Ajker Patrika

নিজেই নিজের ব্যাটারি বদলাতে পারে চীনা মানবাকৃতির রোবট

অনলাইন ডেস্ক
রোবটটি নিজে থেকেই একটি চার্জিং স্টেশনে পৌঁছে যায় এবং ব্যাটারি পাল্টায়।  ছবি: ইউবিটেক রোবোটিকস
রোবটটি নিজে থেকেই একটি চার্জিং স্টেশনে পৌঁছে যায় এবং ব্যাটারি পাল্টায়। ছবি: ইউবিটেক রোবোটিকস

বিশ্বজুড়ে নানা ধরনের অদ্ভুত ও অভিনব হিউম্যানয়েড বা মানবাকৃতি রোবট দেখা গেলেও সম্প্রতি চীনের তৈরি এক রোবট বিশেষভাবে নজর কেড়েছে। এটি নিজেই নিজের ব্যাটারি পাল্টাতে পারে—ফলে এটি সপ্তাহের সাত দিন, দিন-রাত চব্বিশ ঘণ্টা কাজ করতে সক্ষম।

‘ওয়াকার এস২’ নামের এই রোবট তৈরি করেছে চীনের কোম্পানি ইউবিটেক। রোবটটির উচ্চতা ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি (১৬২ সেন্টিমিটার) এবং ওজন ৯৫ পাউন্ড (৪৩ কেজি), যা একজন ছোটখাটো প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মতোই। রোবটটির মুখে একটি ফুল কালার ডিসপ্লে রয়েছে, যেখানে কাজের অবস্থা সম্পর্কিত তথ্য দেখানো যায়, যাতে রোবটের পাশে থাকা মানবকর্মীরা সেটি সহজেই বুঝতে পারেন।

রোবটটি ৪৮ ভোল্টের লিথিয়াম ব্যাটারির একটি ডুয়েল ব্যাটারি সিস্টেম ব্যবহার করে। একটানা হাঁটলে এটি দুই ঘণ্টা এবং দাঁড়িয়ে থাকলে চার ঘণ্টা কাজ করতে পারে। ব্যাটারি একবার সম্পূর্ণ শেষ হলে সেটি চার্জ হতে প্রায় ৯০ মিনিট সময় লাগে।

এই রোবটের সবচেয়ে আলোচিত বৈশিষ্ট্য হলো—এটি নিজেই ব্যাটারি বদলাতে পারে, যা ইউবিটেকের দাবি অনুযায়ী, বিশ্বে প্রথমবারের মতো করা হয়েছে।

গত ১৭ জুলাই ইউটিউবে প্রকাশিত এক প্রচারণামূলক ভিডিওতে দেখা যায়, রোবটটি নিজে থেকেই একটি চার্জিং স্টেশনে পৌঁছে যায় এবং ব্যাটারি পাল্টায়। ব্যাটারির পেছনের অংশটি খুলে সেটিকে চার্জিং ইউনিটে রেখে দেয় এবং একটি নতুন চার্জ করা ব্যাটারি নিজেই তুলে নিয়ে সেটি স্থাপন করে।

রোবটটি বুঝতে পারে, তার ব্যাটারির চার্জ কতটুকু বাকি আছে এবং সেটি কোন ব্যাটারিটি বদলাবে বা চার্জ দেবে, তা নির্ধারণ করে নিজে থেকেই—এই সিদ্ধান্ত রোবটটি নেয় তার কাজের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে।

ওয়াকার এস২-এর ২০টি ‘ডিগ্রি অব ফ্রিডম’ (অর্থাৎ, এর জয়েন্ট বা অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো যেভাবে ও যতভাবে নড়াচড়া করতে পারে) রয়েছে। এর সঙ্গে ওয়াইফাই ও ব্লুটুথ সংযোগের ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে এটি সহজেই বিভিন্ন প্রযুক্তির সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারে।

ওয়াকার এস২-এর মাথায় বসানো ভিশন ক্যামেরা ব্যাটারির চার্জ পর্যবেক্ষণ করে। চার্জ থাকা ব্যাটারির পাশে থাকা সবুজ আলো শনাক্ত করে, রোবট বুঝতে পারে কোন ব্যাটারিটি সম্পূর্ণ চার্জড। এ ছাড়া এটি কাজের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারে—এখন ব্যাটারি বদলানো জরুরি, নাকি চলমান কাজটি শেষ করাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

রোবটটি মূলত কারখানা, শোরুম বা জনসমাগমপূর্ণ স্থানে গ্রাহককে স্বাগত জানানোর মতো কাজ করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোবটটি ভবিষ্যতের স্বয়ংক্রিয় কাজের ক্ষেত্রে বড় একটি পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স ও নিউ অ্যাটল্যাস

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত