Ajker Patrika

শিক্ষিকাকে শোকজ করায় প্রধান শিক্ষককে মারপিটের অভিযোগ ছাত্রদল ও যুবদল নেতার বিরুদ্ধে

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২৫, ১২: ৫৬
অভিযুক্ত ছাত্রদল ও যুবদল নেতা। ছবি সংগৃহীত
অভিযুক্ত ছাত্রদল ও যুবদল নেতা। ছবি সংগৃহীত

নেত্রকোনার আটপাড়ায় সহকারী শিক্ষিকাকে শোকজ করায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবদল ও ছাত্রদলের দুই নেতার বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার (২৩ জুলাই) দুপুরে উপজেলার অভয়পাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বর্তমানে নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ভুক্তভোগী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অভয়পাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম কয়েক দিন আগে যথাসময়ে স্কুলে উপস্থিত না হওয়ায় সহকারী শিক্ষক রুবি আক্তারকে শোকজ করেন। এই শোকজপত্র শিক্ষিকা রুবি আক্তার বাড়িতে নিলে তাঁর স্বামী কামাল কাগজটি দেখে বিষয়টি যুবদল নেতা হাফিজুর রহমান মিস্টারকে জানান।

পরে বুধবার দুপুর ১টার দিকে যুবদল নেতা হাফিজুর রহমান মিস্টার ও উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য মুন্না খান শাহীন বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে প্রধান শিক্ষককে প্রথমে ‘নারীদের ইভটিজিং’ করার অভিযোগে হেনস্তা করেন। একপর্যায়ে শাহীন নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেন। প্রধান শিক্ষক উক্ত ঘটনার ভিডিও ধারণ করতে গেলে বাধা দিয়ে তাঁর পাঞ্জাবির কলার ধরে বাইরে নিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করেন জাহাঙ্গীর আলম।

এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী তাসলিমা কোহেন (সহকারী শিক্ষক, ছয়াশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়) বিদ্যালয়ে গিয়ে ওই ঘটনার জন্য সহকারী শিক্ষক রুবি আক্তারকে চড় মারেন বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সহকারী শিক্ষক রুবি আক্তার নিয়মিত স্কুলে দেরি করে আসছিলেন বলে তাঁকে নিয়ম মাফিক শোকজ করা হয়। এটা কোনো ব্যক্তিগত বিষয় নয়, পুরোপুরি প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাপার। বুধবার স্কুল চলাকালীন হঠাৎ হাফিজুর রহমান মিস্টার ও মুন্না খান শাহীন স্কুলে এসে আমাকে উল্টো ‘নারী শিক্ষকদের ইভটিজিং’-এর মতো মিথ্যা অভিযোগে অপমান করে। আমি যখন বিষয়টি ভিডিও করতে চেয়েছিলাম, তখন তারা আমাকে কলার ধরে বাইরে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’

ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা মুন্না খান শাহীনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

অপর অভিযুক্ত যুবদল নেতা হাফিজুর রহমান মিস্টার সাংবাদিকদের বলেন, ‘রুবি আক্তার আমার চাচি। প্রধান শিক্ষক বেশ কিছুদিন ধরে তাঁকে অশালীন প্রস্তাব দিচ্ছিলেন। আমি এ বিষয়ে জানতে গিয়েছিলাম। তিনি উল্টো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি। বরং এর আগেও ওই শিক্ষক অন্য এক নারী সহকর্মীকেও কুপ্রস্তাব দিয়ে হয়রানি করেছিলেন, যা পরে মীমাংসা করে দেওয়া হয়।’

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ মুকুল বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের পাঞ্জাবি ছেঁড়া অবস্থায় দেখেছি। মারধরের ব্যাপারে নিশ্চিত না হলেও শিক্ষক রুবিকে শোকজ করা হয়েছিল, সেটি জানি। তবে কোনো নারী শিক্ষক আমার কাছে শ্লীলতাহানির বা কুপ্রস্তাবের লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ করেননি।”

আটপাড়া থানার ওসি মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। শুনেছি, প্রধান শিক্ষককে দুই ব্যক্তি মারধর করেছে। এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কৌশলে বিনিয়োগ সরাচ্ছে বহুজাতিক কোম্পানি

বিমান বিধ্বস্ত: এক ঘণ্টা পর উদ্ধার হন পাইলট, তখনো বেঁচে ছিলেন

মোহাম্মদপুর থানায় ভুক্তভোগীকে হেনস্তা: চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার, ৩ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

রংপুরের ১০ কিমি সড়কে ৩৬৫ টন পাথর উধাও

‘ওসি হয়েও আমার কম দামি ফোন, দামি ফোন নিয়ে ঘুরলে ছিনতাই তো হবেই’, ভুক্তভোগীকে মোহাম্মদপুরের ওসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত