Ajker Patrika

বুকের দুধ বিক্রি করে মাসে লক্ষাধিক টাকা আয় করছেন মার্কিন নারী

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৮: ২৭
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা ৩৩ বছর বয়সী এমিলি এনজার এখন নিয়মিত আয় করছেন বুকের দুধ বিক্রি করে। পাঁচ সন্তানের এই মা প্রতিদিন সন্তানদের দুধ পান করানোর পর অতিরিক্ত যে দুধ পাম্প করেন, তা ব্যাগে ভরে সংরক্ষণ করেন ফ্রিজে। উদ্দেশ্য—নিজের সন্তানের জন্য নয়, বরং বিক্রি করে বাড়তি আয় করা।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, মাসে প্রায় ১ হাজার ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১ লাখ ২২ হাজার টাকা বেশি আয় করছেন তিনি। এমিলির মতো বহু আমেরিকান মা এখন বুকের দুধ বিক্রি করছেন, যা দেশটিতে সম্প্রতি গড়ে ওঠা একটি সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের প্রতিফলন।

গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ‘মেক আমেরিকা হেলদি অ্যাগেইন’ বা এমএএইচএ—মাহা আন্দোলনের প্রভাব বাড়ছে। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি শিশুকে প্যাকেটজাত খাবার খাওয়ানোর চেয়ে মায়ের বুকের দুধ পান করানোর ওপর জোর দিচ্ছেন।

এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও একধরনের প্রভাব দেখা যাচ্ছে। অনেক মা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বুকের দুধ পান করানোর অভিজ্ঞতা খোলামেলা শেয়ার করছেন, যা অন্য মায়েদেরও উৎসাহিত করছে। আগের বহুল ব্যবহৃত স্লোগান ছিল ‘ফেড ইজ বেস্ট’ (যা খাওয়ানো যায়, তাই ভালো), এখন তা পাল্টে ‘ব্রেস্ট ইজ বেস্ট’ (বুকের দুধই সর্বোত্তম)-এ রূপ নিচ্ছে।

তবে সব মা বুকের দুধ যথেষ্ট পরিমাণে উৎপাদন করতে পারেন না। সংক্ষিপ্ত মাতৃত্বকালীন ছুটি, ওষুধ সেবন কিংবা স্বাস্থ্যগত জটিলতার কারণে অনেকে বিকল্প খোঁজেন। তখনই এমিলি এনজারের মতো ‘ওভারসাপ্লায়ারদের’ খোঁজ পড়ে।

এমিলির বুকের দুধের নিয়মিত ক্রেতা ফ্লোরিডার ফোর্ট লডারডেলের বাসিন্দা ব্রিয়ানা ওয়েস্টল্যান্ড। বয়স ৩৬। চার মাস বয়সী কন্যাশিশুর জন্য তিনি প্রতি মাসে প্রায় ১ হাজার ২০০ ডলার খরচ করছেন বুকের দুধ কিনতে। কারণ, তাঁর মতে, এর পুষ্টিগুণ ফর্মুলার চেয়ে অনেক বেশি।

দ্য টাইমসকে ব্রিয়ানা বলেন, ‘আমার মা আমাকে ফর্মুলা খাইয়েছেন, আমার বন্ধুরাও তাই। তখনকার দিনে মনে করা হতো, এটা সমান ভালো। কিন্তু এখন আমরা সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলছি। ফর্মুলায় এত উপাদান থাকে, যেগুলো আমরা এখন বিস্তারিত যাচাই করছি।’

এদিকে, এমিলি যেহেতু প্রচুর পরিমাণে বুকের দুধ উৎপাদন করতে পারেন, তাই কখনো কখনো দিনে ৮০ থেকে ১০০ আউন্স অতিরিক্ত দুধ পাম্প করেন তিনি। এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার আউন্স দুধ বিক্রি করেছেন। তিনি বলেন, ‘শুরুর দিকে ভেবেছিলাম, ফ্রিজে পড়ে থাকা এই দুধটা হয়তো বিনা মূল্যে দিয়ে দেব। কিন্তু তারপর ভাবলাম, দোকানে গিয়ে তো কেউ দুধ বা ফর্মুলা বিনা পয়সায় নিতে পারে না। এমনকি পারলারে গেলেও ফ্রি হেয়ারকাট পাওয়া যায় না। এই দুধ উৎপাদনে সময় ও শক্তি খরচ হচ্ছে, তারও একটা মূল্য থাকা উচিত।’

বুকের দুধ নিয়ে সামাজিক কটাক্ষ ও বিরোধিতা অনেকটাই কেটে গেছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাজারব্যবস্থাও। চলতি বছরের মার্চে ‘ফ্রিডা’ নামের জনপ্রিয় একটি শিশুপণ্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান তাদের নতুন হ্যান্ড পাম্প বাজারে ছাড়ার উপলক্ষে ঘোষণা দেয়, তারা বুকের দুধের স্বাদের আইসক্রিম তৈরি করবে। এই ঘটনাগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে বুকের দুধ এখন শুধু মাতৃত্বের প্রতীক নয়, অর্থনীতির অংশও হয়ে উঠছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তামিম কি তাহলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি হবেন

‘আমি আধুনিক পুলিশ, সাংবাদিকদের ভয় করে চলি না’

লন্ডনের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা, ফ্লাইট বাতিলে ভোগান্তিতে হাজারো যাত্রী

নারীর ‘বগলের গন্ধ’ পুরুষের মানসিক চাপ কমায়, তবে কি মানুষেরও আছে ফেরোমোন!

বাংলাদেশি পণ্যে ভারতের চেয়ে কম শুল্কের ইঙ্গিত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত