পানি

ফারাক্কা ব্যারাজের গেট খুলে দেওয়ার তথ্য আদান–প্রদান প্রসঙ্গে রণধীর জ্যাসওয়াল বলেন, ‘প্রটোকল অনুযায়ী তথ্য-উপাত্ত নিয়মিত ও সময়মতো বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট যৌথ নদী কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে শেয়ার করা হয়, এবারও তা–ই করা হয়েছে।’ 

ফারাক্কা বাঁধের জলকপাট খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশের নদ-নদীগুলোতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। পদ্মায় প্রতি তিন ঘণ্টায় ১ সেন্টিমিটার পানি বাড়ছে। আজ সোমবার ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি জলকপাট খোলার কথা বলা হলেও গতকাল থেকে পানি বাড়ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উত্তরাঞ্চলীয় পানিবিজ্ঞান পরিমাপ বিভাগ।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলা থেকে কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি। স্বস্তি ফিরেছে পানিবন্দী মানুষের মাঝে। এদিকে মনু ও ধলাই নদীর ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। 

নোয়াখালীর আট উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। গত শনিবার রাত থেকে একটানা মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি ও ফেনী থেকে নেমে আসা বন্যার পানিতে সেনবাগ, সোনাইমুড়ী, চাটখিল, বেগমগঞ্জ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার আরও কয়েকটি নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। 

চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলায় ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে মানুষ। অধিকাংশ বাড়িঘর পানির নিচে। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট। উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার। 

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার অংশে প্রায় ৮৭ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। যানজটে আটকে আছে বন্যার ত্রাণবাহী গাড়িও। হাইওয়ে পুলিশ বলছে, তিন দিন মহাসড়কের ওপর দিয়ে পানির স্রোত প্রবাহিত হওয়ায় সড়কের অধিকাংশ স্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এতে কোথাও যানব

চারদিকে পানি আর পানি। ডুবেছে বাড়ির আঙিনা ও আশপাশের নলকূপগুলো। ফলে সুপেয় পানির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে। দেশের সব প্রান্ত থেকে বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ যাচ্ছে; কিন্তু পৌঁছাচ্ছে না বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত

পানি ছাড়ার ছয় ঘণ্টা পর রাঙামাটির কাপ্তাই জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট বন্ধ করেছে কর্ণফুলী বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। কাপ্তাই লেকে পানি ১০৮ ফুট মিন সি লেভেল বা বিপৎসীমা অতিক্রম করায় আজ রোববার জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের ১৬টি স্পিলওয়ের গেট খুলে দিয়ে পানি ছাড়া হয়েছে। 

রাঙামাটির  কাপ্তাই বাঁধের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের (কপাবিকে) স্পিলওয়ের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে  খুলে দেওয়া হয়েছে।  এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে পড়ছে।

ভারতের সঙ্গে পানি সমস্যা সমাধানের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পানির হিস্যা আমাদের দিতে হবে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার যখন আসবে, যদি জনগণ বিএনপির পক্ষে রায় দেয়, আমরা আমাদের পক্ষে থেকে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করব। আশা করি নিষ্পত্তি

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের হাওড়া নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত হাওড়া নদীর পানি ৯ সেন্টিমিটার কমেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। নতুন করে আর কোনো গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়নি। 

‘আগে পানি বন্ধ করেন, তারপর খাওন। খাওনা দিয়া কি অইব, পানির নিচে সব শেষ। এখনো পানি আসছে।’ ত্রাণ সহায়তা পাওয়ার প্রশ্নে সাংবাদিকদের এমন কথা বলেন বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুরবুড়িয়ার বাসিন্দা কাজল আক্তার। আরেক বাসিন্দা জাহানারা বেগম বলেন, ‘স্বামী নাই, একটা পুরুষ লোক নাই, প্রতিবন্ধী মা ও দুই জি (মেয়ে)

প্রতি লিটারে ১ দশমিক ৫ মিলিগ্রামের বেশি ফ্লুরাইডযুক্ত পানি শিশুদের নিম্ন আইকিউ স্তরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগের অংশ হিসেবে ন্যাশনাল টক্সিকোলজি প্রোগ্রামের (এনটিপি) একটি নতুন প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। 

মৌলভীবাজারে মনু ও ধলাই নদের পানি কমতে শুরু করেছে। একই সঙ্গে ধীর গতিতে বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকা থেকে নামতে শুরু করেছে পানি। তবে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এখনো পানিবন্দী আছে প্রায় তিন লাখ মানুষ। আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে ৭ হাজার ১৪৫ জন মানুষ। 

সিলেটে নদ-নদীর পানি কিছুটা কমেছে। তবে এখনো কুশিয়ারা নদীর তিনটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারী বৃষ্টি আর উজানের ঢল না এলে বন্যারও আশঙ্কা নাই। 

মৌলভীবাজারের রাজনগরে বন্যার পানিতে মাছ শিকার করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন এক তরুণ। গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে রাজনগর সদর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। 

বিড়াল পানি ভয় পাওয়ার বেশ কিছু কারণ শনাক্ত করেছেন প্রাণী আচরণ বিশেষজ্ঞরা। বাঘ, চিতাদের বংশধর গৃহপালিত বিড়ালরা। বিড়ালের আদিপুরুষেরা সাধারণত শুষ্ক এলাকায় বাস করত। সেখানে নদী, হ্রদ বা জলাধার কম ছিল। এ কারণে সাঁতার শেখার জন্য কোনো বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে এদের যেতে হয়নি। এই আচরণ বিড়ালদের মধ্যে রয়ে গেছে।