ভারতের পর এবার নিউজিল্যান্ড বাধা টপকানোর অপেক্ষায় লঙ্কানরা

সনাথ জয়াসুরিয়ার অধীনে সময়টা ভালোই যাচ্ছে শ্রীলঙ্কার। এ বছরের জুলাই থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত লঙ্কানরা গড়ে চলেছে একের পর এক কীর্তি। ভারতের বিপক্ষে ২৭ বছরের অপেক্ষা লঙ্কানরা ফুরিয়েছে তাঁর অধীনেই। শ্রীলঙ্কার সামনে এখন হাতছানি দিচ্ছে কিউই ধাঁধা টপকানোর সম্ভাবনা।

শ্রীলঙ্কা-নিউজিল্যান্ড দুটি দলই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যস্ত সময় পার করছে। সেপ্টেম্বরে টেস্ট সিরিজের পর কিউইরা এবার লঙ্কায় এসেছে সীমিত ওভারের ক্রিকেট খেলতে। ডাম্বুলার রনগিরি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গত রাতে নিউজিল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়ে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল শ্রীলঙ্কা। একই মাঠে আজ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি। এই ম্যাচ জিতলে ১১ বছর পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতবে লঙ্কানরা। সবশেষ ২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারিয়েছিল লঙ্কানরা।

জয়াসুরিয়ার যেখান থেকে শুরু, আসালাঙ্কারও সেখান থেকেই। আনুষ্ঠানিকভাবে শ্রীলঙ্কার সাদা বলের ক্রিকেটের অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কা হয়েছেন এ বছরের জুলাইয়ে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এবার টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর আগেই হুংকার ছেড়েছিলেন আসালাঙ্কা। লঙ্কান অধিনায়ক জানিয়েছিলেন, আইসিসি র‍্যাঙ্কিংয়ে প্রথম সারির দল হওয়াই তাঁদের লক্ষ্য। বর্তমানে দলটি আইসিসির ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিংয়ে ৬ ও ৮ নম্বরে অবস্থান করছে।

যে হুংকার আসালাঙ্কা ছেড়েছিলেন নিউজিল্যান্ড সিরিজ শুরুর আগে, ডাম্বুলায় গত রাতে সেটারই প্রতিফলন দেখিয়েছেন। ২৮ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় ৩৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হয়েছেন তিনি। ষষ্ঠ ও সপ্তম উইকেটে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ও দুনিথ ভেল্লালাগের সঙ্গে ৩৮ ও ১৫ রানের দুটি জুটি গড়তে অবদান রাখেন আসালাঙ্কা। যেখানে জ্যাকব ডাফিকে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মেরে লঙ্কানদের জয় নিশ্চিত করেন ভেল্লালাগে। ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আসালাঙ্কা বলেন,‘একটু স্নায়ুচাপে ভুগছিলাম। তবে আমার পরিকল্পনা ছিল শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করা। মনে হচ্ছিল ওয়ানিন্দু-ভেল্লালাগে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করবে।’

টস জিতে গতকাল প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা কিউইদের স্কোর একটা পর্যায়ে হয়ে যায় ১৫.৪ ওভারে ৮ উইকেটে ৯৬ রান। সেখান থেকে কিউইরা করেছে ১৩৫ রান। ৩ বল আগে রেখেই তাদের ইনিংস গুটিয়ে গেছে। ম্যাচ শেষে আসালাঙ্কা বলেন, ‘আমরা তাদের ১৫-২০ রান আগে অলআউট করতে পারতাম। তাদের লোয়ার অর্ডার ব্যাটারদের কৃতিত্ব দিতে হবে।’

নিউজিল্যান্ডের ১০ উইকেটের ৬টাই তুলে নিয়েছেন শ্রীলঙ্কার স্পিনাররা। যার মধ্যে ভেল্লালাগে ৩.৩ ওভার বোলিং করে ২০ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। হাসারাঙ্গা ও মাহিশ তিকশানা ২ ও ১ উইকেট। লঙ্কান বোলারদের নিয়ে তাই প্রশংসা ঝরেছে নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনারের কণ্ঠে। স্যান্টনার বলেন, ‘এটা অবশ্যই চ্যালেঞ্জ। আমার মনে হয়েছিল ১৩০ রান করলেই ভালো করব আমরা। ইনিংসের মাঝপথে এসে মনেও হয়নি এত দূর যেতে পারব। তবে লঙ্কান বোলারদের কৃতিত্ব দিতে হবে। তারা অনেক কঠিন করেছে।’

এবারেরটা সহ এখন পর্যন্ত দ্বিপক্ষীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে দশবার মুখোমুখি হয়েছে শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ড। এর আগের ৯ বারের মধ্যে পাঁচবারই সিরিজ জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। তিনটি সিরিজ হয়েছিল ড্র। শ্রীলঙ্কা ২০১৩ সালে একমাত্র যে সিরিজ কিউইদের বিপক্ষে জিতেছিল, সেটা ছিল দুই ম্যাচের। তখন একটা টি-টোয়েন্টিতে কোনো বল মাঠে না গড়িয়েই পরিত্যক্ত হয়েছিল।