ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন
প্রশ্ন: বিয়ের বয়স দেড় বছর চলছে। বিয়ের সময় শ্বশুরবাড়ি থেকে কোনো ধরনের যৌতুক চাওয়া হয়নি। মা-বাবা বিয়ের সময় খাট ও আলমারি উপহার দিয়েছিলেন। বিয়ের দু-তিন মাস পর থেকে শাশুড়ি তাঁর আত্মীয়দের কাছে বলে বেড়াতে থাকেন, আমার পরিবার বিয়েতে কিছু দেয়নি। শ্বশুরবাড়ির সবাই আমার সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করে। মানসিক অত্যাচার করে। কিন্তু নিজেরা কখনো সরাসরি বলে না যে তাদের আসবাব বা টাকা লাগবে। দিন দিন ব্যাপারটা অসহনীয় পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। তারা আমার গর্ভপাত করিয়েছে এই বলে যে স্বামীর এখনো সন্তান লালনপালন করার ক্ষমতা হয়নি। আমার স্বামী এসব ব্যাপারে কিছুই বলে না। আমার সন্দেহ, তার অন্য কোনো মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক আছে। একমুহূর্ত এই সংসারে থাকতে চাই না। যেহেতু তারা শারীরিকভাবে অত্যাচার করছে না, আমি ডিভোর্স দিতে চাইলে কি দিতে পারব?
তাবাসসুম আঁখি, কুমিল্লা
উত্তর: আপনার শ্বশুরবাড়ি থেকে যে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে, স্বামীকে ডিভোর্স দেওয়ার জন্য তা যথেষ্ট। শারীরিক নির্যাতন না করলে ডিভোর্স দেওয়া যাবে না, এমন নয়। আপনি স্বামী এবং তাঁর পরিবার কর্তৃক পারিবারিক নির্যাতনের শিকার।
২০১০ সালে দেশে পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন পাস হয়। এই আইনের ৩ ধারা অনুযায়ী, পারিবারিক সহিংসতা বলতে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে এমন কোনো ব্যক্তির দ্বারা পরিবারের অন্য কোনো নারী বা শিশু সদস্যের ওপর শারীরিক, মানসিক, যৌন নির্যাতন এবং আর্থিক ক্ষতিকে বোঝায়। এই আইন শুধু স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে নির্যাতনসংক্রান্ত নয়; বরং পরিবারের যেকোনো সদস্যের বিরুদ্ধে নির্যাতনের ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে।
এই আইনের আওতায় মানসিক নির্যাতনের জন্য শাস্তির বিধান আছে এবং পরিবারের যে কেউ, এ ক্ষেত্রে শ্বশুরবাড়ির যারাই আপনার সঙ্গে খারাপ আচরণ করছে, তাদের বিরুদ্ধে আপনি আইনি প্রতিকার চাইতে পারেন। পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইনটি মানসিক ও আর্থিক ক্ষতির জন্য মামলা করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। এই আইনে মানসিক নির্যাতন হচ্ছে, এমন কোনো কথা বলা, যার মাধ্যমে অন্য ব্যক্তি অপমানিত বা ভীত হয় এবং যার মাধ্যমে অন্য ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয় ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা লোপ পায়। এ ছাড়া পুরুষতান্ত্রিক আচরণের মাধ্যমে ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা, পরিবার ও বাইরের মানুষের সামনে অপমান করা, সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখা—এগুলোও মানসিক নির্যাতনের অন্তর্ভুক্ত। আবার আর্থিক ক্ষতি বলতে জোর করে অর্থ দিতে বাধ্য করা ও আর্থিক স্বাধীনতায় বাধা দেওয়াকে বোঝানো হয়েছে। নিত্যদিনের পণ্য ব্যবহার করা থেকে বঞ্চিত করা, প্রয়োজনীয় খরচের জন্য অর্থ না দেওয়া—এগুলোও আর্থিক ক্ষতির অন্তর্ভুক্ত।
যেকোনো বয়সের নারী ও ১৮ বছরের কম বয়সের যেকোনো শিশু উল্লিখিত আইনের সুবিধা ভোগ করতে পারবে। আপনি আইনজীবীর মাধ্যমে বা সরাসরি আদালতে আবেদন করতে পারবেন। আবার পুলিশ ও আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তার (মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা) মাধ্যমেও মামলা করতে পারেন। তাঁরা সব ধরনের সহযোগিতা করতে বাধ্য থাকবেন।
মানসিক নির্যাতনের জন্য আপনি চাইলে ডিভোর্সও দিতে পারেন। তবে মামলা করার পর ডিভোর্স দিতে হবে। আদালতের কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে বিচার চলাকালে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা তাঁর সাহায্যকারী প্রতিপক্ষ কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হওয়ার আশঙ্কা আছে, তাহলে সে ক্ষেত্রে আদালত মামলাকারীর পক্ষে সুরক্ষা আদেশ দিতে পারেন। মামলাকারী চাইলে স্বেচ্ছায় সুরক্ষা আদেশের জন্য প্রার্থনা করে আদালতে আবেদনও করতে পারেন।
পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরক্ষা ও সুরক্ষা) আইনের ১৬ ধারায় ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আপনি চাইলে আদালতে ক্ষতিপূরণের আবেদন করতে পারেন।
পরামর্শ দিয়েছেন, ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন,অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
প্রশ্ন: বিয়ের বয়স দেড় বছর চলছে। বিয়ের সময় শ্বশুরবাড়ি থেকে কোনো ধরনের যৌতুক চাওয়া হয়নি। মা-বাবা বিয়ের সময় খাট ও আলমারি উপহার দিয়েছিলেন। বিয়ের দু-তিন মাস পর থেকে শাশুড়ি তাঁর আত্মীয়দের কাছে বলে বেড়াতে থাকেন, আমার পরিবার বিয়েতে কিছু দেয়নি। শ্বশুরবাড়ির সবাই আমার সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করে। মানসিক অত্যাচার করে। কিন্তু নিজেরা কখনো সরাসরি বলে না যে তাদের আসবাব বা টাকা লাগবে। দিন দিন ব্যাপারটা অসহনীয় পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। তারা আমার গর্ভপাত করিয়েছে এই বলে যে স্বামীর এখনো সন্তান লালনপালন করার ক্ষমতা হয়নি। আমার স্বামী এসব ব্যাপারে কিছুই বলে না। আমার সন্দেহ, তার অন্য কোনো মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক আছে। একমুহূর্ত এই সংসারে থাকতে চাই না। যেহেতু তারা শারীরিকভাবে অত্যাচার করছে না, আমি ডিভোর্স দিতে চাইলে কি দিতে পারব?
তাবাসসুম আঁখি, কুমিল্লা
উত্তর: আপনার শ্বশুরবাড়ি থেকে যে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে, স্বামীকে ডিভোর্স দেওয়ার জন্য তা যথেষ্ট। শারীরিক নির্যাতন না করলে ডিভোর্স দেওয়া যাবে না, এমন নয়। আপনি স্বামী এবং তাঁর পরিবার কর্তৃক পারিবারিক নির্যাতনের শিকার।
২০১০ সালে দেশে পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন পাস হয়। এই আইনের ৩ ধারা অনুযায়ী, পারিবারিক সহিংসতা বলতে পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে এমন কোনো ব্যক্তির দ্বারা পরিবারের অন্য কোনো নারী বা শিশু সদস্যের ওপর শারীরিক, মানসিক, যৌন নির্যাতন এবং আর্থিক ক্ষতিকে বোঝায়। এই আইন শুধু স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে নির্যাতনসংক্রান্ত নয়; বরং পরিবারের যেকোনো সদস্যের বিরুদ্ধে নির্যাতনের ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে।
এই আইনের আওতায় মানসিক নির্যাতনের জন্য শাস্তির বিধান আছে এবং পরিবারের যে কেউ, এ ক্ষেত্রে শ্বশুরবাড়ির যারাই আপনার সঙ্গে খারাপ আচরণ করছে, তাদের বিরুদ্ধে আপনি আইনি প্রতিকার চাইতে পারেন। পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইনটি মানসিক ও আর্থিক ক্ষতির জন্য মামলা করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। এই আইনে মানসিক নির্যাতন হচ্ছে, এমন কোনো কথা বলা, যার মাধ্যমে অন্য ব্যক্তি অপমানিত বা ভীত হয় এবং যার মাধ্যমে অন্য ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয় ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা লোপ পায়। এ ছাড়া পুরুষতান্ত্রিক আচরণের মাধ্যমে ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা, পরিবার ও বাইরের মানুষের সামনে অপমান করা, সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখা—এগুলোও মানসিক নির্যাতনের অন্তর্ভুক্ত। আবার আর্থিক ক্ষতি বলতে জোর করে অর্থ দিতে বাধ্য করা ও আর্থিক স্বাধীনতায় বাধা দেওয়াকে বোঝানো হয়েছে। নিত্যদিনের পণ্য ব্যবহার করা থেকে বঞ্চিত করা, প্রয়োজনীয় খরচের জন্য অর্থ না দেওয়া—এগুলোও আর্থিক ক্ষতির অন্তর্ভুক্ত।
যেকোনো বয়সের নারী ও ১৮ বছরের কম বয়সের যেকোনো শিশু উল্লিখিত আইনের সুবিধা ভোগ করতে পারবে। আপনি আইনজীবীর মাধ্যমে বা সরাসরি আদালতে আবেদন করতে পারবেন। আবার পুলিশ ও আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তার (মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা) মাধ্যমেও মামলা করতে পারেন। তাঁরা সব ধরনের সহযোগিতা করতে বাধ্য থাকবেন।
মানসিক নির্যাতনের জন্য আপনি চাইলে ডিভোর্সও দিতে পারেন। তবে মামলা করার পর ডিভোর্স দিতে হবে। আদালতের কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে বিচার চলাকালে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা তাঁর সাহায্যকারী প্রতিপক্ষ কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হওয়ার আশঙ্কা আছে, তাহলে সে ক্ষেত্রে আদালত মামলাকারীর পক্ষে সুরক্ষা আদেশ দিতে পারেন। মামলাকারী চাইলে স্বেচ্ছায় সুরক্ষা আদেশের জন্য প্রার্থনা করে আদালতে আবেদনও করতে পারেন।
পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরক্ষা ও সুরক্ষা) আইনের ১৬ ধারায় ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আপনি চাইলে আদালতে ক্ষতিপূরণের আবেদন করতে পারেন।
পরামর্শ দিয়েছেন, ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন,অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
প্রতিবন্ধী নারীদের জন্য সহজলভ্য ও নিরাপদ স্যানিটারি পণ্য উদ্ভাবনে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের মিলনায়তনে আয়োজিত ‘প্রতিবন্ধী নারীদের জন্য স্যানিটারি পণ্য উদ্ভাবন’ শীর্ষক প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাঁরা
১ দিন আগেনারীর সংজ্ঞা জৈবিক লিঙ্গের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে বলে ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট। ট্রান্সজেন্ডারদের লৈঙ্গিকভিত্তিক সুরক্ষার আবেদন খারিজ করে আদালত জানিয়েছেন, লিঙ্গ একটি দ্বৈত ধারণা—নারী অথবা পুরুষ। তবে ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিরা বিদ্যমান আইনে বৈষম্যের বিরুদ্ধে সুরক্ষা পান।
২ দিন আগেমধ্যবিত্ত এক পরিবারে বেড়ে ওঠা মানুষের গন্তব্য লেখাপড়া শেষ করে চাকরি পাওয়া। তারপর নিজেকে গুছিয়ে নেওয়া। কিন্তু কখনো কখনো কিছু মানুষ এই বৃত্ত ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেন। সে এক বিশাল লড়াই। তেমনই লড়াই করে চলেছেন এক তরুণ উদ্যোক্তা ইফ্ফাত আলম জেসিকা। নিজের তো বটেই, কর্মসংস্থান করেছেন আরও প্রায় ৩২ জন নারীর।
৩ দিন আগেআমি কোর্টের মাধ্যমে স্বামীকে তালাক দিই। সে জন্য তিনটি নোটিশ পাঠাই তাকে। কিন্তু সে প্রবাসে থাকে বলে স্বাক্ষর নেই। এখন অনেক জায়গা থেকে শুনছি, এই তালাক নাকি হয়নি। আমার বিয়ের বয়স চার বছর। বিয়ের প্রথম সপ্তাহেই আমার স্বামী প্রবাসে চলে যায়। প্রথম এক বছর আমার সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল।
৩ দিন আগে