Ajker Patrika

কাপাসিয়ার সব গ্রামের নাম দেড় মিনিটে বলতে পারেন আক্তার মাস্টার

আনিসুল ইসলাম, কাপাসিয়া (গাজীপুর)
কাপাসিয়ার সব গ্রামের নাম দেড় মিনিটে বলতে পারেন আক্তার মাস্টার

গাজীপুরের কাপাসিয়ার ১১টি ইউনিয়নের ২৩১টি গ্রামের নাম মাত্র দেড় মিনিটে মুখস্থ বলতে পারেন মো. আক্তার জামান। আধা মিনিটে বলতে পারেন দেশের সব জেলার নাম। তা ছাড়া মুখস্থ পারেন বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণসহ আরও অনেক কিছু। ইতিমধ্যে ফেসবুকের কল্যাণে ও লোকমুখে তাঁর এই প্রতিভার কথা অনেক জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে। দূর-দুরান্ত থেকে প্রতিদিনই লোকজন তাঁকে দেখতে আসে।

আক্তার জামান উপজেলার তরগাঁও ইউনিয়নের বাঘিয়া গ্রামের মৃত আলীম উদ্দিনের ছেলে। ছিলেন পাশের ভুলেশ্বর গ্রামের হাফিজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। ছয় মাস আগে তিনি শিক্ষকতা থেকে অবসর নিয়েছেন। স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে তাঁর সংসার।

ওই বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র নজরুল ইসলাম বলেন, ‘স্যার আমাদের ক্লাসে বই না দেখেই পড়াতেন। স্যার মুখস্থবিদ্যায় পারদর্শী ছিলেন। স্যার উপজেলার সব গ্রাম, দেশের সব জেলা, জসীমউদ্দীনের কবর কবিতা মুখস্থ পারেন। আমরা মাঝেমধ্যে আবদার করে স্যারের কাছ থেকে এসব শুনতাম।’

এলাকাবাসী জানায়, প্রায়ই সাইকেলে চড়ে বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে বেড়াতেন আক্তার জামান। এ সময় তিনি কবর কবিতা, কখনো বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, কখনো গ্রামের নাম বিড়বিড় করে বলতে বলতে যেতেন।

বাড়ির পূর্ব পাশের কাঁঠালবাগানে বসে কথা হয় আক্তার জামানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাবা ছিলেন কৃষক। অভাব-অনটনের মধ্যে বড় হয়েছি। আমার ঘুরে বেড়ানোর শখ ছিল। কিন্তু আর্থিক সচ্ছলতা না থাকায় উপজেলার বাইরে ঘুরতে পারিনি। বিভিন্ন সময় সাইকেল নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে বের হতাম। বিভিন্ন এলাকা ঘুরতে ঘুরতে লোকমুখে গ্রামের নাম শুনে তা মুখস্থ হয়ে যায়।’

আক্তার মাস্টার বলেন, ‘আমি যখন এই গ্রামের নামগুলো বলি, তখন প্রতিটি গ্রামের দৃশ্য আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে। তখন আমি স্পষ্ট প্রতিটি গ্রাম চোখের সামনে দেখতে পাই। গ্রামের চিত্র দেখেছি, পাশাপাশি ওই গ্রামের নামগুলো মুখস্থ করেছি। আমি প্রতিটি গ্রাম ঘুরে দেখেছি। বহু মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাদের গ্রাম সম্বন্ধে জেনেছি।’

আক্তার জামান আরও বলেন, ‘আমি আধা মিনিটে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার নাম বলতে পারি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্পূর্ণ ভাষণ মুখস্থ পারি। পল্লিকবি জসীমউদ্দীনের ১১৮টি পঙ্‌ক্তি নিয়ে মাত্রাবৃত্ত ছন্দে লেখা কবর কবিতা মুখস্থ বলতে পারি। আল্লাহ আমাকে মুখস্থ করার ক্ষমতা দিয়েছেন। আমি স্কুলে যখন পাঠদান করতাম, বইয়ের অনেক কিছুই আমার মুখস্থ ছিল। আমি ছিলাম বাংলার শিক্ষক। পাঠ্যবই ছাড়াই স্কুলে ক্লাস করাতাম। গল্প, কবিতা প্রায় সবই আমার মুখস্থ ছিল।’

এ বিষয়ে কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আমানত হোসেন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আক্তার জামানের প্রতিভার কথা উপজেলার প্রায় সকলেই জানে। তিনি আমাদের গর্ব। বিশেষ কোনো দিবসে তাঁকে সম্মাননা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

মির্জা ফখরুলের কাছে অভিযোগ, ১৬ দিনের মাথায় ঠাকুরগাঁও থানার ওসি বদলি

এক ফ্যাসিস্ট নেত্রীর পাল্লায় পড়ে পুলিশ খারাপ হয়েছিল: এসপি

বিএনপি নেতা নাছিরের দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ দুই সৎভাইয়ের বিরুদ্ধে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত