Ajker Patrika

উত্তরণ

সঠিকভাবে আইনগত পদক্ষেপ নিলে অধিকার সুরক্ষিত হবে

ব্যারিস্টার ইফফাত গিয়াস আরেফিন
Thumbnail image
ছবি: সংগৃহীত

আমার বিয়ের বয়স ছয় মাস। রেজিস্ট্রি করে রাখা ছিল। সামনের মাসে অনুষ্ঠান করে বিদায়ের কথা। কিন্তু এই মাসে আমাকে ছেলে তালাকের নোটিশ পাঠিয়েছে।

সে যে কারণ দেখিয়েছে, তা মিথ্যা ও বানোয়াট। এর কোনো প্রমাণ তার কাছে নেই। সে বলছে, তার মা আমাকে মানবে না। অথচ বিয়ের সময় তার মাসহ পরিবারের সবাই ছিলেন। আমি এখন কী করতে পারি? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, কুমিল্লা

আপনার পরিস্থিতি অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং আইনগত সহায়তা প্রয়োজন। যেসব করণীয় বিষয় এখানে উল্লেখ করা হলো, সেগুলো আপনার অধিকার রক্ষা করতে সহায়তা করতে পারে।

প্রথমে নিশ্চিত করুন, তালাক নোটিশটি আইনত সঠিক এবং নিয়ম অনুযায়ী পাঠানো হয়েছে কি না। দেশে মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী, তালাক কার্যকর হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম ও পদ্ধতি মানা আবশ্যক।

তালাক কার্যকর হওয়ার আগে সালিসি বোর্ড গঠন করা বাধ্যতামূলক। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ বা সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে সালিসি বোর্ড গঠনের অনুরোধ করুন। বোর্ডের মাধ্যমে আপনার বক্তব্য উপস্থাপন করার সুযোগ পাবেন।

যদি আপনার স্বামী মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে থাকেন, তাহলে সেগুলোর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারেন। আপনি একটি আইনি জবাব দিতে পারেন, যেখানে আপনি তাঁর অভিযোগগুলো অস্বীকার করবেন এবং সত্য ঘটনা তুলে ধরবেন।

বিয়ের সময় নির্ধারিত মোহরানা পাওয়ার অধিকার আপনার আছে। যদি তালাক কার্যকর হয়, তবে মোহরানার পুরো টাকার দাবি করতে পারবেন। এ ছাড়া আপনি নফকা (ভরণপোষণ) বা অন্যান্য অধিকার দাবি করতে পারেন।

যদি সম্ভব হয়, পারিবারিকভাবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করুন। আপনার পরিবার এবং তাঁর পরিবারের মধ্যে আলোচনা বা মধ্যস্থতা করতে পারেন।

আপনার স্বামীর পাঠানো তালাকের নোটিশ এবং আপনার অধিকার সম্পর্কে বিস্তারিত বোঝার জন্য একজন অভিজ্ঞ আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করুন। আপনার আইনজীবী আপনাকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে সহায়তা করবেন।

এই কঠিন সময়ে মানসিক সমর্থন পাওয়াও গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারের সদস্য ও কাছের বন্ধুদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলুন। বাংলাদেশের মুসলিম পারিবারিক আইন, ১৯৬১ অনুযায়ী, একজন

স্ত্রী তালাক নোটিশের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে এবং তাঁর অধিকারগুলো দাবি করতে পারেন। কাজেই আপনার পরবর্তী পদক্ষেপগুলো হবে—

  • তালাক নোটিশটি বিস্তারিতভাবে যাচাই করা।
  • সালিসি বোর্ডে আপনার বক্তব্য উপস্থাপন করা।
  • মোহরানা এবং অন্যান্য আর্থিক দাবির জন্য লিখিত আবেদন করা।
  • প্রমাণ ছাড়া মিথ্যা অভিযোগের বিরুদ্ধে আইনগত নোটিশ পাঠানো।

পরামর্শ দিয়েছেন: অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত