বিভুরঞ্জন সরকার
২০১২ সালের ১৯ জুলাই, এক বর্ষামুখর দিন। আমেরিকার একটি হাসপাতালে ৬৩ বছর বয়সে হুমায়ূন আহমেদ নিঃশব্দে জীবনকে বিদায় জানান। মৃত্যুর আগের দিনগুলোতে ক্যানসারে আক্রান্ত এই জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক একটি পত্রিকায় প্রশ্ন রেখেছিলেন, ‘একটা কচ্ছপ তিন শ বছর বাঁচে, অথচ মানুষের আয়ু এত কম কেন?’ এই প্রশ্ন ছিল যেন তাঁরই জীবনের প্রতিধ্বনি—জীবনকে আরও একটু ভালোবাসতে চাওয়ার, একটু বেশি সময় ধরে বাঁচার এক প্রগাঢ় আকুতির প্রকাশ। তাঁর মৃত্যু শুধু একজন লেখকের প্রয়াণ নয়, বরং ছিল একটি সময়ের, একটি ধারার, একটি কল্পলোকের অবসান।
হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন সেই লেখক, যিনি সাহিত্যের মুখর গণ্ডি থেকে বেরিয়ে সাধারণ মানুষের হৃদয়ে পৌঁছে গেছেন। পাঠকের চোখে চোখ রেখে তিনি গল্প বলেছেন, কথাসাহিত্যের হালকা সুরে গেঁথে দিয়েছেন সমাজ, রাজনীতি এবং ইতিহাসের গুরুগম্ভীর বক্তব্য। তাঁর লেখাকে কেউ কেউ কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলেছেন ‘মধ্যবিত্তের আবেগের শিকার’। কিন্তু সেই আবেগের শিকড় যে কোথায় প্রোথিত, তা হয়তো তাঁরা বুঝে ওঠেননি।
হুমায়ূন আহমেদের রচনা জগৎ বিশাল। কিন্তু এর ভেতরেও আলাদা করে চোখে পড়ে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক তাঁর সাহিত্য প্রয়াস। বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্যে যেখানে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখালেখি শুরু হয় বেশ বিলম্বে এবং প্রথাগত কাঠামোর মধ্যে, হুমায়ূন আহমেদ সেখানে সাহসের সঙ্গে এক নতুন ঘরানা তৈরি করেন। তাঁর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাসগুলো; যেমন ‘আগুনের পরশমণি’, ‘জোছনা ও জননীর গল্প’, ‘১৯৭১’, ‘দেয়াল’—কেবল ঐতিহাসিক দলিল নয়, বরং মুক্তিযুদ্ধকে অনুভব করার এক অভিনব ভাষ্য।
‘আগুনের পরশমণি’ তাঁর প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস, যেখানে একটি সাধারণ পরিবার কীভাবে অরাজনৈতিক অবস্থান থেকে ধীরে ধীরে মুক্তিযুদ্ধের সক্রিয় অংশ হয়ে ওঠে, সেই বিবর্তনের আখ্যান ফুটে উঠেছে। এটি একটি পরিণত রাজনৈতিক উপন্যাস না হয়েও যুদ্ধের বাস্তবতা, ভয়, বেদনাকে এত জীবন্তভাবে তুলে ধরেছে যে তা পাঠককে গভীরভাবে নাড়া দেয়। এরপর একই নামের চলচ্চিত্র নির্মাণ করে হুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করেন, যার জন্য তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পান।
তার চেয়ে বড় কাজটি হলো ‘জোছনা ও জননীর গল্প’। এই উপন্যাসে মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি বিশালতর হয়, অনেক বেশি বৈচিত্র্যময় চরিত্র, ঘটনার ঘনঘটা, রাজনীতি, সমাজ ও নারীর ভূমিকা উঠে আসে। এখানে যেমন বীর মুক্তিযোদ্ধা আছেন, তেমনি আছেন রাজাকার, বিশ্বাসঘাতক, নির্যাতিত নারী কিংবা সাহসী সাধারণ মানুষ। এটি নিছক উপন্যাস নয়, যেন এক মুক্তিযুদ্ধ-ডায়েরি, যেখানে হুমায়ূন আহমেদ তাঁর নিজের স্মৃতি, সমাজবাস্তবতা এবং পাঠক প্রত্যাশার মেলবন্ধনে তৈরি করেছেন এক কালজয়ী সাহিত্যের গাথা।
একইভাবে, মৃত্যুর আগে লেখা তাঁর শেষ উপন্যাস ‘দেয়াল’ ছিল সাম্প্রতিক ইতিহাসের স্পর্শকাতর অধ্যায় নিয়ে সাহসী লেখনী। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, জেলহত্যা, সামরিক উত্থান—এসব বিষয়ে লেখা তাঁর উপন্যাস নিয়ে যেমন বিতর্ক হয়েছে, তেমনি বিস্ময়ও জাগিয়েছে যে হুমায়ূন আহমেদ এত সরাসরি রাজনৈতিক সত্যকে সাহিত্যে টেনে আনতে পারেন। তাঁর এই সাহসিকতা ছিল একটি মৌলিক সাহিত্যিক অবস্থান।
হুমায়ূন আহমেদকে অনেকে ‘জাদুকরী লেখক’ বলেন। কিন্তু এই জাদু ছিল কেবল ভাষার নয়; এটি ছিল সময়চেতনা, ইতিহাস-সচেতনতা ও মানবিক অবস্থানের এক আশ্চর্য সংমিশ্রণ। তিনি রাজনীতি নিয়ে সরাসরি প্রচারধর্মী লেখালেখি না করলেও তাঁর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক রচনায় যেন সময়কে সত্য বলার এক প্রচ্ছন্ন দ্রোহ দেখা যায়। পঁচাত্তরের পর যে সময়টিতে রাজাকারদের পুনর্বাসন শুরু হয়, মুক্তিযোদ্ধাদের হেয় করে রাষ্ট্রীয় ভাষ্য তৈরি করা হয়, সেই সময়ে হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন সাহসী এক ব্যতিক্রম। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র না হয়েও সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সত্য বলার দায় থেকে নিজেকে বিরত রাখেননি।
এই জায়গা আমাদের বিশেষভাবে ভাবায়। এ দেশে মুক্তিযুদ্ধকে কেউ কেউ রাজনৈতিক পুঁজি, কেউ কেউ ইতিহাসের বোঝা হিসেবে দেখেন। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদ দেখেছেন এক মমতার চোখে, এক বিবেকের দায়িত্ব থেকে। তিনি চেয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি তরুণ প্রজন্মের মনে গভীরভাবে গেঁথে দিতে, আর তাই সহজ ভাষায়, প্রবহমান গদ্যে তিনি বলেছেন সেই সময়ের কথা, যে সময় একদিকে নির্যাতন, ভয়, ধর্ষণ, বিশ্বাসঘাতকতা; অন্যদিকে আত্মত্যাগ, সাহস, প্রেম এবং স্বাধীনতার জন্য অদম্য আকাঙ্ক্ষায় পরিপূর্ণ।
তিনি ছিলেন শিক্ষক, কিন্তু তাঁর কোনো লেখায় শেখানোর গন্ধ পাওয়া যায় না। পাঠককে তিনি পথ দেখিয়েছেন তাঁর নিজের মতো করে—আবেগ দিয়ে, গল্প দিয়ে, প্রশ্ন করে, ভাবনায় ডুবিয়ে। রবীন্দ্রনাথ যেমন ‘অনেক কথা যাও যে ব’লে, কোনো কথা না বলি’, হুমায়ূনের লেখাও যেন অনেক কথা বলে দেয় ছোট ছোট ঘটনার মধ্যে, অনুচ্চ স্বরে, মৃদু আলোছায়ায়।
আমরা যখন দেখি, তরুণেরা ‘শুভ্র’ বা ‘হিমু’ পড়ে নিজেদের মতো করে সমাজকে দেখতে শেখে, বা ‘মিসির আলী’র মতো যুক্তিবাদী চরিত্রে বাস্তবতা আর রহস্যকে মিলিয়ে নিতে শেখে, তখন আমরা বুঝতে পারি, হুমায়ূন আহমেদ কেবল গল্প লেখেননি, তিনি পাঠকের চিন্তার দিক উন্মোচন করেছেন।
হুমায়ূন আহমেদ তাই শুধু একটি নাম নয়, একটি প্রজন্মের আবেগ, একটি সময়ের সাক্ষ্য, একটি সমাজের মৃদু প্রতিবাদ। তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে হলে কেবল তাঁর জন্মদিন কিংবা মৃত্যুদিনে ফুল দিয়ে নয়, বরং মুক্তিযুদ্ধের সত্য ইতিহাস, মানবিক মূল্যবোধ ও যুক্তিবোধকে লালন করেই করতে হবে। কারণ, তিনি শিখিয়ে গেছেন, যে গল্প ভালোবাসা থেকে জন্ম নেয়, তা শুধু বিনোদন নয়; তা এক গভীর দায়িত্বও।
তিনি ছিলেন আমাদের সময়ের কথাকার, তিনি হয়ে উঠেছেন সময়েরও ওপারে এক জীবন্ত চরিত্র। আর তাঁর সবচেয়ে বড় পরিচয়, তিনি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে এক সাহসী কলমসৈনিক।
২০১২ সালের ১৯ জুলাই, এক বর্ষামুখর দিন। আমেরিকার একটি হাসপাতালে ৬৩ বছর বয়সে হুমায়ূন আহমেদ নিঃশব্দে জীবনকে বিদায় জানান। মৃত্যুর আগের দিনগুলোতে ক্যানসারে আক্রান্ত এই জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক একটি পত্রিকায় প্রশ্ন রেখেছিলেন, ‘একটা কচ্ছপ তিন শ বছর বাঁচে, অথচ মানুষের আয়ু এত কম কেন?’ এই প্রশ্ন ছিল যেন তাঁরই জীবনের প্রতিধ্বনি—জীবনকে আরও একটু ভালোবাসতে চাওয়ার, একটু বেশি সময় ধরে বাঁচার এক প্রগাঢ় আকুতির প্রকাশ। তাঁর মৃত্যু শুধু একজন লেখকের প্রয়াণ নয়, বরং ছিল একটি সময়ের, একটি ধারার, একটি কল্পলোকের অবসান।
হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন সেই লেখক, যিনি সাহিত্যের মুখর গণ্ডি থেকে বেরিয়ে সাধারণ মানুষের হৃদয়ে পৌঁছে গেছেন। পাঠকের চোখে চোখ রেখে তিনি গল্প বলেছেন, কথাসাহিত্যের হালকা সুরে গেঁথে দিয়েছেন সমাজ, রাজনীতি এবং ইতিহাসের গুরুগম্ভীর বক্তব্য। তাঁর লেখাকে কেউ কেউ কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলেছেন ‘মধ্যবিত্তের আবেগের শিকার’। কিন্তু সেই আবেগের শিকড় যে কোথায় প্রোথিত, তা হয়তো তাঁরা বুঝে ওঠেননি।
হুমায়ূন আহমেদের রচনা জগৎ বিশাল। কিন্তু এর ভেতরেও আলাদা করে চোখে পড়ে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক তাঁর সাহিত্য প্রয়াস। বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্যে যেখানে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখালেখি শুরু হয় বেশ বিলম্বে এবং প্রথাগত কাঠামোর মধ্যে, হুমায়ূন আহমেদ সেখানে সাহসের সঙ্গে এক নতুন ঘরানা তৈরি করেন। তাঁর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাসগুলো; যেমন ‘আগুনের পরশমণি’, ‘জোছনা ও জননীর গল্প’, ‘১৯৭১’, ‘দেয়াল’—কেবল ঐতিহাসিক দলিল নয়, বরং মুক্তিযুদ্ধকে অনুভব করার এক অভিনব ভাষ্য।
‘আগুনের পরশমণি’ তাঁর প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস, যেখানে একটি সাধারণ পরিবার কীভাবে অরাজনৈতিক অবস্থান থেকে ধীরে ধীরে মুক্তিযুদ্ধের সক্রিয় অংশ হয়ে ওঠে, সেই বিবর্তনের আখ্যান ফুটে উঠেছে। এটি একটি পরিণত রাজনৈতিক উপন্যাস না হয়েও যুদ্ধের বাস্তবতা, ভয়, বেদনাকে এত জীবন্তভাবে তুলে ধরেছে যে তা পাঠককে গভীরভাবে নাড়া দেয়। এরপর একই নামের চলচ্চিত্র নির্মাণ করে হুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করেন, যার জন্য তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পান।
তার চেয়ে বড় কাজটি হলো ‘জোছনা ও জননীর গল্প’। এই উপন্যাসে মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি বিশালতর হয়, অনেক বেশি বৈচিত্র্যময় চরিত্র, ঘটনার ঘনঘটা, রাজনীতি, সমাজ ও নারীর ভূমিকা উঠে আসে। এখানে যেমন বীর মুক্তিযোদ্ধা আছেন, তেমনি আছেন রাজাকার, বিশ্বাসঘাতক, নির্যাতিত নারী কিংবা সাহসী সাধারণ মানুষ। এটি নিছক উপন্যাস নয়, যেন এক মুক্তিযুদ্ধ-ডায়েরি, যেখানে হুমায়ূন আহমেদ তাঁর নিজের স্মৃতি, সমাজবাস্তবতা এবং পাঠক প্রত্যাশার মেলবন্ধনে তৈরি করেছেন এক কালজয়ী সাহিত্যের গাথা।
একইভাবে, মৃত্যুর আগে লেখা তাঁর শেষ উপন্যাস ‘দেয়াল’ ছিল সাম্প্রতিক ইতিহাসের স্পর্শকাতর অধ্যায় নিয়ে সাহসী লেখনী। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, জেলহত্যা, সামরিক উত্থান—এসব বিষয়ে লেখা তাঁর উপন্যাস নিয়ে যেমন বিতর্ক হয়েছে, তেমনি বিস্ময়ও জাগিয়েছে যে হুমায়ূন আহমেদ এত সরাসরি রাজনৈতিক সত্যকে সাহিত্যে টেনে আনতে পারেন। তাঁর এই সাহসিকতা ছিল একটি মৌলিক সাহিত্যিক অবস্থান।
হুমায়ূন আহমেদকে অনেকে ‘জাদুকরী লেখক’ বলেন। কিন্তু এই জাদু ছিল কেবল ভাষার নয়; এটি ছিল সময়চেতনা, ইতিহাস-সচেতনতা ও মানবিক অবস্থানের এক আশ্চর্য সংমিশ্রণ। তিনি রাজনীতি নিয়ে সরাসরি প্রচারধর্মী লেখালেখি না করলেও তাঁর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক রচনায় যেন সময়কে সত্য বলার এক প্রচ্ছন্ন দ্রোহ দেখা যায়। পঁচাত্তরের পর যে সময়টিতে রাজাকারদের পুনর্বাসন শুরু হয়, মুক্তিযোদ্ধাদের হেয় করে রাষ্ট্রীয় ভাষ্য তৈরি করা হয়, সেই সময়ে হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন সাহসী এক ব্যতিক্রম। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র না হয়েও সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সত্য বলার দায় থেকে নিজেকে বিরত রাখেননি।
এই জায়গা আমাদের বিশেষভাবে ভাবায়। এ দেশে মুক্তিযুদ্ধকে কেউ কেউ রাজনৈতিক পুঁজি, কেউ কেউ ইতিহাসের বোঝা হিসেবে দেখেন। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদ দেখেছেন এক মমতার চোখে, এক বিবেকের দায়িত্ব থেকে। তিনি চেয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি তরুণ প্রজন্মের মনে গভীরভাবে গেঁথে দিতে, আর তাই সহজ ভাষায়, প্রবহমান গদ্যে তিনি বলেছেন সেই সময়ের কথা, যে সময় একদিকে নির্যাতন, ভয়, ধর্ষণ, বিশ্বাসঘাতকতা; অন্যদিকে আত্মত্যাগ, সাহস, প্রেম এবং স্বাধীনতার জন্য অদম্য আকাঙ্ক্ষায় পরিপূর্ণ।
তিনি ছিলেন শিক্ষক, কিন্তু তাঁর কোনো লেখায় শেখানোর গন্ধ পাওয়া যায় না। পাঠককে তিনি পথ দেখিয়েছেন তাঁর নিজের মতো করে—আবেগ দিয়ে, গল্প দিয়ে, প্রশ্ন করে, ভাবনায় ডুবিয়ে। রবীন্দ্রনাথ যেমন ‘অনেক কথা যাও যে ব’লে, কোনো কথা না বলি’, হুমায়ূনের লেখাও যেন অনেক কথা বলে দেয় ছোট ছোট ঘটনার মধ্যে, অনুচ্চ স্বরে, মৃদু আলোছায়ায়।
আমরা যখন দেখি, তরুণেরা ‘শুভ্র’ বা ‘হিমু’ পড়ে নিজেদের মতো করে সমাজকে দেখতে শেখে, বা ‘মিসির আলী’র মতো যুক্তিবাদী চরিত্রে বাস্তবতা আর রহস্যকে মিলিয়ে নিতে শেখে, তখন আমরা বুঝতে পারি, হুমায়ূন আহমেদ কেবল গল্প লেখেননি, তিনি পাঠকের চিন্তার দিক উন্মোচন করেছেন।
হুমায়ূন আহমেদ তাই শুধু একটি নাম নয়, একটি প্রজন্মের আবেগ, একটি সময়ের সাক্ষ্য, একটি সমাজের মৃদু প্রতিবাদ। তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে হলে কেবল তাঁর জন্মদিন কিংবা মৃত্যুদিনে ফুল দিয়ে নয়, বরং মুক্তিযুদ্ধের সত্য ইতিহাস, মানবিক মূল্যবোধ ও যুক্তিবোধকে লালন করেই করতে হবে। কারণ, তিনি শিখিয়ে গেছেন, যে গল্প ভালোবাসা থেকে জন্ম নেয়, তা শুধু বিনোদন নয়; তা এক গভীর দায়িত্বও।
তিনি ছিলেন আমাদের সময়ের কথাকার, তিনি হয়ে উঠেছেন সময়েরও ওপারে এক জীবন্ত চরিত্র। আর তাঁর সবচেয়ে বড় পরিচয়, তিনি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে এক সাহসী কলমসৈনিক।
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তর হয়ে রক্তক্ষয়ী জুলাই গণ-অভ্যুত্থান, বিপ্লবী—এই পথপরিক্রমায় যাঁর কবিতা মুক্তিকামী গণমানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে, তিনি সবুজের কবি আল মাহমুদ। দ্রোহ, প্রেম, প্রকৃতি ও প্রার্থনার কবি আল মাহমুদের ৯০তম জন্মদিন আজ শুক্রবার (১১ জুলাই)।
৯ দিন আগেপৃথিবীর বিস্ময় ডোনাল্ড ট্রাম্প। জীবনে হননি কী! তিনবারের স্বামী, পাঁচবার বাবা, কয়েকবার বিলিয়নিয়ার, দুবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও হাজারো টুইটের কবি। কিন্তু এত প্রাপ্তির মাঝেও রয়ে গেছে এক শূন্যতা। তাঁর ঝুলিতে এখনো নেই নোবেল শান্তি পুরস্কার। ‘হিংসুটে’ নোবেল কমিটির কারণেই তাঁর জীবনে আজও এই অপ্রাপ্তি।
৯ দিন আগেবাংলা সাহিত্যের নক্ষত্র, নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৩৫টি হাতে লেখা চিঠি ও ১৪টি খাম আগামী সপ্তাহে নিলামে উঠছে। এর আনুমানিক মূল্য ধরা হয়েছে ৫-৭ কোটি রুপি। মূল্য ও ব্যাপ্তির দিক থেকে কবির সৃষ্টিকর্মের সবচেয়ে বড় নিলাম হতে চলেছে এটি। এই ঐতিহাসিক নিলামটি ২৬-২৭ জুন অনলাইনে আয়োজন করবে মুম্বাইভিত্তিক
২৩ জুন ২০২৫সামগ্রিকভাবে পশ্চিমা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও শিল্পকর্মকে ‘বুর্জোয়া’ ও ‘প্রতিক্রিয়াশীল’ বলে চিহ্নিত করে নিষিদ্ধ করা হয় চীনে। এই পরিপ্রেক্ষিতেই শেকসপিয়ারের সব সাহিত্যকর্ম—যেমন হ্যামলেট, ম্যাকবেথ, রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট, ওথেলো ইত্যাদি—চীনে নিষিদ্ধ হয়, কারণ সেগুলোতে চীনা কমিউনিস্ট আদর্শের ‘সঠিক রাজনৈতিক
২৫ মে ২০২৫