মইনুল হাসান
ফরাসি প্রতিষ্ঠান কারমাত ‘এসন’ ব্র্যান্ড নামে কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড উৎপাদন এবং তা মানবদেহে প্রতিস্থাপন করতে শুরু করেছে। গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর ইউরোপীয় দেশগুলোর অনুমোদন লাভের পরপরই তা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মানবদেহে প্রতিস্থাপনের পর কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড খুব ভালো কাজ করছে। এমনকি বিশ্রাম, ব্যায়াম, ভারী কাজ করার সময় আসল হৃৎপিণ্ডের মতোই সাড়া দিচ্ছে। অর্থাৎ হৃৎস্পন্দন কম-বেশি হওয়াতে আসল হৃৎপিণ্ডের সঙ্গে প্রায় কোনো পার্থক্য নেই।
আকারে (৭৫০ মিলিলিটার) এবং ওজনে ততটা বেশি না হওয়ায় এসন কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনে খুব একটা বেগ পেতে হয় না। তা ছাড়া যেসব উপাদানে এমন হৃৎপিণ্ড তৈরি করা হয়েছে, তা জৈব সামঞ্জস্যপূর্ণ। অর্থাৎ দেহকোষের সঙ্গে অনেকটা সহজেই মানিয়ে নিতে পারে এবং সংক্রমণের ভয় নেই।
দাতার অভাবে হৃৎপিণ্ড পেতে বেশ দেরি হয়ে যায়। ফলে যেসব রোগীর হৃদ্যন্ত্র একেবারেই কাজ করছে না, তাদের দেহে এই কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করে অপেক্ষাকালীন ১৮০ দিন, অর্থাৎ ছয় মাস পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। এই হৃৎপিণ্ডের কল্যাণে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সময় একজন রোগী দুই বছরেরও বেশি সময় বেঁচে ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, এক ইউরোপেই প্রতিবছর ২ হাজার মানুষের জীবন বাঁচাবে এই কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড।
মানুষের তৈরি হৃৎপিণ্ডের মূল অংশ হলো দুটি খুব ছোট পাম্পিং ইউনিট, যেটি পুরোপুরি মানুষের হৃদ্যন্ত্রের বিকল্প হিসেবে নিঃশব্দে কাজ করে। রোগীর চলাফেরা ও স্বাভাবিক কাজকর্মে যেন কোনো ব্যাঘাত না ঘটে, সেদিকে খেয়াল রেখেই দেহের বাইরে ব্যাটারি এবং অন্যান্য সরঞ্জামসহ একটি চার কেজি ওজনের ব্যাগ যুক্ত করা হয়েছে। এসব সরঞ্জাম হৃদ্যন্ত্রটি সঠিক কাজকর্ম করছে কি না, সেদিকে খেয়াল রাখে ও ত্রুটি দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়ে দেয়।
কৃত্রিম হৃৎপিণ্ডের দাম পড়বে ১ লাখ ৫০ হাজার ইউরো। সেই সঙ্গে প্রতিস্থাপনের খরচ যোগ হবে। কারমাত কর্তৃপক্ষ বলেছে, দীর্ঘদিনের গবেষণার ফলে এমন হৃৎপিণ্ডের উৎপাদন বৃদ্ধি ও মূল্য কমিয়ে আনার ব্যাপারে তাদের চেষ্টার কমতি নেই।
চমৎকার কার্যক্ষম এমন কৃত্রিম হৃৎপিণ্ডের জন্য যিনি তাঁর জীবনের একটি বিরাট অংশ উৎসর্গ করেছেন, তিনি হলেন ৮৮ বছর বয়স্ক ফরাসি হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যালাঁ কার্পেন্তিয়ে। তিনি এখনো নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।
আমাদের হৃদ্যন্ত্রটি একাধারে জটিল, কার্যকারিতায় অনন্য, অত্যন্ত টেকসই এবং চমৎকার গঠন নকশায় বিস্ময়কর একটি পাম্প মেশিন। ছন্দোবদ্ধ সংকোচন ও প্রসারণের মাধ্যমে এটি একদিকে হৃৎপিণ্ডের বাম অংশ ফুসফুস থেকে অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত গ্রহণ করে। অন্যদিকে বাম অলিন্দ থেকে রক্ত বাম নিলয়ে স্থানান্তরিত করে সারা দেহে তা সঞ্চারিত করে। এটি বিরামহীনভাবে পুরো জীবনকাল স্পন্দিত হয়। বিশ্রামে থাকাকালীন প্রতি মিনিটে গড়ে ৬০ থেকে ৯০ বার হৃৎস্পন্দন হয়। সে হিসাবে বছরে ৪ কোটিবার স্পন্দিত হয় আমাদের হৃৎপিণ্ড। আর এভাবে দিনে প্রায় ৬ থেকে ৮ হাজার লিটার রক্ত পাম্প করে এটি।
পুরো পৃথিবীতে মানুষের মৃত্যুর জন্য যতগুলো কারণ আছে, সবগুলো কারণের শীর্ষে আছে হৃদ্রোগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, পৃথিবীতে হৃদ্রোগের কারণে প্রতিবছর অকালে প্রাণ হারায় প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ। অনেকেই তাই হৃদ্রোগকে ‘অসংক্রামক অতিমারি’ আখ্যা দিয়েছেন। হৃদ্যন্ত্র বিকল হয়ে গেলে অঙ্গ প্রতিস্থাপন ছাড়া উপায় নেই। আর তাই কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড আশার আলো দেখাচ্ছে। গবেষক ও বিশেষেজ্ঞরা নিশ্চিত যে কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড বাঁচাবে বহু প্রাণ।
লেখক: ফ্রান্সপ্রবাসী গবেষক
ফরাসি প্রতিষ্ঠান কারমাত ‘এসন’ ব্র্যান্ড নামে কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড উৎপাদন এবং তা মানবদেহে প্রতিস্থাপন করতে শুরু করেছে। গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর ইউরোপীয় দেশগুলোর অনুমোদন লাভের পরপরই তা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মানবদেহে প্রতিস্থাপনের পর কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড খুব ভালো কাজ করছে। এমনকি বিশ্রাম, ব্যায়াম, ভারী কাজ করার সময় আসল হৃৎপিণ্ডের মতোই সাড়া দিচ্ছে। অর্থাৎ হৃৎস্পন্দন কম-বেশি হওয়াতে আসল হৃৎপিণ্ডের সঙ্গে প্রায় কোনো পার্থক্য নেই।
আকারে (৭৫০ মিলিলিটার) এবং ওজনে ততটা বেশি না হওয়ায় এসন কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনে খুব একটা বেগ পেতে হয় না। তা ছাড়া যেসব উপাদানে এমন হৃৎপিণ্ড তৈরি করা হয়েছে, তা জৈব সামঞ্জস্যপূর্ণ। অর্থাৎ দেহকোষের সঙ্গে অনেকটা সহজেই মানিয়ে নিতে পারে এবং সংক্রমণের ভয় নেই।
দাতার অভাবে হৃৎপিণ্ড পেতে বেশ দেরি হয়ে যায়। ফলে যেসব রোগীর হৃদ্যন্ত্র একেবারেই কাজ করছে না, তাদের দেহে এই কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন করে অপেক্ষাকালীন ১৮০ দিন, অর্থাৎ ছয় মাস পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। এই হৃৎপিণ্ডের কল্যাণে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সময় একজন রোগী দুই বছরেরও বেশি সময় বেঁচে ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, এক ইউরোপেই প্রতিবছর ২ হাজার মানুষের জীবন বাঁচাবে এই কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড।
মানুষের তৈরি হৃৎপিণ্ডের মূল অংশ হলো দুটি খুব ছোট পাম্পিং ইউনিট, যেটি পুরোপুরি মানুষের হৃদ্যন্ত্রের বিকল্প হিসেবে নিঃশব্দে কাজ করে। রোগীর চলাফেরা ও স্বাভাবিক কাজকর্মে যেন কোনো ব্যাঘাত না ঘটে, সেদিকে খেয়াল রেখেই দেহের বাইরে ব্যাটারি এবং অন্যান্য সরঞ্জামসহ একটি চার কেজি ওজনের ব্যাগ যুক্ত করা হয়েছে। এসব সরঞ্জাম হৃদ্যন্ত্রটি সঠিক কাজকর্ম করছে কি না, সেদিকে খেয়াল রাখে ও ত্রুটি দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়ে দেয়।
কৃত্রিম হৃৎপিণ্ডের দাম পড়বে ১ লাখ ৫০ হাজার ইউরো। সেই সঙ্গে প্রতিস্থাপনের খরচ যোগ হবে। কারমাত কর্তৃপক্ষ বলেছে, দীর্ঘদিনের গবেষণার ফলে এমন হৃৎপিণ্ডের উৎপাদন বৃদ্ধি ও মূল্য কমিয়ে আনার ব্যাপারে তাদের চেষ্টার কমতি নেই।
চমৎকার কার্যক্ষম এমন কৃত্রিম হৃৎপিণ্ডের জন্য যিনি তাঁর জীবনের একটি বিরাট অংশ উৎসর্গ করেছেন, তিনি হলেন ৮৮ বছর বয়স্ক ফরাসি হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যালাঁ কার্পেন্তিয়ে। তিনি এখনো নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।
আমাদের হৃদ্যন্ত্রটি একাধারে জটিল, কার্যকারিতায় অনন্য, অত্যন্ত টেকসই এবং চমৎকার গঠন নকশায় বিস্ময়কর একটি পাম্প মেশিন। ছন্দোবদ্ধ সংকোচন ও প্রসারণের মাধ্যমে এটি একদিকে হৃৎপিণ্ডের বাম অংশ ফুসফুস থেকে অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত গ্রহণ করে। অন্যদিকে বাম অলিন্দ থেকে রক্ত বাম নিলয়ে স্থানান্তরিত করে সারা দেহে তা সঞ্চারিত করে। এটি বিরামহীনভাবে পুরো জীবনকাল স্পন্দিত হয়। বিশ্রামে থাকাকালীন প্রতি মিনিটে গড়ে ৬০ থেকে ৯০ বার হৃৎস্পন্দন হয়। সে হিসাবে বছরে ৪ কোটিবার স্পন্দিত হয় আমাদের হৃৎপিণ্ড। আর এভাবে দিনে প্রায় ৬ থেকে ৮ হাজার লিটার রক্ত পাম্প করে এটি।
পুরো পৃথিবীতে মানুষের মৃত্যুর জন্য যতগুলো কারণ আছে, সবগুলো কারণের শীর্ষে আছে হৃদ্রোগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, পৃথিবীতে হৃদ্রোগের কারণে প্রতিবছর অকালে প্রাণ হারায় প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ। অনেকেই তাই হৃদ্রোগকে ‘অসংক্রামক অতিমারি’ আখ্যা দিয়েছেন। হৃদ্যন্ত্র বিকল হয়ে গেলে অঙ্গ প্রতিস্থাপন ছাড়া উপায় নেই। আর তাই কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড আশার আলো দেখাচ্ছে। গবেষক ও বিশেষেজ্ঞরা নিশ্চিত যে কৃত্রিম হৃৎপিণ্ড বাঁচাবে বহু প্রাণ।
লেখক: ফ্রান্সপ্রবাসী গবেষক
নাসার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের (জেডব্লিউএসটি) মাধ্যমে মহাবিশ্বের সবচেয়ে বড় মানচিত্র তৈরি করলেন করেছেন বিজ্ঞানীরা। এই মানচিত্রটি মহাবিশ্বের একটি ছোট অংশজুড়ে বিস্তৃত, যেখানে প্রায় আট লাখ গ্যালাক্সি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে এমন গ্যালাক্সিও আছে, যা এত দূরে অবস্থিত যে সেগুলো মহাবিশ্বের শৈশবের সময়কার,
২ ঘণ্টা আগেআধুনিক জীবনে প্লাস্টিকের ব্যবহার এড়িয়ে চলা প্রায় অসম্ভব। তবে এই বহুল ব্যবহৃত উপাদানটিই আজ পরিবেশের জন্য এক ভয়াবহ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বছরের পর বছর ধরে এই প্লাস্টিক জমে থাকছে নদী-নালা, সাগর ও মাটির গভীরে, যা জলজ প্রাণী থেকে শুরু করে মানবস্বাস্থ্যের ওপর ফেলছে মারাত্মক প্রভাব। বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরা
১ দিন আগেবিশ্বব্রহ্মাণ্ডে প্রতি মুহূর্তে ঘটছে অসংখ্য শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটছে। নক্ষত্রগুলো জ্বলছে বিশাল পরমাণু বিক্রিয়ার শক্তিতে, আর বিশাল উল্কাপিণ্ড ছুটে এসে ধাক্কা দিচ্ছে গ্রহে গ্রহে। তবে সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এমন এক ধরনের মহাজাগতিক বিস্ফোরণ শনাক্ত করেছেন, যা এই সব কিছুকেই পেছনে ফেলে দিয়েছে। তাদের দাবি, মহাকা
২ দিন আগেআমাদের গ্রহে প্রাণের বিকাশ ও প্রাচুর্য টিকে আছে অক্সিজেনের কল্যাণে। কিন্তু পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল সব সময় এমন ছিল না। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, ভবিষ্যতে আমাদের বায়ুমণ্ডলে আবারও মিথেনের আধিক্য হবে এবং অক্সিজেনবিহীন অবস্থায় ফিরে যাবে। তবে এখনই ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
৩ দিন আগে