Ajker Patrika

নিরাপত্তার কারণে সরকারি ডিভাইসে ডিপসিক নিষিদ্ধ করল অস্ট্রেলিয়া

অনলাইন ডেস্ক
অস্ট্রেলিয়ার মোবাইল ডিভাইসগুলোতে ডিপসিক পণ্য, অ্যাপ্লিকেশন এবং ওয়েব সেবা ব্যবহার বা ইনস্টলেশন করা যাবে না। ছবি: সংগৃহীত
অস্ট্রেলিয়ার মোবাইল ডিভাইসগুলোতে ডিপসিক পণ্য, অ্যাপ্লিকেশন এবং ওয়েব সেবা ব্যবহার বা ইনস্টলেশন করা যাবে না। ছবি: সংগৃহীত

চীনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) স্টার্টআপ ডিপসিকের নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে অস্ট্রেলিয়া সব সরকারি ডিভাইস এবং সিস্টেমে ডিপসিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পরামর্শে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় নিরাপত্তার কারণে সব সরকারি সিস্টেম এবং ডিভাইস থেকে এই প্রোগ্রাম নিষিদ্ধ করার একটি নির্দেশে স্বাক্ষর করেছেন অস্টেলিয়ার স্বরাষ্ট্রসচিব। অস্ট্রেলিয়ার সতর্কতা নীতিতে বলা হয়, চীনা এআই চ্যাট অ্যাপটি বিস্তৃত পরিসরে ডেটা সংগ্রহ করে এবং সেই ডেটা বিদেশি সরকারের হাতে যেতে পারে।

অধিকাংশ সরকারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার সরকারি সিস্টেম এবং মোবাইল ডিভাইসগুলোতে ডিপসিক পণ্য, অ্যাপ্লিকেশন এবং ওয়েব সেবা ব্যবহার বা ইনস্টলেশন করতে পারবে না।

শুধু জাতীয় নিরাপত্তা বা নিয়ন্ত্রণ কাজের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলোকে ডিপসিকের পণ্যগুলো ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে এটি ব্যবহারের জন্য তাদেরও বিশেষ অনুমতির প্রয়োজন।

এই সিদ্ধান্ত ডিপসিকের সঙ্গে সম্পর্কিত পরিচিত সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য নেওয়া হয়েছে। যেমন ব্যবহারকারীদের কি-বোর্ডের তথ্য সংগ্রহ করা এবং দুর্বল সিকিউরিটি ব্যবস্থা। এর ফলে চ্যাট ইতিহাস ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাঁস হয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে চীন সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা আইন ও গুপ্তচরবৃত্তি আইনও গুরুত্বপূর্ণ। এই আইনে বলা হয়, চীনা কোম্পানিগুলোকে প্রয়োজন পড়লে বেইজিংয়ের সঙ্গে তথ্য শেয়ার করতে হতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ তাইওয়ান এবং ইতালির সরকারও এই সেবা সব ব্যবহারকারীর জন্য নিষিদ্ধ করেছে।

২০২১ সালের অনলাইন সেফটি অ্যাক্টের পর্যালোচনায় অস্ট্রেলিয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর কঠোর সমালোচনা করেছে। কারণ, আইনটি সঠিকভাবে কার্যকর হচ্ছে না। পর্যালোচনায় জানা যায়, আইনটি অস্ট্রেলিয়ার মানুষদের অনলাইনে যে ধরনের হুমকির মুখোমুখি হচ্ছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারেনি।

পর্যালোচনার নথিতে বলা হয়, বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার সরকার অনলাইনে ক্ষতিকর বিষয়গুলো সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করছে। এ জন্য কিছু নিয়ম তৈরি করেছে, যেমন ‘বেসিক অনলাইন সেফটি এক্সপেক্টেশন’ (যা বাধ্যতামূলক নয়) এবং ‘কোড ও স্ট্যান্ডার্ড’ (যা কিছু ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক)। এগুলো অনেক ক্ষেত্রে সাহায্য করলেও এগুলোর মাধ্যমে বড় ও জটিল অনলাইন সমস্যাগুলো মোকাবিলা করা যাচ্ছে না।

মেটার সাম্প্রতিক সেক্সটর্শন মোকাবিলার প্রচেষ্টার বিষয়ে পর্যালোচনায় মন্তব্য করা হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবহারকারীরা নিজেদের আপত্তিকর ছবি শেয়ার করার পর তাদের সেই ছবি জনসমক্ষে প্রকাশ করার হুমকি দিয়ে অর্থ দাবি করা হয়।

পর্যালোচনায় অভিযোগ করা হয়, উত্তেজনাপূর্ণ কনটেন্ট মানুষকে বেশি সময় তাদের সাইটে রাখে। তাই কনটেন্ট সঠিকভাবে মডারেট বা যাচাই বাছাই করে না কোম্পানিগুলো।

বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার অনলাইন সেফটি অ্যাক্ট আইন নিয়ে সমালোচিত হচ্ছে। কারণ, এতে ছোট পরিমাণে জরিমানা রাখা হয়েছে। তাই সুপারিশ করা হচ্ছে যে জরিমানা বাড়িয়ে বৈশ্বিক আয়ের ৫ শতাংশ বা ৫০ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার (৩১ মিলিয়ন ডলার) করা হোক। এটি ৬৭টি সুপারিশের মধ্যে একটি।

এ ছাড়া সুপারিশগুলো মধ্যে রয়েছে—এমন অ্যাপগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া, যেগুলো ব্যবহারকারীর আসল ছবি নগ্ন করে (অশালীন করে) প্রকাশ, অস্বাস্থ্যকর খাওয়ার অভ্যাসের প্রচার করে। এ ছাড়া আত্মহত্যা ও মাদক ব্যবহার-সম্পর্কিত কনটেন্টের ওপর আরও নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিও এই সুপারিশে রয়েছে।

তথ্যসূত্র: দ্য রেজিস্টার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত