Ajker Patrika

সাব্বিরের ফেসবুক লাইভ দরকার হতো না যদি…

লাইছ ত্বোহা, ঢাকা
সাব্বিরের ফেসবুক লাইভ দরকার হতো না যদি…

সকাল সব সময়ই দিনের সঠিক পূর্বাভাস দেয় না। এক সময়ে শুরু সাব্বির রহমান-মোহাম্মদ রিজওয়ানের উত্থান–পতন যেন এ প্রবাদের আরেকটি প্রামাণ্য চিত্র।

উজ্জ্বল সম্ভাবনা জাগিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটে আগমন সাব্বিরের। ক্যারিয়ারের শুরুতে তেজময় সে রশ্মি অল্পতেই নিভুনিভু। বছর তিনেক আগে দল থেকে বাদ পড়েছিলেন সাব্বির। গত আগস্টে এশিয়া কাপের আগে আবারও সুযোগ পেয়েছিলেন সাব্বির। কিন্তু এই ‘লাইফ লাইন’ হেলাফেলায় নষ্ট করলেন তিনি।

টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে এখন তাঁর থাকার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ায়। কিন্তু পতনের অতল গভীরে আছেন, প্রমাণ করে স্কোয়াড থেকেই বাদ সাব্বির। শুধু পারফরম্যান্সের কারণেই নয়, গত এক মাসে তিনি বারবার আলোচনায় এলেন অক্রিকেটীয় কারণেও। ‘ব্যাড বয়’ তকমা তাঁর গায়ে যেন স্থায়ীভাবে সেঁটে যাচ্ছে। গতকাল রাতে নিজেই ফেসবুকে এলেন। দলে থাকা-না থাকা নিজের অবস্থান পরিষ্কার করার চেষ্টা করলেন। কিন্তু এত কথা তাঁর বলতে হতো না যদি সঠিক পথে থাকতে পারতেন, মনোযোগটা শুধু ক্রিকেটে রাখতেন।

জাতীয় দলের দরজা আবার কখন সাব্বিরের জন্য উন্মুক্ত হবে–নিজেই যেন একটা বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ফাওয়াদ আলমরা ১০ বছর পরও ক্রিকেট সার্কিটে ফিরে আসার গল্প লিখেছেন। কিন্তু বাংলাদেশে সাব্বির–নাসির হোসেনরা এমন গল্প কমই লিখতে পারেন। কিংবা পারেনই না।

সাব্বির সর্বশেষ গত ৭ অক্টোবর নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের যে ম্যাচটা খেলেছেন পাকিস্তানের বিপক্ষে, ওই ম্যাচে প্রতিপক্ষ দলের অন্যতম সেরা পারফরমার রিজওয়ান যেন মনে করিয়ে দিলেন কীভাবে মেধা, পরিশ্রম, সততা আর শৃঙ্খলা থাকলে বাজে শুরুর পরও যাওয়া যায় বহু দূর।

 ২০১৫ সালের ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয়েছিল রিজওয়ানের। সে ম্যাচে দলের ৫ উইকেট পড়ার পরও ব্যাটিং করার সুযোগ পাননি তিনি। মিরপুরে ম্যাচটা বাংলাদেশের কাছে ৭ উইকেটে হারে পাকিস্তান। সাব্বির ও সাকিব আল হাসানের ব্যাটে রিজওয়ানের অভিষেকটা হয়েছিল মলিন। তাঁর প্রায় এক বছর আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেন সাব্বির। সেদিন ম্যাচসেরা ৩২ বলে অপরাজিত ৫১ রানের ইনিংস খেলে সাব্বির জানান দিয়েছিলেন সাদা বলে নিজের অমিত সম্ভাবনার কথা।

মাঝে কেটে গেল রিজওয়ানের চড়াই-উতরাইয়ের সাত বছর। ২০১৫ সালের পর সাব্বির–রিজওয়ানকে আবারও দেখা গেল সর্বশেষ ত্রিদেশীয় সিরিজে। ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালের এই ম্যাচে ৫০ বলে অপরাজিত ৭৮ রান করে ম্যাচসেরা হন রিজওয়ান। অন্য দিকে সাব্বির নিজেকে হারিয়ে খুঁজলেন। পরে তো দল ‘অদৃশ্যই’ হয়ে গেলেন।

সাত বছর আগে টি-টোয়েন্টিসুলভ ব্যাটিং না হওয়ায় রিজওয়ান ব্যাট করার সুযোগ পাননি দলে। এখন সে খেলোয়াড়ই পাকিস্তানের ব্যাটিং অর্ডারের নম্বর ওয়ান ব্যাটার। তিনি এখন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের শীর্ষ ব্যাটার। রিজওয়ান যখন পায়ের তলা মাটি খুঁজছিলেন, সাব্বির তখন ধারাবাহিক ভালো খেলে উড়ছিলেন।

এখন ছবিটা উল্টো—রিজওয়ান যেভাবে চান সেভাবেই ব্যাট হাসে। অথচ ক্যারিয়ারের শুরুতে তাঁর পথটা ছিল কাটায় ভরা। টি-টোয়েন্টিসুলভ ব্যাটিং পারেন না—এমন অজুহাতে লম্বা সময় দলের বাইরে থাকতে হয়েছে তাঁকে। সেই রিজওয়ানই টি-টোয়েন্টিতে নিজের ব্যাটিংকে নিয়ে গেছেন অন্য পর্যায়ে। শুধু টি-টোয়েন্টি নয়, তিন সংস্করণেই তিনি পাকিস্তান ক্রিকেটের অন্যতম ভরসা। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে শুরুর ১৭ ইনিংসে ১৭.২৩ গড়ে রিজওয়ানের রান ছিল ২২৪ রান। এখন ৬২ ইনিংস শেষে ৫২.৩৪ স্ট্রাইকরেটে রিজওয়ানের ২৪৬০ রান। টি-টোয়েন্টিতে ৬২ ইনিংসে তিনিই সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে উইকেটরক্ষক-ব্যাটার হিসেবে ২১৯৬ রান করে এখন শীর্ষে রিজওয়ান।

এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ রাঙানোর স্বপ্ন নিয়ে পাকিস্তানের রিজওয়ান যখন অস্ট্রেলিয়ায়, বাংলাদেশের সাব্বির তখন দেশে ফিরে ফেসবুক লাইভে এসে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন নিজের ব্যর্থতা আর সব বিতর্কের। অথচ ব্যাট যদি ভালো কথা বলত; রিজওয়ানের মতো শৃঙ্খল আর কঠোর পরিশ্রমে মনোযোগটা রাখতে পারতেন ক্রিকেটে, তাহলে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে এভাবে ফেসবুক লাইভে আসতে হতো না তাঁকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৪৩ গোলের চ্যাম্পিয়নস লিগের রাতে একগাদা রেকর্ড

ক্রীড়া ডেস্ক    
কেভিন ডি ব্রুইনের হতাশাই নাপোলির প্রতীকী চিত্র। পিএসভি আইন্দহফেনের কাছে নাপোলি গত রাতে ৬-২ গোলে হেরেছে। ছবি: এএফপি
কেভিন ডি ব্রুইনের হতাশাই নাপোলির প্রতীকী চিত্র। পিএসভি আইন্দহফেনের কাছে নাপোলি গত রাতে ৬-২ গোলে হেরেছে। ছবি: এএফপি

গোলবন্যার এক রাতই গেছে চ্যাম্পিয়নস লিগে। এক রাতে ৯ ম্যাচে সব মিলিয়ে হয়েছে ৪৩ গোল। তার মানে ম্যাচে গড়ে প্রায় পাঁচটি করে গোল হয়েছে। গোলবন্যার রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের রেকর্ড বইয়ের পাতা ওলটপালট হয়েছে।

৯ ম্যাচের মধ্যে একমাত্র কাইরাত-পাফোস ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েছে। সবচেয়ে বেশি গোল হয়েছে লেভারকুসেন-পিএসজি ম্যাচে। ৯ গোলের এই ম্যাচে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন পিএসজি করেছে ৭ গোল। তবে সব ছাপিয়ে আলোচনা মূলত পিএসভি আইন্দহফেন-নাপোলি ও বার্সেলোনা-অলিম্পিয়াকোস ম্যাচ নিয়ে। এই দুই ম্যাচে চার দল মিলে দিয়েছে ১৫ গোল। যার মধ্যে লজ্জার রেকর্ডে নাম লিখিয়েছে নাপোলি। পিএসভি আইন্দহফেনের কাছে ৬-২ গোলে হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগ ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ব্যবধানে হারের কীর্তি এখন নাপোলির। পিএসভির ঘরের মাঠ ফিলিপস স্টেডিয়ামে হয়েছে এই ম্যাচ। চ্যাম্পিয়নস লিগে আগে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হারের বিব্রতকর রেকর্ডটা ছিল ২০১২ সালে চেলসির বিপক্ষে। ২০১১-১২ মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বিতীয় লেগে চেলসির কাছে ৪-১ গোলে হেরেছিল নাপোলি।

গ্রুপ পর্বের বার্সেলোনা-অলিম্পিয়াকোস ম্যাচটি গত রাতে হয়েছে এস্তাদি অলিম্পিক কোম্পানিজ লুইস স্টেডিয়ামে। ঘরের মাঠে ৬-১ গোলের উড়ন্ত জয় পেয়েছে বার্সা। ফার্মিন লোপেজ হ্যাটট্রিক করেছেন। ৭, ৩৯ ও ৭৬ মিনিটে হয়েছে তাঁর এই তিন গোল। তাতে বার্সার ইতিহাসে প্রথম স্প্যানিশ ফুটবলার হয়ে লোপেজ চ্যাম্পিয়নস লিগে হ্যাটট্রিক করেছেন। কাতালান ক্লাবটির ইতিহাসে এখন পর্যন্ত ৬০০–এর বেশি স্প্যানিশ ফুটবলার খেললেও ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের এই প্রতিযোগিতায় লোপেজের আগে কেউই হ্যাটট্রিক করতে পারেননি।

অলিম্পিয়াকোসের বিপক্ষে লোপেজের হ্যাটট্রিকের পাশাপাশি গোল পেয়েছেন লামিনে ইয়ামাল ও মার্কাস রাশফোর্ড। ৬৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেছেন ইয়ামাল। ৭৪ ও ৭৯ মিনিটে জোড়া গোল করেছেন রাশফোর্ড। অলিম্পিয়াকোসের একমাত্র গোল ৫৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে করেছেন আইয়ুব এল কাবি। তবে জোড়া হলুদ কার্ডে ৫৭ মিনিটে মিডফিল্ডার সান্তিয়াগো হেজ্জে লাল কার্ড দেখলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় অলিম্পিয়াকোস।

গোলবন্যার রাতে এমিরেটস স্টেডিয়ামে আতলেতিকো মাদ্রিদকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে আর্সেনাল। চ্যাম্পিয়নস লিগের মতো টুর্নামেন্টে এই জয় অহরহই হয়ে থাকে। তবে অবাক করার মতো ব্যাপার হচ্ছে প্রথমার্ধে কোনো গোলই হয়নি এই ম্যাচে। দ্বিতীয়ার্ধে খেলা শুরুর পর দ্রুতই এগিয়ে যেতে পারত আতলেতিকো মাদ্রিদ। ৪৮ মিনিটে হুলিয়ান আলভারেজের দূরপাল্লায় বুলেট গতির শট নিলেও সেটা ক্রসবারে বাধা পেয়েছে। ফলে স্প্যানিশ ক্লাবটি আর এগিয়ে যেতে পারেনি। ৫৭ থেকে ৭০—১৩ মিনিটের ব্যবধানে আতলেতিকোর জালে গুনে গুনে চার গোল দিয়েছে আর্সেনাল। ৫৭ ও ৬৪ মিনিটে গোল করেছেন গ্যাব্রিয়েল মাগালিয়ায়েস ও গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি। ভিক্টর গিওকেরেস ৬৭ ও ৭০ মিনিটে জোড়া গোল করেছেন।

২০২৫-২৬ চ্যাম্পিয়নস লিগে এখন পর্যন্ত পূর্ণ ৯ পয়েন্ট পেয়েছে পিএসজি, ইন্টার মিলান ও আর্সেনাল। তবে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে সবার ওপরে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন পিএসজি। দু্ই ও তিনে অবস্থান করছে ইন্টার মিলান ও আর্সেনাল। চার ও পাঁচে থাকা ডর্টমুন্ড, ম্যানচেস্টার সিটি দুই দলেরই সমান ৫ পয়েন্ট। প্রত্যেকেই তিনটি করে ম্যাচ খেলেছে।

চ্যাম্পিয়নস লিগে গত রাতের ফল

বার্সেলোনা ৬–১ অলিম্পিয়াকোস

কাইরাত আলমাতি ০–০ পাফোস এফসি

লেভারকুসেন ২–৭ পিএসজি

আর্সেনাল ৪–০ আতলেতিকো মাদ্রিদ

ভিয়ারিয়াল ০–২ ম্যানচেস্টার সিটি

পিএসভি আইন্দহফেন ৬–২ নাপোলি

কোপেনহেগেন ২–৪ বরুসিয়া ডর্টমুন্ড

নিউক্যাসল ৩–০ বেনফিকা

সেঁ জিলোয়াস ০–৪ ইন্টার মিলান

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘বাংলাদেশের ক্রিকেটটাকে এভাবে নষ্ট করবেন না প্লিজ’

ক্রীড়া ডেস্ক    
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ৪৬
মিরপুরের উইকেট নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন রুবেল হোসেন। ছবি: ফেসবুক
মিরপুরের উইকেট নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন রুবেল হোসেন। ছবি: ফেসবুক

প্রতিপক্ষের জন্য ফাঁদ পাততে গিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ধরা খেয়েছে অনেকবার। এই তো গত জুলাইয়েও মিরপুরের উইকেট নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছিলেন পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক সালমান আলী আঘা ও সাদা বলের প্রধান কোচ মাইক হেসন। তিন মাস পর সেই মিরপুরেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে পাতা হয়েছে ‘মরণফাঁদ’।

বর্তমান ওয়ানডে ক্রিকেটে ৪০০ হচ্ছে হরহামেশাই। ৩০০-৩৫০ রান তাড়া করে জয়ের ঘটনা ঘটছে অহরহ। কিন্তু মিরপুরে ৪০০ তো বহুদূর, এখানে আগে ব্যাটিং করে কোনোমতে ২০০ পেরোলেই সেটা জয়সূচক রান হয়ে যায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে মিরপুরের শেরেবাংলায় ২০৭ রান করে বাংলাদেশ জিতেছে ৭৪ রানে। একই মাঠে গতকাল দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দুই দলই করেছে সমান ২১৩ রান। শেষ পর্যন্ত সুপার ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছে এক ওভারে।

ব্যাটারদের বধ্যভূমি মিরপুরের উইকেট নিয়ে গতকাল রুবেল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হতাশা প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচ শেষে নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে ৩৫ বছর বয়সী বাংলাদেশি পেসার লিখেছেন, ‘আমার ১২-১৩ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে এমন কালো, অদ্ভুত ফাটা উইকেট কখনো দেখিনি। আপনি এমন উইকেট বানিয়ে ক্রিকেটারদের কাছ থেকে পারফরম্যান্স আশা করছেন। এটা আসলে অনেক বড় বোকামি। বাংলাদেশের ক্রিকেটটাকে নষ্ট করবেন না প্লিজ। এই দেশের কোটি মানুষ ক্রিকেট ভালোবাসে। তাদের সেই ভালোবাসাটাকে বাঁচিয়ে রাখুন।’

বাংলাদেশ গতকাল টস জিতে আগে ব্যাটিং নিয়ে ৪৮ ওভার পর্যন্ত স্কোর ছিল ৭ উইকেটে ১৭৯ রান। ৩.৭৯ রানরেট। শেষের দিকে রিশাদ হোসেনের ঝোড়ো ব্যাটিংয়েই তো বাংলাদেশ ২১৩ রান পর্যন্ত তুলতে পেরেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচটা সুপার ওভারে নিয়ে গেলেও ব্যাটিংয়ে নাভিশ্বাস ওঠার মতো অবস্থা হয়েছে তাদেরও। আর মিরপুরের কালো মাটির উইকেটে খেলে বৈশ্বিক মঞ্চে গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের ভরাডুবি হচ্ছে নিয়মিত। মিরপুরের উইকেটের সমালোচনায় রুবেল গতকাল লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে মিরপুর উইকেটে যুদ্ধ চলছে। এটা আগেও ছিল, এখনো আছে। কিছুই বদলায়নি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মানেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা। কিন্তু এত বাজে উইকেটে ক্রিকেট খেলা সত্যিই ভীষণ কষ্টকর।’

টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৮১৪ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। যার মধ্যে গতকালের ম্যাচটাই তাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম সুপার ওভারের ম্যাচ।বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ তৃতীয় ওয়ানডেটা এখন সিরিজ নির্ধারণী হয়ে গেছে। মিরপুরে আগামীকাল বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টায় শুরু হবে তৃতীয় ওয়ানডে। এরপর তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২৭, ২৯ ও ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রামে হবে সিরিজের তিন টি-টোয়েন্টি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আট মাস পর ফিরে আবার বাদ পড়ার শঙ্কায় সৌম্য

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ৪০
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গতকাল দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৮৯ বলে ৪৫ রান করেছেন সৌম্য সরকার। ছবি: ক্রিকইনফো
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গতকাল দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৮৯ বলে ৪৫ রান করেছেন সৌম্য সরকার। ছবি: ক্রিকইনফো

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সৌম্য সরকারের শুরুটা স্বপ্নের মতো হলেও সেটা ধরে রাখতে পারেননি। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে পাওয়ার প্লের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ঝোড়ো শুরু এনে দেওয়ার পাশাপাশি রানের বন্যা বইয়ে দিলেও হঠাৎই তাঁর ছন্দপতন। ১১ বছর ধরে বাংলাদেশ দলে আসা-যাওয়ার মধ্যে আছেন।

বাংলাদেশের জার্সিতেই সৌম্য যে রানখড়ায় ভুগছেন, তেমনটা নয়। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল), বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)—ঘরোয়া ক্রিকেটের কোথাও বলার মতো কিছু নেই। ক্যারিয়ারসেরা ১৬৯ রানের ইনিংস ২০২৩-এর ডিসেম্বরে নেলসনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেললেও ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেননি। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে বাংলাদেশের জার্সিতে আট মাস পর ফিরেছেন। প্রথম ওয়ানডেতে ৪ রানে আউট হলেও গতকাল দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৮৯ বলে করেছেন ৪৫ রান। যেখানে মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে থিতু হওয়ার পর উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন। সুপার ওভারে ফ্রি হিটের সুযোগ পেয়েও সেটা কাজে লাগাতে পারেননি।

পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সুপার ওভারে ১ রানে জিতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-১ সমতা করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে এসে সৌম্য জানালেন, দীর্ঘদিন পর দলে ফিরলে একটা মানসিক চাপ কাজ করে। ৩২ বছর বয়সী এই বাঁহাতি ব্যাটার বলেন, ‘অনেক দিন পর দলে এসে আসলে একটু নতুনত্ব লাগেই। আবার খাপ খাইয়ে নিতে একটু সময়ও লাগে। মানসিক চাপও থাকে। কিন্তু যেহেতু খেলোয়াড় আমরা, এসেই খেলাটা আমাদের কাজ।যখনই সুযোগ পাই, নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টা করি। কারণ, প্রমাণ না করতে পারলে আবার দলের বাইরে চলে যেতে হবে।’

সুপার ওভারে দলকে জিতিয়ে নায়ক হওয়ার সুযোগ এসেছিল সৌম্যর সামনে। কিন্তু সেটা কাজে লাগাতে না পারার ব্যর্থতা স্বীকার করে নিয়েছেন সৌম্য। বাংলাদেশের অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার বলেন, ‘এটা বলতে পারেন, আমার জায়গায় আমি ব্যর্থ। আমারও আত্মবিশ্বাস ছিল এখান থেকে একটা বাউন্ডারি আদায় করতে পারব। উইকেট সহজে ছয় বা চার মারার মতো নয়। এটা ঠিক যে আজ (গতকাল) তিনটা ফ্রি হিট কাজে লাগাতে পারিনি। সুপার ওভারে যে বলগুলো খেলেছি, প্রায় সবই ফ্রি হিট ছিল। ছয় বা বাউন্ডরি মারার লক্ষ্য ছিল। হ্যাঁ, এটা আমি পারিনি। আমার এখানে ঘাটতি ছিল।’

টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৮১৪ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। যার মধ্যে গতকালের ম্যাচটাই তাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম সুপার ওভারের ম্যাচ।বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ তৃতীয় ওয়ানডেটা এখন সিরিজ নির্ধারণী হয়ে গেছে। মিরপুরে আগামীকাল বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টায় শুরু হবে তৃতীয় ওয়ানডে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলার আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলেও ডাক পেয়েছিলেন সৌম্য। কিন্তু সংযুক্ত আরব আমিরাতে আফগান সিরিজ না খেলে তখন তিনি ঘরোয়া ক্রিকেট এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে খেলেছিলেন। উইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে সুযোগ পান কিনা সেটা সময়ই বলে দেবে। ২৭, ২৯ ও ৩১ অক্টোবর হবে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের তিন টি-টোয়েন্টি।

আরও পড়ুন: সুপার ওভারে রিশাদ না নামায় হতভম্ব ওয়েস্ট ইন্ডিজ, কী বলছেন সৌম্য

সোহানের ক্যাচ মিসকে দায়ী করছেন মিরাজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মিরপুরের পিচ নাকি টিভি—কোথায় সমস্যা, ধরতেই পারেননি উইন্ডিজ ক্রিকেটার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ১১
মিরপুরের উইকেট নিয়ে মজা করেছেন আকিল হোসেন। ছবি: ক্রিকইনফো
মিরপুরের উইকেট নিয়ে মজা করেছেন আকিল হোসেন। ছবি: ক্রিকইনফো

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ঘূর্ণি উইকেট বানিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার কৌশল অনেক পুরোনো। ঘরের মাঠের লো-স্কোরিং উইকেটে খেলে বৈশ্বিক মঞ্চে গিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলও বারবার মুখ থুবড়ে পড়ে। মিরপুরের বোলিং বান্ধব উইকেট নিয়ে অনেক সমালোচনা যেমন হয়, তেমনি নানারকম ব্যঙ্গাত্মক কথাবার্তাও শোনা যায়।

বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেও মিরপুরের উইকেট বরাবরের মতোই ব্যাটারদের জন্যই বধ্যভূমি। আধুনিক ওয়ানডে ক্রিকেটে ৩০০-৩৫০ হরহামেশা হলেও শেরেবাংলায় ২০০ রান তুলতেই জান বের হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। প্রথম দুই ওয়ানডের স্কোরকার্ড দেখলেই সেটা স্পষ্ট। দুই ম্যাচেই বাংলাদেশ আগে ব্যাটিং করেছে ও স্কোরবোর্ডে তুলেছে ২০৭ রান ও ২১৩ রান। যার মধ্যে প্রথম ওয়ানডেতে মেহেদী হাসান মিরাজের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ৭৪ রানে জিতলেও গতকাল দ্বিতীয় ম্যাচে সুপার ওভারে হেরে গেছে।

সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে শেষেও আলোচনায় মিরপুরের সেই উইকেট। মূল ম্যাচে ১০ ওভারে ৪১ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন। সুপার ওভারে ওয়াইড, নো বল করে ৩ বল বাড়তি করলেও তাঁর ঘূর্ণির কাছে হার মেনে বাংলাদেশ থেমে গেছে ৯ রানে। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে মিরপুরের কালো মাটির উইকেটের প্রসঙ্গ এলে আকিল বেশ মজাই করেছেন। ক্যারিবীয় এই বাঁহাতি স্পিনার বলেছেন,‘যখন টিভি চালু করলাম, প্রথম যে কাজটি করলাম, সেটা হলো টিভি পরীক্ষা করে দেখছিলাম। আমার মনে হচ্ছিল, টিভিতেই হয়তোবা সমস্যা। কারণ, স্ক্রিন একদম কালো। হয়তো রঙ চলে গেছে বা কিছু উল্টাপাল্টা মনে হচ্ছিল। পরে বুঝতে পারলাম, পিচটাই এমন কালো।’

বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে থাকলেও ওয়ানডে দলে ছিল না আকিলের নাম। শামার জোসেফ ও জেদিয়া ব্লেডস ওয়ানডে সিরিজ থেকে ছিটকে যাওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে সুযোগ পান আকিল। দীর্ঘ ভ্রমণ শেষে বাংলাদেশ সময় গতকাল ভোর চারটায় ঢাকায় পৌঁছান তিনি। ভ্রমণক্লান্তি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই দেড়টায় খেলতে নেমে গেছেন মিরপুরে। দেখালেন তাঁর জাদু। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে ক্যারিবীয় বাঁহাতি স্পিনার বলেন, ‘রাত চারটায় হোটেলে পৌঁছেছি। তবে এটা কাজেরই অংশ। একবার যখন কোনো কিছুর প্রতি প্রতিশ্রুতির ব্যাপার চলে আসে, তখন নিজের শতভাগ দিতে হয়। প্রায় হাতছাড়া হতে যাওয়া ম্যাচে দলকে জেতাতে পেরেছি। এটাই অনেক বড় স্বস্তি।’

মিরপুরের ঘূর্ণি উইকেটে গতকাল দ্বিতীয় ওয়ানডেতে খারি পিয়ের, গুড়াকেশ মতি, আকিল হোসেন, রস্টন চেজ-এই চার স্বীকৃত স্পিনার নিয়ে খেলতে নেমেছে। তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন খন্ডকালীন স্পিনার আলিক আথানাজ। বাংলাদেশের বিপক্ষে এই পাঁচ স্পিনারের প্রত্যেকেই ১০ ওভার করে বোলিং করেছেন। ওয়ানডেতে এক ইনিংসে পুরো ৫০ ওভার স্পিনারদের দিয়ে বোলিংয়ের ঘটনা এবারই প্রথমবার ঘটল। বিরল রেকর্ডের এই ম্যাচে সুপার ওভারে ১ রানে জিতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ১-১ সমতা করেছে ক্যারিবীয়রা। মিরপুরে আগামীকাল বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টায় শুরু হবে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে।

আরও পড়ুন:

মিরপুরে সুপার ওভারের রোমাঞ্চে সিরিজে ফিরল উইন্ডিজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত