Ajker Patrika

মুখোমুখি বিসিবির ম্যাচ রেফারিরা, উত্তপ্ত ক্রিকেট বোর্ডের আম্পায়ারিং বিভাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৭: ০৮
উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বিসিবির আম্পায়ার্স বিভাগ
উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বিসিবির আম্পায়ার্স বিভাগ

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আম্পায়ারিং বিভাগে বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা। গত ১৯ এপ্রিল বিসিবির আম্পায়ার্স বিভাগে আয়োজিত এক অভ্যন্তরীণ সভায় ম্যাচ রেফারি দেবব্রত পলের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ানো নিয়ে ম্যাচ অফিশিয়ালরা দুটো গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে।

বৈঠকের পরপরই একটি পক্ষ বিসিবির প্রধান, নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও), আম্পায়ার্স ও ম্যাচ অফিশিয়াল বিভাগের চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেন। যেখানে স্বাক্ষর ছিল সাত ম্যাচ রেফারির।

চিঠিতে ম্যাচ রেফারিরা উল্লেখ করেন দেবব্রত পালের সাম্প্রতিক আচরণ তাঁদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে। বৈঠকে দেবব্রতের কথাবার্তা ‘অত্যন্ত আক্রমণাত্মক’, যা প্রায় শারীরিক সংঘর্ষের পর্যায়ে চলে যাচ্ছিল। ভবিষ্যতে দেবব্রতের সঙ্গে কোনো অফিশিয়াল আলোচনায় অংশ নিতে তাঁরা অনাগ্রহী বলেও চিঠিতে স্পষ্ট জানান।

যাঁর বিরুদ্ধে সাত ম্যাচ রেফারির স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র জমা পড়েছে, সেই দেবব্রত পাল আজ দুপুরে বিসিবির মিডিয়া ভবনে পাল্টা অবস্থান তুলে ধরেন সাংবাদিকদের সামনে। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে পুরো ঘটনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেন।

দেবব্রত বলেন, ‘আমি সব সময় সত্য বলেছি, অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করেছি। সেই কারণে আজ আমি তাদের টার্গেটে পরিণত হয়েছি। আমার বিরুদ্ধে এখন রাজনৈতিক ট্যাগ লাগিয়ে মিডিয়ায় ট্রায়াল চালানো হচ্ছে। আমি ৫ আগস্টের আন্দোলনের আগ থেকেই বিসিবির নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। গত ১৭ বছর যারা সুবিধা নিয়েছে, এখন তারা দিশেহারা হয়ে নতুন ক্ষমতার কাছে নিজেকে উপস্থাপন করতে চাইছে। আমার বিরুদ্ধে গঠনমূলক নয়, বরং ব্যক্তিগত আক্রমণ চলছে।’

দেবব্রত আরও বলেন, ‘বৈঠকের পুরো অডিও রেকর্ড তার কাছে রয়েছে এবং তাতে প্রমাণ রয়েছে, তিনি নয়, বরং নিয়ামুর রশিদ রাহুলই প্রথমে গালিগালাজ শুরু করেন এবং তাঁর পরিবার সম্পর্কেও অশালীন মন্তব্য করেন। আমি শুধু বলেছিলাম যে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মতো ঘরোয়া ক্রিকেটেও অপরাধ অনুযায়ী কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা উচিত। এই কথা বলতেই রাহুল ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ও আমার চরিত্রে, এমনকি পরিবার নিয়েও বাজে কথা বলেছে। আমি এরই মধ্যে বিসিবি সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি চাই যারা সত্যিই নিয়ম ভঙ্গ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’

সম্প্রতি মোহামেডান অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়ের শাস্তি কমিয়ে আনার ঘটনায় অসন্তুষ্ট হয়ে আইসিসির এলিট প্যানেলের আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে সৈকত ঘরোয়া ম্যাচ পরিচালনা থেকে পদত্যাগের চিন্তা করছেন। অভিযোগ রয়েছে, এই সিদ্ধান্তে বিসিবির নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি এবং টেকনিক্যাল কমিটি বা ডিসিপ্লিনারি কমিটির মতামত উপেক্ষা করা হয়েছে।

এ ঘটনার পর থেকেই বিসিবির আম্পায়ারিং ও ম্যাচ অফিসিয়াল বিভাগে অস্থিরতা বেড়ে যায়। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এসব ঘটনায় বিসিবির অভ্যন্তরীণ নীতি, কর্তৃত্ব এবং স্বচ্ছতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত