Ajker Patrika

আকাশে উড়বে, জলেও ভাসবে এই ‘হাইব্রিড ড্রোন’

অনলাইন ডেস্ক
কিছু সময় পানির নিচে চলাচল করে আবার হুট করে ওপরে উঠে আকাশে উড়ে যায়। ছবি: সংগৃহীত
কিছু সময় পানির নিচে চলাচল করে আবার হুট করে ওপরে উঠে আকাশে উড়ে যায়। ছবি: সংগৃহীত

আকাশে এবং পানির নিচে ডুবে চলাফেরা করতে পারবে এমন একটি ‘হাইব্রিড ড্রোন’ তৈরি করেছেন ডেনমার্কের আলবরগ ইউনিভার্সিটির কিছু শিক্ষার্থী। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা গেছে, ড্রোনটি বড় একটি পুলের পাশে থেকে উড়ে উঠে সোজা পানির নিচে ডুব দেয়। কিছু সময় পানির নিচে চলাচল করে আবার হুট করে ওপরে উঠে আকাশে উড়ে যায়। ভিডিওতে একাধিক আঙ্গিক থেকে এই অভিনব প্রযুক্তির কার্যকারিতা তুলে ধরা হয়েছে।

এই অভিনব ড্রোন তৈরি করেছেন চার শিক্ষার্থী—আন্দ্রে কোপাচি, পাওয়েল কোয়ালচাইক, ক্রিস্টফ সিয়েরক্কি এবং মিকোলাজ জিগালো। তাঁরা সবাই আলবরগ ইউনিভার্সিটিতে অ্যাপ্লায়েড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইলেকট্রনিকস বিষয়ে পড়াশোনা করছেন। ড্রোনটি তাঁদের ব্যাচেলর থিসিস প্রকল্পের অংশ।

বিশ্বে এটিই প্রথম এয়ার-টু-ওয়াটার ড্রোন নয়, এর আগে ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাটগার্স ইউনিভার্সিটি ও ২০২৩ সালে চীনের বিজ্ঞানীরা এ ধরনের হাইব্রিড ড্রোন তৈরি করেছিলেন। তবে ডেনিশ শিক্ষার্থীদের তৈরি এই নতুন ড্রোন বিশেষভাবে আলোচিত হচ্ছে এর উন্নত প্রযুক্তির কারণে।

ড্রোনটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো ‘ভ্যারিয়েবল পিচ প্রোপেলার’। এই প্রোপেলার সিস্টেমে ব্লেডের কোণ পরিবর্তন করা যায়, যা বাতাস ও পানির পরিবেশ অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে মানিয়ে নিতে সক্ষম। উড্ডয়নের সময় প্রোপেলারের পিচ বেশি থাকে, যাতে বাতাসে চাপ বাড়ানো যায়, আর পানির নিচে এটির পিচ কমিয়ে ড্র্যাগ কমানো হয় এবং দক্ষতা বাড়ানো হয়।

ড্রোনটি নির্মাণে ৩ডি প্রিন্টার ও কম্পিউটার নিউমেরিক্যাল কন্ট্রোল (সিএনসি) মেশিন ব্যবহার করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা নিজেরাই সফটওয়্যার প্রোগ্রামিং করেছেন ড্রোনটি নিয়ন্ত্রণের জন্য। পুরো প্রকল্পটি দুই সেমিস্টার ধরে সম্পন্ন করেছেন তাঁরা।

প্রকল্প তত্ত্বাবধায়ক আলবরগ ইউনিভার্সিটির ‘অফশোর ড্রোনস অ্যান্ড রোবটস’ গবেষণা দলের প্রধান অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পেতার দুরদেভিচ।

ড্রোনটি পানির নিচে চলাফেরা করতে পারছে শুধু তাই নয়, নেগেটিভ থ্রাস্ট বাব বিপরীতমুখী ধাক্কা সৃষ্টির মাধ্যমে নিচে আরও কার্যকরভাবে ঘোরাফেরা করতে পারছে, যা নিয়ন্ত্রণ ও চালনায় বাড়তি সুবিধা দিচ্ছে।

এক যৌথ ইমেইলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ‘একই যানকে আকাশ ও পানির দুই জগতে কার্যকরভাবে পরিচালিত করা বড় একটি অগ্রগতি। ভ্যারিয়েবল পিচ প্রোপেলারের ব্যবহারই এ সফলতার মূল চাবিকাঠি।’

এটি আপাতত একটি প্রোটোটাইপ হলেও ভবিষ্যতে এর বাস্তব প্রয়োগ সম্ভাবনা অনেক। ড্রোনটি উদ্ধার অভিযান, সামরিক প্রয়োজনে, জাহাজ পরিদর্শন এবং সমুদ্র অনুসন্ধানসহ বহু ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা।

তথ্যসূত্র: লাইভ সায়েন্স

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত