Ajker Patrika

এআই মডেল প্রশিক্ষণে বিপুল পরিমাণ যুদ্ধের তথ্য সংগ্রহ করছে ইউক্রেন

হাজার হাজার ড্রোন ইতিমধ্যেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সিস্টেম ব্যবহার করে। ছবি: এএফপি
হাজার হাজার ড্রোন ইতিমধ্যেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সিস্টেম ব্যবহার করে। ছবি: এএফপি

যুদ্ধের কৌশল এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। এই নতুন বাস্তবতায়, ইউক্রেনের হাতে রয়েছে একটি অমূল্য সম্পদ—ড্রোনের মাধ্যমে সংগৃহীত কোটি কোটি ঘণ্টার ভিডিও ফুটেজ। এই ডেটা এআই মডেলগুলোকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে, যা যুদ্ধক্ষেত্রে দ্রুত এবং কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হতে পারে।

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধে উভয় পক্ষই যুদ্ধক্ষেত্রে লক্ষ্য চিহ্নিত করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করেছে, যা মানব চোখের চেয়ে অনেক দ্রুত ছবি স্ক্যান করতে পারে।

ইউক্রেনের একটি অলাভজনক ডিজিটাল সিস্টেম ‘ওসিএইচআই’ এর প্রতিষ্ঠাতা হলেন ওলেক্সান্দ্র দমিত্রিয়েভ। প্রতিষ্ঠানটি ১৫ হাজার ড্রোনের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে।

সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে ওলেক্সান্দ্র দমিত্রিয়েভ জানান, ২০২২ সাল থেকে ২ মিলিয়ন ঘণ্টা বা ২২৮ বছরের যুদ্ধক্ষেত্রের ভিডিও ড্রোনের মাধ্যমে সংগ্রহ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে শেখানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করবে। এসব ভিডিও এআইয়ের জন্য খাবারের মতো। আপনি যদি তাকে ২ মিলিয়ন ঘণ্টা (ভিডিও) দিয়ে এআইকে প্রশিক্ষণ দেন তাহলে এটি কিছু অসাধারণ হয়ে উঠবে।

দমিত্রিয়েভের মতে, এই ফুটেজ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেলগুলোকে যুদ্ধকৌশল, লক্ষ্য চিহ্নিতকরণ এবং অস্ত্র ব্যবস্থা কার্যকারিতা মূল্যায়নে প্রশিক্ষণ দিতে ব্যবহৃত হতে পারে।

এই সিস্টেমটি মূলত ২০২২ সালে তৈরি করা হয়েছিল, যাতে সামরিক কমান্ডাররা তাদের যুদ্ধক্ষেত্রের এলাকা সম্পর্কে একটি সাধারণ ধারণা পেতে পারেন।

সিস্টেমটি চালু করার পর পরিচালনাকারী দলটি বুঝতে পেরেছিল যে, ড্রোনগুলোর পাঠানোর ভিডিওগুলো যুদ্ধের একটি রেকর্ড হিসেবে থাকতে। তাই ফুটেজগুলো সংরক্ষণ করতে শুরু করেছিলেন তারা।

দমিত্রিয়েভ বলেন, যুদ্ধ থেকে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ বা ছয় টেরাবাইট নতুন ডেটা যোগ হয়। তিনি ইউক্রেনের কিছু বিদেশি মিত্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, যারা তার ওসিএইচআই সিস্টেমে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে তিনি বিস্তারিত তথ্য দিতে অস্বীকার করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এ নিউ আমেরিকান সিকিউরিটির সিনিয়র ফেলো স্যামুয়েল বেনডেট বলেন, এত বিশাল পরিমাণ ডেটা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সিস্টেমকে শেখানোর জন্য অত্যন্ত মূল্যবান হবে, যাতে তারা সঠিকভাবে বুঝতে পারে তারা কী দেখছে এবং কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ওয়াধওয়ানি এআই সেন্টারের ফেলো ক্যাটেরিনা বন্ডার বলেন, ডেটা সেটের আকার এবং চিত্রের গুণগত মান গুরুত্বপূর্ণ, কারণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেলগুলো লক্ষ্য চিহ্নিত করতে আকার এবং রঙের ভিত্তিতে শিখে।

ইউক্রেনের আরেকটি সিস্টেম রয়েছে, যার নাম ‘অ্যাভেঞ্জার্স’ যা ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তৈরি করেছে এবং এটি ড্রোন ও সিসিটিভি থেকে ভিডিও সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে।

এই সিস্টেম সম্পর্কে তথ্য দিতে অস্বীকার করেছে মন্ত্রণালয়। তবে এর আগে তারা জানিয়েছিল যে, অ্যাভেঞ্জার্স প্রতিটি সপ্তাহে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ সরঞ্জাম ব্যবহার করে ১২ হাজার রুশ সামরিক টুল চিহ্নিত করে।

হাজার হাজার ড্রোন ইতিমধ্যেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সিস্টেম ব্যবহার করে পাইলট ছাড়াই লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাচ্ছে এবং ইউক্রেন তার অঞ্চলের মাইন অপসারণে সাহায্য করার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।

ইউক্রেনের কোম্পানিগুলো ড্রোনের ঝাঁক তৈরি করছে। এখন একটি কম্পিউটার সিস্টেম একসঙ্গে বহু ড্রোনের একটি দলকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবে এবং তাদের জন্য কমান্ড পাঠাতে পারবে।

রাশিয়াও যুদ্ধক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার করেছে। বিশেষ করে লক্ষ্য শনাক্তকরণের জন্য লানসেট স্ট্রাইক ড্রোন ব্যবহার করেছে, যা ইউক্রেনের অস্ত্রবাহী যানবাহনকে ধ্বংস করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত