Ajker Patrika

বিপিএলের উইকেট টি-টোয়েন্টির আদর্শ নয়

আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ৪১
Thumbnail image

প্রশ্ন: গত মৌসুমেও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের সঙ্গে কাজ করেছেন। আপনার কাজ বেশ প্রশংসিতও হয়েছিল। দ্বিতীয়বার চট্টগ্রামের সঙ্গে কাজ করতে এসে কেমন লাগছে? 
পল নিক্সন: আবার বাংলাদেশে আসতে পেরে দারুণ লাগছে। এখানে তরুণ ক্রিকেটারদের সঙ্গে কাজ করাটা উপভোগ করি। আরেকবার চট্টগ্রামের হয়ে কাজ করার সুযোগ পাওয়াটা দারুণ ব্যাপার।

প্রশ্ন: গত মৌসুমে আপনার কাজ প্রশংসিত হওয়ার পর বিসিবি আপনাকে নিয়ে চিন্তা করেছিল। গুঞ্জনও উঠছিল, আপনি বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচ হয়ে আসছেন। যদি কখনো এ রকম সুযোগ হয়, কতটা আগ্রহী? 
পল নিক্সন: আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সব ধরনের কোচিংই চ্যালেঞ্জিং। বর্তমানে আমি লেস্টারশায়ারের প্রধান কোচ হিসেবে আছি। দল হিসেবে আমরা যদি নিয়মিত জিতি এবং ধারাবাহিক উন্নতি করি, কে জানে, তখন হয়তো যেকোনো জায়গা থেকেই সুযোগ আসতে পারে।

প্রশ্ন: গতবার বিপিএল শেষেও কি যোগাযোগ ছিল খেলোয়াড়দের সঙ্গে? 
নিক্সন: চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সে আমার সঙ্গে কাজ করা কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। সম্ভবত নাসুমের (নাসুম আহমেদ) সঙ্গে আমার সবচেয়ে বেশি কথা হয়। একজন তরুণ বোলার হিসেবে সে দুর্দান্ত। 

প্রশ্ন: গত দুই বছরে নাসুম কতটা উন্নতি করেছে বলে মনে হয়? 
নিক্সন: নাসুম একজন বিশ্বমানের স্পিনার। তার লাইন-লেংথ এবং বলের ওপর নিয়ন্ত্রণ দারুণ। টার্ন এবং বাউন্সেও অসাধারণ। 

প্রশ্ন: এবারের চট্টগ্রাম দলটা তারুণ্যনির্ভর। তরুণদের নিয়ে দল গড়ার বিশেষ কোনো কারণ আছে? 
নিক্সন: এই তরুণেরা ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলে অবাক করে দিতে পারে। আমি এ রকম একটা দল পেয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত। ওদের সঙ্গে কাজ করতে উন্মুখ আছি। দেখা যাক, টুর্নামেন্টে আমরা কত দূর যেতে পারি। 

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অনুশীলনে আফিফ হোসেনের সঙ্গে পল নিক্সনপ্রশ্ন: এ রকম একটা দল গঠনে আপনার ভূমিকা আসলে কতটুকু ছিল? 
পল নিক্সন: স্থানীয় খেলোয়াড় বাছাইয়ের বেশির ভাগ প্রক্রিয়ায় টিম ম্যানেজমেন্ট জড়িত ছিল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে ওদের ভালো বোঝাপড়া। আমি কিছু বিদেশি খেলোয়াড়, বিশেষ করে কিছু ইংলিশ ক্রিকেটার দলে আনার ব্যাপারে কাজ করেছি।

প্রশ্ন: গতবার ভালো খেলেও চট্টগ্রাম কোয়ালিফায়ার থেকে বাদ পড়েছিল। এবার শিরোপা জয়ের ব্যাপারে কতটা আত্মবিশ্বাসী আপনি? 
নিক্সন: শিরোপা জিততে আমাদের ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং সব বিভাগ যেকোনো কঠিন মুহূর্তে নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিতে পারে। অন্য সব দলের মতো আমরাও শিরোপা জিততে চাই। 

প্রশ্ন: বেশির ভাগ সময় টুর্নামেন্টের আগমুহূর্তে এসে কোচ-খেলোয়াড়েরা এক জায়গায় হন। ভালো প্রস্তুতি নিতে সমস্যা হয় না? 
নিক্সন: টুর্নামেন্টের ব্যাপারে দলগুলোকে একেবারে শেষ মুহূর্তে জানানো হয়েছে। সময় ঠিক করা নিয়ে সবাইকে একপ্রকার যুদ্ধে নেমে যেতে হয়েছে। দলের জার্সি থেকে পৃষ্ঠপোষকদের সঙ্গে চুক্তি—সব ঠিকঠাক চালিয়ে নেওয়ার চাপটা ভয়ংকর মনে হচ্ছে। তবে এখন আমরা আমাদের সেরাটা দিতে চাই। কিন্তু সময় নিয়ে করলে সব ঠিকঠাক এগিয়ে নেওয়া যায়। আরও বেশি সময় পেলে বিপিএলে যে ভুলগুলো হয়, সেগুলো শুধরে নেওয়া যেত। 

প্রশ্ন: আইপিএলে এবং বিশ্বের অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ থেকে খেলোয়াড় উঠে আসার যে ব্যাপারটা লক্ষ করা যায়, সেখানে অনেকটাই পিছিয়ে বিপিএল। এটার পেছনে মূল কারণ কোনটি মনে করেন? 
নিক্সন: অন্যান্য লিগ থেকে কতসংখ্যক খেলোয়াড় জাতীয় দলে উঠে আসে, আমি আসলে নিশ্চিত নই। এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আমার জন্য কঠিন। তবে যেটা বললাম, সময় নিয়ে আরেকটু গুছিয়ে টুর্নামেন্ট করা গেলে অবশ্যই বাংলাদেশ এখান থেকে উপকৃত হবে বলে বিশ্বাস করি। 

প্রশ্ন: বিপিএলের উইকেট নিয়ে সব সময় একটা সমালোচনা হয়। এটা টি-টোয়েন্টির জন্য কতটা আদর্শ বলে করেন?
নিক্সন: এটা (উইকেট) আসলেই টি-টোয়েন্টির আদর্শ নয়। এখানে বোর্ডের নজর এবং একই সঙ্গে বিনিয়োগের বিষয় রয়েছে। উইকেটের জন্য বিনিয়োগ যেমন—হাইব্রিড পিচ। আগের উইকেটের সঙ্গে পাঁচ শতাংশ কৃত্রিমের মিশ্রণ, এটা কয়েক সপ্তাহ থাকবে। সে ক্ষেত্রে ব্যাটে-বলে দারুণ কিছু দেখার আশা করা যায়। ফলে পরবর্তী প্রজন্মের খেলোয়াড়েরা বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে নিজের ওপর বিশ্বাস রেখে খেলার সাহস পাবে।

প্রশ্ন: টি-টোয়েন্টিটা বাংলাদেশ এখনো ঠিক আত্মস্থ করতে পারেনি। পাওয়ার হিটিংয়ে দুর্বলতা আছে। এটার পেছনে কী কারণ মনে হয়? 
নিক্সন: পিচ, কন্ডিশন, সামর্থ্য অনেক কিছুই এখানে জড়িত। পাওয়ার হিটিং আয়ত্ত করতে পুষ্টিকর খাবার ও ১১ বছর বয়স থেকে প্রতিটি স্তরে পাওয়ার হিটিং শেখার জন্য আলাদা করে সময় দেওয়া উচিত।

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অনুশীলনে ক্যারিবিয়ান কেনার লুইসের সঙ্গে পল নিক্সনপ্রশ্ন: কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ—পাওয়ার হিটিং নাকি স্কিল হিটিং? 
পল নিক্সন: দুইটার সমন্বয়। 

প্রশ্ন: এবার আপনার ক্যারিয়ারের নিয়ে স্মৃতিচারণ করা যাক। প্রায় ২৩ বছরের ক্যারিয়ার আপনার। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারও বেশ সমৃদ্ধিশালী। কিন্তু কখনো দেশের হয়ে টেস্ট খেলার সুযোগ হয়নি। কতটা আক্ষেপ কাজ করে? 
পল নিক্সন: ক্যারিয়ারের শুরুতে কেউ যদি আমাকে বলত, ইংল্যান্ডের জার্সিতে ২০ বার (১৯ ওয়ানডে আর একটি টি-টোয়েন্টি) মাঠে নামার সুযোগ পাব, তারপর পাকিস্তান সফর করব, শ্রীলঙ্কা সফর করব, অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলব এবং একটি বিশ্বকাপ (২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ) খেলার সুযোগ পাব, আমি দুহাত পুরে নিতাম।

প্রশ্ন: ২০ ম্যাচের একটি ২০০৭ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছিলেন। যেটাতে ইংল্যান্ডের বিপর্যয়ের মুখে পল কলিংউডের সঙ্গে অপরাজিত জুটিতে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন। ম্যাচটা মনে আছে? 
নিক্সন: আমার মনে আছে বার্বাডোজের ব্যবহৃত উইকেটেও বাংলাদেশ স্পিনাররা দারুণ টার্ন পাচ্ছিল। সাকিব বোলিংয়ে এসে লেংথ মিস করে ফুলার লেংথে বল করল, আমি ওর মাথার ওপর দিয়ে ছক্কা মারলাম। বন্ধু হিসেবে সাকিবকে সব সময় এভাবেই মনে করি (হাসি)।

প্রশ্ন: জ্যাক রাসেল, বিশেষ করে অ্যালেক স্টুয়ার্ট এবং পরে ম্যাট প্রায়র থাকায় জাতীয় দলে নিয়মিত খেলা আপনার জন্য কঠিন ছিল। কখনো কি মনে হয়, ভুল সময়ে জন্মেছিলেন? 
নিক্সন: যাদের কথা বললেন সবাই নিজেদের জায়গা থেকে যোগ্য ছিল বলেই আমার থেকে এগিয়ে ছিল। আমি কখনো ব্যাপারটা ওভাবে দেখিনি। ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে জড়াতে পেরেই আমি গর্বিত। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঋণের ১৩০০ কোটির এক টাকাও দেননি হলিডে ইনের মালিক

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

গণ–সমাবেশে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিলেন বিএনপি নেতা

হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যু, সেনা ক্যাম্প কমান্ডারকে প্রত্যাহার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত