Ajker Patrika

চীনে চিপ রপ্তানিতে মার্কিন বিধিনিষেধ, এনভিডিয়ার খরচ বাড়বে ৫.৫ বিলিয়ন ডলার

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১: ২৭
এনভিডিয়ার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চিপগুলো দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের মূল লক্ষ্য হয়ে উঠেছে। ছবি: এআই ব্রিলিয়ান্স
এনভিডিয়ার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চিপগুলো দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের মূল লক্ষ্য হয়ে উঠেছে। ছবি: এআই ব্রিলিয়ান্স

চীনে সর্বাধুনিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চিপ এইচ২০ রপ্তানিতে মার্কিন বিধিনিষেধের কারণে প্রায় ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বা ৫৫০ কোটি ডলার বাড়বে এনভিডিয়ার। গতকাল মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে কোম্পানিটি।

এইচ২০ চিপটি চীনের বাজারে রপ্তানি করা এনভিডিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী এআই চিপ। টেনসেন্ট, আলিবাবা ও টিকটকের মূল প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের মতো প্রযুক্তি জায়ান্টের কাছে এটির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

তবে মার্কিন বাণিজ্য দপ্তরের নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, এই চিপ চীনে রপ্তানির জন্য এখন থেকে লাইসেন্স প্রয়োজন হবে এবং অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত এই নিয়ম কার্যকর থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

এনভিডিয়ার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চিপগুলো দীর্ঘদিন ধরেই মার্কিন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের মূল লক্ষ্য হয়ে উঠেছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা চাচ্ছেন, সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তির চিপগুলো যেন চীনের কাছে বিক্রি করা না হয়, যাতে এআই প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে থাকতে পারে। এই নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা চালুর পর, এনভিডিয়া এমন চিপ ডিজাইন করতে শুরু করেছে, যেগুলো কাছাকাছি মানের, তবে বিধিনিষেধের সীমা অতিক্রম করে না।

এই খবরে গতকাল শেয়ারবাজারে দিন শেষে এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম প্রায় ৬ শতাংশ কমে যায়।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের এক মুখপাত্র জানান, এনভিডিয়ার এইচ২০, এএমডির এমআই ৩০৮ এবং এদের সমমানের অন্যান্য চিপ রপ্তানির জন্য নতুন লাইসেন্স প্রক্রিয়া চালু করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘জাতীয় ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা রক্ষায় প্রেসিডেন্টের নির্দেশনা অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে বাণিজ্য বিভাগ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ দেখভাল করে এই বিভাগই।

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি এএমডি। তবে গতকাল এএমডির শেয়ার ৭ শতাংশ কমে যায়।

চীনের বাজারে এনভিডিয়ার সবচেয়ে উন্নত চিপ হলো এইচ২০। দ্রুত বর্ধনশীল এআই শিল্পে চীনকে এগিয়ে রাখতে এই চিপ দারুণভাবে সহায়তা করছে।

গত ফেব্রুয়ারিতে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছিল, টেনসেন্ট, আলিবাবা ও টিকটকের মূল প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের মতো চীনা প্রযুক্তি জায়ান্টগুলো এইচ২০ চিপের ক্রয়াদেশ ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দেয়। এর কারণ হলো—স্টার্টআপ কোম্পানি ডিপসিকের স্বল্পমূল্যের এআই মডেলের ব্যাপক চাহিদা।

যদিও এইচ২০ চিপটি চীনের বাইরে বিক্রি হওয়া এনভিডিয়ার অন্যান্য চিপের মতো অতোটা শক্তিশালী নয়, তবে ইনফারেন্স ধাপে (যেখানে এআই মডেল ব্যবহারকারীর প্রশ্নের উত্তর দেয়) এইচ২০ চিপটি অনেক ক্ষেত্রেই অন্যান্য চিপের সঙ্গে সফলভাবে প্রতিযোগিতা করতে পারে।

বর্তমানে বাজারে ইনফারেন্স এআই চিপের হিস্যা বাড়ছে এবং গত মাসে এনভিডিয়ার প্রধান নির্বাহী জেনসেন হুয়াং বলেন, এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলাতে এনভিডিয়া দারুণভাবে প্রস্তুত এবং শীর্ষস্থান ধরার মতো সক্ষমতা তার রয়েছে।

তবে মঙ্গলবার এনভিডিয়া জানায়, এইচ২০ চিপ সুপারকম্পিউটারে ব্যবহার হতে পারে এমন আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্র সরকার চীনে এই চিপ রপ্তানিতে বিধিনিষেধ জারি করেছে।

এইচ২০–এর কম্পিউটিং সক্ষমতা এনভিডিয়ার অন্যান্য চিপের তুলনায় কম হলেও উচ্চগতির মেমোরি চিপ ও অন্যান্য কম্পিউটিং ইউনিটের সঙ্গে সহজেই যুক্ত করা যায়। ফলে এটি সুপারকম্পিউটার তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক অরাজনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ইনস্টিটিউট ফর প্রোগ্রেস’ এইচ২০ চিপের ওপর বিধিনিষেধের পক্ষে মত দিয়ে জানায়, চীনা কোম্পানিগুলো সম্ভবত এরই মধ্যে এমন সুপারকম্পিউটার তৈরি করেছে।

গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি লিখেছে, টেনসেন্ট ইতিমধ্যে এইচ২০ চিপ এমন একটি সিস্টেমে ইনস্টল করেছে, যা বড় আকারের এআই মডেল প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি সম্ভবত সুপারকম্পিউটার ব্যবহারের ওপর বিদ্যমান নিয়ন্ত্রণের লঙ্ঘন।

একইভাবে ডিপসিকের ভি৩ মডেল প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে ডিপসিকের সুপারকম্পিউটার, যা সম্ভবত একই ধরনের বিধিনিষেধের লঙ্ঘন করছে।

গত ৯ এপ্রিল এনভিডিয়াকে মার্কিন সরকার জানায়, এইচ২০ চিপ চীনে রপ্তানির জন্য লাইসেন্সের প্রয়োজন হবে এবং ১৪ এপ্রিল তাদের জানানো হয় যে, এই নিয়ম অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

এর আগে গত সোমবার এনভিডিয়া জানায়, আগামী চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ৫০০ বিলিয়ন ডলারের এআই সার্ভার স্থাপন করার পরিকল্পনা করছে কোম্পানিটি। এই সার্ভার তৈরিতে সহযোগী হিসেবে থাকবে তাইওয়ান ভিত্তিক বৃহত্তম চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টিএসএমসির মতো অংশীদার। ট্রাম্প প্রশাসনের স্থানীয় উৎপাদন বৃদ্ধির প্রচেষ্টার সঙ্গে মিল রেখে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সংখ্যালঘু ইস্যুতে বাংলাদেশের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল দিল্লি

‘ক্রিকেটাররা আমাকে ন্যুড পাঠাত’, বিস্ফোরক ভারতের সাবেক কোচের সন্তান

‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ ব্যানারে বিমানবন্দর এলাকায় আ.লীগের মিছিল

পরপর সংঘর্ষে উড়ে গেল বাসের ছাদ, যাত্রীসহ ৫ কিমি নিয়ে গেলেন চালক

ইটনায় এবার ডিলার নিয়োগে ঘুষ চাওয়ার কল রেকর্ড ফাঁস

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত