Ajker Patrika

গলাচিপা-পানপট্টি সড়কটি যেন মরণফাঁদ

প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২১, ২০: ৩৩
গলাচিপা-পানপট্টি সড়কটি যেন মরণফাঁদ

গলাচিপা (পটুয়াখালী): সংস্কারের অভাবে গলাচিপা-পানপট্টি সড়কটি বেহাল হয়ে পড়েছে। সড়কটির ১১ কিলোমিটার অংশের বিটুমিন ও খোয়া উঠে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত আর খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। পথচারী ও গাড়ির যাত্রীদের দুর্ভোগ পৌঁছেছে চরমে। এ সড়কটি রাঙ্গাবালী উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের জনগণের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত। অনেক স্থানে ইটের খোয়াও নেই। কিছু কিছু স্থানে খানা-খন্দ আছে যা হাঁটু সমান গভীর। এ কারণে সড়কে যাতায়াতকারী যানবাহন প্রায়ই দুর্ঘটনায় কবলিত হয়। আহত হয় যাত্রীরাও। 

গতকাল বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, গলাচিপা-গানপট্টি সড়কের ১১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সড়কের অসংখ্য স্থানে কার্পেটিং উঠে ইটের খোয়া ও পাথর বেরিয়ে পড়েছে। সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় খানাখন্দ। এর মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ভ্যান, ইঞ্জিনচালিত যানবাহন, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করছে। 

এ সময় অটোরিকশা চালক কামাল হোসেন বলেন, রাস্তায় অনেক খানাখন্দ থাকায় প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। অনেক সময় রিকশায় করে এই রাস্তা দিয়ে রোগী নিয়ে গেলে তাদের অবস্থা আরও কাহিল হয়ে পড়ে। 

ভ্যানচালক করিম চৌকিদার বলেন, ভাঙাচোরা রাস্তায় ভ্যান চালাতে গিয়ে প্রায়ই নাটবল্টু খুলে পড়ে যায়। ফলে সারা দিন ভ্যান চালিয়ে যা রোজগার করি, তার একটা অংশ মেরামতেই শেষ হয়ে যায়। ২০ মিনিটের রাস্তা যেতে সময় লাগে ৪৫ থেকে ৫৫ মিনিট। 

এদিকে দুই বছর আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সড়কটি সংস্কার করেছিল। তবে দুই বছর না যেতেই সড়কটির এ বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ওই সময়ের পর থেকেই সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে হস্তান্তর করার জন্য তৎকালীন সংসদ সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন আধা সরকারি পত্র সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করেন। সড়কটি সংস্কারে দায়িত্ব ন্যস্ত হয় সড়ক ও জনপথ বিভাগে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ আজ পর্যন্ত এ গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি উন্নয়নে কোনো কাজই করেনি।

এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহ মো. সান মোকাদ্দেস জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর এ সড়কটি উন্নয়নে চিঠি দেওয়া হয়েছে। অতি দ্রুত সড়কটি উন্নয়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

সড়কটি নির্মাণের ব্যাপারে গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিষ কুমার বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি। এ ব্যাপারে একাধিকবার সড়ক ও জনপথ বিভাগকে তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও কোনো অগ্রগতি নেই। 

এ সড়ক দিয়ে গলাচিপা উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন ছাড়াও রাঙ্গাবালী উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন চরমন্তাজ, ছোটবাইশদিয়া, বড়বাইশদিয়া, চালিতাবুনিয়া, রাঙ্গাবালী সদরের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র সড়ক। এ জন্য সড়কটি রাঙ্গাবালী উপজেলার মানুষের কাছে এক সময়ের উপজেলা গলাচিপা, জেলা সদর পটুয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের প্রবেশ দ্বার হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত। এক দশক আগে রাঙ্গাবালী উপজেলা স্থাপন হলেও ওই খানে এ পর্যন্ত সাব-রেজিস্টার্ড অফিস, প্রাণিসম্পদ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর এখনো নির্মিত হয়নি। এ কারণে স্বাস্থ্যসেবা, জমি বেচাকেনা ও অন্যান্য দপ্তরের কাজের জন্য গলাচিপা উপজেলা সদরে আসতে হয়। এ সড়ক দিয়ে আসতে যেতে যাতায়াতকারীদের এতই ভোগান্তি  পোহাতে হয় যা বর্ণনাতীত। বিশেষ করে অ্যাম্বুলেন্সে যাতায়াত করতে রোগীদের চরম ভোগান্তি  পোহাতে হয়। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত