অনলাইন ডেস্ক
মিয়ানমারে ঘটে যাওয়া ৭ দশমিক ৭ মাত্রার বিধ্বংসী ভূমিকম্পের সময় পৃথিবীর পৃষ্ঠ সরে যাওয়ার এক নজিরবিহীন ভিডিও ফুটেজ দেখে হতবাক ভূতাত্ত্বিকেরা। এই ফুটেজকে ভূমিকম্পবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী ঘটনা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
গত ২৮ মার্চ ভূমিকম্পের এই দৃশ্য ধারণ করে একটি সিসিটিভি ক্যামেরা। সেদিন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে আঘাত হানে শক্তিশালী ভূমিকম্প, যার প্রভাব পড়ে পাশের দেশ থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক পর্যন্ত। মিয়ানমারের সামরিক জান্তার দাবি অনুযায়ী, এতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩ হাজার ৭০০ জন।
ভিডিওতে দেখা যায়, ভূমিকম্পের সময় সাগাইং ফল্ট বা সাগাইং চ্যুতিরেখা বরাবর মাটির একদিক শক্তিশালী ঝাঁকুনির মাধ্যমে সরে যায়, যেন চোখের সামনে ভূপৃষ্ঠ ফেটে যাচ্ছে। ভিডিওর ডানপাশে এই পরিবর্তনটি সবচেয়ে স্পষ্ট। এতে স্পষ্ট দেখা যায়—মাটির একদিক কয়েক মিটার দূর পর্যন্ত ঠেলে চলে যাচ্ছে। সাগাইং ফল্টটি প্রায় ১ হাজার ৪০০ কিলোমিটার দীর্ঘ, যা ভারতীয় ও ইউরেশীয় প্লেটের সীমানা বরাবর বিস্তৃত।
ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক ভূতাত্ত্বিক ও বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ বিশেষজ্ঞ ওয়েন্ডি বোহন বলেন, ‘ভিডিওটি দেখে আমার মুখ হাঁ হয়ে গিয়েছিল। আমরা সাধারণত কম্পিউটার বা ল্যাব মডেল দিয়ে এই দৃশ্য কল্পনা করি, তবে বাস্তবের তুলনায় সেগুলো অনেক কম জটিল।’
যুক্তরাষ্ট্রের নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবের স্যাটেলাইট ও রাডার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ভূমিকম্পে কিছু স্থানে ভূমির অনুভূমিক স্থানচ্যুতি হয় প্রায় ৬ মিটার পর্যন্ত। জাপানের ভূ-তথ্য সংস্থাও একই ধরনের তথ্য জানিয়েছে।
সুপারশিয়ার ভূমিকম্পের ইঙ্গিত
কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূবিজ্ঞানী জুডিথ হাবার্ড বলেন, এই ভূমিকম্পটি সম্ভবত একটি সুপারশিয়ার ভূমিকম্প, যেখানে ভূত্বকের ফাটল এত দ্রুত ছড়ায় যে এটি ভূমিকম্পের উৎপন্ন সিসমিক তরঙ্গের চেয়েও বেশি গতিসম্পন্ন হয়।
তবে ভিডিওতে দেখা যায়, প্রথমে কম্পন শুরু হয়। তারপর মাটিতে ফাটল ধরে—যা দেখায় যে এই নির্দিষ্ট স্থানে ফাটল ছড়ানো এতটা দ্রুত ছিল না। তবে ফল্টের অন্য অংশে এটি সুপারশিয়ার গতিতে ছড়াতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
ভিডিওটি ইউটিউব চ্যানেল ‘2025 Sagaing Earthquake Archive’ নামে ১১ মে প্রকাশিত হয়। ক্যামেরাটি ছিল থাজি শহরের কাছে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে, যা ভূমিকম্পের উপকেন্দ্রের কাছেই অবস্থিত।
ওয়েন্ডি বোহন বলেন, ভিডিওটি আসল কি না, সে বিষয়ে তার কোনো সন্দেহ নেই। ভিডিওতে পাখি উড়ে যাওয়া, বৈদ্যুতিক তারের টানে বিদ্যুৎ খুঁটি ভেঙে পড়া ইত্যাদি সূক্ষ্ম বিবরণ এআই দিয়ে বানানো ভিডিওতে পাওয়া সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, ‘ভূমিকম্পে ভূ-আকৃতি বদলে যায়, পাহাড়-নদী সরেও যায়। ভিডিওতে যে পাহাড়টি সামনের দিকে এগিয়ে আসে, সেটা ভূগর্ভস্থ ফল্ট লাইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’
সিসিটিভি ক্যামেরা ঠিক এমন জায়গায় ছিল যেখানে ফাটল হচ্ছিল এবং সেটি সচল ছিল—যা খুবই কাকতালীয় ব্যাপার। কারণ, ভূমিকম্পে সাধারণত এই ক্যামেরাগুলো নষ্ট হয়ে যায়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ভিডিও ভূমিকম্প নিয়ে গবেষণায় অভাবনীয় সাহায্য করবে। সাধারণত ভূমিকম্পে যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যায় বা ফল্ট লাইনের ওপর সরাসরি কোনো সেন্সর থাকেই না। ফলে এ ধরনের প্রত্যক্ষ ভিডিও ফুটেজ দুর্লভ এবং অমূল্য।
বোহন বলেন, ‘একই সঙ্গে ভিডিওতে দেখা যায়, ফল্ট লাইনের খুব কাছের ছোট ছোট কাঠামোও তুলনামূলকভাবে অক্ষত ছিল। এটা আমাদের বলে দেয় ভূমিকম্পের ক্ষতির ধরন কীভাবে দূরত্ব অনুযায়ী বদলে যায়।’
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের ফুটেজ আরও গুরুত্বপূর্ণ হবে। এখন সারা বিশ্বে লাখ লাখ সিসিটিভি ও মোবাইল ক্যামেরা আছে। ফলে ভূমিকম্পের এমন দৃষ্টান্ত আরও সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।
বোহন বলেন, ‘ভবিষ্যতে এই ধরনের ভিডিও আমাদের শুধু বুঝতে নয়, বরং ভবিষ্যতের ভূমিকম্প প্রতিরোধমূলক নকশা, ভবন নির্মাণ ও নীতিমালা তৈরিতে সাহায্য করবে।’
দুর্যোগ যতই ভয়াবহ হোক, সেখান থেকে শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ থাকে বলেও মন্তব্য করেন বিজ্ঞানীরা। ভবিষ্যতে আরও সিসিটিভি বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভিডিও এই ধরনের দুর্যোগ বিশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে আশা করছেন তাঁরা।
তথ্যসূত্র: সিবিসি
মিয়ানমারে ঘটে যাওয়া ৭ দশমিক ৭ মাত্রার বিধ্বংসী ভূমিকম্পের সময় পৃথিবীর পৃষ্ঠ সরে যাওয়ার এক নজিরবিহীন ভিডিও ফুটেজ দেখে হতবাক ভূতাত্ত্বিকেরা। এই ফুটেজকে ভূমিকম্পবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী ঘটনা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
গত ২৮ মার্চ ভূমিকম্পের এই দৃশ্য ধারণ করে একটি সিসিটিভি ক্যামেরা। সেদিন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে আঘাত হানে শক্তিশালী ভূমিকম্প, যার প্রভাব পড়ে পাশের দেশ থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক পর্যন্ত। মিয়ানমারের সামরিক জান্তার দাবি অনুযায়ী, এতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩ হাজার ৭০০ জন।
ভিডিওতে দেখা যায়, ভূমিকম্পের সময় সাগাইং ফল্ট বা সাগাইং চ্যুতিরেখা বরাবর মাটির একদিক শক্তিশালী ঝাঁকুনির মাধ্যমে সরে যায়, যেন চোখের সামনে ভূপৃষ্ঠ ফেটে যাচ্ছে। ভিডিওর ডানপাশে এই পরিবর্তনটি সবচেয়ে স্পষ্ট। এতে স্পষ্ট দেখা যায়—মাটির একদিক কয়েক মিটার দূর পর্যন্ত ঠেলে চলে যাচ্ছে। সাগাইং ফল্টটি প্রায় ১ হাজার ৪০০ কিলোমিটার দীর্ঘ, যা ভারতীয় ও ইউরেশীয় প্লেটের সীমানা বরাবর বিস্তৃত।
ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক ভূতাত্ত্বিক ও বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ বিশেষজ্ঞ ওয়েন্ডি বোহন বলেন, ‘ভিডিওটি দেখে আমার মুখ হাঁ হয়ে গিয়েছিল। আমরা সাধারণত কম্পিউটার বা ল্যাব মডেল দিয়ে এই দৃশ্য কল্পনা করি, তবে বাস্তবের তুলনায় সেগুলো অনেক কম জটিল।’
যুক্তরাষ্ট্রের নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবের স্যাটেলাইট ও রাডার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ভূমিকম্পে কিছু স্থানে ভূমির অনুভূমিক স্থানচ্যুতি হয় প্রায় ৬ মিটার পর্যন্ত। জাপানের ভূ-তথ্য সংস্থাও একই ধরনের তথ্য জানিয়েছে।
সুপারশিয়ার ভূমিকম্পের ইঙ্গিত
কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূবিজ্ঞানী জুডিথ হাবার্ড বলেন, এই ভূমিকম্পটি সম্ভবত একটি সুপারশিয়ার ভূমিকম্প, যেখানে ভূত্বকের ফাটল এত দ্রুত ছড়ায় যে এটি ভূমিকম্পের উৎপন্ন সিসমিক তরঙ্গের চেয়েও বেশি গতিসম্পন্ন হয়।
তবে ভিডিওতে দেখা যায়, প্রথমে কম্পন শুরু হয়। তারপর মাটিতে ফাটল ধরে—যা দেখায় যে এই নির্দিষ্ট স্থানে ফাটল ছড়ানো এতটা দ্রুত ছিল না। তবে ফল্টের অন্য অংশে এটি সুপারশিয়ার গতিতে ছড়াতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
ভিডিওটি ইউটিউব চ্যানেল ‘2025 Sagaing Earthquake Archive’ নামে ১১ মে প্রকাশিত হয়। ক্যামেরাটি ছিল থাজি শহরের কাছে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে, যা ভূমিকম্পের উপকেন্দ্রের কাছেই অবস্থিত।
ওয়েন্ডি বোহন বলেন, ভিডিওটি আসল কি না, সে বিষয়ে তার কোনো সন্দেহ নেই। ভিডিওতে পাখি উড়ে যাওয়া, বৈদ্যুতিক তারের টানে বিদ্যুৎ খুঁটি ভেঙে পড়া ইত্যাদি সূক্ষ্ম বিবরণ এআই দিয়ে বানানো ভিডিওতে পাওয়া সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, ‘ভূমিকম্পে ভূ-আকৃতি বদলে যায়, পাহাড়-নদী সরেও যায়। ভিডিওতে যে পাহাড়টি সামনের দিকে এগিয়ে আসে, সেটা ভূগর্ভস্থ ফল্ট লাইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’
সিসিটিভি ক্যামেরা ঠিক এমন জায়গায় ছিল যেখানে ফাটল হচ্ছিল এবং সেটি সচল ছিল—যা খুবই কাকতালীয় ব্যাপার। কারণ, ভূমিকম্পে সাধারণত এই ক্যামেরাগুলো নষ্ট হয়ে যায়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ভিডিও ভূমিকম্প নিয়ে গবেষণায় অভাবনীয় সাহায্য করবে। সাধারণত ভূমিকম্পে যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যায় বা ফল্ট লাইনের ওপর সরাসরি কোনো সেন্সর থাকেই না। ফলে এ ধরনের প্রত্যক্ষ ভিডিও ফুটেজ দুর্লভ এবং অমূল্য।
বোহন বলেন, ‘একই সঙ্গে ভিডিওতে দেখা যায়, ফল্ট লাইনের খুব কাছের ছোট ছোট কাঠামোও তুলনামূলকভাবে অক্ষত ছিল। এটা আমাদের বলে দেয় ভূমিকম্পের ক্ষতির ধরন কীভাবে দূরত্ব অনুযায়ী বদলে যায়।’
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের ফুটেজ আরও গুরুত্বপূর্ণ হবে। এখন সারা বিশ্বে লাখ লাখ সিসিটিভি ও মোবাইল ক্যামেরা আছে। ফলে ভূমিকম্পের এমন দৃষ্টান্ত আরও সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।
বোহন বলেন, ‘ভবিষ্যতে এই ধরনের ভিডিও আমাদের শুধু বুঝতে নয়, বরং ভবিষ্যতের ভূমিকম্প প্রতিরোধমূলক নকশা, ভবন নির্মাণ ও নীতিমালা তৈরিতে সাহায্য করবে।’
দুর্যোগ যতই ভয়াবহ হোক, সেখান থেকে শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ থাকে বলেও মন্তব্য করেন বিজ্ঞানীরা। ভবিষ্যতে আরও সিসিটিভি বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভিডিও এই ধরনের দুর্যোগ বিশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে আশা করছেন তাঁরা।
তথ্যসূত্র: সিবিসি
বিভিন্ন সময়ে ৫জি প্রযুক্তি নিয়ে জনমনে স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কিত আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে, করোনা মহামারির সময় এই প্রযুক্তিকে রোগ সংক্রমণের জন্য দায়ী করে কিছু ষড়যন্ত্র তত্ত্বও ছড়িয়েছিল। তবে বিজ্ঞানীরা এবার এই বিতর্ক চিরতরে শেষ করে দিয়েছেন।
১৪ ঘণ্টা আগেমাংস খাওয়ার কথা মনে হতেই তীব্র বিরক্তি ও বমিভাবের উদ্রেক হতে পারে অনেক নিরামিষভোজীর। সম্প্রতি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় উঠে এসেছে, নিরামিষভোজীরা মানুষের মল বা মানুষের দেহাংশ খাওয়ার কথা চিন্তা করে যেরকম প্রতিক্রিয়া দেখান, সেই একরকম প্রতিক্রিয়া দেখান মাংস খাওয়ার কথা চিন্তা করে।
১ দিন আগেনতুন গবেষণায় উন্মোচিত হলো পৃথিবীকে আঘাত করা সবচেয়ে শক্তিশালী সূর্য বিকিরণ ঝড়ের তথ্য। এই ঝড়টি ঘটেছিল ১২ হাজার ৩৫০ খ্রিষ্টপূর্বে—যা মহাজাগতিক আবহাওয়া এবং রেডিও কার্বন ডেটিং সম্পর্কিত পূর্ববর্তী ধারণাগুলোকে এই পুরোপুরি বদলে দিয়েছে।
১ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের চাঁদে ফেরার মিশন আর্টেমিস কর্মসূচি নিয়ে নতুন অনিশ্চয়তা দেখা দিলেও, নাসার পাশে থাকার অঙ্গীকার জানিয়েছে জাপান। দেশটির মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জাকসার (জেএএক্সএ) প্রধান হিরোশি ইয়ামাকাওয়া শুক্রবার এক ব্রিফিংয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি কম খরচে কোনো বিকল্প পরিকল্পনা বিবেচনা করে, তাহলে জাপান সেটির
২ দিন আগে