ইশতিয়াক হাসান
আগে থেকে জানা না থাকলে পাহাড়গুলো দেখলে চমকে উঠবেন। ভাববেন এভাবে নানা রঙে রাঙিয়ে দিল কে এগুলোকে। কিন্তু এত বিশাল সব পাহাড় তো রং-তুলির আঁচড়ে রাঙানোর সুযোগ নেই! আশ্চর্যজনক হলেও প্রাকৃতিকভাবেই এখানকার পাহাড়গুলো এমন নানা রঙে সেজেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অরিগনের হুইলার কাউন্টির জন ডে ফসিল বেডস যে তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত তার একটি এই পেইন্টেড হিলস। বুঝতেই পারছেন এমন নানা রঙের আল্পনার জন্যই এ নাম পেয়েছে জায়গাটি। বিভিন্ন ভূ-তাত্ত্বিক সময়ে এই বর্ণ বৈচিত্র্যের সৃষ্টি হয়। প্রাচীনকালে জায়গাটি যখন নদীবিধৌত সমতল এলাকা ছিল, তখনই মূলত এটা ঘটে।
কালো, ধূসর, লালসহ নানা রঙের দেখা পাবেন এখানে। বৃষ্টিতে যখন ভিজে থাকে তখন আরও বেশি আকর্ষণীয় মনে হয় জায়গাটিকে। এই বর্ণিল পাহাড়রাজ্যের আয়তন ৩ হাজার ১৩২ একর।
এঁটেল মাটি সমৃদ্ধ এখানকার পাহাড়-টিলা গায়ে মেখে থাকা এই রঙের সৃষ্টি সাড়ে ৩ কোটি বছরের বেশি আগে। এলাকাটি যখন সমতল ছিল, তখন আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে জমা হওয়া ছাই, ভস্মে এমন রং তৈরি হয়েছে। কিন্তু কীভাবে এভাবে সমতল জমি থেকে বর্ণিল পাহাড়ে রূপান্তর ঘটল? উত্তরটা কঠিন কিছু নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন খনিজসমৃদ্ধ আগ্নেয়গিরির ছাই, ভস্ম কঠিন হয়ে বিভিন্ন স্তরের তৈরি করেছে। এই কঠিন স্তরগুলো মিলেই তৈরি হয় পাহাড়, টিলা।
সমতলে জন্মানো বিভিন্ন গাছপালা থেকে তৈরি হওয়া কয়লা কালো রঙের কারণ। ধূসর অংশগুলো হলো নরম শিলা, কাদামাটি। এলাকাটি যখন উষ্ণ ছিল তখন নদীর পানির সঙ্গে বয়ে আসা পলি থেকে তৈরির লালচে মাটির কারণে এখানকার পাহাড় পেয়েছে লাল আর কমলা আভা। হলুদাভ বাদামি, হলুদ, সোনালি আভাও পাবেন এখানকার পাহাড়ি মাটিতে।
মজার ঘটনা, পাহাড়-টিলাগুলোর রং ঋতুভেদে, আবহাওয়ার ওপর এবং দিনের বিভিন্ন সময় বদলায়। এর কারণে সূর্যের আলো ভিন্ন কোণে পড়া। প্রবল বৃষ্টিসহ একটি ঝড়ের পর সাধারণত সবচেয়ে মনোহর রূপে ধরা দেয় এখানকার প্রকৃতি। তখন প্রতিটি রং সবচেয়ে তীব্রভাবে ফুটে ওঠে।
ঋতুভেদে আরও নানা বৈচিত্র্য চোখে পড়ে জায়গাটিতে। এপ্রিল-মেতে ছোট ছোট হলুদ ফুলে ঢেকে যায় লালচে পাহাড়ের ফাটল। তখন লাল-হলুদে মিলে আরেক ধরনের সৌন্দর্যের জন্ম হয়। এ সময় আলোকচিত্রী ও চিত্রশিল্পীদের পছন্দের গন্তব্য হয়ে ওঠে এটি।
শীতের সময়েও পর্যটকে পূর্ণ থাকে জায়গাটি। হালকা একটা তুষারপাতের পর চেহারাই পাল্টে যায় পাহাড়রাজ্যের। বিভিন্ন রঙের মাঝখানে তুষারের ধবধবে সাদা অদ্ভুত এক বর্ণবৈচিত্র্যের জন্ম দেয়।
এই জায়গাটির বড় সুবিধা হলো গোটা বছরজুড়েই এখানে যেতে পারবেন। আর আগেই বলেছি একেক সময় সে ধরা দেবে একেক রূপে। চমৎকার কিছু ট্রেইলও চোখে পড়বে পার্কটিতে।
মজার ঘটনা, বর্ণিল পাহাড়সহ গোটা পার্ক এলাকাটি জীবাশ্মবিদদেরও খুব প্রিয় এক জায়গা। কারণ, প্রাগৈতিহাসিককালের গন্ডার, ঘোড়া আর উটের ফসিলে ভরপুর এটি। মোটের ওপর জায়গাটি তাই পর্যটক থেকে শুরু করে গবেষক, আলোকচিত্রী ও শিল্পী সবারই প্রিয় এক গন্তব্য।
সময় থাকলে ঘুরে আসতে পারেন পার্কটির ক্লারনো ইউনিটে। জলপ্রপাত আর আগ্নেয়গিরির লাভা, ধূম জমে যেখানে বিভিন্ন অদ্ভুতুড়ে স্তম্ভ তৈরি হয়েছে। এদিকে টমাস কনডন পেলিওনটলোজি সেন্টারে বাঁকানো দাঁতের বা সেবার টুথের বিড়াল গোত্রের প্রাণীদের ফসিল দেখতে পাবেন। মোটামুটি ৪০ হাজার ফসিল আছে এখানে। এই এলাকাটিতে কীভাবে একসময় এখনকার হাতি ও গন্ডারদের পূর্ব পুরুষেরা মহানন্দে চষে বেড়াত সে সম্পর্কে ধারণা পাবেন।
কিন্তু পেইন্টেড হিলসে পৌঁছাবেন কীভাবে? অরিগনের ছোট্ট শহর মিশেলের কেবল ১০ মাইল উত্তর-পশ্চিমে এই বর্ণিল পাহাড়রাজ্যের অবস্থান। সেখান থেকে সহজেই পৌঁছে যেতে পারবেন জায়গাটিতে। তবে কাছের সবচেয়ে বড় শহর অরিগনের বেন্ড। সেখান থেকে ঘণ্টা দুই লাগবে। পোর্টল্যান্ড থেকে গাড়িতে এলে লাগবে পাঁচ ঘণ্টা। তবে যেভাবেই আসা হোক না কেন, অরিগনের পেইন্টেড হিলস যে আপনার মনকেও রাঙিয়ে দেবে তাতে সন্দেহ নেই।
সূত্র: অ্যামিউজিং প্ল্যানেট, এটলাস অবসকিউরা, ট্রাভেল অরিগন ডট কম
আগে থেকে জানা না থাকলে পাহাড়গুলো দেখলে চমকে উঠবেন। ভাববেন এভাবে নানা রঙে রাঙিয়ে দিল কে এগুলোকে। কিন্তু এত বিশাল সব পাহাড় তো রং-তুলির আঁচড়ে রাঙানোর সুযোগ নেই! আশ্চর্যজনক হলেও প্রাকৃতিকভাবেই এখানকার পাহাড়গুলো এমন নানা রঙে সেজেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অরিগনের হুইলার কাউন্টির জন ডে ফসিল বেডস যে তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত তার একটি এই পেইন্টেড হিলস। বুঝতেই পারছেন এমন নানা রঙের আল্পনার জন্যই এ নাম পেয়েছে জায়গাটি। বিভিন্ন ভূ-তাত্ত্বিক সময়ে এই বর্ণ বৈচিত্র্যের সৃষ্টি হয়। প্রাচীনকালে জায়গাটি যখন নদীবিধৌত সমতল এলাকা ছিল, তখনই মূলত এটা ঘটে।
কালো, ধূসর, লালসহ নানা রঙের দেখা পাবেন এখানে। বৃষ্টিতে যখন ভিজে থাকে তখন আরও বেশি আকর্ষণীয় মনে হয় জায়গাটিকে। এই বর্ণিল পাহাড়রাজ্যের আয়তন ৩ হাজার ১৩২ একর।
এঁটেল মাটি সমৃদ্ধ এখানকার পাহাড়-টিলা গায়ে মেখে থাকা এই রঙের সৃষ্টি সাড়ে ৩ কোটি বছরের বেশি আগে। এলাকাটি যখন সমতল ছিল, তখন আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে জমা হওয়া ছাই, ভস্মে এমন রং তৈরি হয়েছে। কিন্তু কীভাবে এভাবে সমতল জমি থেকে বর্ণিল পাহাড়ে রূপান্তর ঘটল? উত্তরটা কঠিন কিছু নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন খনিজসমৃদ্ধ আগ্নেয়গিরির ছাই, ভস্ম কঠিন হয়ে বিভিন্ন স্তরের তৈরি করেছে। এই কঠিন স্তরগুলো মিলেই তৈরি হয় পাহাড়, টিলা।
সমতলে জন্মানো বিভিন্ন গাছপালা থেকে তৈরি হওয়া কয়লা কালো রঙের কারণ। ধূসর অংশগুলো হলো নরম শিলা, কাদামাটি। এলাকাটি যখন উষ্ণ ছিল তখন নদীর পানির সঙ্গে বয়ে আসা পলি থেকে তৈরির লালচে মাটির কারণে এখানকার পাহাড় পেয়েছে লাল আর কমলা আভা। হলুদাভ বাদামি, হলুদ, সোনালি আভাও পাবেন এখানকার পাহাড়ি মাটিতে।
মজার ঘটনা, পাহাড়-টিলাগুলোর রং ঋতুভেদে, আবহাওয়ার ওপর এবং দিনের বিভিন্ন সময় বদলায়। এর কারণে সূর্যের আলো ভিন্ন কোণে পড়া। প্রবল বৃষ্টিসহ একটি ঝড়ের পর সাধারণত সবচেয়ে মনোহর রূপে ধরা দেয় এখানকার প্রকৃতি। তখন প্রতিটি রং সবচেয়ে তীব্রভাবে ফুটে ওঠে।
ঋতুভেদে আরও নানা বৈচিত্র্য চোখে পড়ে জায়গাটিতে। এপ্রিল-মেতে ছোট ছোট হলুদ ফুলে ঢেকে যায় লালচে পাহাড়ের ফাটল। তখন লাল-হলুদে মিলে আরেক ধরনের সৌন্দর্যের জন্ম হয়। এ সময় আলোকচিত্রী ও চিত্রশিল্পীদের পছন্দের গন্তব্য হয়ে ওঠে এটি।
শীতের সময়েও পর্যটকে পূর্ণ থাকে জায়গাটি। হালকা একটা তুষারপাতের পর চেহারাই পাল্টে যায় পাহাড়রাজ্যের। বিভিন্ন রঙের মাঝখানে তুষারের ধবধবে সাদা অদ্ভুত এক বর্ণবৈচিত্র্যের জন্ম দেয়।
এই জায়গাটির বড় সুবিধা হলো গোটা বছরজুড়েই এখানে যেতে পারবেন। আর আগেই বলেছি একেক সময় সে ধরা দেবে একেক রূপে। চমৎকার কিছু ট্রেইলও চোখে পড়বে পার্কটিতে।
মজার ঘটনা, বর্ণিল পাহাড়সহ গোটা পার্ক এলাকাটি জীবাশ্মবিদদেরও খুব প্রিয় এক জায়গা। কারণ, প্রাগৈতিহাসিককালের গন্ডার, ঘোড়া আর উটের ফসিলে ভরপুর এটি। মোটের ওপর জায়গাটি তাই পর্যটক থেকে শুরু করে গবেষক, আলোকচিত্রী ও শিল্পী সবারই প্রিয় এক গন্তব্য।
সময় থাকলে ঘুরে আসতে পারেন পার্কটির ক্লারনো ইউনিটে। জলপ্রপাত আর আগ্নেয়গিরির লাভা, ধূম জমে যেখানে বিভিন্ন অদ্ভুতুড়ে স্তম্ভ তৈরি হয়েছে। এদিকে টমাস কনডন পেলিওনটলোজি সেন্টারে বাঁকানো দাঁতের বা সেবার টুথের বিড়াল গোত্রের প্রাণীদের ফসিল দেখতে পাবেন। মোটামুটি ৪০ হাজার ফসিল আছে এখানে। এই এলাকাটিতে কীভাবে একসময় এখনকার হাতি ও গন্ডারদের পূর্ব পুরুষেরা মহানন্দে চষে বেড়াত সে সম্পর্কে ধারণা পাবেন।
কিন্তু পেইন্টেড হিলসে পৌঁছাবেন কীভাবে? অরিগনের ছোট্ট শহর মিশেলের কেবল ১০ মাইল উত্তর-পশ্চিমে এই বর্ণিল পাহাড়রাজ্যের অবস্থান। সেখান থেকে সহজেই পৌঁছে যেতে পারবেন জায়গাটিতে। তবে কাছের সবচেয়ে বড় শহর অরিগনের বেন্ড। সেখান থেকে ঘণ্টা দুই লাগবে। পোর্টল্যান্ড থেকে গাড়িতে এলে লাগবে পাঁচ ঘণ্টা। তবে যেভাবেই আসা হোক না কেন, অরিগনের পেইন্টেড হিলস যে আপনার মনকেও রাঙিয়ে দেবে তাতে সন্দেহ নেই।
সূত্র: অ্যামিউজিং প্ল্যানেট, এটলাস অবসকিউরা, ট্রাভেল অরিগন ডট কম
সময়টা ১৮৫৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বরের সকাল। এক সুসজ্জিত ব্যক্তি সান ফ্রান্সিসকোর ‘দ্য সান ফ্রান্সিসকো ইভনিং বুলেটিনের’ কার্যালয়ে প্রবেশ করে একটি ঘোষণাপত্র জমা দেন, যেখানে নিজেকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের সম্রাট’ বলে ঘোষণা করেন। ওই ব্যক্তি ছিলেন জোশুয়া নর্টন।
২ দিন আগেআজ ফোর টুয়েন্টি (৪২০) দিবস। সংখ্যাটা পড়েই ভাবছেন প্রতারকদের দিবস আজ? না না। এই ফোর টুয়েন্টি সেই ফোর টুয়েন্টি নয়। পশ্চিমা বিশ্বে এই সংখ্যা গাঁজা সংস্কৃতির কোড ভাষা।
৪ দিন আগেসাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপ ও এশিয়ায় বিপুল পরিমাণে পাচার হচ্ছে বড় আকারের লাখ লাখ পিঁপড়া। ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলোতে এসব পিঁপড়া পোষা প্রাণী হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। আফ্রিকার দেশ কেনিয়া থেকে সম্প্রতি হাজার হাজার জীবন্ত পিঁপড়া পাচারকালে ৪ চোরাকারবারিকে আটক করা হয়েছে।
৮ দিন আগেগত বছর একটি রাতের অনুষ্ঠানে এক ভ্লগারের ক্যামেরায় অপ্রত্যাশিত এবং অশালীন মন্তব্য করে রাতারাতি ভাইরাল হন হেইলি ওয়েলচ। দ্রুতই ‘হক তুয়াহ’ নামে খ্যাতি পান তিনি। সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন এই তরুণী। তিনি জানিয়েছেন, নিজের নামে চালু করা বিতর্কিত ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করে...
১০ দিন আগে