দেওয়া হয়েছে। তিন মাস অন্তর অন্তর নগদ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ভাতা পাবেন তাঁরা। সব মিলিয়ে প্রায় ৬৫০ জনের জন্য বরাদ্দ আছে। তা ছাড়া সিম সরকারিভাবে নয়, অফিস থেকেই কিনে দেওয়া হয়েছে। তাই খুশি হয়ে প্রতিবন্ধীরা যা টাকা দিয়েছেন তা-ই নেওয়া হয়েছে। কারও কাছ থেকে টাকা দাবি করা হয়নি।’ 

এ নিয়ে সমাজকর্মী হুসনে মোবারক মিনার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কারও কাছ থেকে জোর করে টাকা নেওয়া হয়নি। তা ছাড়া ১০০ নয়, ১০ থেকে ১২ জনের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। অন্যদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়নি।’ 

এ বিষয়ে জানতে অফিসে গিয়ে পাওয়া যায়নি উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আল গালিবকে। মোবাইল ফোনে কয়েকবার কলও করা হয়। কিন্তু কল রিসিভ না করায় এ নিয়ে তাঁর কোনো মন্তব্য জানা যায়নি। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহমিদা মুস্তফা বলেন, ‘প্রতিবন্ধীদের ভাতার টাকায় অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে সরকার মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ভাতার টাকা বিতরণের ব্যবস্থা করেছে। যুগোপযোগী এই উদ্যোগেও অনিয়ম হলে তদন্ত করে অভিযুক্ত কর্মচারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত