একুশে বইমেলা

এবারের বইমেলায় এসেছে আলোচিত দম্পতি মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সাবেক সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদ ও একই কলেজের শিক্ষার্থী সিনথিয়া ইসলাম তিশার দুটি বই। একটি ‘তিশা অ্যান্ড মুশতাক’ আরেকটি ‘তিশার ভালোবাসা’ 

অমর একুশে বইমেলা ২০২৪-এ প্রকাশিত হয়েছে তরুণ কথাসাহিত্যিক মারুফ ইসলামের চতুর্থ বই ‘বুড়োবুড়ি রেস্তোরাঁ’। এটা একটি গল্পগ্রন্থ, প্রকাশ করেছে প্রতিকথা প্রকাশনা। বইমেলায় বইটি পাওয়া যাবে ৩৩০ নম্বর স্টলে

ছুটির দিন, তাই সকাল থেকেই শুরু হয় ভিড়। বিকেলে দেখা যায়, শাহবাগ মোড় থেকে টিএসসি পর্যন্ত সড়ক যানজটে স্থবির। ফুটপাতেও বইমেলামুখী মানুষের ঢল। শিশু-কিশোর, যুবা-বৃদ্ধ—সবাই সেই দলে। মেলার প্রাঙ্গণেও বইপ্রেমী ও দর্শনার্থীর ঢল।

প্রকাশের ছয় বছর পর নতুন সংস্করণে মেলায় এসেছে কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক অলাত এহ্সানের গল্পগ্রন্থ ‘অনভ্যাসের দিনে’। এর মধ্যে দেড় বছর বাজারে বইটির কোনো মুদ্রিত কপি ছিল না। এবার আরও একটি গল্প যুক্ত করে বইটি প্রকাশ করেছে অর্জন প্রকাশন।

এবারের অমর একুশে বইমেলাকে কেন্দ্র করে সম্ভবত সবচেয়ে জনপ্রিয় গসিপ ‘সুগার ড্যাডি’। আলোচিত এক অসম যুগলের প্রেমের গল্পকে উপজীব্য করে লেখা একটি বই এবার টেলিভিশন, অনলাইন পোর্টাল থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়ায় সবচেয়ে বেশি কভারেজ পাচ্ছে। যেই প্রেম নিয়ে খোদ উচ্চ আদালত আপত্তি জানিয়েছিলেন, সেই যুগল নিজেই উপন্যা

রাজধানীতে বইমেলার মধ্যে ঋদ্ধি প্রকাশনীর সামনে দাঁড়িয়ে দোতারা বাজাচ্ছিলেন ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি। পরনে গেরুয়া পাঞ্জাবি। মাথায় পাগড়ি। আগ্রহী অনেকেই ভিডিও করছেন। মেলায় তাঁর কোনো বই এসেছে নাকি বিনোদনের জন্য এই আয়োজন, জানতে চাইলে মিলল তাঁর জীবনের গল্প।

বইমেলার ঠিক মাঝখানে টিনের চালার দোতলা ঘর। দেখলে কারও বাড়ি মনে হতে পারে। দর্শনার্থীদের ছবি আর সেলফি তোলার হিড়িক পড়ে বাড়িটি ঘিরে। আকাশ প্রকাশনীর এমন ব্যতিক্রমী স্টল কেবল দৃষ্টিনন্দনই নয়, বিক্রিতেও যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে স্টলের দেয়ালে সাঁটা একটি লিফলেট। তাতে লেখা, ‘ছবি তুলুন, বই ক

স্বাধীন বাংলাদেশের বয়সের সমান্তরালে বেড়েছে বইমেলার বয়স। গত ৫২ বছরে এর রূপ, জায়গা আর পরিসর বদলেছে অনেকবার। দেখতে দেখতে এটি উৎসবে পরিণত হয়েছে। শীতের শেষ আর বসন্তের শুরু জুড়ে বাঙালির মনে ফেব্রুয়ারি মানেই বইমেলা। এখানে পাঠক, লেখক আর প্রকাশকদের পাশাপাশি বড় একটা অংশজুড়ে থাকেন বিভিন্ন প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী

একজন ক্রেতা শেখ ফাতিমা পাপিয়া নামে বইমেলার এক বিক্রয়কর্মীকে লেখক মনে করে কথা বলতে শুরু করেন। পাপিয়া জানালেন, তিনি লেখক নন। ক্রেতা বলেন, ভুল করে যখন আপনাকেই লেখক মনে করেছি, তখন আপনিই অটোগ্রাফ দিয়ে দিন।

টিএসসির দিকের প্রবেশপথ দিয়ে সামনে এগোলেই বেশ কিছু স্টল নজরে পড়ে। বাহারি সাজসজ্জা নেই। দর্শনার্থীর আনাগোনাও কম। মেলার মূল অংশের পাশের রাস্তা পেরিয়ে যেতে হয় ওখানে। মনে হতে পারে, মেলার বাইরের কিছু। কিন্তু পুরো বইমেলার প্রতিবাদী কণ্ঠ যেন এখানেই।

স্নাতক প্রথম বর্ষ থেকে বইমেলায় বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন লামিয়া সারা হৃদিতা। তিনি শুরু থেকেই কাজ করছেন আগামী প্রকাশনীতে। হৃদিতার বইমেলার সঙ্গে পরিচয় একজন পাঠক হিসেবে। পরে বইয়ের নেশাতেই তিনি বইমেলার বিক্রয়কর্মী হওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেননি। পাঠক হৃদিতা বইমেলায় আসতেন নিজের পছন্দের লেখকের বই সংগ্র

বহুদিন পর এক নিশ্বাসে পড়ে ফেলবার মতো বইটি হাতে পেলাম। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ড. মোস্তফা সারওয়ার পেশায় একজন শিক্ষক কিন্তু বইটি পড়তে গিয়ে হোঁচটই খেলাম কারণ বিশেষজ্ঞ শিক্ষকের কাহিনির বর্ণনায় কোন জ্ঞান দানের প্রবণতা নেই–নেই ভাষা ও উপস্থাপনার কচকচানি ও দুর্বোধ্যতা। 

মেলায় বাড়ছে নতুন বইয়ের গন্ধ। আসছেন দর্শনার্থীরাও। কেউ কেউ এসেছেন বন্ধুদের নিয়ে দল বেঁধে। স্টলে স্টলে ঘুরছেন, বই দেখছেন, কিনছেনও কেউ কেউ। সেলফিও তুলছেন অনেকে। গতকাল সোমবার অমর একুশে বইমেলার পঞ্চম দিনে দেখা গেল এমন চিত্র। 

আরও অনেক কিছুর মতো ঢাকার বইমেলাটি বাংলাদেশ, দেশের বাঙালি ও প্রবাসী বাঙালিদের আশার প্রতীক হয়ে উঠেছে। একটি দেশের উজ্জ্বলতার প্রতীক এই মেলা আমাদের অহংকার।

প্রথমবারের মতো অমর একুশে বইমেলায় অংশ নিয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। বর্ধমান হাউসের পেছনে বইমেলার তথ্যকেন্দ্রের পাশেই বিশ্ববিদ্যালয়টির নামে বরাদ্দ করা হয়েছে একটি স্টল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব নজরুল স্টাডিজ, জনসংযোগ দপ্তর, রেজিস্ট্রার দপ্তর, বিভিন্ন অনুষদ ও বিভাগ থেকে প্রকাশিত

ছুটির দিন। সকালটা ছিল শিশুদের। বইমেলার শিশুপ্রহর। বেলা ১১টার আগেই একঝাঁক শিশু ঢুকল মেলার মধ্যে। সবার পরনে স্কুলড্রেস। জানাল, আব্দুল্লাহ মেমোরিয়াল হাইস্কুলে পড়ে ওরা।

বইমেলা সারা পৃথিবীতে আজ শিক্ষা-সাহিত্য-সংস্কৃতির উৎসব হিসেবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বই বিপণনে বইমেলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বছরব্যাপী পৃথিবীতে যেসব বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সেগুলো তিনটি ধারায় ভাগ করা যায়।