Ajker Patrika

নদীতে জোয়ার এলেই রাস্তা ছাপিয়ে পানি ঢোকে বাড়িতে

খান রফিক, বরিশাল
নদীতে জোয়ার এলেই রাস্তা ছাপিয়ে পানি ঢোকে বাড়িতে

কীর্তনখোলার পানিতে বরিশাল নগরের দক্ষিণাংশের আট সহস্রাধিক মানুষ সারা বছর জলাবদ্ধ থাকেন। নদীতে জোয়ার এলেই রাস্তা ছাপিয়ে পানি ঢোকে বাসা-বাড়িতে। নগরের ১২ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের খৃষ্টানপাড়া এবং জিয়ানগরসহ আশপাশের মানুষ যুগের পর যুগ এমন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। মেয়র আসেন মেয়র যান কিন্তু নদীতে বেড়িবাঁধ, খালের স্লুইসগেট, ড্রেন ও সড়ক উঁচু করে নির্মাণ না হওয়ায় ওই এলাকার বাসিন্দাদের দুর্দশা লাঘব হয় না। জলাবদ্ধতার কষ্টে নগরের দক্ষিণাংশের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সরেজমিনে গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার সন্ধ্যার পর ত্রিশগোডাউন থেকে ধানগবেষনা রোডের খেয়াঘাট পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কে এমন চিত্র দেখা গেছে। জোয়ারের পানি সরে গেলে রাস্তার ক্ষত ফুটে ওঠে। তাতে বালু আর কাঁদায় একাকার হতে হয় শত শত বাসিন্দাদের। এই জলাবদ্ধতা থেকে নিস্তার পেতে নতুন মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা।

জিয়ানগর এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুল হক জানান, কাউন্সিলররা কোনো প্রকল্প করে এখন পর্যন্ত সড়ক সংস্কার, জলাবদ্ধতা দূর করার উদ্যোগ নেননি। এমনকি আদি সাগরদী খালটি পর্যন্ত খনন করেননি দীর্ঘ বছর। খালের দুই মাথায় স্লুইসগেট এবং নদীতে বেড়িবাঁধ না করায় সারা বছরই জোয়ারের পানিতে ডুবতে হয় তাঁদের। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি নতুন নির্বাচিত মেয়র আমাদের শত শত পরিবারের সমস্যার সমাধান করবেন।’

খ্রিষ্টান কলোনি সংলগ্ন বাসিন্দা ফরহাদ হোসেন জানান, জোয়ার এলেই তাঁর বাড়ি তলিয়ে যায়। শীতের সময় শুকনা দেখে জমি কিনেছিলেন। তিনি ১০ বছর ধরে জলাবদ্ধতার দুর্দশায় ভুগছেন। স্থানীয় প্রবাসী দেলোয়ার হোসেনও ক্ষোভ প্রকাশ করে একই কথা বললেন।

জানতে চাইলে নগরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন নির্বাচিত কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন রয়েল বলেন, ‘প্রতি জোয়ারে এক হাঁটু পানি ওঠে ওই এলাকায়। প্রতিদিন সাধারণ মানুষকে এই কষ্ট ভোগ করতে হয়। এই সমস্যার সমাধানে সড়ক উঁচু করা এবং ড্রেন করে সাগরদি খালের সঙ্গে যুক্ত করে দিতে হবে।’

নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শরিফ মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘জিয়া নগর এবং খ্রিষ্টান কলোনির বাসিন্দাদের দুর্ভোগ অনেক দিনের। ড্রেন না থাকায় কীর্তনখোলার পানিতে সড়ক ডুবে থাকে। নতুন মেয়র দায়িত্ব নিলে সড়ক এবং ড্রেন করা হবে। তাতে ওই এলাকায় ৬ থেকে ৭ সহস্রাধিক মানুষের দুঃখ লাঘব হবে।’

নগরের বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ টুঙ্গিপাড়ায় সফরে থাকায় এ বিষয়ে তাঁর মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

নদী খাল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সদস্যসচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, ‘নতুন মেয়র দায়িত্ব নেবেন নভেম্বরে। নগরের দুঃখ-দুর্দশা দূরীকরণের আশায়ই বিপুল ভোটে তাঁকে বিজয়ী করেছেন নগরবাসী। আমরা আশা করি তাঁর নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী নগরের দক্ষিণাংশের মানুষের এই কষ্ট লাঘব করবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত