Ajker Patrika

মাহফুজা অনন্যার একগুচ্ছ কবিতা

মাহফুজা অনন্যা
আপডেট : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৭: ৪০
মাহফুজা অনন্যার একগুচ্ছ কবিতা

দহন

আঁধার ছিল চুপ করে তার হৃদয়নদী জুড়ে
সেই নদীতে ডুবেছিলাম নিজের জীবন ভুলে
কালো-আলো দহন জ্বালে এই-না অন্তঃপুরে
নিজ ভুলে কি মন্দ কিছু নিলাম বুকে তুলে? 

পরের জন্য ঘর গড়েছি নিজের আবাস ছেড়ে
পর কখনো হয় না আপন। আপন থাকে দূরে
ঘর ভাঙলে সব কি ভাঙে কালাকালের জেরে? 
পিছন ফেরে তাকাই। ব্যথা হৃদয়কে খায় কুরে। 

ভুল কোরো না ভুলের কন্যা। কষ্ট দাও ছুড়ে
সবাই বলে মধুর কথা। মনে বারুদ রাখে
কাছে গেলেই ঝলসায় প্রাণ। কেবলই যাই পুড়ে
পথের মানুষ পথেই থাকি। কেউ কি পিছু ডাকে? 

পথ কখনো হয় না পর, হয় তা সঠিক যদি
সঠিক পথেই প্রকৃত সুখ মেলে যে নিরবধি! 

চাঁদেরও ডাকনাম আছে

চাঁদেরও ডাকনাম আছে জানুক লোকে
যে নামে ডাকলে আমায় ডালে ডালে বরই ফুল ফোটে, 
টমেটোখেত লাল হয়ে যায়

এক দুই ছুমন্তর পড়ে দিলে ব্যস্ত হয় ম্যানশন
গল্পঘণ্টা বেজে ওঠে শরীরে, সারা গ্রাম-দেশ
দিকে দিকে ছেয়ে যায় উলম্ব সংবাদ

আমার নাগাসাকি জ্বলে ওঠে, 
হিরোশিমা কথা বলে
তোমার আন্ত আণবিক স্পর্শে পুড়ে যায়
ভেতরের প্রকৃতি, সমস্ত ট্যুরিজম

পাহাড়ে-পাহাড়ে ওড়ে ফাগুন পতাকা
রঙিন ঘুড়িগুলো অতিক্রম করে স্ট্যাটোস্ফিয়ার

বায়ুমণ্ডল কিংবা পৃথিবীর কোনো স্টেশনে আজ কারও থামাথামি নেই

চুমু খেতে খেতে আমরা ফিরে আসি প্যাস্টেল বলয়ে
চিরদিন ফিরে আসি প্রথম চতুর্ভুজে! 

শ্রাবণহীন মতিঝিল

মগজের পার্কটি খালি
জুলাইয়ের বেঞ্চে বসে আছে আগুন
এমন সময় তোমার কি পেয়ে বসে রমণ ইচ্ছে? 

না, আমি কোথাও নেই! 
আমার ছায়ারও কোনো ফুটনোট নেই! 
আশ্রমিক ভাষায় পিলপিল করে হেঁটে আসে তপ্ত মাকড়সা! 

বইরোগী বন্দরে চলতি বাতাস
চশমার অঞ্চলে স্ফিংক্সের ব্যক্তিত্বে পরিপাটি তৃতীয় বন্ধনী 
ও আকাশ চশমা খোলো 
খালি চোখে কি পড়তে পারো না ভুবনকবিতা? 

ময়নার ছায়া দেখি আয়নায় 
হাঁতের রেখায় পাখি-পা 
বিপন্ন বিভীষণে বহুরূপী দাঁড়ের কাঠ 
বাসর-প্রেমে মজে আছে নীল অ্যান্টিমনি

বিদেশি রোদে জলের আঙুল; 
গাইয়া ও উরানোসের বিয়ে—
ও মেঘ আজ কি বৃষ্টি হবে? 

হৃদয় এক শনিবার-দুপুর শাপলা চত্বর 
আছে হাওয়া তবে ভাসছি না, 
আছে ঠোঁট তবু হাসছি না 

আমার হৃদয় এক না হাসা না ভাসার 
শ্রাবণহীন মতিঝিল! 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত