বরগুনা সংবাদদাতা
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের এক অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি বরগুনার হরিণঘাটা পর্যটনকেন্দ্র। পাথরঘাটা উপজেলার অন্যতম এই দর্শনীয় স্থানটিতে যেমন উপভোগ করা যায় সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের মোহনীয় দৃশ্য, তেমনি এখানকার প্রাকৃতিক শোভা, নির্জনতা, সবুজ বনভূমি, হরিণ ও বন্য প্রাণীর অবাধ বিচরণ এবং সাগরের বিশাল জলরাশি খুব সহজে মুগ্ধ করে যে কাউকে। তবে সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দিন দিন পর্যটক হারাচ্ছে পর্যটনকেন্দ্রটি।
মূলত সুন্দরবনের চেয়ে আকৃতিতে বড় প্রজাতির মায়াবী চিত্রা হরিণের বিচরণস্থল হওয়ায় এই বনের নামকরণ হয়েছে ‘হরিণঘাটা’। বঙ্গোপসাগরের মোহনায় পায়রা-বিষখালী-বলেশ্বর—এই তিন নদীর সঙ্গমস্থলে অবস্থিত হরিণঘাটার বনে হরিণ, বানর, শূকর, কাঠবিড়ালি, মেছো বিড়াল, ডোরাবাঘ, শজারু, উদ বিড়াল, শিয়ালসহ অসংখ্য বন্য প্রাণীর বিচরণ। নানা প্রজাতির পাখির কলরবে সারাক্ষণ মুখর থাকে বনাঞ্চলটি।
এখানে সৈকতে মানুষের উপস্থিতি অনেক কম বলে নানা প্রজাতির পাখির নির্বিঘ্ন বিচরণ চোখে পড়ে। সৈকতে ঘুরে বেড়ানো লাল কাঁকড়ার দলও প্রায়ই তৈরি করে দেখার মতো দৃশ্য।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৭ সাল থেকে বন বিভাগের উদ্যোগে বন সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়। পরবর্তীকালে সাগর তীরবর্তী দুটি চর জেগে উঠলে সেখানে নতুন বন সৃষ্টি হয়, যা বর্তমানে ‘লালদিয়া বন’ ও ‘বিহঙ্গ দ্বীপ’ নামে পরিচিত। বর্তমানে প্রায় ছয় হাজার একরজুড়ে বিস্তৃত এই বনাঞ্চলে কেওড়া, গেওয়াসহ সৃজিত সুন্দরী ও ঝাউবন রয়েছে। এ বনাঞ্চলের পরিধি ক্রমেই বেড়ে চলেছে।
এ বনে অসংখ্য বন্য প্রাণীর মধ্যে হরিণ রয়েছে পাঁচ শতাধিক। ২০১৫ সালে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে হরিণঘাটাকে ইকো-ট্যুরিজম স্পট হিসেবে গড়ে তোলা হয়। বনের ভেতরে দর্শনার্থীদের চলাচলের জন্য নির্মাণ করা হয় ফুট ট্রেইল, বিশ্রামাগার, গোলঘর। এ ছাড়া পর্যটকদের সুবিধার্থে ৬০ মিটার উচ্চতার ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে, যেখান থেকে গোটা বনাঞ্চল ও সাগরের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। গত এক বছরে বনের ভেতর প্রবেশে টিকিট বিক্রি থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় করেছে বন বিভাগ। বর্তমানে সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কমে গেছে পর্যটকদের আগমন।
হরিণঘাটার বন ঘুরে দেখা গেছে, পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে এখানে গড়ে উঠেছে হোটেল-রেস্তোরাঁ। তবে পর্যটক কম থাকায় অলস সময় পার করছেন হোটেল-রেস্তোরাঁর কর্মচারীরা। বনে প্রবেশের একমাত্র ফুট ট্রেইলের জায়গায় জায়গায় ভেঙে গেছে স্ল্যাব। ভাঙাচোরা ফুট ট্রেইল দিয়ে কিছু দূর হেঁটে গেলে খালের ওপর ঝুলন্ত সেতুটির অবস্থা আরও করুণ।
অংশ বিশেষে ভেঙে গেছে পাটাতন ও রেলিং। মানুষ হাঁটলে ঝাঁকুনি দিয়ে ওঠে সেতুটি। বনের ভেতরে যাওয়ার জন্য তৈরি করা ফুট ট্রেইলের কাঠের পাটাতনের অবশিষ্ট নেই একটিও। রয়েছে বনের ভেতর নেটওয়ার্কের সমস্যা। পর্যটকদের জন্য নির্মাণ করা বিশ্রামাগার, ওয়াচ টাওয়ারসহ বিভিন্ন স্থাপনার জায়গায় জায়গায় খুলে পড়ছে পলেস্তারা।
জসীম নামের স্থানীয় এক চা দোকানি বলেন, ‘এখানকার আসার রাস্তাঘাট খুব খারাপ। বনের ভেতরে যাওয়ার সেতুটিও ঝুঁকিপূর্ণ। তাই যারাই আসেন, এসব কারণে পরে আর আসেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে আগে শুধু কয়েকটি চায়ের দোকান ছিল। এখন এখানে ভালো মানের হোটেলসহ রেস্তোরাঁও তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু পর্যটক নেই। তাই আমাদের বেচাবিক্রিও নেই।’
বাকেরগঞ্জ থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছেন শিরিন সুলতানা রাখি। তিনি বলেন, ‘হরিণঘাটা অনেক সুন্দর। বিশেষ করে এখানের পরিবেশ অনেক নিরিবিলি। তবে এখানে অবকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। ফুট ট্রেইলগুলো ভাঙা। এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’
পর্যটক প্রদেশ মিস্ত্রী বলেন, ‘সুন্দরবনে না গিয়েও এখানে সুন্দরবনের মতো অনুভূতি পাওয়া যায়। আগে শুনেছি এখানে অনেক হরিণ ছিল। তবে আমরা এসে হরিণ দেখতে পাইনি। মনে হয় হরিণ কমে গেছে। তবে জায়গাটা দেখতে অনেক সুন্দর।’
এ বিষয়ে ওই এলাকার বন বিভাগের দায়িত্বরত বিট কর্মকর্তা আব্দুল হাই বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালে বনাঞ্চলটি নিমজ্জিত হওয়ার পর বিভিন্ন অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব বিষয়ে নিয়মিত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হচ্ছে। আশা করছি, খুব শিগগির সমস্যার সমাধান হবে।’
বরগুনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল বলেন, হরিণঘাটা পর্যটনকেন্দ্রের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে প্রকল্পের একাধিক মিটিং শেষ হয়েছে। আশা করছি প্রকল্পের মাধ্যমে পর্যটনকেন্দ্রটি একটি আকর্ষণীয় মনোমুগ্ধকর পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পাবে।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের এক অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি বরগুনার হরিণঘাটা পর্যটনকেন্দ্র। পাথরঘাটা উপজেলার অন্যতম এই দর্শনীয় স্থানটিতে যেমন উপভোগ করা যায় সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের মোহনীয় দৃশ্য, তেমনি এখানকার প্রাকৃতিক শোভা, নির্জনতা, সবুজ বনভূমি, হরিণ ও বন্য প্রাণীর অবাধ বিচরণ এবং সাগরের বিশাল জলরাশি খুব সহজে মুগ্ধ করে যে কাউকে। তবে সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দিন দিন পর্যটক হারাচ্ছে পর্যটনকেন্দ্রটি।
মূলত সুন্দরবনের চেয়ে আকৃতিতে বড় প্রজাতির মায়াবী চিত্রা হরিণের বিচরণস্থল হওয়ায় এই বনের নামকরণ হয়েছে ‘হরিণঘাটা’। বঙ্গোপসাগরের মোহনায় পায়রা-বিষখালী-বলেশ্বর—এই তিন নদীর সঙ্গমস্থলে অবস্থিত হরিণঘাটার বনে হরিণ, বানর, শূকর, কাঠবিড়ালি, মেছো বিড়াল, ডোরাবাঘ, শজারু, উদ বিড়াল, শিয়ালসহ অসংখ্য বন্য প্রাণীর বিচরণ। নানা প্রজাতির পাখির কলরবে সারাক্ষণ মুখর থাকে বনাঞ্চলটি।
এখানে সৈকতে মানুষের উপস্থিতি অনেক কম বলে নানা প্রজাতির পাখির নির্বিঘ্ন বিচরণ চোখে পড়ে। সৈকতে ঘুরে বেড়ানো লাল কাঁকড়ার দলও প্রায়ই তৈরি করে দেখার মতো দৃশ্য।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৭ সাল থেকে বন বিভাগের উদ্যোগে বন সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়। পরবর্তীকালে সাগর তীরবর্তী দুটি চর জেগে উঠলে সেখানে নতুন বন সৃষ্টি হয়, যা বর্তমানে ‘লালদিয়া বন’ ও ‘বিহঙ্গ দ্বীপ’ নামে পরিচিত। বর্তমানে প্রায় ছয় হাজার একরজুড়ে বিস্তৃত এই বনাঞ্চলে কেওড়া, গেওয়াসহ সৃজিত সুন্দরী ও ঝাউবন রয়েছে। এ বনাঞ্চলের পরিধি ক্রমেই বেড়ে চলেছে।
এ বনে অসংখ্য বন্য প্রাণীর মধ্যে হরিণ রয়েছে পাঁচ শতাধিক। ২০১৫ সালে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে হরিণঘাটাকে ইকো-ট্যুরিজম স্পট হিসেবে গড়ে তোলা হয়। বনের ভেতরে দর্শনার্থীদের চলাচলের জন্য নির্মাণ করা হয় ফুট ট্রেইল, বিশ্রামাগার, গোলঘর। এ ছাড়া পর্যটকদের সুবিধার্থে ৬০ মিটার উচ্চতার ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে, যেখান থেকে গোটা বনাঞ্চল ও সাগরের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। গত এক বছরে বনের ভেতর প্রবেশে টিকিট বিক্রি থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় করেছে বন বিভাগ। বর্তমানে সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কমে গেছে পর্যটকদের আগমন।
হরিণঘাটার বন ঘুরে দেখা গেছে, পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে এখানে গড়ে উঠেছে হোটেল-রেস্তোরাঁ। তবে পর্যটক কম থাকায় অলস সময় পার করছেন হোটেল-রেস্তোরাঁর কর্মচারীরা। বনে প্রবেশের একমাত্র ফুট ট্রেইলের জায়গায় জায়গায় ভেঙে গেছে স্ল্যাব। ভাঙাচোরা ফুট ট্রেইল দিয়ে কিছু দূর হেঁটে গেলে খালের ওপর ঝুলন্ত সেতুটির অবস্থা আরও করুণ।
অংশ বিশেষে ভেঙে গেছে পাটাতন ও রেলিং। মানুষ হাঁটলে ঝাঁকুনি দিয়ে ওঠে সেতুটি। বনের ভেতরে যাওয়ার জন্য তৈরি করা ফুট ট্রেইলের কাঠের পাটাতনের অবশিষ্ট নেই একটিও। রয়েছে বনের ভেতর নেটওয়ার্কের সমস্যা। পর্যটকদের জন্য নির্মাণ করা বিশ্রামাগার, ওয়াচ টাওয়ারসহ বিভিন্ন স্থাপনার জায়গায় জায়গায় খুলে পড়ছে পলেস্তারা।
জসীম নামের স্থানীয় এক চা দোকানি বলেন, ‘এখানকার আসার রাস্তাঘাট খুব খারাপ। বনের ভেতরে যাওয়ার সেতুটিও ঝুঁকিপূর্ণ। তাই যারাই আসেন, এসব কারণে পরে আর আসেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে আগে শুধু কয়েকটি চায়ের দোকান ছিল। এখন এখানে ভালো মানের হোটেলসহ রেস্তোরাঁও তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু পর্যটক নেই। তাই আমাদের বেচাবিক্রিও নেই।’
বাকেরগঞ্জ থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছেন শিরিন সুলতানা রাখি। তিনি বলেন, ‘হরিণঘাটা অনেক সুন্দর। বিশেষ করে এখানের পরিবেশ অনেক নিরিবিলি। তবে এখানে অবকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। ফুট ট্রেইলগুলো ভাঙা। এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’
পর্যটক প্রদেশ মিস্ত্রী বলেন, ‘সুন্দরবনে না গিয়েও এখানে সুন্দরবনের মতো অনুভূতি পাওয়া যায়। আগে শুনেছি এখানে অনেক হরিণ ছিল। তবে আমরা এসে হরিণ দেখতে পাইনি। মনে হয় হরিণ কমে গেছে। তবে জায়গাটা দেখতে অনেক সুন্দর।’
এ বিষয়ে ওই এলাকার বন বিভাগের দায়িত্বরত বিট কর্মকর্তা আব্দুল হাই বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালে বনাঞ্চলটি নিমজ্জিত হওয়ার পর বিভিন্ন অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব বিষয়ে নিয়মিত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হচ্ছে। আশা করছি, খুব শিগগির সমস্যার সমাধান হবে।’
বরগুনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল বলেন, হরিণঘাটা পর্যটনকেন্দ্রের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে প্রকল্পের একাধিক মিটিং শেষ হয়েছে। আশা করছি প্রকল্পের মাধ্যমে পর্যটনকেন্দ্রটি একটি আকর্ষণীয় মনোমুগ্ধকর পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পাবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের সাত উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার দুজন বিশেষ সহকারীর উপস্থিতিতে ঢাকঢোল পিটিয়ে গত ২৬ মার্চ উদ্বোধন করা হয় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড-সন্দ্বীপ রুটের ফেরি সার্ভিস। তবে উদ্বোধনের মাস ঘুরতে না ঘুরতেই এই রুটে ফেরি বন্ধ হওয়ার পথে। নদীপথে চলাচলের উপযোগী ফেরি সমুদ্রে চালু করলেও দুর্ঘটনার...
১ মিনিট আগেবাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে ট্রেনের ইঞ্জিন থেকে দীর্ঘদিন ধরে তেল চুরি হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, চোর চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও স্থানীয় যুবদল নেতা সোহরাব হোসেন।
৫ ঘণ্টা আগেবরিশাল নগরীর ১৫টি হাটবাজার থেকে গতবারের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি খাজনা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ইজারাদারদের বিরুদ্ধে। এতে সব কটি বাজারে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বাড়তি খাজনার কারণে পণ্যের দামও বেশি গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
৫ ঘণ্টা আগেকুড়িগ্রামের উলিপুরে এক পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রামীণ সড়কের গাইডওয়াল খুলে নিজ বাড়ির পুকুরে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
৬ ঘণ্টা আগে