Ajker Patrika

লবস্টার কখনো বুড়ো হয় না, তাহলে মৃত্যু ঘটে কীভাবে

প্রমিতি কিবরিয়া ইসলাম, ঢাকা 
আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২২: ৫১
Thumbnail image

লবস্টার বা সামুদ্রিক চিংড়ি কত দিন বাঁচে? এ প্রশ্নের উত্তর সহজ নয়। এই সামুদ্রিক প্রাণীগুলো বার্ধক্যের কারণে মারা যায় না, বরং চরম ক্লান্তি আর বাইরের শত্রুর আক্রমণে শেষ পর্যন্ত এরা মারা যায়। এর প্রধান কারণ, এর শরীর আয়তনে বাড়লেও খোলস পাল্টানোর মতো শক্তি আর থাকে না।

বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের শারীরবৃত্তীয় কর্মকাণ্ড ও চলৎশক্তি ধীর হয়ে যায়। তরুণ বয়সের তুলনায় মধ্য বা বৃদ্ধ বয়সে মানুষের কাজ করার গতি কমে যায়। মানুষসহ বিভিন্ন প্রাণীর শরীরের অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। একে জীববিজ্ঞানের ভাষায় বলে ‘সেনেসেন্স’। এ প্রক্রিয়া শুরু হয় মানুষের কোষীয় পর্যায়ে।

বার্ধক্যে মানুষের কোষ বিভাজন বন্ধ হয়ে যায়। যদিও কোষগুলো সক্রিয় ও জীবন্ত থাকে। ফলে কোষের বয়স বাড়তে থাকে। মানুষের দেহের বৃদ্ধি এবং ক্ষত বা ক্ষয় নিরাময়ের জন্য কোষ বিভাজনের মাধ্যমে নতুন কোষ তৈরি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন শরীরের কোথাও কেটে গেলে বা ভারোত্তোলনের জন্য এই কোষ বিভাজন খুবই জরুরি। এই কোষ বিভাজন বন্ধ হয়ে গেলেই মানুষ বার্ধক্যে উপনীত হয়।

মানুষের কোষের অভ্যন্তরস্থ ক্রোমোজোমের প্রান্তেই একটি বিশেষ বর্ম থাকে, যা টেলোমেরেস নামে পরিচিত। এই টেলোমেরেস থেকেই শুরু হয় কোষ বিভাজন। কিন্তু ডিএনএকে রক্ষা করার জন্য প্রতিবার কোষ বিভাজনের পর এই অংশ ছোট হতে থাকে। একটি নির্দিষ্ট সময় পর কোষ বিভাজন বন্ধ হয়ে যায়।

কিন্তু লবস্টারের ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াটি এমন নয়। এই অমেরুদণ্ডী প্রাণীর একটি বিশেষ এনজাইম আছে, এই এনজাইমের নামও আশ্চর্যজনকভাবে টেলোমেরেস। এই এনজাইম ক্রোমোজোমের টেলোমেরেসকে সব সময় একই রকম থাকতে সহায়তা করে। ফলে এই বিশেষ বর্মের ক্রম বৃদ্ধি ঘটতে থাকে এবং কোষ বিভাজন চলতে থাকে। ফলে লবস্টাররা কখনো বার্ধক্যে উপনীত হয় না।

লবস্টার কঠিন খোলসযুক্ত জলজ প্রাণী। যখন এদের শরীরের আকার বড় হয়, তখন খোলস পাল্টানোর প্রয়োজন হয়। এই প্রক্রিয়ার জন্য এদের প্রচুর শক্তি সঞ্চয় করে রাখতে হয়। কিন্তু এরা যখন একটি নির্দিষ্ট আকারে পৌঁছে যায়, তখন খোলস তৈরির জন্য পর্যাপ্ত ক্যালরি আর সঞ্চয় করার সামর্থ্য থাকে না। ফলে শরীরে শক্ত খোলসও তৈরি হয় না। ভারী শরীর নিয়ে চরম ক্লান্তিতে ভোগে এরা। আর শক্ত খোলস না থাকার কারণে বিভিন্ন প্রাণীর আক্রমণের শিকার হয় এবং নানা রোগে আক্রান্ত হয়। এভাবেই মৃত্যু ঘটে চিরতরুণ লবস্টারের!

তথ্যসূত্র: বিগ থিংক

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত