
চারদিকে পানি আর পানি। ডুবেছে বাড়ির আঙিনা ও আশপাশের নলকূপগুলো। ফলে সুপেয় পানির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে। দেশের সব প্রান্ত থেকে বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ যাচ্ছে; কিন্তু পৌঁছাচ্ছে না বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের কাছে। ফলে পানি ও খাদ্যসংকটে এ মানুষগুলো রয়েছেন প্রচণ্ড কষ্টে। বিদ্যুৎ না থাকায় এবং মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কে সমস্যার কারণে কষ্ট আরও বেড়েছে তাঁদের।
এদিকে কুমিল্লা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। প্লাবিত হয়েছে নতুন নতুন এলাকা। কুমিল্লায় গতকাল রোববার তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অবশ্য মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার
ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দেশের ১১টি জেলা এখন বন্যাকবলিত। নতুন করে আর কোনো জেলা আক্রান্ত হয়নি। সারা দেশ থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণও যাচ্ছে। তবে এসব ত্রাণসহায়তার মধ্যে সিংহ ভাগই শুকনো খাবার, ওষুধ, খাবার স্যালাইন ও পোশাক।
সুপেয় পানির পরিমাণ সে তুলনায় অপ্রতুল। এসব সহায়তা আবার গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত এলাকায় সেভাবে পৌঁছাচ্ছে না।
উপদ্রুত এলাকার নলকূপগুলো কয়েক দিন ধরে পানির নিচে। ফলে প্রত্যন্ত এলাকার বানভাসি মানুষগুলো খাদ্য ও পানির ব্যাপক সংকটে পড়েছেন।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার যাদৈয়া এলাকার বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, ‘চারদিকে শুধু পানি আর পানি। কোথাও বের হওয়ার মতো অবস্থা নেই। বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। শিশুসন্তানসহ বৃদ্ধ মা-বাবাকে নিয়ে চরম দুর্ভোগের মধ্যে আছি।’
রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে তিন ট্রাক ত্রাণ নিয়ে কুমিল্লার বুড়িচংয়ের ভরসা এলাকায় গিয়েছিলেন একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। ত্রাণ দিতে গিয়ে তাঁরাও পড়েছেন বেকায়দায়। সুজন আহম্মেদ রনি নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘নৌকা বা স্পিডবোট ছাড়া গ্রামে যাওয়া সম্ভব নয়। আমরা তো নৌকা আনিনি। এখানে কোনো ব্যবস্থাও নেই। তাই প্রত্যন্ত অঞ্চলের বানভাসিদের ত্রাণ দিতে পারিনি। বাধ্য হয়ে ডাঙায় যাঁরা তাঁবুতে ছিলেন, তাঁদের ত্রাণ দিয়ে চলে আসতে হলো।’
ওই শিক্ষার্থীদের মতো এমন বেকায়দায় পড়েছেন ত্রাণ দিতে যাওয়া বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি। সড়কে আশ্রয় নেওয়া বুড়িচংয়ের বুড়বুড়িয়া নদীভাঙন এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল ভূইয়া বলেন, ‘বন্যাকবলিত যাঁরা পাড়ে বা ডাঙায় আছেন, সবাই তাঁদের ত্রাণ দেন। যেখানে বেশি পানি, সেখানে মানুষ যেতে পারছেন না। পানিবন্দী অনেকে না খেয়ে আছেন। আমাদের যে খাবার আছে, তাতে আরও ছয় দিন চলবে। তারপরও আমাদেরই দেয়। গ্রামের মানুষের না আছে খাবার, না আছে পানি।’
গতকাল সকাল থেকে বুড়িচংয়ের বন্যাকবলিত বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, একের পর এক ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, কাভার্ড ভ্যান, রিকশা, ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বানভাসি মানুষকে সহায়তা দিতে ছুটে আসছেন বিভিন্ন স্থানের মানুষ। তবে নৌযান-সংকটে প্রত্যন্ত এলাকায় যেতে পারছেন তাঁরা। ওই সব এলাকায় নেই সুপেয় পানির ব্যবস্থা ও পয়োনিষ্কাশন। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দুর্গতরা।
লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর বন্যাকবলিত গ্রামীণ এলাকার পানিবন্দী মানুষেরাও খাবার-পানির সংকটে দিন পার করছেন। লক্ষ্মীপুরে অন্তত ৮ লাখ মানুষ পানিবন্দী।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও জেলা প্রশাসন সূত্র বলেছে, ২০ বছরের মধ্যে এমন বন্যা লক্ষ্মীপুরের মানুষ দেখেননি। কোথাও কোথাও ৪ থেকে ৬ ফুট পানি। ঘরবাড়ি ছেড়ে অনেকেই আত্মীয়স্বজনের বাড়ি ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিচ্ছেন। গত শুক্রবার বিকেল থেকে অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। ত্রাণের যে সরবরাহ আসছে, তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। নৌযান-সংকটের কারণে এখানেও গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না। ওই সব এলাকায় দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। এতে করে চরম মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামসহ অন্যান্য উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও অবনতি ঘটেছে নাঙ্গলকোটে। এদিকে এ জেলায় গতকাল পানিতে ডুবে তিন শিক্ষার্থীসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
নাঙ্গলকোট উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নে এখন পানিবন্দী কয়েক লাখ মানুষ। এই উপজেলায় গতকাল দুপুর থেকে পানি বাড়ছে। সাতবাড়িয়া এলাকার কলেজশিক্ষার্থী সেলিনা সুলতানা নিশীতা বলেন, ‘সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন উপজেলার সবচেয়ে নিচু এলাকা। এই ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ কয়েকদিন ধরে অর্ধাহার-অনাহারে দিন পার করছেন। কোনো ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না।
তবে এখন সঙ্গিন অবস্থা লক্ষ্মীপুরের মানুষের। রাতভর বৃষ্টি আর ফেনী ও নোয়াখালী থেকে ধেয়ে আসা পানির তোড়ে এই জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। অন্তত ৮ লাখ মানুষ এখন পানিবন্দী। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। স্থানীয় এলাকাবাসী ও জেলা প্রশাসন সূত্র বলেছে, দুদিন ধরে ফেনী ও নোয়াখালীর বন্যার পানি রহমতখালী ও ডাকাতিয়া খাল হয়ে লক্ষ্মীপুরে ঢুকছে।
লক্ষ্মীপুরে রামগতি আবহাওয়া সতর্কীকরণ অফিসের কর্মকর্তা সৌরভ হোসেন বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ৭০ মিলিমিটার। বন্যার অবনতি হচ্ছে। বৃষ্টি আরও কয়েকদিন থাকবে। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাহিদ-উজ-জামান বলেন, ‘দুদিন ধরে পানি বাড়ছে। বিশেষ করে গত ২৪ ঘণ্টায় কোথাও ১ ফুট, আবার কোথাও ২ ফুট পানি বেড়েছে। মজুচৌধুরীর হাটের স্লুইসগেটের সব দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে।’
নোয়াখালী ও ফেনীর পানি নামার জন্য কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর রেগুলেটরের ২৩টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে বন্যার পানি আরও বাড়ছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র বলেছে, ভারতের ত্রিপুরা থেকে উজানের ঢল আন্তসীমান্ত কাকড়ি ও ডাকাতিয়া নদী হয়ে ছোট ফেনী নদীর মুখে মুছাপুর ক্লোজার গেটের মাধ্যমে সন্দ্বীপ চ্যানেল হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়ছে। কাকড়ি নদীর পানি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের উজিরপুর ও কাশিনগর ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ডাকাতিয়ায় মিশছে। ডাকাতিয়া নদী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে কুমিল্লার বাগসারা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে এবং পরবর্তী সময়ে চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নদীটি কুমিল্লা-লাকসাম-চাঁদপুর হয়ে মেঘনায় মিশেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সি আমির ফয়সাল বলেন, গত ১৫ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে ৪০ মিলিমিটার পানি কমেছে। আর ৩ ঘণ্টায় পানি কমেছে ১০ মিলিমিটার। অর্থাৎ পানি দ্রুতই কমে যাচ্ছে। বৃষ্টিপাত কমলে এবং ক্লোজার দিয়ে পানি নামতে থাকলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বন্যার উল্লেখযোগ্য উন্নতি হবে।
তবে ফেনী ও নোয়াখালীতে গত শনিবার রাতভর বৃষ্টি হয়েছে। নোয়াখালী আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে শনিবার সন্ধ্যা থেকে রোববার বেলা ৩টা পর্যন্ত জেলায় ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে উন্নতি
মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। বন্যাকবলিত এলাকা কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা ও সদর উপজেলা থেকে পানি দ্রুত কমছে। তবে বন্যাদুর্গত এলাকায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যার্তদের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন হাসপাতাল ও সংগঠন বিনা মূল্যের মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালনা করছে।
হবিগঞ্জেও বন্যার পানি কমছে। ইতিমধ্যে অনেক বাসাবাড়ি ও সড়ক থেকে পানি নেমে গেছে। বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে নদ-নদীর পানি। অনেকে বাড়িঘরে ফিরতেও শুরু করেছেন।
পার্বত্যে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
খাগড়াছড়িতে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর ভেসে উঠছে ক্ষতচিহ্ন। সদর উপজেলার বেতছড়ি ছড়ার ওপর নির্মিত কালভার্টের মুখের সড়ক ধসে পড়েছে। এতে বেতছড়ি, বেতছড়ি মুখ, মারমাপাড়া, ইটছড়ি, দাঁতকুপ্যাসহ ৩০টি গ্রামের সঙ্গে খাগড়াছড়ি শহরের যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এদিকে রাঙামাটিতে কাপ্তাই হ্রদের বাঁধের ১৬টি জলকপাট গতকাল সকাল ৮টায় ৬ ইঞ্চি খুলে দেওয়ার ৬ ঘণ্টা পর বন্ধ করা হয়। এরপর পানির স্তর ফের বেড়ে গেলে দ্বিতীয় দফায় সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় জলকপাটগুলো ফের ৪ ইঞ্চি খুলে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন কাপ্তাই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আব্দুজ্জাহের।

চারদিকে পানি আর পানি। ডুবেছে বাড়ির আঙিনা ও আশপাশের নলকূপগুলো। ফলে সুপেয় পানির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে। দেশের সব প্রান্ত থেকে বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ যাচ্ছে; কিন্তু পৌঁছাচ্ছে না বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের কাছে। ফলে পানি ও খাদ্যসংকটে এ মানুষগুলো রয়েছেন প্রচণ্ড কষ্টে। বিদ্যুৎ না থাকায় এবং মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কে সমস্যার কারণে কষ্ট আরও বেড়েছে তাঁদের।
এদিকে কুমিল্লা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। প্লাবিত হয়েছে নতুন নতুন এলাকা। কুমিল্লায় গতকাল রোববার তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অবশ্য মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার
ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দেশের ১১টি জেলা এখন বন্যাকবলিত। নতুন করে আর কোনো জেলা আক্রান্ত হয়নি। সারা দেশ থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণও যাচ্ছে। তবে এসব ত্রাণসহায়তার মধ্যে সিংহ ভাগই শুকনো খাবার, ওষুধ, খাবার স্যালাইন ও পোশাক।
সুপেয় পানির পরিমাণ সে তুলনায় অপ্রতুল। এসব সহায়তা আবার গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত এলাকায় সেভাবে পৌঁছাচ্ছে না।
উপদ্রুত এলাকার নলকূপগুলো কয়েক দিন ধরে পানির নিচে। ফলে প্রত্যন্ত এলাকার বানভাসি মানুষগুলো খাদ্য ও পানির ব্যাপক সংকটে পড়েছেন।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার যাদৈয়া এলাকার বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, ‘চারদিকে শুধু পানি আর পানি। কোথাও বের হওয়ার মতো অবস্থা নেই। বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। শিশুসন্তানসহ বৃদ্ধ মা-বাবাকে নিয়ে চরম দুর্ভোগের মধ্যে আছি।’
রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে তিন ট্রাক ত্রাণ নিয়ে কুমিল্লার বুড়িচংয়ের ভরসা এলাকায় গিয়েছিলেন একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। ত্রাণ দিতে গিয়ে তাঁরাও পড়েছেন বেকায়দায়। সুজন আহম্মেদ রনি নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘নৌকা বা স্পিডবোট ছাড়া গ্রামে যাওয়া সম্ভব নয়। আমরা তো নৌকা আনিনি। এখানে কোনো ব্যবস্থাও নেই। তাই প্রত্যন্ত অঞ্চলের বানভাসিদের ত্রাণ দিতে পারিনি। বাধ্য হয়ে ডাঙায় যাঁরা তাঁবুতে ছিলেন, তাঁদের ত্রাণ দিয়ে চলে আসতে হলো।’
ওই শিক্ষার্থীদের মতো এমন বেকায়দায় পড়েছেন ত্রাণ দিতে যাওয়া বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি। সড়কে আশ্রয় নেওয়া বুড়িচংয়ের বুড়বুড়িয়া নদীভাঙন এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল ভূইয়া বলেন, ‘বন্যাকবলিত যাঁরা পাড়ে বা ডাঙায় আছেন, সবাই তাঁদের ত্রাণ দেন। যেখানে বেশি পানি, সেখানে মানুষ যেতে পারছেন না। পানিবন্দী অনেকে না খেয়ে আছেন। আমাদের যে খাবার আছে, তাতে আরও ছয় দিন চলবে। তারপরও আমাদেরই দেয়। গ্রামের মানুষের না আছে খাবার, না আছে পানি।’
গতকাল সকাল থেকে বুড়িচংয়ের বন্যাকবলিত বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, একের পর এক ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, কাভার্ড ভ্যান, রিকশা, ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বানভাসি মানুষকে সহায়তা দিতে ছুটে আসছেন বিভিন্ন স্থানের মানুষ। তবে নৌযান-সংকটে প্রত্যন্ত এলাকায় যেতে পারছেন তাঁরা। ওই সব এলাকায় নেই সুপেয় পানির ব্যবস্থা ও পয়োনিষ্কাশন। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দুর্গতরা।
লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর বন্যাকবলিত গ্রামীণ এলাকার পানিবন্দী মানুষেরাও খাবার-পানির সংকটে দিন পার করছেন। লক্ষ্মীপুরে অন্তত ৮ লাখ মানুষ পানিবন্দী।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও জেলা প্রশাসন সূত্র বলেছে, ২০ বছরের মধ্যে এমন বন্যা লক্ষ্মীপুরের মানুষ দেখেননি। কোথাও কোথাও ৪ থেকে ৬ ফুট পানি। ঘরবাড়ি ছেড়ে অনেকেই আত্মীয়স্বজনের বাড়ি ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিচ্ছেন। গত শুক্রবার বিকেল থেকে অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। ত্রাণের যে সরবরাহ আসছে, তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। নৌযান-সংকটের কারণে এখানেও গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না। ওই সব এলাকায় দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। এতে করে চরম মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামসহ অন্যান্য উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও অবনতি ঘটেছে নাঙ্গলকোটে। এদিকে এ জেলায় গতকাল পানিতে ডুবে তিন শিক্ষার্থীসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
নাঙ্গলকোট উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নে এখন পানিবন্দী কয়েক লাখ মানুষ। এই উপজেলায় গতকাল দুপুর থেকে পানি বাড়ছে। সাতবাড়িয়া এলাকার কলেজশিক্ষার্থী সেলিনা সুলতানা নিশীতা বলেন, ‘সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন উপজেলার সবচেয়ে নিচু এলাকা। এই ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ কয়েকদিন ধরে অর্ধাহার-অনাহারে দিন পার করছেন। কোনো ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না।
তবে এখন সঙ্গিন অবস্থা লক্ষ্মীপুরের মানুষের। রাতভর বৃষ্টি আর ফেনী ও নোয়াখালী থেকে ধেয়ে আসা পানির তোড়ে এই জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। অন্তত ৮ লাখ মানুষ এখন পানিবন্দী। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। স্থানীয় এলাকাবাসী ও জেলা প্রশাসন সূত্র বলেছে, দুদিন ধরে ফেনী ও নোয়াখালীর বন্যার পানি রহমতখালী ও ডাকাতিয়া খাল হয়ে লক্ষ্মীপুরে ঢুকছে।
লক্ষ্মীপুরে রামগতি আবহাওয়া সতর্কীকরণ অফিসের কর্মকর্তা সৌরভ হোসেন বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ৭০ মিলিমিটার। বন্যার অবনতি হচ্ছে। বৃষ্টি আরও কয়েকদিন থাকবে। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাহিদ-উজ-জামান বলেন, ‘দুদিন ধরে পানি বাড়ছে। বিশেষ করে গত ২৪ ঘণ্টায় কোথাও ১ ফুট, আবার কোথাও ২ ফুট পানি বেড়েছে। মজুচৌধুরীর হাটের স্লুইসগেটের সব দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে।’
নোয়াখালী ও ফেনীর পানি নামার জন্য কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর রেগুলেটরের ২৩টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে বন্যার পানি আরও বাড়ছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র বলেছে, ভারতের ত্রিপুরা থেকে উজানের ঢল আন্তসীমান্ত কাকড়ি ও ডাকাতিয়া নদী হয়ে ছোট ফেনী নদীর মুখে মুছাপুর ক্লোজার গেটের মাধ্যমে সন্দ্বীপ চ্যানেল হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়ছে। কাকড়ি নদীর পানি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের উজিরপুর ও কাশিনগর ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ডাকাতিয়ায় মিশছে। ডাকাতিয়া নদী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে কুমিল্লার বাগসারা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে এবং পরবর্তী সময়ে চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নদীটি কুমিল্লা-লাকসাম-চাঁদপুর হয়ে মেঘনায় মিশেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সি আমির ফয়সাল বলেন, গত ১৫ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে ৪০ মিলিমিটার পানি কমেছে। আর ৩ ঘণ্টায় পানি কমেছে ১০ মিলিমিটার। অর্থাৎ পানি দ্রুতই কমে যাচ্ছে। বৃষ্টিপাত কমলে এবং ক্লোজার দিয়ে পানি নামতে থাকলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বন্যার উল্লেখযোগ্য উন্নতি হবে।
তবে ফেনী ও নোয়াখালীতে গত শনিবার রাতভর বৃষ্টি হয়েছে। নোয়াখালী আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে শনিবার সন্ধ্যা থেকে রোববার বেলা ৩টা পর্যন্ত জেলায় ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে উন্নতি
মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। বন্যাকবলিত এলাকা কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা ও সদর উপজেলা থেকে পানি দ্রুত কমছে। তবে বন্যাদুর্গত এলাকায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যার্তদের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন হাসপাতাল ও সংগঠন বিনা মূল্যের মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালনা করছে।
হবিগঞ্জেও বন্যার পানি কমছে। ইতিমধ্যে অনেক বাসাবাড়ি ও সড়ক থেকে পানি নেমে গেছে। বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে নদ-নদীর পানি। অনেকে বাড়িঘরে ফিরতেও শুরু করেছেন।
পার্বত্যে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
খাগড়াছড়িতে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর ভেসে উঠছে ক্ষতচিহ্ন। সদর উপজেলার বেতছড়ি ছড়ার ওপর নির্মিত কালভার্টের মুখের সড়ক ধসে পড়েছে। এতে বেতছড়ি, বেতছড়ি মুখ, মারমাপাড়া, ইটছড়ি, দাঁতকুপ্যাসহ ৩০টি গ্রামের সঙ্গে খাগড়াছড়ি শহরের যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এদিকে রাঙামাটিতে কাপ্তাই হ্রদের বাঁধের ১৬টি জলকপাট গতকাল সকাল ৮টায় ৬ ইঞ্চি খুলে দেওয়ার ৬ ঘণ্টা পর বন্ধ করা হয়। এরপর পানির স্তর ফের বেড়ে গেলে দ্বিতীয় দফায় সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় জলকপাটগুলো ফের ৪ ইঞ্চি খুলে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন কাপ্তাই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আব্দুজ্জাহের।

চারদিকে পানি আর পানি। ডুবেছে বাড়ির আঙিনা ও আশপাশের নলকূপগুলো। ফলে সুপেয় পানির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে। দেশের সব প্রান্ত থেকে বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ যাচ্ছে; কিন্তু পৌঁছাচ্ছে না বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের কাছে। ফলে পানি ও খাদ্যসংকটে এ মানুষগুলো রয়েছেন প্রচণ্ড কষ্টে। বিদ্যুৎ না থাকায় এবং মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কে সমস্যার কারণে কষ্ট আরও বেড়েছে তাঁদের।
এদিকে কুমিল্লা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। প্লাবিত হয়েছে নতুন নতুন এলাকা। কুমিল্লায় গতকাল রোববার তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অবশ্য মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার
ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দেশের ১১টি জেলা এখন বন্যাকবলিত। নতুন করে আর কোনো জেলা আক্রান্ত হয়নি। সারা দেশ থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণও যাচ্ছে। তবে এসব ত্রাণসহায়তার মধ্যে সিংহ ভাগই শুকনো খাবার, ওষুধ, খাবার স্যালাইন ও পোশাক।
সুপেয় পানির পরিমাণ সে তুলনায় অপ্রতুল। এসব সহায়তা আবার গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত এলাকায় সেভাবে পৌঁছাচ্ছে না।
উপদ্রুত এলাকার নলকূপগুলো কয়েক দিন ধরে পানির নিচে। ফলে প্রত্যন্ত এলাকার বানভাসি মানুষগুলো খাদ্য ও পানির ব্যাপক সংকটে পড়েছেন।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার যাদৈয়া এলাকার বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, ‘চারদিকে শুধু পানি আর পানি। কোথাও বের হওয়ার মতো অবস্থা নেই। বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। শিশুসন্তানসহ বৃদ্ধ মা-বাবাকে নিয়ে চরম দুর্ভোগের মধ্যে আছি।’
রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে তিন ট্রাক ত্রাণ নিয়ে কুমিল্লার বুড়িচংয়ের ভরসা এলাকায় গিয়েছিলেন একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। ত্রাণ দিতে গিয়ে তাঁরাও পড়েছেন বেকায়দায়। সুজন আহম্মেদ রনি নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘নৌকা বা স্পিডবোট ছাড়া গ্রামে যাওয়া সম্ভব নয়। আমরা তো নৌকা আনিনি। এখানে কোনো ব্যবস্থাও নেই। তাই প্রত্যন্ত অঞ্চলের বানভাসিদের ত্রাণ দিতে পারিনি। বাধ্য হয়ে ডাঙায় যাঁরা তাঁবুতে ছিলেন, তাঁদের ত্রাণ দিয়ে চলে আসতে হলো।’
ওই শিক্ষার্থীদের মতো এমন বেকায়দায় পড়েছেন ত্রাণ দিতে যাওয়া বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি। সড়কে আশ্রয় নেওয়া বুড়িচংয়ের বুড়বুড়িয়া নদীভাঙন এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল ভূইয়া বলেন, ‘বন্যাকবলিত যাঁরা পাড়ে বা ডাঙায় আছেন, সবাই তাঁদের ত্রাণ দেন। যেখানে বেশি পানি, সেখানে মানুষ যেতে পারছেন না। পানিবন্দী অনেকে না খেয়ে আছেন। আমাদের যে খাবার আছে, তাতে আরও ছয় দিন চলবে। তারপরও আমাদেরই দেয়। গ্রামের মানুষের না আছে খাবার, না আছে পানি।’
গতকাল সকাল থেকে বুড়িচংয়ের বন্যাকবলিত বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, একের পর এক ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, কাভার্ড ভ্যান, রিকশা, ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বানভাসি মানুষকে সহায়তা দিতে ছুটে আসছেন বিভিন্ন স্থানের মানুষ। তবে নৌযান-সংকটে প্রত্যন্ত এলাকায় যেতে পারছেন তাঁরা। ওই সব এলাকায় নেই সুপেয় পানির ব্যবস্থা ও পয়োনিষ্কাশন। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দুর্গতরা।
লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর বন্যাকবলিত গ্রামীণ এলাকার পানিবন্দী মানুষেরাও খাবার-পানির সংকটে দিন পার করছেন। লক্ষ্মীপুরে অন্তত ৮ লাখ মানুষ পানিবন্দী।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও জেলা প্রশাসন সূত্র বলেছে, ২০ বছরের মধ্যে এমন বন্যা লক্ষ্মীপুরের মানুষ দেখেননি। কোথাও কোথাও ৪ থেকে ৬ ফুট পানি। ঘরবাড়ি ছেড়ে অনেকেই আত্মীয়স্বজনের বাড়ি ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিচ্ছেন। গত শুক্রবার বিকেল থেকে অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। ত্রাণের যে সরবরাহ আসছে, তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। নৌযান-সংকটের কারণে এখানেও গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না। ওই সব এলাকায় দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। এতে করে চরম মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামসহ অন্যান্য উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও অবনতি ঘটেছে নাঙ্গলকোটে। এদিকে এ জেলায় গতকাল পানিতে ডুবে তিন শিক্ষার্থীসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
নাঙ্গলকোট উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নে এখন পানিবন্দী কয়েক লাখ মানুষ। এই উপজেলায় গতকাল দুপুর থেকে পানি বাড়ছে। সাতবাড়িয়া এলাকার কলেজশিক্ষার্থী সেলিনা সুলতানা নিশীতা বলেন, ‘সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন উপজেলার সবচেয়ে নিচু এলাকা। এই ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ কয়েকদিন ধরে অর্ধাহার-অনাহারে দিন পার করছেন। কোনো ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না।
তবে এখন সঙ্গিন অবস্থা লক্ষ্মীপুরের মানুষের। রাতভর বৃষ্টি আর ফেনী ও নোয়াখালী থেকে ধেয়ে আসা পানির তোড়ে এই জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। অন্তত ৮ লাখ মানুষ এখন পানিবন্দী। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। স্থানীয় এলাকাবাসী ও জেলা প্রশাসন সূত্র বলেছে, দুদিন ধরে ফেনী ও নোয়াখালীর বন্যার পানি রহমতখালী ও ডাকাতিয়া খাল হয়ে লক্ষ্মীপুরে ঢুকছে।
লক্ষ্মীপুরে রামগতি আবহাওয়া সতর্কীকরণ অফিসের কর্মকর্তা সৌরভ হোসেন বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ৭০ মিলিমিটার। বন্যার অবনতি হচ্ছে। বৃষ্টি আরও কয়েকদিন থাকবে। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাহিদ-উজ-জামান বলেন, ‘দুদিন ধরে পানি বাড়ছে। বিশেষ করে গত ২৪ ঘণ্টায় কোথাও ১ ফুট, আবার কোথাও ২ ফুট পানি বেড়েছে। মজুচৌধুরীর হাটের স্লুইসগেটের সব দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে।’
নোয়াখালী ও ফেনীর পানি নামার জন্য কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর রেগুলেটরের ২৩টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে বন্যার পানি আরও বাড়ছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র বলেছে, ভারতের ত্রিপুরা থেকে উজানের ঢল আন্তসীমান্ত কাকড়ি ও ডাকাতিয়া নদী হয়ে ছোট ফেনী নদীর মুখে মুছাপুর ক্লোজার গেটের মাধ্যমে সন্দ্বীপ চ্যানেল হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়ছে। কাকড়ি নদীর পানি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের উজিরপুর ও কাশিনগর ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ডাকাতিয়ায় মিশছে। ডাকাতিয়া নদী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে কুমিল্লার বাগসারা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে এবং পরবর্তী সময়ে চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নদীটি কুমিল্লা-লাকসাম-চাঁদপুর হয়ে মেঘনায় মিশেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সি আমির ফয়সাল বলেন, গত ১৫ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে ৪০ মিলিমিটার পানি কমেছে। আর ৩ ঘণ্টায় পানি কমেছে ১০ মিলিমিটার। অর্থাৎ পানি দ্রুতই কমে যাচ্ছে। বৃষ্টিপাত কমলে এবং ক্লোজার দিয়ে পানি নামতে থাকলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বন্যার উল্লেখযোগ্য উন্নতি হবে।
তবে ফেনী ও নোয়াখালীতে গত শনিবার রাতভর বৃষ্টি হয়েছে। নোয়াখালী আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে শনিবার সন্ধ্যা থেকে রোববার বেলা ৩টা পর্যন্ত জেলায় ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে উন্নতি
মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। বন্যাকবলিত এলাকা কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা ও সদর উপজেলা থেকে পানি দ্রুত কমছে। তবে বন্যাদুর্গত এলাকায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যার্তদের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন হাসপাতাল ও সংগঠন বিনা মূল্যের মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালনা করছে।
হবিগঞ্জেও বন্যার পানি কমছে। ইতিমধ্যে অনেক বাসাবাড়ি ও সড়ক থেকে পানি নেমে গেছে। বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে নদ-নদীর পানি। অনেকে বাড়িঘরে ফিরতেও শুরু করেছেন।
পার্বত্যে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
খাগড়াছড়িতে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর ভেসে উঠছে ক্ষতচিহ্ন। সদর উপজেলার বেতছড়ি ছড়ার ওপর নির্মিত কালভার্টের মুখের সড়ক ধসে পড়েছে। এতে বেতছড়ি, বেতছড়ি মুখ, মারমাপাড়া, ইটছড়ি, দাঁতকুপ্যাসহ ৩০টি গ্রামের সঙ্গে খাগড়াছড়ি শহরের যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এদিকে রাঙামাটিতে কাপ্তাই হ্রদের বাঁধের ১৬টি জলকপাট গতকাল সকাল ৮টায় ৬ ইঞ্চি খুলে দেওয়ার ৬ ঘণ্টা পর বন্ধ করা হয়। এরপর পানির স্তর ফের বেড়ে গেলে দ্বিতীয় দফায় সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় জলকপাটগুলো ফের ৪ ইঞ্চি খুলে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন কাপ্তাই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আব্দুজ্জাহের।

চারদিকে পানি আর পানি। ডুবেছে বাড়ির আঙিনা ও আশপাশের নলকূপগুলো। ফলে সুপেয় পানির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে। দেশের সব প্রান্ত থেকে বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ যাচ্ছে; কিন্তু পৌঁছাচ্ছে না বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের কাছে। ফলে পানি ও খাদ্যসংকটে এ মানুষগুলো রয়েছেন প্রচণ্ড কষ্টে। বিদ্যুৎ না থাকায় এবং মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কে সমস্যার কারণে কষ্ট আরও বেড়েছে তাঁদের।
এদিকে কুমিল্লা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। প্লাবিত হয়েছে নতুন নতুন এলাকা। কুমিল্লায় গতকাল রোববার তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অবশ্য মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার
ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দেশের ১১টি জেলা এখন বন্যাকবলিত। নতুন করে আর কোনো জেলা আক্রান্ত হয়নি। সারা দেশ থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণও যাচ্ছে। তবে এসব ত্রাণসহায়তার মধ্যে সিংহ ভাগই শুকনো খাবার, ওষুধ, খাবার স্যালাইন ও পোশাক।
সুপেয় পানির পরিমাণ সে তুলনায় অপ্রতুল। এসব সহায়তা আবার গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত এলাকায় সেভাবে পৌঁছাচ্ছে না।
উপদ্রুত এলাকার নলকূপগুলো কয়েক দিন ধরে পানির নিচে। ফলে প্রত্যন্ত এলাকার বানভাসি মানুষগুলো খাদ্য ও পানির ব্যাপক সংকটে পড়েছেন।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার যাদৈয়া এলাকার বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, ‘চারদিকে শুধু পানি আর পানি। কোথাও বের হওয়ার মতো অবস্থা নেই। বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। শিশুসন্তানসহ বৃদ্ধ মা-বাবাকে নিয়ে চরম দুর্ভোগের মধ্যে আছি।’
রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে তিন ট্রাক ত্রাণ নিয়ে কুমিল্লার বুড়িচংয়ের ভরসা এলাকায় গিয়েছিলেন একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। ত্রাণ দিতে গিয়ে তাঁরাও পড়েছেন বেকায়দায়। সুজন আহম্মেদ রনি নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘নৌকা বা স্পিডবোট ছাড়া গ্রামে যাওয়া সম্ভব নয়। আমরা তো নৌকা আনিনি। এখানে কোনো ব্যবস্থাও নেই। তাই প্রত্যন্ত অঞ্চলের বানভাসিদের ত্রাণ দিতে পারিনি। বাধ্য হয়ে ডাঙায় যাঁরা তাঁবুতে ছিলেন, তাঁদের ত্রাণ দিয়ে চলে আসতে হলো।’
ওই শিক্ষার্থীদের মতো এমন বেকায়দায় পড়েছেন ত্রাণ দিতে যাওয়া বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি। সড়কে আশ্রয় নেওয়া বুড়িচংয়ের বুড়বুড়িয়া নদীভাঙন এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল ভূইয়া বলেন, ‘বন্যাকবলিত যাঁরা পাড়ে বা ডাঙায় আছেন, সবাই তাঁদের ত্রাণ দেন। যেখানে বেশি পানি, সেখানে মানুষ যেতে পারছেন না। পানিবন্দী অনেকে না খেয়ে আছেন। আমাদের যে খাবার আছে, তাতে আরও ছয় দিন চলবে। তারপরও আমাদেরই দেয়। গ্রামের মানুষের না আছে খাবার, না আছে পানি।’
গতকাল সকাল থেকে বুড়িচংয়ের বন্যাকবলিত বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, একের পর এক ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, কাভার্ড ভ্যান, রিকশা, ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বানভাসি মানুষকে সহায়তা দিতে ছুটে আসছেন বিভিন্ন স্থানের মানুষ। তবে নৌযান-সংকটে প্রত্যন্ত এলাকায় যেতে পারছেন তাঁরা। ওই সব এলাকায় নেই সুপেয় পানির ব্যবস্থা ও পয়োনিষ্কাশন। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দুর্গতরা।
লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর বন্যাকবলিত গ্রামীণ এলাকার পানিবন্দী মানুষেরাও খাবার-পানির সংকটে দিন পার করছেন। লক্ষ্মীপুরে অন্তত ৮ লাখ মানুষ পানিবন্দী।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও জেলা প্রশাসন সূত্র বলেছে, ২০ বছরের মধ্যে এমন বন্যা লক্ষ্মীপুরের মানুষ দেখেননি। কোথাও কোথাও ৪ থেকে ৬ ফুট পানি। ঘরবাড়ি ছেড়ে অনেকেই আত্মীয়স্বজনের বাড়ি ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিচ্ছেন। গত শুক্রবার বিকেল থেকে অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। ত্রাণের যে সরবরাহ আসছে, তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। নৌযান-সংকটের কারণে এখানেও গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না। ওই সব এলাকায় দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। এতে করে চরম মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামসহ অন্যান্য উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও অবনতি ঘটেছে নাঙ্গলকোটে। এদিকে এ জেলায় গতকাল পানিতে ডুবে তিন শিক্ষার্থীসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
নাঙ্গলকোট উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নে এখন পানিবন্দী কয়েক লাখ মানুষ। এই উপজেলায় গতকাল দুপুর থেকে পানি বাড়ছে। সাতবাড়িয়া এলাকার কলেজশিক্ষার্থী সেলিনা সুলতানা নিশীতা বলেন, ‘সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন উপজেলার সবচেয়ে নিচু এলাকা। এই ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ কয়েকদিন ধরে অর্ধাহার-অনাহারে দিন পার করছেন। কোনো ত্রাণ পৌঁছাচ্ছে না।
তবে এখন সঙ্গিন অবস্থা লক্ষ্মীপুরের মানুষের। রাতভর বৃষ্টি আর ফেনী ও নোয়াখালী থেকে ধেয়ে আসা পানির তোড়ে এই জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। অন্তত ৮ লাখ মানুষ এখন পানিবন্দী। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। স্থানীয় এলাকাবাসী ও জেলা প্রশাসন সূত্র বলেছে, দুদিন ধরে ফেনী ও নোয়াখালীর বন্যার পানি রহমতখালী ও ডাকাতিয়া খাল হয়ে লক্ষ্মীপুরে ঢুকছে।
লক্ষ্মীপুরে রামগতি আবহাওয়া সতর্কীকরণ অফিসের কর্মকর্তা সৌরভ হোসেন বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ৭০ মিলিমিটার। বন্যার অবনতি হচ্ছে। বৃষ্টি আরও কয়েকদিন থাকবে। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাহিদ-উজ-জামান বলেন, ‘দুদিন ধরে পানি বাড়ছে। বিশেষ করে গত ২৪ ঘণ্টায় কোথাও ১ ফুট, আবার কোথাও ২ ফুট পানি বেড়েছে। মজুচৌধুরীর হাটের স্লুইসগেটের সব দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে।’
নোয়াখালী ও ফেনীর পানি নামার জন্য কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর রেগুলেটরের ২৩টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে বন্যার পানি আরও বাড়ছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র বলেছে, ভারতের ত্রিপুরা থেকে উজানের ঢল আন্তসীমান্ত কাকড়ি ও ডাকাতিয়া নদী হয়ে ছোট ফেনী নদীর মুখে মুছাপুর ক্লোজার গেটের মাধ্যমে সন্দ্বীপ চ্যানেল হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়ছে। কাকড়ি নদীর পানি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের উজিরপুর ও কাশিনগর ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ডাকাতিয়ায় মিশছে। ডাকাতিয়া নদী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে কুমিল্লার বাগসারা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে এবং পরবর্তী সময়ে চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নদীটি কুমিল্লা-লাকসাম-চাঁদপুর হয়ে মেঘনায় মিশেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সি আমির ফয়সাল বলেন, গত ১৫ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে ৪০ মিলিমিটার পানি কমেছে। আর ৩ ঘণ্টায় পানি কমেছে ১০ মিলিমিটার। অর্থাৎ পানি দ্রুতই কমে যাচ্ছে। বৃষ্টিপাত কমলে এবং ক্লোজার দিয়ে পানি নামতে থাকলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বন্যার উল্লেখযোগ্য উন্নতি হবে।
তবে ফেনী ও নোয়াখালীতে গত শনিবার রাতভর বৃষ্টি হয়েছে। নোয়াখালী আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে শনিবার সন্ধ্যা থেকে রোববার বেলা ৩টা পর্যন্ত জেলায় ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে উন্নতি
মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। বন্যাকবলিত এলাকা কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা ও সদর উপজেলা থেকে পানি দ্রুত কমছে। তবে বন্যাদুর্গত এলাকায় খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যার্তদের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন হাসপাতাল ও সংগঠন বিনা মূল্যের মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালনা করছে।
হবিগঞ্জেও বন্যার পানি কমছে। ইতিমধ্যে অনেক বাসাবাড়ি ও সড়ক থেকে পানি নেমে গেছে। বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে নদ-নদীর পানি। অনেকে বাড়িঘরে ফিরতেও শুরু করেছেন।
পার্বত্যে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
খাগড়াছড়িতে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর ভেসে উঠছে ক্ষতচিহ্ন। সদর উপজেলার বেতছড়ি ছড়ার ওপর নির্মিত কালভার্টের মুখের সড়ক ধসে পড়েছে। এতে বেতছড়ি, বেতছড়ি মুখ, মারমাপাড়া, ইটছড়ি, দাঁতকুপ্যাসহ ৩০টি গ্রামের সঙ্গে খাগড়াছড়ি শহরের যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এদিকে রাঙামাটিতে কাপ্তাই হ্রদের বাঁধের ১৬টি জলকপাট গতকাল সকাল ৮টায় ৬ ইঞ্চি খুলে দেওয়ার ৬ ঘণ্টা পর বন্ধ করা হয়। এরপর পানির স্তর ফের বেড়ে গেলে দ্বিতীয় দফায় সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় জলকপাটগুলো ফের ৪ ইঞ্চি খুলে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন কাপ্তাই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আব্দুজ্জাহের।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

চারদিকে পানি আর পানি। ডুবেছে বাড়ির আঙিনা ও আশপাশের নলকূপগুলো। ফলে সুপেয় পানির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে। দেশের সব প্রান্ত থেকে বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ যাচ্ছে; কিন্তু পৌঁছাচ্ছে না বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত
২৬ আগস্ট ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

চারদিকে পানি আর পানি। ডুবেছে বাড়ির আঙিনা ও আশপাশের নলকূপগুলো। ফলে সুপেয় পানির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে। দেশের সব প্রান্ত থেকে বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ যাচ্ছে; কিন্তু পৌঁছাচ্ছে না বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত
২৬ আগস্ট ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

চারদিকে পানি আর পানি। ডুবেছে বাড়ির আঙিনা ও আশপাশের নলকূপগুলো। ফলে সুপেয় পানির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে। দেশের সব প্রান্ত থেকে বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ যাচ্ছে; কিন্তু পৌঁছাচ্ছে না বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত
২৬ আগস্ট ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

চারদিকে পানি আর পানি। ডুবেছে বাড়ির আঙিনা ও আশপাশের নলকূপগুলো। ফলে সুপেয় পানির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে। দেশের সব প্রান্ত থেকে বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ যাচ্ছে; কিন্তু পৌঁছাচ্ছে না বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত
২৬ আগস্ট ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫