Ajker Patrika

ঘুম থেকে উঠেই মানুষ কেন আড়মোড়া ভাঙে

আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯: ০৫
ঘুম থেকে উঠেই মানুষ কেন আড়মোড়া ভাঙে

ঘুম থেকে ওঠার পর লম্বা হাই তোলা এবং আড়মোড়া ভাঙা মানুষের একটি স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। এই শারীরিক নড়াচড়ার বৈজ্ঞানিক নাম—‘প্যান্ডিকুলেটিং’। 

প্যান্ডিকুলেশন বলতে বোঝায় শরীরের নরম টিস্যুগুলোর অনৈচ্ছিক প্রসারণ। বেশির ভাগ প্রাণীর প্রজাতির মধ্যেই এটি ঘটে। বিশেষ করে চক্রীয় জৈবিক ক্রিয়ার মধ্যবর্তী পরিবর্তনের সময় প্রাণীরা এমন কাজ করে। যেমন: ঘুম–জাগরণ ছন্দের মধ্যবর্তী সময়ে মানুষসহ অনেক প্রাণীই আড়মোড়া ভাঙে। 

অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে কুকুর ও বিড়ালের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি দেখা যায়। এরা দিনে প্রায় ৪০ বার হাই তোলে বা আড়মোড়া ভাঙে। গর্ভাবস্থায় মানুষের ভ্রূণও আড়মোড়া ভাঙে। তাই মানুষের এই আচরণ সহজাত বলেই মনে করা হয়। 

এই আচরণের প্রধান কারণ ব্যাখ্যা করে বিবিসি সায়েন্স ফোকাসের বিশেষজ্ঞ লুইস ভিলাজন বলেন, বিছানায় চিত হয়ে ঘুমানোর সময় পেশিগুলো শিথিল অবস্থায় থাকে এবং পিঠের নিচে তরল পদার্থ জমে। ঘুম থেকে জাগার পর হাত–পা ছড়িয়ে আড়মোড়া ভাঙলে পিঠের নিচে জমে যাওয়া তরল পদার্থ এবং পেশিগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়। 

ফিজিওথেরাপিস্ট নিকোলাস লাইকামেলি বলেন, দিনের শুরুতে হাই তুলে ও আড়মোড়া ভাঙার মাধ্যমে পেশির প্রসারণ মানুষকে চাপমুক্ত রাখতে সহায়তা করে। পুরো দেহের এই প্রসারণ প্যারাসিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় করে, যা দেহের বিশ্রাম, হজম এবং ক্লান্তির পর পূর্ণ শক্তি ফিরে পেতে সহায়তা করে। এ ছাড়া আড়মোড়া দেহের রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে দেহের স্নায়বিক চেতনাকে সক্রিয় করে ও পেশিকে নমনীয় করে। 

সজাগ অবস্থায় পেশিতে সৃষ্ট চাপ মুক্ত করতে ভূমিকা রাখে আড়মোড়া। এটি দেহভঙ্গি ও চলাফেরা ঠিক রাখার জন্য জরুরি। সজাগ অবস্থায় আড়মোড়া না ভাঙলে পেশি সংকুচিত ও শক্ত হয়ে থাকে।

স্ট্রেচ বা আড়মোড়ার মাধ্যমে শরীরের তরল পদার্থ ও পেশিগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়। ছবি: পেক্সেলস

২০১১ সালের দ্য জার্নাল অব বডিওয়ার্ক অ্যান্ড মুভমেন্ট থেরাপিতে প্যান্ডিকুলেটিং নিয়ে এক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। গবেষক লুইস ফার্নান্দো বার্তোলুচ্চি বলেন, প্যান্ডিকুলেটিং একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি ও নির্দিষ্ট অঞ্চলের ব্যথা প্রশমন করা যায়। কারণ এতে পেশি শিথিল হয়। 

লাইকামেলি বলেন, আমরা প্রায়ই প্যারাসিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্রের কথা ভাবি না, ফলে দেহ ও মনের বিশ্রাম, নিরাময়কে অবহেলা করি। যেমন: ঘুম ভেঙে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিছানা থেকে ওঠে গোসলে যাওয়া, তাড়াহুড়ো করে জামা পরা ও এক মগ চা বা কফি পান করে কাজের জন্য বেরিয়ে যাওয়ার। এরপর একটি কর্মব্যস্ত দিন পার করা। এতে শরীর ও মন বিশ্রামের জন্য যথেষ্ট সময় পায় না, ফলে পরের দিন আর পূর্ণ শক্তি ও উৎসাহ নিয়ে কাজে মনে দেওয়া সম্ভব হয় না।

তথ্যসূত্র: দ্য সোয়াডেল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত