Ajker Patrika

সিঙ্গাপুরকে ৮-০ গোলের মালা পরাল বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৮: ০৯
Thumbnail image

একবার তহুরা খাতুন, আরেকবার ঋতুপর্ণা চাকমা; সিঙ্গাপুর গোলরক্ষক লিন বিন বিয়াট্রিসকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখল বাংলাদেশের আক্রমণভাগ। শট ঠেকাতে ঠেকাতে হালই ছেড়ে দিলেন সিঙ্গাপুরের গোলরক্ষক। প্রতিপক্ষকে চেপে ধরে গোল উৎসব করল বাংলাদেশের নারী ফুটবল দল। বিতর্কে ভরা ২০২৩ সাল শেষ হলো বিশাল এক জয় দিয়ে। 

গত বছরের জুনে কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে র‍্যাঙ্কিংয়ে ৬১ ধাপ এগিয়ে থাকা মালয়েশিয়াকে ৬ গোল দিয়েছিল বাংলাদেশ। একই মাঠে ১২ ধাপ এগিয়ে থাকা সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে সাবিনা খাতুনরা চেষ্টা করলেন সেই সংখ্যাটা বাড়ানোর। দলীয় চেষ্টায় সংখ্যাটা অবশেষে বাড়ল। বাংলাদেশ থেকে ৮-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে দেশে ফেরার পথে সিঙ্গাপুর। 

সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে আগের ম্যাচে জোড়া গোল করেছিলেন তহুরা, জোড়া গোল করলেন আজকেও। হ্যাটট্রিকও পেতে পারতেন। কিন্তু অফসাইডে গোল বাতিল হওয়ায় সেটি সম্ভব হয়নি। ম্যাচে জোড়া গোল পেয়েছেন ঋতুপর্ণাও। একটি করে গোল অধিনায়ক সাবিনা, সানজিদা আক্তার, মাতসুশিমা সুমাইয়া ও শামসুন্নাহার জুনিয়রের। 

২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রীতি ম্যাচে প্রথম সিঙ্গাপুরের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। জালান বেসার স্টেডিয়ামে সেই ম্যাচে ৩-০ গোলে হেরেছিলেন বাংলাদেশের মেয়েরা। সেই হারের শোধ বাংলাদেশ নিল দুই ম্যাচে ১১ গোল দিয়ে। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে গত শুক্রবার প্রথম ম্যাচে ৩-০ গোলে দারুণ জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ।

গোলপোস্টে শট নিচ্ছেন তহুরা।আজ ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা মেলা বাংলাদেশ। অধিনায়ক সাবিনার জোরালো শট গোলরক্ষক ফেরালেও গ্লাভসে জমাতে পারেননি; সামনে থাকা তহুরার ফিরতি শট ক্রসবারে লেগে প্রতিহত হয়। একটু পর সাবিনার শট উড়ে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে। ১১ মিনিটে নষ্ট হয় আরেকটি ভালো সুযোগ। সাবিনার ক্রসে দূরের পোস্টে থাকা তহুরা পজিশন মতো না থাকায় টোকা দিতে পারেননি। তবে এই ফরোয়ার্ডের গোলেই ১৬ মিনিটে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।
 
সাবিনার ফ্রি কিকে আফিদার হেড পাসের পর বুটের টোকায় তুলে দেন মাসুরা পারভীন, হেডেই জাল খুঁজে নেন তহুরা। এই গোলের রেশ থাকতেই ব্যবধান দ্বিগুণ করে নেয় বাংলাদেশ। ১৮ মিনিটে সাবিনার কর্নার বক্সের জটলার ভেতর থেকে আলতো টোকায় জাল খুঁজে নেন ঋতুপর্ণা। 

২৪ মিনিটের গোলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ মুঠোয় নেয় বাংলাদেশ। ঋতুপর্ণার শট গোলরক্ষকের গ্লাভস গলে বেরিয়ে যায়, সুযোগসন্ধানী তহুরা দ্রুত টোকায় স্কোরলাইন ৩-০ করেন। একটু পর ঋতুপর্ণার ক্রসে অনেকটা লাফিয়ে তহুরা পা ছোঁয়ালেও বল যায় বাইরে।

৫৭ মিনিটে হ্যাটট্রিকটা পেয়েই যাচ্ছিলেন তহুরা। ঋতুপর্ণার পাস ধরে পোস্টে শট নেন তিনি, বল সিঙ্গাপুর গোলরক্ষকের গায়ে লেগে গিয়ে পড়ে সানজিদার পায়ে। কিছুক্ষণ আগেই অফসাইডের কারণে গোলবঞ্চিত হয়েছিলেন, কিন্তু এবার সুযোগ হাতছাড়া হয়নি সানজিদার। তাঁকে গোল বানিয়ে দেওয়া ঋতুপর্ণা পাঁচ মিনিট পর তুলে নেন নিজের দ্বিতীয় গোল। বক্সের বাইরে থেকে মনিকা চাকমার পাস ধরে বক্সে একাই ঢুকে পড়েন ঋতু, নেন জোরালো এক শট। সিঙ্গাপুর গোলরক্ষকের দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না সেই শটে।
 
তহুরা নিজের কাঙ্ক্ষিত হ্যাটট্রিক ৭০ মিনিট পেলেন, কিন্তু উল্লাস করা হয়নি। ঋতুপর্ণার পাস ধরে বল জড়াতেই দেখলেন অফসাইডের পতাকা তুলে বসে আছেন সহকারী রেফারি!

আগের ম্যাচেও তহুরার হ্যাটট্রিক পাওয়া হয়নি। আজকেও। তাঁকে ৭৩ মিনিটে উঠিয়ে খেলার সুযোগ করে দেওয়া হয় শামসুন্নাহার জুনিয়রকে। সানজিদার পরিবর্তে মাঠে নামেন মাতসুশিমা সুমাইয়া। দুই মিনিট পরেই বদলি শামসুন্নাহারের ক্রস থেকে দলের ষষ্ঠ গোল করেন সাবিনা। 

৮৭ মিনিটে সিঙ্গাপুরকে সাত গোলের জ্বালা ধরিয়ে দেন সুমাইয়া। সাবিনার ফ্রি কিক থেকে আফিদা খন্দকারের মাথা ছুঁয়ে সিঙ্গাপুরের এক ডিফেন্ডারের মাথা ঘুরে বল পান সুমাইয়া। বল মাটিতে পড়ার আগেই দারুণ ভলিতে বল পাঠান জালে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত