নাজমুল হক নাঈম, ঢাকা

আজ ৩ এপ্রিল, জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের এই দিনে তখনকার পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি) গঠনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এই দিনকে স্মরণ করে ২০১২ সাল থেকে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উদ্যাপন করা হয়।
পুরোনো কথা
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অভিনয়ের পাশাপাশি নারীরা সাফল্য পেয়েছিলেন প্রযোজনায়ও। এ ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য। যত দূর জানা যায়, একেবারে শুরুতে স্টার ফিল্ম করপোরেশনের ৬০ প্রযোজকের মধ্যে ৩ জন ছিলেন নারী। তাঁদের হাত ধরে সুমিতা দেবী, মালতী দে, সুচন্দা, কুমকুম রহমান, মাহবুবা রহমান, সুলতানা জামান, নীলুফার খায়ের, জোহরা কাজী একের পর এক ব্যবসাসফল সিনেমা উপহার দিয়েছিলেন। অভিনয়ে সাফল্য লাভের পর প্রযোজকের খাতায় নাম লিখিয়েছিলেন সুজাতা, ববিতা, কবরী, শাবানার মতো জনপ্রিয় অভিনেত্রীরা।
নারী প্রযোজকেরা কখনো একা আবার কখনো সহশিল্পী কিংবা সহকর্মীদের সঙ্গে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিলেন। অভিনেত্রী সুজাতা ছিলেন এ ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য। ১৯৭৬ সালে প্রযোজনায় আসেন তিনি। সুজাতা প্রোডাকশনসের ব্যানারে তিনি ‘অর্পণ’ নামে একটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছিলেন। এরপর নির্মিত হয় ‘প্রতিনিধি’ নামের একটি চলচ্চিত্র। সুজাতা পরে আজিমের সঙ্গে ‘এস এ ফিল্মস’ ও ‘সুফল কথাচিত্র’ নামের আরও দুটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান চালু করেছিলেন। এ তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে নির্মিত হয়েছিল ‘চেনা-অচেনা’, ‘টাকার খেলা’, ‘রূপবানের রূপকথা’, ‘বদলা’, ‘রং-বেরং’, ‘এখানে আকাশ নীল’ ইত্যাদি চলচ্চিত্র।
শ্রীমতী প্রোডাকশন নামে নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিলেন অভিনেত্রী কবরী। কিন্তু প্রথম চলচ্চিত্র ‘শীত-বসন্ত’ সেন্সরে জমা দেওয়ার পর আপত্তির মুখে প্রতিষ্ঠানের নাম বদলে ফেলতে বাধ্য হন তিনি। বরেণ্য অভিনেত্রী ববিতার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল ববিতা মুভিজ। ‘পোকামাকড়ের ঘরবসতি’ চলচ্চিত্রটি তৈরি হয়েছিল এই প্রতিষ্ঠান থেকে। একটানা ২২ বছর অভিনয়ের পর চলচ্চিত্র প্রযোজনায় নাম লিখিয়েছিলেন শাবানা। স্বামী ওয়াহিদ সাদিককে সঙ্গী করে গড়ে তোলেন এসএস প্রোডাকশন হাউস। ২৫টির বেশি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছিলেন তিনি।
বর্তমান প্রেক্ষাপট
চলচ্চিত্রশিল্পের বর্তমান প্রেক্ষাপট কী, সেটা সবাই কমবেশি আমরা জানি। প্রযোজকদের সংখ্যা দিন দিন কমছে তো বটেই, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পুরুষতান্ত্রিক ধ্যানধারণার প্রভাব। এসব নিয়ে কথা হয় নির্মাতা ও প্রযোজক নার্গিস আক্তারের সঙ্গে। ২০০০ সাল থেকে তিনি প্রযোজনার সঙ্গে যুক্ত। তিনি জানান, নারী প্রযোজক হিসেবে এ পর্যন্ত কোনো ধরনের সংকটের মুখে পড়তে হয়নি তাঁকে। যেভাবে কাজ করতে চেয়েছেন, নিশ্চিন্তে সেটা করেছেন। নার্গিস আক্তার বলেন, ‘তবে আমার মনে হয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীদের বাদ দিয়ে পুরুষ প্রযোজকেরা বেশি প্রাধান্য বিস্তার করেন।’
নিজের বেশির ভাগ চলচ্চিত্র নিজেই প্রযোজনা করেছেন নার্গিস আক্তার। প্রযোজক হিসেবে না হলেও পরিচালক হিসেবে আক্ষেপ আছে তাঁর। তিনি বলেন, ‘প্রযোজকেরা সাধারণত নারী নির্মাতাকে দিয়ে সিনেমা নির্মাণ করতে চান না। তাঁরা ধরে নেন, কোনো নারী এই কাজ করলে ধীরগতিতে হবে। কারণ নারী দুর্বল, মেধা কম ইত্যাদি। ফলে আমাদের সেই সুযোগটা দেওয়া হয় না।’
গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের সিনেমার প্রথম সারির অনেক নায়িকা প্রযোজনায় এসেছিলেন। তবে তাঁদের মধ্যে কয়েকজন ঘোষণা দিয়েই আড়ালে চলে গেছেন। অনেকে আবার দু-একটা সিনেমা তৈরির পর পিছু হটেছেন।
অভিনেত্রী জয়া আহসানের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘সি তে সিনেমা’। সেই প্রতিষ্ঠান থেকে তৈরি হয়েছে ‘দেবী’। আর মুক্তির অপেক্ষায় আছে ‘জয়া আর শারমিন’ নামের একটি চলচ্চিত্র। প্রযোজনা বিষয়ে জয়া বলেন, ‘ইন্ডাস্ট্রিতে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর প্রযোজনায় আসা যেতেই পারে। কারণ একটা সময়ে এখানকার সবকিছু হাতের রেখার মতো পরিষ্কার হয়ে যায়। যদি কাজটা তারা ভালোভাবে করে, ফাঁকফোকরগুলো পূরণ করতে পারে, তাহলে এখানেও ভালো কিছু করা সম্ভব।...’
প্রযোজক হিসেবে কাজ করছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’, ‘আ বার্নিং কোয়েশ্চেন’ চলচ্চিত্র দুটির প্রযোজক হিসেবে ছিলেন তিনি। এগুলো ছাড়া বেশ কয়েকটি ওয়েব সিরিজও প্রযোজনা করেছেন তিনি। তিশা বলেন, ‘প্রযোজক হিসেবে ভালো কনটেন্ট নির্মাণ করতে চাই।’
চলচ্চিত্রে অন্তরালের নারীরা আবার সক্রিয় হবেন কি না, সেটা সময়ই বলবে।

আজ ৩ এপ্রিল, জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের এই দিনে তখনকার পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি) গঠনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এই দিনকে স্মরণ করে ২০১২ সাল থেকে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উদ্যাপন করা হয়।
পুরোনো কথা
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অভিনয়ের পাশাপাশি নারীরা সাফল্য পেয়েছিলেন প্রযোজনায়ও। এ ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য। যত দূর জানা যায়, একেবারে শুরুতে স্টার ফিল্ম করপোরেশনের ৬০ প্রযোজকের মধ্যে ৩ জন ছিলেন নারী। তাঁদের হাত ধরে সুমিতা দেবী, মালতী দে, সুচন্দা, কুমকুম রহমান, মাহবুবা রহমান, সুলতানা জামান, নীলুফার খায়ের, জোহরা কাজী একের পর এক ব্যবসাসফল সিনেমা উপহার দিয়েছিলেন। অভিনয়ে সাফল্য লাভের পর প্রযোজকের খাতায় নাম লিখিয়েছিলেন সুজাতা, ববিতা, কবরী, শাবানার মতো জনপ্রিয় অভিনেত্রীরা।
নারী প্রযোজকেরা কখনো একা আবার কখনো সহশিল্পী কিংবা সহকর্মীদের সঙ্গে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিলেন। অভিনেত্রী সুজাতা ছিলেন এ ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য। ১৯৭৬ সালে প্রযোজনায় আসেন তিনি। সুজাতা প্রোডাকশনসের ব্যানারে তিনি ‘অর্পণ’ নামে একটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছিলেন। এরপর নির্মিত হয় ‘প্রতিনিধি’ নামের একটি চলচ্চিত্র। সুজাতা পরে আজিমের সঙ্গে ‘এস এ ফিল্মস’ ও ‘সুফল কথাচিত্র’ নামের আরও দুটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান চালু করেছিলেন। এ তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে নির্মিত হয়েছিল ‘চেনা-অচেনা’, ‘টাকার খেলা’, ‘রূপবানের রূপকথা’, ‘বদলা’, ‘রং-বেরং’, ‘এখানে আকাশ নীল’ ইত্যাদি চলচ্চিত্র।
শ্রীমতী প্রোডাকশন নামে নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিলেন অভিনেত্রী কবরী। কিন্তু প্রথম চলচ্চিত্র ‘শীত-বসন্ত’ সেন্সরে জমা দেওয়ার পর আপত্তির মুখে প্রতিষ্ঠানের নাম বদলে ফেলতে বাধ্য হন তিনি। বরেণ্য অভিনেত্রী ববিতার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল ববিতা মুভিজ। ‘পোকামাকড়ের ঘরবসতি’ চলচ্চিত্রটি তৈরি হয়েছিল এই প্রতিষ্ঠান থেকে। একটানা ২২ বছর অভিনয়ের পর চলচ্চিত্র প্রযোজনায় নাম লিখিয়েছিলেন শাবানা। স্বামী ওয়াহিদ সাদিককে সঙ্গী করে গড়ে তোলেন এসএস প্রোডাকশন হাউস। ২৫টির বেশি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছিলেন তিনি।
বর্তমান প্রেক্ষাপট
চলচ্চিত্রশিল্পের বর্তমান প্রেক্ষাপট কী, সেটা সবাই কমবেশি আমরা জানি। প্রযোজকদের সংখ্যা দিন দিন কমছে তো বটেই, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পুরুষতান্ত্রিক ধ্যানধারণার প্রভাব। এসব নিয়ে কথা হয় নির্মাতা ও প্রযোজক নার্গিস আক্তারের সঙ্গে। ২০০০ সাল থেকে তিনি প্রযোজনার সঙ্গে যুক্ত। তিনি জানান, নারী প্রযোজক হিসেবে এ পর্যন্ত কোনো ধরনের সংকটের মুখে পড়তে হয়নি তাঁকে। যেভাবে কাজ করতে চেয়েছেন, নিশ্চিন্তে সেটা করেছেন। নার্গিস আক্তার বলেন, ‘তবে আমার মনে হয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীদের বাদ দিয়ে পুরুষ প্রযোজকেরা বেশি প্রাধান্য বিস্তার করেন।’
নিজের বেশির ভাগ চলচ্চিত্র নিজেই প্রযোজনা করেছেন নার্গিস আক্তার। প্রযোজক হিসেবে না হলেও পরিচালক হিসেবে আক্ষেপ আছে তাঁর। তিনি বলেন, ‘প্রযোজকেরা সাধারণত নারী নির্মাতাকে দিয়ে সিনেমা নির্মাণ করতে চান না। তাঁরা ধরে নেন, কোনো নারী এই কাজ করলে ধীরগতিতে হবে। কারণ নারী দুর্বল, মেধা কম ইত্যাদি। ফলে আমাদের সেই সুযোগটা দেওয়া হয় না।’
গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের সিনেমার প্রথম সারির অনেক নায়িকা প্রযোজনায় এসেছিলেন। তবে তাঁদের মধ্যে কয়েকজন ঘোষণা দিয়েই আড়ালে চলে গেছেন। অনেকে আবার দু-একটা সিনেমা তৈরির পর পিছু হটেছেন।
অভিনেত্রী জয়া আহসানের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘সি তে সিনেমা’। সেই প্রতিষ্ঠান থেকে তৈরি হয়েছে ‘দেবী’। আর মুক্তির অপেক্ষায় আছে ‘জয়া আর শারমিন’ নামের একটি চলচ্চিত্র। প্রযোজনা বিষয়ে জয়া বলেন, ‘ইন্ডাস্ট্রিতে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর প্রযোজনায় আসা যেতেই পারে। কারণ একটা সময়ে এখানকার সবকিছু হাতের রেখার মতো পরিষ্কার হয়ে যায়। যদি কাজটা তারা ভালোভাবে করে, ফাঁকফোকরগুলো পূরণ করতে পারে, তাহলে এখানেও ভালো কিছু করা সম্ভব।...’
প্রযোজক হিসেবে কাজ করছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’, ‘আ বার্নিং কোয়েশ্চেন’ চলচ্চিত্র দুটির প্রযোজক হিসেবে ছিলেন তিনি। এগুলো ছাড়া বেশ কয়েকটি ওয়েব সিরিজও প্রযোজনা করেছেন তিনি। তিশা বলেন, ‘প্রযোজক হিসেবে ভালো কনটেন্ট নির্মাণ করতে চাই।’
চলচ্চিত্রে অন্তরালের নারীরা আবার সক্রিয় হবেন কি না, সেটা সময়ই বলবে।
নাজমুল হক নাঈম, ঢাকা

আজ ৩ এপ্রিল, জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের এই দিনে তখনকার পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি) গঠনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এই দিনকে স্মরণ করে ২০১২ সাল থেকে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উদ্যাপন করা হয়।
পুরোনো কথা
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অভিনয়ের পাশাপাশি নারীরা সাফল্য পেয়েছিলেন প্রযোজনায়ও। এ ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য। যত দূর জানা যায়, একেবারে শুরুতে স্টার ফিল্ম করপোরেশনের ৬০ প্রযোজকের মধ্যে ৩ জন ছিলেন নারী। তাঁদের হাত ধরে সুমিতা দেবী, মালতী দে, সুচন্দা, কুমকুম রহমান, মাহবুবা রহমান, সুলতানা জামান, নীলুফার খায়ের, জোহরা কাজী একের পর এক ব্যবসাসফল সিনেমা উপহার দিয়েছিলেন। অভিনয়ে সাফল্য লাভের পর প্রযোজকের খাতায় নাম লিখিয়েছিলেন সুজাতা, ববিতা, কবরী, শাবানার মতো জনপ্রিয় অভিনেত্রীরা।
নারী প্রযোজকেরা কখনো একা আবার কখনো সহশিল্পী কিংবা সহকর্মীদের সঙ্গে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিলেন। অভিনেত্রী সুজাতা ছিলেন এ ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য। ১৯৭৬ সালে প্রযোজনায় আসেন তিনি। সুজাতা প্রোডাকশনসের ব্যানারে তিনি ‘অর্পণ’ নামে একটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছিলেন। এরপর নির্মিত হয় ‘প্রতিনিধি’ নামের একটি চলচ্চিত্র। সুজাতা পরে আজিমের সঙ্গে ‘এস এ ফিল্মস’ ও ‘সুফল কথাচিত্র’ নামের আরও দুটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান চালু করেছিলেন। এ তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে নির্মিত হয়েছিল ‘চেনা-অচেনা’, ‘টাকার খেলা’, ‘রূপবানের রূপকথা’, ‘বদলা’, ‘রং-বেরং’, ‘এখানে আকাশ নীল’ ইত্যাদি চলচ্চিত্র।
শ্রীমতী প্রোডাকশন নামে নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিলেন অভিনেত্রী কবরী। কিন্তু প্রথম চলচ্চিত্র ‘শীত-বসন্ত’ সেন্সরে জমা দেওয়ার পর আপত্তির মুখে প্রতিষ্ঠানের নাম বদলে ফেলতে বাধ্য হন তিনি। বরেণ্য অভিনেত্রী ববিতার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল ববিতা মুভিজ। ‘পোকামাকড়ের ঘরবসতি’ চলচ্চিত্রটি তৈরি হয়েছিল এই প্রতিষ্ঠান থেকে। একটানা ২২ বছর অভিনয়ের পর চলচ্চিত্র প্রযোজনায় নাম লিখিয়েছিলেন শাবানা। স্বামী ওয়াহিদ সাদিককে সঙ্গী করে গড়ে তোলেন এসএস প্রোডাকশন হাউস। ২৫টির বেশি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছিলেন তিনি।
বর্তমান প্রেক্ষাপট
চলচ্চিত্রশিল্পের বর্তমান প্রেক্ষাপট কী, সেটা সবাই কমবেশি আমরা জানি। প্রযোজকদের সংখ্যা দিন দিন কমছে তো বটেই, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পুরুষতান্ত্রিক ধ্যানধারণার প্রভাব। এসব নিয়ে কথা হয় নির্মাতা ও প্রযোজক নার্গিস আক্তারের সঙ্গে। ২০০০ সাল থেকে তিনি প্রযোজনার সঙ্গে যুক্ত। তিনি জানান, নারী প্রযোজক হিসেবে এ পর্যন্ত কোনো ধরনের সংকটের মুখে পড়তে হয়নি তাঁকে। যেভাবে কাজ করতে চেয়েছেন, নিশ্চিন্তে সেটা করেছেন। নার্গিস আক্তার বলেন, ‘তবে আমার মনে হয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীদের বাদ দিয়ে পুরুষ প্রযোজকেরা বেশি প্রাধান্য বিস্তার করেন।’
নিজের বেশির ভাগ চলচ্চিত্র নিজেই প্রযোজনা করেছেন নার্গিস আক্তার। প্রযোজক হিসেবে না হলেও পরিচালক হিসেবে আক্ষেপ আছে তাঁর। তিনি বলেন, ‘প্রযোজকেরা সাধারণত নারী নির্মাতাকে দিয়ে সিনেমা নির্মাণ করতে চান না। তাঁরা ধরে নেন, কোনো নারী এই কাজ করলে ধীরগতিতে হবে। কারণ নারী দুর্বল, মেধা কম ইত্যাদি। ফলে আমাদের সেই সুযোগটা দেওয়া হয় না।’
গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের সিনেমার প্রথম সারির অনেক নায়িকা প্রযোজনায় এসেছিলেন। তবে তাঁদের মধ্যে কয়েকজন ঘোষণা দিয়েই আড়ালে চলে গেছেন। অনেকে আবার দু-একটা সিনেমা তৈরির পর পিছু হটেছেন।
অভিনেত্রী জয়া আহসানের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘সি তে সিনেমা’। সেই প্রতিষ্ঠান থেকে তৈরি হয়েছে ‘দেবী’। আর মুক্তির অপেক্ষায় আছে ‘জয়া আর শারমিন’ নামের একটি চলচ্চিত্র। প্রযোজনা বিষয়ে জয়া বলেন, ‘ইন্ডাস্ট্রিতে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর প্রযোজনায় আসা যেতেই পারে। কারণ একটা সময়ে এখানকার সবকিছু হাতের রেখার মতো পরিষ্কার হয়ে যায়। যদি কাজটা তারা ভালোভাবে করে, ফাঁকফোকরগুলো পূরণ করতে পারে, তাহলে এখানেও ভালো কিছু করা সম্ভব।...’
প্রযোজক হিসেবে কাজ করছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’, ‘আ বার্নিং কোয়েশ্চেন’ চলচ্চিত্র দুটির প্রযোজক হিসেবে ছিলেন তিনি। এগুলো ছাড়া বেশ কয়েকটি ওয়েব সিরিজও প্রযোজনা করেছেন তিনি। তিশা বলেন, ‘প্রযোজক হিসেবে ভালো কনটেন্ট নির্মাণ করতে চাই।’
চলচ্চিত্রে অন্তরালের নারীরা আবার সক্রিয় হবেন কি না, সেটা সময়ই বলবে।

আজ ৩ এপ্রিল, জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের এই দিনে তখনকার পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি) গঠনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এই দিনকে স্মরণ করে ২০১২ সাল থেকে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উদ্যাপন করা হয়।
পুরোনো কথা
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অভিনয়ের পাশাপাশি নারীরা সাফল্য পেয়েছিলেন প্রযোজনায়ও। এ ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য। যত দূর জানা যায়, একেবারে শুরুতে স্টার ফিল্ম করপোরেশনের ৬০ প্রযোজকের মধ্যে ৩ জন ছিলেন নারী। তাঁদের হাত ধরে সুমিতা দেবী, মালতী দে, সুচন্দা, কুমকুম রহমান, মাহবুবা রহমান, সুলতানা জামান, নীলুফার খায়ের, জোহরা কাজী একের পর এক ব্যবসাসফল সিনেমা উপহার দিয়েছিলেন। অভিনয়ে সাফল্য লাভের পর প্রযোজকের খাতায় নাম লিখিয়েছিলেন সুজাতা, ববিতা, কবরী, শাবানার মতো জনপ্রিয় অভিনেত্রীরা।
নারী প্রযোজকেরা কখনো একা আবার কখনো সহশিল্পী কিংবা সহকর্মীদের সঙ্গে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিলেন। অভিনেত্রী সুজাতা ছিলেন এ ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য। ১৯৭৬ সালে প্রযোজনায় আসেন তিনি। সুজাতা প্রোডাকশনসের ব্যানারে তিনি ‘অর্পণ’ নামে একটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছিলেন। এরপর নির্মিত হয় ‘প্রতিনিধি’ নামের একটি চলচ্চিত্র। সুজাতা পরে আজিমের সঙ্গে ‘এস এ ফিল্মস’ ও ‘সুফল কথাচিত্র’ নামের আরও দুটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান চালু করেছিলেন। এ তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে নির্মিত হয়েছিল ‘চেনা-অচেনা’, ‘টাকার খেলা’, ‘রূপবানের রূপকথা’, ‘বদলা’, ‘রং-বেরং’, ‘এখানে আকাশ নীল’ ইত্যাদি চলচ্চিত্র।
শ্রীমতী প্রোডাকশন নামে নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিলেন অভিনেত্রী কবরী। কিন্তু প্রথম চলচ্চিত্র ‘শীত-বসন্ত’ সেন্সরে জমা দেওয়ার পর আপত্তির মুখে প্রতিষ্ঠানের নাম বদলে ফেলতে বাধ্য হন তিনি। বরেণ্য অভিনেত্রী ববিতার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল ববিতা মুভিজ। ‘পোকামাকড়ের ঘরবসতি’ চলচ্চিত্রটি তৈরি হয়েছিল এই প্রতিষ্ঠান থেকে। একটানা ২২ বছর অভিনয়ের পর চলচ্চিত্র প্রযোজনায় নাম লিখিয়েছিলেন শাবানা। স্বামী ওয়াহিদ সাদিককে সঙ্গী করে গড়ে তোলেন এসএস প্রোডাকশন হাউস। ২৫টির বেশি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছিলেন তিনি।
বর্তমান প্রেক্ষাপট
চলচ্চিত্রশিল্পের বর্তমান প্রেক্ষাপট কী, সেটা সবাই কমবেশি আমরা জানি। প্রযোজকদের সংখ্যা দিন দিন কমছে তো বটেই, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পুরুষতান্ত্রিক ধ্যানধারণার প্রভাব। এসব নিয়ে কথা হয় নির্মাতা ও প্রযোজক নার্গিস আক্তারের সঙ্গে। ২০০০ সাল থেকে তিনি প্রযোজনার সঙ্গে যুক্ত। তিনি জানান, নারী প্রযোজক হিসেবে এ পর্যন্ত কোনো ধরনের সংকটের মুখে পড়তে হয়নি তাঁকে। যেভাবে কাজ করতে চেয়েছেন, নিশ্চিন্তে সেটা করেছেন। নার্গিস আক্তার বলেন, ‘তবে আমার মনে হয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীদের বাদ দিয়ে পুরুষ প্রযোজকেরা বেশি প্রাধান্য বিস্তার করেন।’
নিজের বেশির ভাগ চলচ্চিত্র নিজেই প্রযোজনা করেছেন নার্গিস আক্তার। প্রযোজক হিসেবে না হলেও পরিচালক হিসেবে আক্ষেপ আছে তাঁর। তিনি বলেন, ‘প্রযোজকেরা সাধারণত নারী নির্মাতাকে দিয়ে সিনেমা নির্মাণ করতে চান না। তাঁরা ধরে নেন, কোনো নারী এই কাজ করলে ধীরগতিতে হবে। কারণ নারী দুর্বল, মেধা কম ইত্যাদি। ফলে আমাদের সেই সুযোগটা দেওয়া হয় না।’
গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের সিনেমার প্রথম সারির অনেক নায়িকা প্রযোজনায় এসেছিলেন। তবে তাঁদের মধ্যে কয়েকজন ঘোষণা দিয়েই আড়ালে চলে গেছেন। অনেকে আবার দু-একটা সিনেমা তৈরির পর পিছু হটেছেন।
অভিনেত্রী জয়া আহসানের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘সি তে সিনেমা’। সেই প্রতিষ্ঠান থেকে তৈরি হয়েছে ‘দেবী’। আর মুক্তির অপেক্ষায় আছে ‘জয়া আর শারমিন’ নামের একটি চলচ্চিত্র। প্রযোজনা বিষয়ে জয়া বলেন, ‘ইন্ডাস্ট্রিতে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর প্রযোজনায় আসা যেতেই পারে। কারণ একটা সময়ে এখানকার সবকিছু হাতের রেখার মতো পরিষ্কার হয়ে যায়। যদি কাজটা তারা ভালোভাবে করে, ফাঁকফোকরগুলো পূরণ করতে পারে, তাহলে এখানেও ভালো কিছু করা সম্ভব।...’
প্রযোজক হিসেবে কাজ করছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’, ‘আ বার্নিং কোয়েশ্চেন’ চলচ্চিত্র দুটির প্রযোজক হিসেবে ছিলেন তিনি। এগুলো ছাড়া বেশ কয়েকটি ওয়েব সিরিজও প্রযোজনা করেছেন তিনি। তিশা বলেন, ‘প্রযোজক হিসেবে ভালো কনটেন্ট নির্মাণ করতে চাই।’
চলচ্চিত্রে অন্তরালের নারীরা আবার সক্রিয় হবেন কি না, সেটা সময়ই বলবে।

ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
২ দিন আগে
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৪ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৪ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৪ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নারী, তরুণী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ এর সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। এই বাস্তবতায় তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তারাই সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় অনলাইনে এবং তাদেরই কণ্ঠস্বর সবচেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই অনলাইন সহিংসতার বিরুদ্ধে তরুণদের শুধু ভুক্তভোগী নয়, বরং প্রতিরোধের অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। অনলাইন সহিংসতা মোকাবিলায় তরুণ প্রজন্মকে সোচ্চার হতে হবে।’
আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. আব্দুল্লাহ ফারুক কনফারেন্স হলে ‘বাংলাদেশে তরুণী ও নারী সাইবার নির্যাতন: আরোগ্য, ক্ষমতায়ন ও সচেতনতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। এই সেমিনার আয়োজন করে সামাজিক উন্নয়নমূলক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রেজোনেয়ার।
সেমিনারে ডিসেম্বরের মধ্যে ৪০ জনকে ডিজিটাল লিটারেসি প্রশিক্ষণ ও সাতটি ক্যাম্পাস ক্যাম্পেইনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অনলাইন নিরাপত্তা, সাইবারবুলিং প্রতিরোধ ও ডিজিটাল অধিকার বিষয়ে সচেতন করা হবে।
বাংলাদেশ রেজোনেয়ারের সভাপতি জান্নাতুল নওরীন ঊর্মি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এমন একটি ডিজিটাল প্রজন্ম তৈরি করা, যারা প্রযুক্তিকে দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহার করবে এবং অনলাইন সহিংসতা বা হয়রানির বিরুদ্ধে সচেতন ও দৃঢ় ভূমিকা পালন করবে।’
আয়োজকেরা জানান, সেমিনারের মূল লক্ষ্য হলো অনলাইন হয়রানির ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, মানসিক পুনরুদ্ধার ও ক্ষমতায়নের পথ দেখানো এবং তরুণ সমাজের রাজনৈতিক অংশগ্রহণে অনুপ্রেরণা জোগানো।
তাঁরা জানান, বাংলাদেশ রেজোনেয়ার সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করবে। সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিরা তিনজন খ্যাতনামা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে সরাসরি কাউন্সেলিং ও মনোসামাজিক সহায়তা পাবেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ভুক্তভোগীরা মানসিক পুনর্বাসন, আত্মবিশ্বাস, পুনর্গঠন ও সামাজিক সংহতি পুনঃস্থাপনের সুযোগ পাবেন।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. রাহেনুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আশরাফ জালাল খান ভারতের পলিটি অ্যাকশন ল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা নিবেদিতা বিশ্বাস প্রমুখ।

ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নারী, তরুণী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ এর সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। এই বাস্তবতায় তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তারাই সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় অনলাইনে এবং তাদেরই কণ্ঠস্বর সবচেয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই অনলাইন সহিংসতার বিরুদ্ধে তরুণদের শুধু ভুক্তভোগী নয়, বরং প্রতিরোধের অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। অনলাইন সহিংসতা মোকাবিলায় তরুণ প্রজন্মকে সোচ্চার হতে হবে।’
আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. আব্দুল্লাহ ফারুক কনফারেন্স হলে ‘বাংলাদেশে তরুণী ও নারী সাইবার নির্যাতন: আরোগ্য, ক্ষমতায়ন ও সচেতনতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। এই সেমিনার আয়োজন করে সামাজিক উন্নয়নমূলক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রেজোনেয়ার।
সেমিনারে ডিসেম্বরের মধ্যে ৪০ জনকে ডিজিটাল লিটারেসি প্রশিক্ষণ ও সাতটি ক্যাম্পাস ক্যাম্পেইনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অনলাইন নিরাপত্তা, সাইবারবুলিং প্রতিরোধ ও ডিজিটাল অধিকার বিষয়ে সচেতন করা হবে।
বাংলাদেশ রেজোনেয়ারের সভাপতি জান্নাতুল নওরীন ঊর্মি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এমন একটি ডিজিটাল প্রজন্ম তৈরি করা, যারা প্রযুক্তিকে দায়িত্বশীলভাবে ব্যবহার করবে এবং অনলাইন সহিংসতা বা হয়রানির বিরুদ্ধে সচেতন ও দৃঢ় ভূমিকা পালন করবে।’
আয়োজকেরা জানান, সেমিনারের মূল লক্ষ্য হলো অনলাইন হয়রানির ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, মানসিক পুনরুদ্ধার ও ক্ষমতায়নের পথ দেখানো এবং তরুণ সমাজের রাজনৈতিক অংশগ্রহণে অনুপ্রেরণা জোগানো।
তাঁরা জানান, বাংলাদেশ রেজোনেয়ার সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করবে। সাইবার বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তিরা তিনজন খ্যাতনামা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে সরাসরি কাউন্সেলিং ও মনোসামাজিক সহায়তা পাবেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ভুক্তভোগীরা মানসিক পুনর্বাসন, আত্মবিশ্বাস, পুনর্গঠন ও সামাজিক সংহতি পুনঃস্থাপনের সুযোগ পাবেন।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. রাহেনুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আশরাফ জালাল খান ভারতের পলিটি অ্যাকশন ল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা নিবেদিতা বিশ্বাস প্রমুখ।

আজ ৩ এপ্রিল, জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের এই দিনে তখনকার পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি) গঠনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এই দিনকে স্মরণ করে ২০১২ সাল থেকে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উদ্যাপন করা হয়।
০৩ এপ্রিল ২০২৪
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৪ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৪ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৪ দিন আগেব্যারিস্টার ইফফাত আরা গিয়াস

নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর্মী দাঁড়িয়ে আপনাকে নিয়ে কী ধরনের মন্তব্য করছেন, এটা ভেবেই যদি সময় চলে যায়, তাহলে কাজ করবেন কখন? আর এই ভাবনাটা তখনই আসে, যখন কারও সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আচরণ করা হবে। যিনি এসব আচরণ করছেন, তিনি হতে পারেন বস কিংবা অফিসের যেকোনো শ্রেণির কর্মচারী। এই নিরাপত্তা যখন ব্যাহত হয়, তখন সেখানে কাজ করা মুশকিল হয়ে পড়ে।
কর্মস্থলে নারী-পুরুষনির্বিশেষে প্রত্যেক কর্মচারীর নিরাপত্তা এবং মর্যাদা রক্ষা করা রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মৌলিক দায়িত্ব। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী বা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কেউ কেউ মৌখিক অর্থাৎ ভারবাল কিংবা শারীরিক অর্থাৎ ফিজিক্যাল হয়রানির শিকার হন। এ ধরনের আচরণ কেবল মানসিক কষ্টের কারণ নয়; বরং বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।
নিজের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের প্রথম প্রতিবাদ নিজেকেই করতে হবে। অন্য কেউ এসে প্রতিবাদ করার আগে নিজের সচেতনতা এবং যুক্তিযুক্ত কথা বলা অনেক বেশি জরুরি। তাই চাকরিজীবনে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সে বিষয়ে রাষ্ট্রীয় আইন জানা থাকা দরকার।
আইনের চোখে হয়রানি
বাংলাদেশে কর্মস্থলে হয়রানিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। এ ধরনের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং অপরাধীকে শাস্তি দিতে দুটি প্রধান আইন ও নির্দেশনা কার্যকর রয়েছে:
১. বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮): এই আইন শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মপরিবেশ-সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ন্ত্রণ করে।
২. যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯: এটি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার ভিত্তিতে প্রণীত, যা কর্মস্থলে যেকোনো ধরনের যৌন হয়রানিকে কঠোরভাবে দমন করার নির্দেশ দেয়।
হয়রানির প্রকারভেদ
প্রথমেই বুঝে নেওয়া জরুরি যে হয়রানির ধরন কেমন। তবে কর্মক্ষেত্রে হয়রানি দুই ধরনের হতে পারে—
১. মৌখিক বা ভারবাল হয়রানি: এর মধ্যে রয়েছে অপমানজনক মন্তব্য, অশালীন ইঙ্গিত, যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কথা, হেয়প্রতিপন্ন করা কিংবা ভয় দেখানো।
২. শারীরিক বা ফিজিক্যাল হয়রানি: অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ, জোর করে ধরাধরি, আলিঙ্গন অথবা শারীরিকভাবে অপমানজনক আচরণ।
কর্মস্থলে এ ধরনের আচরণ বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯ অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ন্যায়বিচার পাওয়ার ধাপ
কর্মস্থলে হয়রানির শিকার হলে ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কিছু ধাপে সচেতনভাবে অগ্রসর হতে হবে।
প্রথম পদক্ষেপ: প্রমাণ সংগ্রহ এবং নথিভুক্তকরণ
অভিযোগের ভিত্তি মজবুত করার জন্য প্রমাণ সংগ্রহ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভুক্তভোগীর প্রথম কাজ হলো ঘটনার বিস্তারিত তথ্য স্পষ্টভাবে লিখিত আকারে নথিভুক্ত করা।
» বিবরণ: ঘটনার তারিখ, সময়, স্থান এবং জড়িত ব্যক্তি কিংবা উপস্থিত থাকা সাক্ষীর নাম লিখে রাখা।
» সংরক্ষণ: সম্ভব হলে ই-মেইল, মেসেজ, ভয়েস রেকর্ড, চ্যাটের স্ক্রিনশট অথবা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণ করা। এসব তথ্য পরবর্তী সময়ে অভিযোগের সপক্ষে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে।
দ্বিতীয় পদক্ষেপ: অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিতে অভিযোগ দাখিল
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি অফিস কিংবা প্রতিষ্ঠানে একটি ‘অভিযোগ কমিটি’ থাকা বাধ্যতামূলক। এই কমিটিতে একজন নারী সদস্যের অন্তর্ভুক্তিও নিশ্চিত করতে হবে।
ভুক্তভোগী প্রথমে লিখিতভাবে এই কমিটির কাছে অভিযোগ দাখিল করতে পারেন। এরপর কমিটি সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত পরিচালনা করতে এবং প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য। এটি অভ্যন্তরীণভাবে দ্রুত ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রথম ও কার্যকর মাধ্যম।
তৃতীয় পদক্ষেপ: প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তা নেওয়া
যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ কমিটি না থাকে অথবা কমিটি যদি অভিযোগের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়, তবে ভুক্তভোগী সরাসরি আইনি পথে যেতে পারেন।
» পুলিশি পদক্ষেপ: ভুক্তভোগী সরাসরি স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারেন।
» মামলা: প্রয়োজনে তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল বা শ্রম আদালতে মামলা করতে পারেন।
» শাস্তি: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) অনুযায়ী শারীরিক বা যৌন হয়রানির অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।
চতুর্থ পদক্ষেপ: মানবাধিকার সংগঠন ও আইনি সহায়তা সংস্থার সহযোগিতা নেওয়া
আইনিপ্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা না থাকলে অথবা আর্থিক সংকট থাকলে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। বাংলাদেশে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, ব্র্যাক লিগ্যাল এইড সার্ভিসেসের মতো অনেক সংগঠন বিনা মূল্যে আইনি পরামর্শ ও সহায়তা দেয়। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পেশাদার সহায়তা পাওয়া সম্ভব।
যেসব বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে
» চুপ না থাকা: কোনো পরিস্থিতিতে ভয় কিংবা সামাজিক চাপের কারণে চুপ থাকা উচিত নয়। হয়রানির বিষয়ে দ্রুত আওয়াজ তোলা খুব প্রয়োজন।
» নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ: অভিযোগ দাখিল করার আগে ও পরে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
» সঠিক তথ্য উপস্থাপন: মিথ্যা বা অতিরঞ্জিত অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
» নথি সংরক্ষণ: সব ধরনের যোগাযোগ এবং প্রমাণের নথি যথাযথভাবে আপনাকে সংরক্ষণ করতে হবে।
কর্মস্থলকে ভয় বা বঞ্চনার জায়গা না বানিয়ে একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা জরুরি। হয়রানির শিকার হলে চুপ না থেকে আইনের আশ্রয় নেওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। একজন সচেতন কর্মী হিসেবে সাহসিকতার সঙ্গে সঠিক পদক্ষেপ নিলে কেবল নিজের নয়, প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক পরিবেশ এবং অন্যান্য সহকর্মীর নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা সম্ভব।

নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর্মী দাঁড়িয়ে আপনাকে নিয়ে কী ধরনের মন্তব্য করছেন, এটা ভেবেই যদি সময় চলে যায়, তাহলে কাজ করবেন কখন? আর এই ভাবনাটা তখনই আসে, যখন কারও সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আচরণ করা হবে। যিনি এসব আচরণ করছেন, তিনি হতে পারেন বস কিংবা অফিসের যেকোনো শ্রেণির কর্মচারী। এই নিরাপত্তা যখন ব্যাহত হয়, তখন সেখানে কাজ করা মুশকিল হয়ে পড়ে।
কর্মস্থলে নারী-পুরুষনির্বিশেষে প্রত্যেক কর্মচারীর নিরাপত্তা এবং মর্যাদা রক্ষা করা রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মৌলিক দায়িত্ব। কিন্তু প্রায়ই দেখা যায়, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী বা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কেউ কেউ মৌখিক অর্থাৎ ভারবাল কিংবা শারীরিক অর্থাৎ ফিজিক্যাল হয়রানির শিকার হন। এ ধরনের আচরণ কেবল মানসিক কষ্টের কারণ নয়; বরং বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।
নিজের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের প্রথম প্রতিবাদ নিজেকেই করতে হবে। অন্য কেউ এসে প্রতিবাদ করার আগে নিজের সচেতনতা এবং যুক্তিযুক্ত কথা বলা অনেক বেশি জরুরি। তাই চাকরিজীবনে যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সে বিষয়ে রাষ্ট্রীয় আইন জানা থাকা দরকার।
আইনের চোখে হয়রানি
বাংলাদেশে কর্মস্থলে হয়রানিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। এ ধরনের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং অপরাধীকে শাস্তি দিতে দুটি প্রধান আইন ও নির্দেশনা কার্যকর রয়েছে:
১. বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮): এই আইন শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মপরিবেশ-সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ন্ত্রণ করে।
২. যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯: এটি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার ভিত্তিতে প্রণীত, যা কর্মস্থলে যেকোনো ধরনের যৌন হয়রানিকে কঠোরভাবে দমন করার নির্দেশ দেয়।
হয়রানির প্রকারভেদ
প্রথমেই বুঝে নেওয়া জরুরি যে হয়রানির ধরন কেমন। তবে কর্মক্ষেত্রে হয়রানি দুই ধরনের হতে পারে—
১. মৌখিক বা ভারবাল হয়রানি: এর মধ্যে রয়েছে অপমানজনক মন্তব্য, অশালীন ইঙ্গিত, যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কথা, হেয়প্রতিপন্ন করা কিংবা ভয় দেখানো।
২. শারীরিক বা ফিজিক্যাল হয়রানি: অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ, জোর করে ধরাধরি, আলিঙ্গন অথবা শারীরিকভাবে অপমানজনক আচরণ।
কর্মস্থলে এ ধরনের আচরণ বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা, ২০০৯ অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ন্যায়বিচার পাওয়ার ধাপ
কর্মস্থলে হয়রানির শিকার হলে ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কিছু ধাপে সচেতনভাবে অগ্রসর হতে হবে।
প্রথম পদক্ষেপ: প্রমাণ সংগ্রহ এবং নথিভুক্তকরণ
অভিযোগের ভিত্তি মজবুত করার জন্য প্রমাণ সংগ্রহ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ভুক্তভোগীর প্রথম কাজ হলো ঘটনার বিস্তারিত তথ্য স্পষ্টভাবে লিখিত আকারে নথিভুক্ত করা।
» বিবরণ: ঘটনার তারিখ, সময়, স্থান এবং জড়িত ব্যক্তি কিংবা উপস্থিত থাকা সাক্ষীর নাম লিখে রাখা।
» সংরক্ষণ: সম্ভব হলে ই-মেইল, মেসেজ, ভয়েস রেকর্ড, চ্যাটের স্ক্রিনশট অথবা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণ করা। এসব তথ্য পরবর্তী সময়ে অভিযোগের সপক্ষে শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে।
দ্বিতীয় পদক্ষেপ: অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিতে অভিযোগ দাখিল
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি অফিস কিংবা প্রতিষ্ঠানে একটি ‘অভিযোগ কমিটি’ থাকা বাধ্যতামূলক। এই কমিটিতে একজন নারী সদস্যের অন্তর্ভুক্তিও নিশ্চিত করতে হবে।
ভুক্তভোগী প্রথমে লিখিতভাবে এই কমিটির কাছে অভিযোগ দাখিল করতে পারেন। এরপর কমিটি সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত পরিচালনা করতে এবং প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য। এটি অভ্যন্তরীণভাবে দ্রুত ন্যায়বিচার পাওয়ার প্রথম ও কার্যকর মাধ্যম।
তৃতীয় পদক্ষেপ: প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তা নেওয়া
যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ কমিটি না থাকে অথবা কমিটি যদি অভিযোগের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়, তবে ভুক্তভোগী সরাসরি আইনি পথে যেতে পারেন।
» পুলিশি পদক্ষেপ: ভুক্তভোগী সরাসরি স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারেন।
» মামলা: প্রয়োজনে তিনি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল বা শ্রম আদালতে মামলা করতে পারেন।
» শাস্তি: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) অনুযায়ী শারীরিক বা যৌন হয়রানির অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।
চতুর্থ পদক্ষেপ: মানবাধিকার সংগঠন ও আইনি সহায়তা সংস্থার সহযোগিতা নেওয়া
আইনিপ্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা না থাকলে অথবা আর্থিক সংকট থাকলে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। বাংলাদেশে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, ব্র্যাক লিগ্যাল এইড সার্ভিসেসের মতো অনেক সংগঠন বিনা মূল্যে আইনি পরামর্শ ও সহায়তা দেয়। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পেশাদার সহায়তা পাওয়া সম্ভব।
যেসব বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে
» চুপ না থাকা: কোনো পরিস্থিতিতে ভয় কিংবা সামাজিক চাপের কারণে চুপ থাকা উচিত নয়। হয়রানির বিষয়ে দ্রুত আওয়াজ তোলা খুব প্রয়োজন।
» নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ: অভিযোগ দাখিল করার আগে ও পরে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
» সঠিক তথ্য উপস্থাপন: মিথ্যা বা অতিরঞ্জিত অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
» নথি সংরক্ষণ: সব ধরনের যোগাযোগ এবং প্রমাণের নথি যথাযথভাবে আপনাকে সংরক্ষণ করতে হবে।
কর্মস্থলকে ভয় বা বঞ্চনার জায়গা না বানিয়ে একটি নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা জরুরি। হয়রানির শিকার হলে চুপ না থেকে আইনের আশ্রয় নেওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। একজন সচেতন কর্মী হিসেবে সাহসিকতার সঙ্গে সঠিক পদক্ষেপ নিলে কেবল নিজের নয়, প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক পরিবেশ এবং অন্যান্য সহকর্মীর নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা সম্ভব।

আজ ৩ এপ্রিল, জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের এই দিনে তখনকার পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি) গঠনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এই দিনকে স্মরণ করে ২০১২ সাল থেকে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উদ্যাপন করা হয়।
০৩ এপ্রিল ২০২৪
ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
২ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৪ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৪ দিন আগেফিচার ডেস্ক

রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৭০০ দিনের বেশি সহিংসতার পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়েছে। তবু শান্ত হয়নি গাজার আকাশ। কিন্তু গাজাবাসী, বিশেষত নারী ও কিশোরীদের মধ্যে ভঙ্গুর হলেও দেখা দিয়েছে আশা—বেঁচে থাকার আর এগিয়ে যাওয়ার আশা। যুদ্ধের পুরো সময়ে গাজার অধিকাংশ নারী কমপক্ষে চারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ইউএন উইমেনের তথ্য অনুযায়ী, ১০ লাখের বেশি নারী ও কিশোরীর খাদ্যসহায়তার প্রয়োজন এবং প্রায় আড়াই লাখের প্রয়োজন জরুরি পুষ্টি সহায়তা।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার ১৬ দিনের মাথায় বাড়িতে বোমা হামলায় নিহত হন আইলার স্বামী। এর পর থেকে নিজের কন্যাশিশুর সঙ্গে জীবন যাপন করছেন তিনি। আইলা জানান, তাঁর কন্যাটি তার বয়সের অর্ধেকের বেশি সময় খাওয়ার পানি, চিকিৎসাসামগ্রী, দুধ আর ডায়াপার ছাড়া কাটিয়েছে। দুর্ভিক্ষের কারণে সে ক্যানড ফুডের ওপর বড় হয়েছে। ফলে শিশুটি আপেল, কলা ও অন্য সব ধরনের ফল চিনতে পারে না। গাজায় প্রতি সাতটি পরিবারের মধ্যে একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন একজন নারী। তাঁদের এখন সরাসরি সহায়তা দরকার, যাতে তাঁরা সন্তানদের খাওয়াতে পারেন, স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারেন, জীবিকা পুনর্গঠন করতে পারেন এবং সবকিছু হারানোর পর কিছুটা স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে পারেন।
এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দেন শাইমা আহমেদ নামে আরও একজন কলেজশিক্ষার্থী। একটি বড় পরিবারে জন্ম নেওয়া শাইমা এই যুদ্ধে তাঁর পরিবারের ৭০ জন সদস্যকে হারিয়েছেন! তাঁদের মধ্যে কেউ মারা গেছেন, কয়েকজন নিখোঁজ আবার এখনো অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে—যাঁদের বেঁচে থাকার আশা নেই। বোমাবর্ষণে পরিবারের মানুষের কবরগুলোও হয়ে গেছে অচেনা, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শাইমা বলেন, ‘শোকের জায়গাও আর নেই।’ তিনি জানান, তিনি ও তাঁর পরিবার দুই বছরে ১১ বার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। শাইমা স্নাতক শেষ করতে চলেছেন। আর এই পড়ার ইচ্ছাই এত দিন বাঁচিয়ে রেখেছে তাঁকে। যেমন সব হারিয়ে মেয়েকে নিয়ে বেঁচে থাকার ইচ্ছা বাঁচিয়ে রেখেছে আইলাকে।
শাইমা বলেন, ‘আমাদের জীবন কেবল সেই নিছক বেঁচে থাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর সত্যিকারের অর্থ ও উদ্দেশ্য থাকে। এটাই আমাদের এগিয়ে নিয়ে গেছে। আমাদের কাছে এই মাটির এত অর্থ আছে এবং গাজায় আপনি যা দেখেন, তা সত্যিই ধূসর এবং সর্বত্র ধ্বংসস্তূপ ও ধুলোয় ভরা। তবু আমরা একটি ভবিষ্যৎ দেখতে পাই।’
গাজায় নিহত, আহত, ধ্বংসের সংখ্যা কেবলই ডেটা নয়। যুদ্ধবিরতি স্থিতিশীল হওয়ার পাশাপাশি গাজার নারীবিষয়ক সংস্থাগুলো এরই মধ্যে পরবর্তী কাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশটির পুনরুদ্ধার সেখানকার নারীদের ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সংস্থাগুলোতে কর্মরত নারীরা বারবার উচ্ছেদ, ভয় আর যন্ত্রণার শিকার হয়েছেন। উইমেনস অ্যাফেয়ার্স সেন্টারে কর্মরত আমাল বলেন, ‘আমরা এখানে মৃত্যুকে আর বুঝতে পারি না। এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয়—মৃত্যু আমাদের বস্তুতে, সংখ্যায় পরিণত করে। যেন আমরা কখনো ছিলামই না। আমাদের কাছে মানুষের দেহাবশেষ ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।’
তবু বেঁচে থাকার স্বপ্ন তাঁদের ঘুমাতে দেয় না। গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের প্রতিটি প্রচেষ্টায় নারীদের উপস্থিতি চান তাঁরা। আমাল বলেন, ‘গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের আগে আমাদের নারী হিসেবে, ফিলিস্তিনি হিসেবে নিজেদের পুনর্নির্মাণ করতে হবে।’
সূত্র: এনপিআর, ইউএন উইমেন

রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৭০০ দিনের বেশি সহিংসতার পর ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়েছে। তবু শান্ত হয়নি গাজার আকাশ। কিন্তু গাজাবাসী, বিশেষত নারী ও কিশোরীদের মধ্যে ভঙ্গুর হলেও দেখা দিয়েছে আশা—বেঁচে থাকার আর এগিয়ে যাওয়ার আশা। যুদ্ধের পুরো সময়ে গাজার অধিকাংশ নারী কমপক্ষে চারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ইউএন উইমেনের তথ্য অনুযায়ী, ১০ লাখের বেশি নারী ও কিশোরীর খাদ্যসহায়তার প্রয়োজন এবং প্রায় আড়াই লাখের প্রয়োজন জরুরি পুষ্টি সহায়তা।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার ১৬ দিনের মাথায় বাড়িতে বোমা হামলায় নিহত হন আইলার স্বামী। এর পর থেকে নিজের কন্যাশিশুর সঙ্গে জীবন যাপন করছেন তিনি। আইলা জানান, তাঁর কন্যাটি তার বয়সের অর্ধেকের বেশি সময় খাওয়ার পানি, চিকিৎসাসামগ্রী, দুধ আর ডায়াপার ছাড়া কাটিয়েছে। দুর্ভিক্ষের কারণে সে ক্যানড ফুডের ওপর বড় হয়েছে। ফলে শিশুটি আপেল, কলা ও অন্য সব ধরনের ফল চিনতে পারে না। গাজায় প্রতি সাতটি পরিবারের মধ্যে একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন একজন নারী। তাঁদের এখন সরাসরি সহায়তা দরকার, যাতে তাঁরা সন্তানদের খাওয়াতে পারেন, স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারেন, জীবিকা পুনর্গঠন করতে পারেন এবং সবকিছু হারানোর পর কিছুটা স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে পারেন।
এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দেন শাইমা আহমেদ নামে আরও একজন কলেজশিক্ষার্থী। একটি বড় পরিবারে জন্ম নেওয়া শাইমা এই যুদ্ধে তাঁর পরিবারের ৭০ জন সদস্যকে হারিয়েছেন! তাঁদের মধ্যে কেউ মারা গেছেন, কয়েকজন নিখোঁজ আবার এখনো অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে—যাঁদের বেঁচে থাকার আশা নেই। বোমাবর্ষণে পরিবারের মানুষের কবরগুলোও হয়ে গেছে অচেনা, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শাইমা বলেন, ‘শোকের জায়গাও আর নেই।’ তিনি জানান, তিনি ও তাঁর পরিবার দুই বছরে ১১ বার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। শাইমা স্নাতক শেষ করতে চলেছেন। আর এই পড়ার ইচ্ছাই এত দিন বাঁচিয়ে রেখেছে তাঁকে। যেমন সব হারিয়ে মেয়েকে নিয়ে বেঁচে থাকার ইচ্ছা বাঁচিয়ে রেখেছে আইলাকে।
শাইমা বলেন, ‘আমাদের জীবন কেবল সেই নিছক বেঁচে থাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর সত্যিকারের অর্থ ও উদ্দেশ্য থাকে। এটাই আমাদের এগিয়ে নিয়ে গেছে। আমাদের কাছে এই মাটির এত অর্থ আছে এবং গাজায় আপনি যা দেখেন, তা সত্যিই ধূসর এবং সর্বত্র ধ্বংসস্তূপ ও ধুলোয় ভরা। তবু আমরা একটি ভবিষ্যৎ দেখতে পাই।’
গাজায় নিহত, আহত, ধ্বংসের সংখ্যা কেবলই ডেটা নয়। যুদ্ধবিরতি স্থিতিশীল হওয়ার পাশাপাশি গাজার নারীবিষয়ক সংস্থাগুলো এরই মধ্যে পরবর্তী কাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশটির পুনরুদ্ধার সেখানকার নারীদের ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সংস্থাগুলোতে কর্মরত নারীরা বারবার উচ্ছেদ, ভয় আর যন্ত্রণার শিকার হয়েছেন। উইমেনস অ্যাফেয়ার্স সেন্টারে কর্মরত আমাল বলেন, ‘আমরা এখানে মৃত্যুকে আর বুঝতে পারি না। এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয়—মৃত্যু আমাদের বস্তুতে, সংখ্যায় পরিণত করে। যেন আমরা কখনো ছিলামই না। আমাদের কাছে মানুষের দেহাবশেষ ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।’
তবু বেঁচে থাকার স্বপ্ন তাঁদের ঘুমাতে দেয় না। গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের প্রতিটি প্রচেষ্টায় নারীদের উপস্থিতি চান তাঁরা। আমাল বলেন, ‘গাজা পুনর্গঠন ও পুনর্নির্মাণের আগে আমাদের নারী হিসেবে, ফিলিস্তিনি হিসেবে নিজেদের পুনর্নির্মাণ করতে হবে।’
সূত্র: এনপিআর, ইউএন উইমেন

আজ ৩ এপ্রিল, জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের এই দিনে তখনকার পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি) গঠনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এই দিনকে স্মরণ করে ২০১২ সাল থেকে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উদ্যাপন করা হয়।
০৩ এপ্রিল ২০২৪
ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
২ দিন আগে
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৪ দিন আগে
আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
৪ দিন আগেফিচার ডেস্ক

আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
একজন নারী হিসেবে মার্থা এমন এক সময়ে টেলিভিশন অনুষ্ঠান প্রযোজনার জগতে এসে সাফল্য লাভ করেন, যখন এই শিল্পে পুরুষেরাই প্রধান ভূমিকা পালন করতেন। মিট দ্য প্রেসের ইতিহাসে তিনি একমাত্র নারী, যিনি অনুষ্ঠানটির প্রথম মডারেটর বা উপস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৪৫ সালে মার্থা লিভ ইট টু দ্য গার্লস নামে রেডিওর প্রথম প্যানেল শো তৈরি করতেন, যেখানে নারীরাই ছিলেন মূল আলোচক। এর মাধ্যমে তিনি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক বিষয়ে নারীদের মতামত প্রকাশ করার জন্য একটি জনপ্রিয় মঞ্চ তৈরি করেছিলেন। তাঁর সহকর্মীরা তাঁকে ‘আ ডিজেল ইঞ্জিন আন্ডার আ লেইস রুমাল’ বলে আখ্যায়িত করেন। বাইরে থেকে মার্থা শান্ত ও মার্জিত হলেও মানসিকভাবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত দৃঢ়চেতা মানুষ। ছিলেন কর্মশক্তিতে ভরপুর এবং তাঁর কাজের গতি ছিল প্রখর।
মার্থা ১৯৫১ সালে ন্যাশনাল ফ্র্যাটারনিটি ফর উইমেন ইন জার্নালিজম কর্তৃক টেলিভিশন অনুষ্ঠানের ‘অসামান্য নারী’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। মার্থা জেন রাউন্ট্রির জন্ম ১৯১১ সালের ২৩ অক্টোবর, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়। ১৯৯৯ সালের ২৩ আগস্ট ওয়াশিংটন ডিসিতে তিনি মারা যান।

আমেরিকার ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে চলা টেলিভিশন সিরিজ মিট দ্য প্রেস। অনুষ্ঠানটি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্যানেল আলোচনার একটি মানদণ্ড তৈরি করেছিল। এই অনুষ্ঠানের কো-ক্রিয়েটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন মার্থা জেন রাউন্ট্রি।
একজন নারী হিসেবে মার্থা এমন এক সময়ে টেলিভিশন অনুষ্ঠান প্রযোজনার জগতে এসে সাফল্য লাভ করেন, যখন এই শিল্পে পুরুষেরাই প্রধান ভূমিকা পালন করতেন। মিট দ্য প্রেসের ইতিহাসে তিনি একমাত্র নারী, যিনি অনুষ্ঠানটির প্রথম মডারেটর বা উপস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৪৫ সালে মার্থা লিভ ইট টু দ্য গার্লস নামে রেডিওর প্রথম প্যানেল শো তৈরি করতেন, যেখানে নারীরাই ছিলেন মূল আলোচক। এর মাধ্যমে তিনি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক বিষয়ে নারীদের মতামত প্রকাশ করার জন্য একটি জনপ্রিয় মঞ্চ তৈরি করেছিলেন। তাঁর সহকর্মীরা তাঁকে ‘আ ডিজেল ইঞ্জিন আন্ডার আ লেইস রুমাল’ বলে আখ্যায়িত করেন। বাইরে থেকে মার্থা শান্ত ও মার্জিত হলেও মানসিকভাবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত দৃঢ়চেতা মানুষ। ছিলেন কর্মশক্তিতে ভরপুর এবং তাঁর কাজের গতি ছিল প্রখর।
মার্থা ১৯৫১ সালে ন্যাশনাল ফ্র্যাটারনিটি ফর উইমেন ইন জার্নালিজম কর্তৃক টেলিভিশন অনুষ্ঠানের ‘অসামান্য নারী’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। মার্থা জেন রাউন্ট্রির জন্ম ১৯১১ সালের ২৩ অক্টোবর, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়। ১৯৯৯ সালের ২৩ আগস্ট ওয়াশিংটন ডিসিতে তিনি মারা যান।

আজ ৩ এপ্রিল, জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের এই দিনে তখনকার পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি) গঠনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এই দিনকে স্মরণ করে ২০১২ সাল থেকে জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস উদ্যাপন করা হয়।
০৩ এপ্রিল ২০২৪
ডিজিটাল যুগ যোগাযোগের পরিধি বিস্তৃত করেছে, কিন্তু একই সঙ্গে খুলে দিয়েছে ‘অনলাইন সহিংসতা’র এক নতুন ক্ষেত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ভার্চুয়াল স্পেস এখন শুধু মতপ্রকাশের জায়গা নয়, বরং অনেক সময় ঘৃণাবার্তা, হয়রানি, হুমকি, অপমান ও মানহানির আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
২ দিন আগে
নিরাপদ এবং নিশ্চিত কর্মপরিবেশ পাওয়া যেকোনো কর্মজীবী মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা। কর্মপরিবেশ ও কর্মস্থল নিরাপদ যদি না হয়, সেখানে নারী কিংবা পুরুষ—কেউ নিরাপদ নন। আর এ বিষয়টি শুধু চাকরিজীবনে নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। হেঁটে গেলে অন্য সহকর্মীরা আপনার দিকে কীভাবে তাকাচ্ছেন, কিংবা দুজন সহকর
৪ দিন আগে
রেডিও চ্যানেল এনপিআরকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক শ্রৌক আল আইলা। তিনি বলতে শুরু করেন, ‘আমি একধরনের হ্যাংওভারের মধ্যে আছি। আজ সকালে খুব অদ্ভুত লাগছিল। কারণ, আমি বিমান হামলা ও বিস্ফোরণ ছাড়া গভীরভাবে ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছিলাম। এটা সত্যিই অদ্ভুত লাগছে।’
৪ দিন আগে