Ajker Patrika

আশ্রয়কেন্দ্র থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় ৫০ পরিবারকে, হাত-পা ধরলেও থাকতে দেওয়া হয়নি 

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ মে ২০২৪, ২৩: ৩৯
আশ্রয়কেন্দ্র থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় ৫০ পরিবারকে, হাত-পা ধরলেও থাকতে দেওয়া হয়নি 

পিরোজপুরের নেছারাবাদে ডুবি আলিম মাদ্রাসা ভবনে ঘূর্ণিঝড় রিমালের সময় আশ্রয় নেওয়া অন্তত ৫০টি পরিবারকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে সহকারী মৌলভি সাইদুর রহমান সাইদের বিরুদ্ধে। তিনি বন্যার পরের দিন সকালে এসে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে লোকজনকে তাড়িয়ে দেন এবং আশ্রয় নেওয়া লোকদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। অনেকে তাঁর হাত-পা ধরলেও লোকজনকে থাকতে দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাঁরা মাওলানা সাইদুর রহমানের বিচারের দাবি তুলেছেন। 

আশ্রয় কেন্দ্রে আসা লোকজনের অভিযোগ, ২৬ মে রাতে ঝোড়ো বাতাসসহ মুষলধারে বৃষ্টি আর বন্যায় পানি বেড়ে যায়। এ সময় নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য রাতে স্থানীয় অন্তত ৫০টি পরিবারের লোকজন ছুটে আসে ডুবি আলিম মাদ্রাসায়। ২৭ মে সকাল থেকে বিকেলের মধ্যে গোটা উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। ঘরের ওপর গাছ পড়ে শতাধিক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২৮ মে সকালে বন্যার পানি সরে গেলেও মাদ্রাসায় আশ্রয় নেওয়া অনেকের বাড়িঘরে ব্যাপক ক্ষতি হয়। তারা রাত কাটাবার জন্য মাথা গোঁজার ঠাঁই না পেয়ে দুই দিন ওই আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে চেয়েছিল। ২৮ মে সকালে মাদ্রাসার সহকারী মৌলভি মাওলানা সাইদুর রহমান সাইদ গালিগালাজ করে মাদ্রাসা থেকে আশ্রয় নেওয়া লোকজনকে তাড়িয়ে দেন। জানা গেছে, মৌলভি মাওলানা সাইদুর রহমান সাইদের বাড়ি মাদ্রাসা থেকে কাছে। তাই তিনি মাদ্রাসার বিষয়ে বেশি খবরদারি করেন।

স্থানীয় নেহারুন (৫৫) অভিযোগ করেন, বন্যায় তিনি মাদ্রাসায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। বন্যায় ঘরের ওপরে গাছ পড়ে ঘর দুমড়েমুচড়ে গেছে। পানিতে ঘরের পোতা (মেঝে) ধুয়ে গেছে। থাকার কোনো জায়গা নেই। তাই আর একটা দিন তিনি ওই মাদ্রাসায় রাত যাপন করতে চেয়েছিলেন। মাদ্রাসার মাওলানা সাইদ গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দিয়েছেন।

সেখানে আশ্রয় নেওয়া মাহিনূর বলেন, ‘বন্যায় আমাদের ঘরবাড়ি সব শেষ। ঘরে থাকার মতো কোনো জায়গা নেই। তাই মাওলানা সাইদের হাতে-পায়ে ধরে মাদ্রাসায় দুই দিন থাকতে চেয়েছিলাম। তিনি আমাদের সঙ্গে খুব বাজে ব্যবহার করে তাড়িয়ে দিয়েছেন। এমনকি বন্যার রাতে আশ্রয় কেন্দ্রের বাথরুমে তালা দিয়ে রেখেছেন। আমরা নিরুপায় হয়ে সেই তালা ভেঙে বাথরুম ব্যবহার করায় আমাদের যা ইচ্ছে তা বলেছেন।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মাওলানা সাইদুর রহমান সাইদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এর সমাধান চেয়ারম্যান করে দিয়েছেন। এখন আবার কী?’

ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই মৌলভি আশ্রয় নেওয়া লোকের সঙ্গে নাকি বাজে ব্যবহার করেছেন। আমি মৌলভিকে বকে দিয়েছি।’ 

মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মেহেদী মাসুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।’

নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত