সম্পাদকীয়
বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে দীর্ঘকাল ধরেই শনির দশা চলছে। সমস্যা সমাধানের কোনো উদ্যোগ না থাকায় দিন দিন এর অবস্থা ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে। ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক আলোচনায় পুঁজিবাজার: দর্শন ও বাস্তবতা’ শীর্ষক সংলাপে পুঁজিবাজারের করুণ অবস্থা ফুটে উঠেছে। এ নিয়ে আজকের পত্রিকায় ২৫ মে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর সংকট উত্তরণের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সংকট আরও বেড়েছে। বাজারে ঘন ঘন দরপতন হচ্ছে। লেনদেনের পরিমাণ একেবারেই কমে গেছে। ব্যাংক খাতে বিভিন্ন সংস্কার উদ্যোগের মাধ্যমে অর্থনীতির কিছু ক্ষেত্রে উন্নতি দৃশ্যমান হলেও শেয়ারবাজার যেন উল্টো পথে হাঁটছে। বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা তৈরি হচ্ছে না।
মূলত পুঁজিবাজারে কারসাজির শাস্তি না হওয়া এবং রাজনৈতিকভাবে কেউ এর প্রকৃত দায়িত্ব গ্রহণ না করাই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী। জানা যায়, ২০১০-১১ সালে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিরা পুঁজিবাজার থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন, যার মধ্যে অন্তত ১৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। এর আগেও ১৯৯৬ সালে বড় ধরনের অনিয়ম হয়েছিল, কিন্তু কোনো বিচার হয়নি।
সংলাপে একজন বক্তা পুঁজিবাজারের সঙ্গে ক্যাসিনোর তুলনা করে বলেছেন, যেভাবে দিনের শেষে মুনাফা কেবল ক্যাসিনো মালিকের কাছে যায়, এখানেও একই ঘটনা ঘটছে। একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী লাভ করছে আর সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কেবল তাঁদের লাভের জোগান দিচ্ছেন।
পুঁজিবাজারের এই দুরবস্থা কেবল আর্থিক ক্ষতিই করছে না, বরং পুরো অর্থনীতিকে দুর্বল করে দিচ্ছে। আস্থার অভাব এবং পারস্পরিক সহযোগিতার অনুপস্থিতি বাজারকে স্থবির করে রেখেছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের পুঁজিবাজারে দরপতন হলেও যেমন ঘুরে দাঁড়ায়, আমাদের দেশে সেই সূত্র কাজ করে না। এখানে কারসাজি এমনভাবে জেঁকে বসেছে যে সেখান থেকে বেরিয়ে আসা কঠিন হয়ে পড়েছে।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য বেশ কিছু জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। প্রধানত, পুঁজিবাজারে পূর্বে সংঘটিত সব কারসাজি ও অনিয়মের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি যত দিন থাকবে, তত দিন নতুন করে অনিয়মকারীরা উৎসাহিত হবেন। এরপর পুঁজিবাজারকে রাজনৈতিক মালিকানার (ওনারশিপ) আওতায় আনতে হবে, যার জন্য সুনির্দিষ্ট ও সমন্বিত মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতি প্রণয়ন করা জরুরি। পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য আর্থিক কাঠামোকে শক্তিশালী করতে হবে। এতে বাজারের স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে এবং ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা প্রতারিত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবেন। সবশেষে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করে বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।
তবে পুঁজিবাজারকে ‘টোটকা ওষুধে’ ঠিক করা যাবে না। এর জন্য প্রয়োজন বড় ধরনের কাঠামোগত সংস্কার এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা।
পুঁজিবাজার কেবল কিছু মানুষের লাভের উৎস নয়, এটি দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। একে ‘ক্যাসিনো’ থেকে মুক্ত করে একটি সুস্থ, শক্তিশালী এবং নির্ভরযোগ্য বাজারে পরিণত করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে দীর্ঘকাল ধরেই শনির দশা চলছে। সমস্যা সমাধানের কোনো উদ্যোগ না থাকায় দিন দিন এর অবস্থা ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে। ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক আলোচনায় পুঁজিবাজার: দর্শন ও বাস্তবতা’ শীর্ষক সংলাপে পুঁজিবাজারের করুণ অবস্থা ফুটে উঠেছে। এ নিয়ে আজকের পত্রিকায় ২৫ মে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর সংকট উত্তরণের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সংকট আরও বেড়েছে। বাজারে ঘন ঘন দরপতন হচ্ছে। লেনদেনের পরিমাণ একেবারেই কমে গেছে। ব্যাংক খাতে বিভিন্ন সংস্কার উদ্যোগের মাধ্যমে অর্থনীতির কিছু ক্ষেত্রে উন্নতি দৃশ্যমান হলেও শেয়ারবাজার যেন উল্টো পথে হাঁটছে। বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা তৈরি হচ্ছে না।
মূলত পুঁজিবাজারে কারসাজির শাস্তি না হওয়া এবং রাজনৈতিকভাবে কেউ এর প্রকৃত দায়িত্ব গ্রহণ না করাই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী। জানা যায়, ২০১০-১১ সালে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিরা পুঁজিবাজার থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন, যার মধ্যে অন্তত ১৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। এর আগেও ১৯৯৬ সালে বড় ধরনের অনিয়ম হয়েছিল, কিন্তু কোনো বিচার হয়নি।
সংলাপে একজন বক্তা পুঁজিবাজারের সঙ্গে ক্যাসিনোর তুলনা করে বলেছেন, যেভাবে দিনের শেষে মুনাফা কেবল ক্যাসিনো মালিকের কাছে যায়, এখানেও একই ঘটনা ঘটছে। একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী লাভ করছে আর সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কেবল তাঁদের লাভের জোগান দিচ্ছেন।
পুঁজিবাজারের এই দুরবস্থা কেবল আর্থিক ক্ষতিই করছে না, বরং পুরো অর্থনীতিকে দুর্বল করে দিচ্ছে। আস্থার অভাব এবং পারস্পরিক সহযোগিতার অনুপস্থিতি বাজারকে স্থবির করে রেখেছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের পুঁজিবাজারে দরপতন হলেও যেমন ঘুরে দাঁড়ায়, আমাদের দেশে সেই সূত্র কাজ করে না। এখানে কারসাজি এমনভাবে জেঁকে বসেছে যে সেখান থেকে বেরিয়ে আসা কঠিন হয়ে পড়েছে।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য বেশ কিছু জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। প্রধানত, পুঁজিবাজারে পূর্বে সংঘটিত সব কারসাজি ও অনিয়মের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি যত দিন থাকবে, তত দিন নতুন করে অনিয়মকারীরা উৎসাহিত হবেন। এরপর পুঁজিবাজারকে রাজনৈতিক মালিকানার (ওনারশিপ) আওতায় আনতে হবে, যার জন্য সুনির্দিষ্ট ও সমন্বিত মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতি প্রণয়ন করা জরুরি। পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য আর্থিক কাঠামোকে শক্তিশালী করতে হবে। এতে বাজারের স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে এবং ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা প্রতারিত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবেন। সবশেষে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করে বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।
তবে পুঁজিবাজারকে ‘টোটকা ওষুধে’ ঠিক করা যাবে না। এর জন্য প্রয়োজন বড় ধরনের কাঠামোগত সংস্কার এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা।
পুঁজিবাজার কেবল কিছু মানুষের লাভের উৎস নয়, এটি দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। একে ‘ক্যাসিনো’ থেকে মুক্ত করে একটি সুস্থ, শক্তিশালী এবং নির্ভরযোগ্য বাজারে পরিণত করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনের অবসানের পর বাংলাদেশের মানুষ একটি ভালো পরিবর্তনের আশা করেছিল। মানুষ চেয়েছিল একটি দায়িত্বশীল, সৎ ও বৈষম্যহীন সরকার। যেহেতু কোনো বিশেষ বা একক রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে নয়, পরিবর্তনটা এসেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে, সেহেতু পরিবর্তিত বাস্তবতায় ন্যায্য
৮ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা আজ এক গভীর সংকটে নিপতিত, যেখানে শিক্ষাবৈষম্য কেবল আর্থিক সামর্থ্যের নয়, বরং সামাজিক শ্রেণি, অবস্থান ও সংস্কৃতি দ্বারা পরিচালিত একটি গভীর রূপ ধারণ করেছে। যে শিক্ষা একসময় একটি সমতার হাতিয়ার হিসেবে বিবেচিত হতো, তা এখন একশ্রেণির মানুষের জন্য দুর্লভ ও ব্যয়বহুল পণ্য হয়ে
৮ ঘণ্টা আগেকয়েক মাস ধরে রাজধানী ঢাকায় একের পর এক আন্দোলন চলছে। একটা আন্দোলনের দাবি মেনে নেওয়া হলে শুরু হয় অন্য দাবির আরেক আন্দোলন। আন্দোলন চলাকালে সড়কে যানজট লেগে থাকা যেন অতি সাধারণ ব্যাপার! এই অবস্থায় নগরবাসীর চলাচলে বিঘ্ন ঘটে, গন্তব্যে পৌঁছাতে বিলম্ব হয়, জ্যামে আটকে অ্যাম্বুলেন্সের মুমূর্ষু রোগীর কী হাল হয়—
৮ ঘণ্টা আগেপারফিউম মেকার ইলিয়াস নতুন নতুন সুগন্ধি নিয়ে প্রায়ই আমার অফিসে আসেন। গত সপ্তাহে এলেন একটা খুশির খবর জানাতে। তিনি সুগন্ধি তৈরির জন্য মধ্যপ্রাচ্যের একটা প্রতিষ্ঠানের আমন্ত্রণ পেয়েছেন। গত ঈদুল ফিতরের আগে তাঁর সুগন্ধি বানানোর প্রক্রিয়া নিয়ে একটা অনুষ্ঠান নির্মাণ করেছিলাম। সেই অনুষ্ঠান দেখেই নাকি ওই প্রতি
১ দিন আগে