Ajker Patrika

আবুল হুসেন

সম্পাদকীয়
আবুল হুসেন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ঢাকার মুসলমানদের মধ্যে আধুনিকতার প্রবেশ ঘটার পথটি সুগম হয়েছিল। ১৯২১ সালে যখন ঢাকা একটি বিশ্ববিদ্যালয় পেল, তখন দেখা গেল বেশ কয়েকজন মুসলমান মেধাবী মানুষ যুক্ত হয়েছেন এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। ১৯২৬ সালের ১৯ জানুয়ারি ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে ‘মুসলিম সাহিত্য সমাজ’ নামে একটি সংগঠনের জন্ম হয়। এই সংগঠনে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নামগুলো হলো—কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, আবদুল কাদির।

‘মুসলিম’ শব্দটি ছিল সংগঠনের নামের সঙ্গে। কিন্তু সেটা ছিল একেবারেই অসাম্প্রদায়িক একটি সংগঠন। এই সংগঠনের বার্ষিক মুখপত্রের নাম ছিল ‘শিখা’। সংগঠনটির প্রাণপুরুষ ছিলেন আবদুল ওদুদ ও আবুল হুসেন। শিখার সম্পাদক ছিলেন আবুল হুসেন। পত্রিকার মুখবাণীতে বলা হয়েছিল, ‘জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি যেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।’

১৮৯৭ সালে জন্ম হয়েছিল আবুল হুসেনের। যশোর জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন, কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে আইএ ও বিএ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২০ সালে তিনি অর্থনীতিতে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। কলকাতার হেয়ার স্কুলে শিক্ষকতা দিয়ে পেশাগত জীবন শুরু করেছিলেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ও বাণিজ্য বিভাগের লেকচারার হন। তিনি মুসলিম হলের হাউস টিউটর ছিলেন। তাঁর একটি উল্লেখযোগ্য কাজ হলো ‘বাঙালি মুসলমানের শিক্ষা সমস্যা।’ বাঙালি মুসলমানের শিক্ষা নিয়ে এতটাবাস্তবমুখী কাজ তখন পর্যন্ত আর কেউ করেননি। ‘শিখা’ ছাড়াও ‘তরুণ পত্র’ নামে একটি পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন তিনি।

আবুল হুসেন ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন নিয়ে এমএ পাস করা প্রথম বাঙালি মুসলমান। খুবই স্বল্পস্থায়ী জীবন ছিল তাঁর। মাত্র ৪২ বছর বয়সে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ১৯৩৮ সালে তিনি মারা যান। ১৫ অক্টোবর তাঁর মৃত্যুদিবস।

বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের অন্যতম উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত