Ajker Patrika

পুরোনো ফোনের নতুন ব্যবহার

অলকানন্দা রায়, ঢাকা
Thumbnail image

কিছুদিন পর পর নতুন ফিচারসংবলিত হ্যান্ডসেট বাজারে এসে ফোনপ্রেমীদের চমক লাগিয়ে দেওয়ার ফলে নতুন ফোন কিনতে ছোটেন এমন অনেকেই আছেন। আবার কোনো কারণে কোনো একটি অপশন বিকল হওয়ার সুবাদেও বাদ হয়ে যায় আগের সেটটি। তখন পুরোনো সেটটি পড়ে থাকে। তাই ধরে নেওয়া যায়, সবার বাড়িতে একটা-দুটো অব্যবহৃত পুরোনো হ্যান্ড সেট থাকে। সেগুলো ফেলে না দিয়ে একটু বুদ্ধি খাটালেই আবার ব্যবহার করা যাবে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজে।

শিশুর তদারকি ক্যামেরা হিসেবে
একটি পুরোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোন যেটি বাড়ির কোনো এক লকারে পড়ে আছে এবং সেটা দিয়ে আর কিছুই করার নেই, সে ফোনটি হতে পারে আপনার বাড়ির শিশুদের তদারকির একটি গুরুত্বপূর্ণ ডিভাইস। শুধু দরকার হবে একটি অ্যাপ। অ্যান্ড্রয়েড ফোনে যে ধরনের ক্যামেরা আছে তা অনেক ক্ষেত্রে সিসি ক্যামেরার তুলনায় বেশ ভালো মানের। গুগল প্লে স্টোরে একাধিক সিসি ক্যামেরা অ্যাপ পাওয়া যায়। প্রয়োজনমতো সেখান থেকে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করে নেওয়া যাবে। সেই সঙ্গে ফোনটিকে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিতে হবে। এই সংযোগের ফলে ফোনটি চার্জ দেওয়ার জন্য সেখান থেকে নামানোর দরকার হবে না এবং এটি নতুন ডিজিটাল পাহারাদার হিসেবে কাজ করবে। শিশুকে পর্যবেক্ষণে রাখতে তার রুমে পুরোনো ফোনটি বসানো যাবে।

এই অ্যাপগুলো ডিজাইন করা হয়েছে এমন ভাবে, যাতে অডিও-ভিডিও উভয় পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি দুই প্রান্তের মানুষ একই সঙ্গে কথা বলতে এবং শুনতে পারবে। এতে দূর থেকে শিশুর সঙ্গে কথা বলা যাবে। প্রয়োজনে তাকে শান্ত করা যাবে। তবে অবশ্যই অ্যান্ড্রয়েড ফোনটিতে ওয়াই-ফাইয়ের সংযোগ থাকতে হবে।

ভিডিও ডোরবেল হিসেবে
বাড়ির সদর দরজার দায়িত্বে পুরোনো ফোন ভিডিও ডোরবেল হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। সে জন্য একটি আউটডোর ওয়াই-ফাই ওয়েবক্যাম বা একটি স্মার্ট ডোরবেল ইনস্টল করতে হবে। তাহলেই পুরোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোনটি পুরো সময়ের ভিডিও মনিটর হিসেবে কাজ করবে। বাড়ির ভেতরে বসেই দেখতে পাবেন দরজায় কে দাঁড়িয়ে।

ই-বুক রিডার হিসেবে
পুরোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করা যেতে পারে ই-বুক রিডার হিসেবে। এ জন্য সেটটিতে থাকা সব অ্যাপ্লিকেশন ডিলিট করে দিতে হবে। তারপর প্রয়োজনীয় রিডিং অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে। প্রয়োজনীয় ই-বুকগুলো ডাউনলোড করা হয়ে গেলে আর ইন্টারনেটের দরকার হবে না। যখন যেখানে খুশি পড়ে নেওয়া যাবে পছন্দের কোনো বই।

ব্যাকআপ ডিভাইস হিসেবে
পুরোনো স্মার্টফোনটি ফেলে দিয়ে নতুন একটি তো কেনা যায়ই। আবার সেটি কোনো দুর্ঘটনায় হারিয়ে যেতে পারে কিংবা হতে পারে চুরি। এর কোনো একটি ঘটলে অনেক বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হয় মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের। কেননা, এক একটি ফোনে থাকে নানা রকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, ভিডিও, ছবিসহ অনেক কিছু। এসব যাতে না হারায়, সে জন্য ব্যবহার করতে পারেন আপনার ফেলে দেওয়া পুরোনো ফোনটিকেই। কীভাবে? একটি মেমোরি কার্ড রাখুন সেটটিতে আর আপনার নতুন ফোনের যাবতীয় তথ্য, ভিডিও, লেখালেখি, ছবির ব্যাকআপ রাখুন পুরোনো ফোনে। ব্যস, নতুন সেটটি নষ্ট হলে, 
হারালে বা চুরি হলে আপনাকে ঝামেলায় পড়তে হবে না।

ক্যামকর্ডার হিসেবে 
বিভিন্ন ধরনের ভিডিও, যেমন বিয়ে, বাড়ির ছোটদের গান ও অন্যান্য কর্মকাণ্ড, খেলা, মজার কোনো ঘটনা, মিউজিক ভিডিও, রাস্তাঘাটে হঠাৎই ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনা ইত্যাদি ধারণ করতে থাকলে প্রতিনিয়ত ব্যবহার করা নতুন ফোনটির মেমোরি একসময় ফুল হয়ে যায়। তখন আর নতুন কিছু ধারণ করা যায় না বা এডিট করা যায় না। সে ক্ষেত্রে পুরোনো ফোনটি হতে পারে সহায়ক। নতুন ফোনের ভিডিওগুলো সরিয়ে রাখুন পুরোনো মোবাইল ফোন সেটটিতে। সেখানেই এডিট করুন ইচ্ছেমতো। এসব ভিডিও এডিট করে দুর্দান্ত একটি নতুন ভিডিও তৈরি করে ফেলুন। বলা বাহুল্য, পুরোনো অ্যান্ড্রয়েডটি হতে পারে একটি দুর্দান্ত দ্বিতীয় ক্যামেরা। কেননা, পুরোনো লোয়ার-অ্যান্ড ফোনগুলো সাধারণত এইচডি ভিডিও ক্যাপচার করতে পারে। পুরোনো ফোন বাঁচিয়ে দেবে নতুন ফোনের জায়গা।

 এ ছাড়া পুরোনো ফোনটি ব্যবহার করা যেতে পারে গান শোনার মাধ্যম হিসেবে, অ্যালার্ম ঘড়ি হিসেবে কিংবা সিনেমা দেখার জন্য। এতে নতুন ফোনটির জরুরি কাজে কোনো রকম ঝামেলার তৈরি হবে না।

সূত্র: সিনেট, আরএপি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত